পাকা আম খেতে ভালোবাসেন না, এমন লোক একটিও খুঁজে পাবেন'না। এই মরশুমী ফল খেতে যেমন সুস্বাদু, এর উপকারিতা ও প্রচুর। চলুন দেখে নিই পাকা আম খেলে কী কী উপকার পাবেন....

কোলেস্টেরল ঠিক রাখে:
উচ্চমাত্রার ভিটামিন সি, ফাইবার ও প্যাকটিন থাকায় রক্তে উচ্চমাত্রার কোলেস্টেরল নিয়ন্ত্রণের ভূমিকা রাখে রসালো আম।
ত্বকের জন্য:
ত্বককে ভেতর থেকে পরিষ্কার রাখতে সাহায্য করে আম। বিশেষ করে ত্বকের ফুসকুড়ি দূর করে ত্বকের উজ্জ্বলতা বাড়ায় এটি।
অ্যালকালাইন লেভেল:
আমে আছে টারটারিক অ্যাসিড ও ম্যালিক অ্যাসিড। আছে সাইট্রিক অ্যাসিডও। শরীরের অ্যালকালি নামের রাসায়নিকের ভারসাম্য ঠিক রাখে এটি।
ওজন কমাতে:
আমে এতো এতো ভিটামিন আছে যে একটা আম খেলেই কিন্ত শরীরে রোজকার ভিটামিনের চাহিদা মিটে যাওয়ার কথা। আবার এতে ফাইবারও যোগাবে পুষ্টি ও শক্তি। তাই এই মরসুমে যারা ওজন কমানোর কথা ভাবছেন তারা বার্গার, কোল্ড ড্রিংকস বা সাব-স্যান্ডউইচের বিকল্প খাবার হিসেবে বেছে নিন আম।
লাভ ফ্রুট:
ইংরেজিতে কঠিন একটা শব্দ আছে- আফ্রোডিজিয়াক। এর বাংলা হতে পারে এমন, যাহা খাইলে মনে ভালোবাসার উদ্রেক হয়। আম কিন্তু এমনই একটা ফল। সুতরাং মৌসুম থাকতেই প্রিয়জনকে বেশি বেশি আম উপহার দিন।
চোখের জন্য:
এটা তো ছোটবেলা থেকেই পড়ে এসেছেন, আমের ভিটামিন এ আমাদের রাতকানা রোগ থেকে বাঁচাবে। যদিও এ রোগ এখন নেই বললেই চলে তবে চোখের স্বাস্থ্যের জন্য বেশি বেশি আম খেলে ক্ষতি নেই। বিশেষ করে ড্রাই আই সমস্যায় যারা ভুগছেন তারা আম খেয়ে উপকার পেতে পারেন।
হজমের জন্য:
স্বাস্থ্য যদি সুখের মূলে থাকে, তবে স্বাস্থ্যের মূলে আছে হজম। আমে থাকা এনজাইমগুলো প্রোটিন উপাদানগুলোকে সহজে ভেঙে ফেলতে পারে। এতে খাবার হজম হয় দ্রুত, বাঁচা যায় পাকস্থলী সংক্রান্ত অনেক রোগ থেকেও।
হিট স্ট্রোক ঠেকাবে:
এই গরমের হিট স্ট্রোক সাধারণ ঘটনা। আম আমাদের ভেতরটা শীতল রাখে ও শরীরকে অতিরিক্ত গরম হয়ে যাওয়া থেকে শরীরের ভেতরের অঙ্গগুলোকে বাঁচায়।
রোগপ্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়:
আমে থাকা ক্যারোটেনয়েড বাড়িয়ে দেবে আপনার রোগ-প্রতিরোধ ক্ষমতা। সহযোদ্ধা হিসেবে ভিটামিন সি তো আছেই।
মনযোগ ও স্মৃতির জন্য:
কোনও কিছুর প্রতি মনযোগ ধরে রাখতে কষ্ট হলে উপকার করবে আম। মেমোরি বুস্টার হিসেবেও কাজ করে ফলটি।
বডি স্ক্রাব:
ত্বককেও খাওয়াতে পারেন আমের নির্যাস। বডি স্ক্রাব হিসেবে পাকা আম বেশ ভালো কাজ করে। পেস্ট তৈরি করে তাকে একটুখানি মধু আর দুধ মিশিয়ে নিন। আলতো করে মাসাজ করে ১০-১৫ মিনিট পর ধুয়ে ফেলুন।
শুধু শুধু আম খেতে ভালো না লাগলে বিভিন্ন ধরনের রান্নাতে এর ব্যবহার করতে পারেন :

আমের ফিরনি
কী কী লাগবে
পাকা আম, ফুল ক্রিম দুধ, গোবিন্দভোগ চাল, চিনি, ছোট এলাচ গুঁড়ো।
কিভাবে বানাবেন
দুধ অল্প আঁচে জ্বাল দিয়ে ঘন করে নিন।
গোবিন্দভোগ চাল মিক্সিতে আধভাঙ্গা করে নিন।
এবার দুধে এলাচগুঁড়ো আর চাল মিশিয়ে ফোটাতে হবে চাল সেদ্ধ হওয়া অবধি।
অনবরত নাড়তে থাকবেন। পাকা আমের পিউরি করে মিশিয়ে ঠান্ডা হতে দিন।
ফ্রিজে রেখে সেট করে পছন্দ মতো সাজিয়ে পরিবেশন করুন।

পাকা আমের রস মালাই
কী কী লাগবে
দুধ, চিনি, ভিনিগার, এলাচ গুঁড়ো, যে কোনও বাদাম গুঁড়ো, লেবুর রস, সাজানোর জন্য বেদানা।
কিভাবে বানাবেন
দুধ ভালো করে জ্বাল দিয়ে তাতে ভিনিগার মিশিয়ে ছাধা কেটে নিন।
জল ঝরিয়ে হাতের তালু দিয়ে ভালো করে মেখে ছোট ছোট বল বানিয়ে নিন।
চিনির রস বানানোর জন্য একটা পাত্রে চিনি আর জল দিয়ে ফুটিয়ে অল্প লেবুর রস দিতে হবে।
এবার ছানার বলগুলো চিনির রসে দিয়ে ফুটে উঠলে ঢাকা দিয়ে পনেরো মিনিট ফুটিয়ে তুলে নিতে হবে।
অন্য একটি পাত্রে দুধ ঘন করে, অল্প চিনি, এলাচগুঁড়ো আর রসগোল্লা গুলো দিয়ে দু মিনিট মতো রেখে গ্যাস থেকে নামিয়ে নিতে হবে।
ঠাণ্ডা করে বাদাম গুঁড়ো আর বেদানার দানা দিয়ে সাজিয়ে পরিবেশন করুন।
রেসিপি এবং ছবি সৌজন্যেঃ নন্দা দাস
অনুলিখন সুস্মিতা মিত্র
Comments