দেশ বিদেশী যত খাবার'ই খান না কেন, বাড়ির খাবার, মায়ের হাতের রান্নার স্বাদ'ই আলাদা। এইরকমই পাঁচটি রেসিপি আজ রইলো আপনাদের জন্য।
চিংড়ির হলুদ গালা ঝোল
কী কী লাগবে
চিংড়ি মাছ ২৫০ গ্রাম, কাঁচা হলুদ বাটা ৪ চামচ ( গুঁড়ো হলুদ ব্যবহার করলে সেই টেস্ট হবে না ), চেরা কাঁচা লঙ্কা -৪ টে, কালোজিরে -১টেবিল চামচ, নুন স্বাদ মতো, ৪ চামচ সর্ষের তেল l
কিভাবে বানাবেন
প্রথমে চিংড়ি গুলো সামান্য নুন ও সামান্য কাঁচা হলুদ বাটা দিয়ে মাখিয়ে রেখে দিতে হবে ৫ মিনিট। তারপর একটা কড়াই সর্ষের তেল দিয়ে হালকা করে মাছ গুলো ভেজে নিতে হবে l তারপর সেই তেলেই দিয়ে দিতে হবে কালো জিরা ও চেরা কাঁচা লংকা l ফোড়ন থেকে সুন্দর গন্ধ বেরোলে তার মধ্যে দিতে হবে প্রয়োজন মতো জল ( এটা কিন্তু একটু ঝোল ঝোল ই হবে ) জল টা ফুটে গেলে তার মধ্যে দিতে হবে ভেজে রাখা চিংড়ি মাছ গুলো l চিংড়ি মাছের গুলো দিয়ে ঢাকা দিয়ে ফোটাতে হবে ২-৩ মিনিট l তার পর এর তৈরী হয়ে যাবে চিংড়ি মাছের এর হলুদ গালা ঝোল l গরম এর দিন এর একটি আদর্শ পদ l
ঝিঙে বাটা
কী কী লাগবে
৫০০ গ্রাম ঝিঙে
৮ কোয়া রসুন
৪ টি কাঁচা লঙ্কা
স্বাদ মত নুন
১ চা চামচ চিনি
৩ চা চামচ সর্ষের তেল
১ চা চামচ কালো জিরে
কিভাবে বানাবেন
ঝিঙে খোসা ছাড়িয়ে ভালো করে টুকরো করে কেটে নিতে হবে। তার সাথে লঙ্কা ও রসুনের কোয়া ধুয়ে নিয়ে একটা পাত্রে রাখতে হবে। এবার মিক্সিতে ভালো করে বেটে নিতে হবে। এবার কড়াইতে সর্ষের তেল দিয়ে তেল গরম হলে কালো জিরে ফোরণ দিতে হবে। ছেড়ে দিতে হবে বেটে রাখা ঝিঙের মিশ্রণটি। গ্যাস মিডিয়াম রেখে ভালো করে নাড়তে হবে। এই রেসিপিতে জলের কোনো ব্যবহার নেই। ঝিঙের থেকে যা জল বের হবে তাতেই রান্নাটা হবে। তাই এই জল শুকনো হয়ে আসা অবধি নাড়তে হবে। এবার পরিমান মতো নুন ও চিনি দিয়ে ভালো করে মিশিয়ে নিয়ে একটা পাত্রে সাজিয়ে নিতে হবে পরিবেশনের জন্যে। গরম গরম ভাতে পরিবেশন করুন একদম জমে যাবে।
কেশরী ইলিশ
কী কী লাগবে
ইলিশ মাছ ৪ টুকরা, পিঁয়াজ বাটা ১/২ কাপ- আদা বাটা ১/২ চা চামচ- রসুন বাটা ১/২ চা চামচ- কাজু বাদাম বাটা ১ চা চামচ- কিসমিশ বাটা ১/২ চা চামচ- পোস্তদানা বাটা ১/৪ চা চামচ- মরিচ গুঁড়ো ৩/৪ চা চামচ- লবণ স্বাদ মত- টক দই ২ টেবিল চামচ- এলাচ ২-৩ টি- লবঙ্গ ২-৩ টি- দারুচিনি ১ টি- তেজপাতা ১ টি- গরম মশলা গুঁড়ো ১/৪ চা চামচ- ঘি ২ চা চামচ- তেল প্রয়োজন মত
কিভাবে বানাবেন
প্রথমে মাছগুলো ধুয়ে একটু লবণ মাখিয়ে রাখতে হবে। এবার ননস্টিক প্যানে ১ চা চামচ ঘি আর তেল গরম করে এলাচ, দারুচিনি আর লবঙ্গের ফোড়ন দিয়ে মাছের টুকরোগুলো হালকা ভেজে তুলে রাখতে হবে । একই তেলে পিঁয়াজ, আদা, রসুন বাটা দিয়ে একটু কষিয়ে প্রয়োজন মত জল দিয়ে দিন। এরপর মরিচ গুঁড়ো, লবণ, কাজু বাদাম বাটা, পোস্ত বাটা, কিসমিশ বাটা, দই, তেজপাতা দিয়ে আরও কিছুক্ষণ কষিয়ে ভাজা মাছ গুলো দিয়ে অল্প আঁচে ঢেকে রান্না করতে হবে। রান্না শেষের দিকে গরম মশলা গুঁড়ো, বাকী ঘি আর সামান্য চিনি দিয়ে নামিয়ে ফেলতে হবে ও ওপর দিয়ে একটু কেশর ছড়িয়ে দিন। তারপর পরিবেশন করেন ভাত বা পোলাওর সাথে।
লাউ পাতা দিয়ে মুসুর ডাল এর পাতুরি
কী কী লাগবে
১ কাপ মুসুর ডাল (১ ঘন্টা এর জন্য জল এ ভিজিয়ে রাখতে হবে ), লাউ পাতা (গরম জল এ উল্টে পাল্টে একটুধুয়ে নিতে হবে ),একটা বড়ো পেঁয়াজ কুঁচানো, ২ চামচ কাঁচা লংকা,স্বাদ মতো নুন, ½ চামচ হলুদ, ¼ চামচ লঙ্কা গুঁড়ো,সামান্য চিনি,½ চা চামচ কালো জিরা,½ চা চামচ জোয়ান,১ চামচ সর্ষের তেল,পাতুরি ভাজার জন্য প্রয়োজন মতো সর্ষের তেল।
কিভাবে বানাবেন
এক ঘণ্টা ভিজিয়ে রাখা মুসুর ডাল কে ভালো করে পেস্ট করে নিতে হবে তার পর সেই পেস্ট এর মধ্যে একে একে দিয়ে দিতে হবে একটা বড়ো পেঁয়াজ কুঁচানো, ২চামচ কাঁচা লংকা,স্বাদ মতো নুন, ½ চামচ হলুদ, ¼ চামচ লঙ্কা গুঁড়ো,সামান্য চিনি,½ চা চামচ কালো জিরা,½ চা চামচ জোয়ান,১ চামচ সর্ষের তেল এই সব উপকরণ গুলো এক সাথেই মিশিয়ে দিতে হবে তার পর ধুয়ে রাখো লাউ পাতা গুলো এর মাঝে মুসুর ডাল এর মিশ্ররণ তে দিয়ে পাতুরির মতো করে সুতো দিয়ে বেঁধে নিয়ে l তার পর একটা প্যান এ ভাজার জন্য পরিমান মতো সর্ষের তেল দিয়ে তেল গরম হলে একে একে পাতুরি গুলো ভেজে নিলেই তৈরী হয়ে যাবে লাউ পাতা দিয়ে মুসুর ডাল এর পাতুরি l গরম গরম ভাত এর সাথেই পরিবেশন করুন এই পদ টি l
হেমকনা পায়েস
কী কী লাগবে
খোয়া ক্ষীর আধকাপ
সফেদা বা চালের মিহি গুঁড়ো ৬ টেবিল চামচ
খোসা ছাড়ানো বাদাম বাটা ৬ টেবিল চামচ
মিহি চিনি ১ কাপ বা স্বাদ অনুযায়ী
দুধ এক লিটার ( whole fat milk) (স্বাদ অনুযায়ী একটু পাতলা পায়েস চাইলে তার কম ও দুধ নিতে পারেন)
জাফরান
কিভাবে বানাবেন
ভালো করে খোয়াক্ষীর, সফেদা বা মিহি চাল গুঁড়ো, বাদাম বাটা এক চামচ চিনি মিশিয়ে মিশিয়ে ভালো করে একসাথে ময়দা মাখার মতো করে মেখে নিন। একটা মন্ড (dough) তৈরি হবে। এবং এবার ওই মন্ড থেকে ছোটছোট মটর দানার মতো বল কেটে নিন।দুধে চিনি মিশিয়ে ফুটতে দিন। ফুটে উঠলে তাতে জাফরান দিন । দুধ ফুটে অর্ধেক হয়ে গেলে এবারে দুধে ক্ষীরের দানা গুলো দিয়ে পাঁচ মিনিট ফুটান। ফুটানোর সময় বেশি নাড়াচাড়া করবেন না। এবার ঠান্ডা হলেই পরিবেশন করার জন্য তৈরি ‘হেম কণা পায়েস’।
নোট: মন্ড র মধ্যে সব যেন খুব ভালো ভাবে মেশে নাহলে দুধে দিলে গোল বল গুলো খুলে যেতে পারে।
* সফেদা বা চাল গুঁড়োর বদলে অনেকে ময়দাও ব্যবহার করে থাকেন, যদিও আমরা ময়দা ব্যবহার করিনি।
Comments