top of page

পুরীর জগন্নাথ মন্দিরের করমাবাঈ খিচুড়ির রেসিপি..

rojkarananya

জগন্নাথ মন্দিরে সকালে জগন্নাথকে খিচুড়ির বালক ভোগ নিবেদন করা হয়। এর পিছনে একটি পৌরাণিক কাহিনি রয়েছে।

কথিত আছে, জগন্নাথের ভক্ত কর্মাবাঈ পুরীতে বসবাস করতেন এবং জগন্নাথকে নিজের পুত্র স্নেহে ভালোবাসতেন। পুত্র রূপে জগন্নাথের বালরূপের পুজো করতেন তিনি। একদিন কর্মাবাঈর মনে ইচ্ছা জাগল যে তিনি ফল ও শুকনোফলের স্থানে নিজের হাতে কিছু রেঁধে জগন্নাথকে ভোগ নিবেদন করেন। তিনি জগন্নাথকে নিজের ইচ্ছা সম্পর্কে জানান। তখন জগন্নাথ বলেন, ‘মা যা-ই বানিয়েছ, তাই খাইয়ে দাও। খুব ক্ষিদে পেয়েছে।’ কর্মাবাঈ খিচুড়ি বানিয়ে ছিলেন এবং জগন্নাথকে তা-ই খেতে দেন। জগন্নাথ খুব ভালোবেসে খিচুড়ি খেতে শুরু করেন। তখন কর্মাবাঈ জগন্নাথকে পাখা করতে শুরু করেন। গরম খিচুড়িতে জগন্নাথের মুখ না-পুড়ে যায়, সে জন্য পাখা করতে শুরু করেন তিনি। জগন্নাথ খুব ভালোবেসে খিচুড়ি খান এবং কর্মাবাঈ তাঁকে আদর করতে থাকেন।

জগন্নাথ বলেন, ‘মা খিচুড়ি খুব ভালো লাগল। আমার জন্য আপনি রোজ খিচুড়ি রান্না করুন। আমি রোজ এখানে এসে এমনই খিচুড়ি খাব।’ এবার কর্মাবাঈ রোজ স্নান না-করে প্রাতঃকালে জগন্নাথের জন্য খিচুড়ি বানান। কাহিনি অনুযায়ী বালক রূপে কর্মাবাঈ খিচুড়ি খেতে আসতেন। তবে একদিন কর্মাবাঈর বাড়িতে এক সাধু আসেন। তিনি যখন জেখেন, কর্মাবাঈ স্নান ছাড়াই খিচুড়ি বানিয়ে জগন্নাথকে ভোগ নিবেদন করছেন, তখন তিনি কর্মাবাঈকে এমন করতে বারণ করে দেন। জগন্নাথের ভোগ রান্না ও নিবেদনের বিশেষ নিয়ম জানান ওই সাধু।

পরের দিন কর্মাবাঈ এই নিয়ম অনুযায়ী জগন্নাথের জন্য খিচুড়ি বানান, যাঁর ফলে দেরি হয়ে যায় এবং তিনি দুঃখী হন যে, আমার ঠাকুর ক্ষুধার্ত রয়েছে। জগন্নাথ যখন খিচুড়ি খেতে আসেন, তখন মন্দিরে দুপুরের ভোগের সময় হয়ে গিয়েছিল। পুরোহিতরা দেখেন যে জগন্নাথের মুখে খিচুড়ি লেগে রয়েছে। তখন জগন্নাথকে জিগ্যেস করলে তিনি সমস্ত কাহিনি শোনান জগন্নাথ। এই কথা জানার পর পুরোহিতের পশ্চাতাপ হয়। কর্মাবাঈয়ের কাছ থেকে ক্ষমা প্রার্থনা করেন তিনি। বলেন, আগের মতোই স্নান না-করেই জগন্নাথের জন্য খিচুড়ি রান্না করুন এবং ভোগ নিবেদন করুন। তাই আজও পুরীর জগন্নাথ মন্দিরে সকালে বালক ভোগে খিচুড়ির ভোগ লাগানো হয়। মনে করা হয় এটি কর্মাবাঈয়ের খিচুড়ি।


করমাবাঈ খিচুড়ি


কী কী লাগবে


গোবিন্দভোগ চাল ২ কাপ,‌‌ গোটা মুগডাল ১ কাপ, নারকেল কোরা ১/২ কাপ, আদা কুচি ১.৫ টেবিল চামচ, জিরে গুঁড়ো ২ চা চামচ, হিং ১ চা চামচ, ঘি ২ টেবিল চামচ, নুন স্বাদমতো


কিভাবে বানাবেন


চাল ধুয়ে জল ঝরিয়ে রাখুন। গোটা মুগডাল গরমজলে ২ -৩ ঘন্টা ভিজিয়ে রাখুন। প্রেশার কুকারে আন্দাজমত জল দিয়ে মুগডাল ৮০% সেদ্ধ করে নিন। খেয়াল রাখবেন জল যেন পুরোটাই শুকিয়ে যায়। এরপর একটি হাঁড়িতে প্রথমে চাল এবং জল নিয়ে আঁচে বসান। চাল ফুটে উঠলে সেদ্ধ মুগডাল দিন। স্বাদমতো নুন মিশিয়ে মিডিয়াম আঁচে চাপা দিয়ে রান্না হতে দিন। ১০ মিনিট পরে এতে অর্ধেক পরিমাণ নারকেল কোরা, জিরেগুঁড়ো, হিং এবং অর্ধেক পরিমাণ আদাকুচি দিয়ে ভালো করে মিশিয়ে আরও ৫ মিনিট মতো রান্না হতে দিন। সবকিছু মিশে সুসিদ্ধ হয়ে গেলে ওপর থেকে বাকী আদাকুচি, ঘি এবং নারকেল কোরা ছড়িয়ে গরম গরম পরিবেশন করুন। পুরীর জগন্নাথ মন্দিরের নিত্যভোগের অন্যতম সেরা পদ করমাবাঈ খিচুড়ি।


রেসিপি এবং ছবি সৌজন্যে অমৃতা রায়

Comments


Rojkar Ananya New Logo copy.jpg

Your key stats for the last 30 days

Follow us on

fb png.png

©2023 to Debi Pranam. All Rights Reserved

bottom of page