নববর্ষ প্রায় সমাগত। আর মিষ্টি ছাড়া কোনো উৎসব'ই পরিপূর্ণ হয় না। আজ চলুন দেখে নিই কিভাবে বাড়িতে বানাবেন দূর্দান্ত স্বাদের সব দৃষ্টিনন্দন মিষ্টি... রইলো মতিচুর লাড্ডু, গাজরের হালুয়া, প্যারা এইরকম ঐতিহ্যবাহী মিষ্টির ভোলবদল...
টু ইন ওয়ান কালাকাদ
কী কী লাগবে
ফুল ফ্যাট মিল্ক ১ লিটার,
ছানা ৫০০ গ্রাম (ভালো করে গ্রেট করা),
খোয়া(মিষ্টি ছাড়া) ২০০ গ্রাম,
এলাচ গুঁড়ো ১ ছোট চামচ,
চিনি ১ কাপ বা স্বাদ মতো,
ঘি-প্লেটে গ্রিজ করার জন্য,
গরম দুধ ১ বড় চামচ,
কোকোয়া পাউডার ২ ছোট চামচ,
পেস্তা কুচি সাজানোর জন্য।
কিভাবে বানাবেন
প্রথমে একটি পাত্রে দুধ নিয়ে সেটাকে গরম করে ঘন করে নিতে হবে।।
দুধ ঘন হয়ে আসলে সেটার মধ্যে গ্রেট করে রাখা ছানা যোগ করে ভালোভাবে নাড়াতে হবে যাতে কোনো দানা না থাকে।
ছানা ভালো ভাবে মিশিয়ে নেওয়ার পর তার মধ্যে খোয়া যোগ করে আবারও ভালো করে মিশিয়ে নিতে হবে।
সব ভালো ভাবে মিশে গেলে তার মধ্যে এলাচ গুঁড়ো যোগ করে মিশিয়ে নিতে হবে।
এবার পরিমান মতো চিনি যোগ করে ভালো করে নাড়তে হবে। চিনি থেকে জল ছাড়বে।মিশ্রণটা যতক্ষণ না গাঢ় হচ্ছে আর সব জল শুকিয়ে যাচ্ছে ততক্ষন নাড়তে হবে।
এখন যেই পাত্রে মিষ্টি টা বসানো হবে সেই পাত্র টিকে ঘি দিয়ে গ্রিজ করে নিতে হবে।
গাঢ় করে রাখা দুধ ও ছানার মিশ্রণটি সমান দুই ভাগে ভাগ করে নিতে হবে।
এবার একটি ভাগ গ্রিজ করে রাখা ট্রে এর মধ্যে সমান ভাবে বিছিয়ে দিতে হবে।
একটি বাটিতে গরম দুধ ও কোকোয়া পাউডার নিয়ে ভালো করে মিশিয়ে নিতে হবে।
সমান দুই ভাগে ভাগ করে রাখা বাকি মিশ্রণটির সাথে কোকোয়া পাউডার এর মিশ্রণটি ভালোভাবে মিশিয়ে নিতে হবে যাতে কোনো দানা না থাকে।
এবার এই কোকোয়া মিশ্রণটি ট্রে তে ছড়িয়ে রাখা মিশ্রনের ওপর সমান ভাবে ছড়িয়ে দিয়ে হবে।
একটি চামচের পেছন দিক দিয়ে সমান করে নিতে হবে।
ওপর দিয়ে কুচি করে রাখা পেস্তা ছড়িয়ে ফ্রিজে ১ থেকে ২ ঘন্টা রেখে দিতে হবে।
ফ্রিজ থেকে বের করে সমান ভাবে কেটে পরিবেশন করলেই তৈরি টু ইন ওয়ান কালাকাদ।
গাজর কা হালুয়া চকোলেট বার
কী কী লাগবে
ঘি- ১/২কাপ,
গ্রেট করা গাজর - ৫০০গ্রাম,
দুধ- ৩০০এম এল,
এলাচ গুঁড়ো- ২ ছোট চামচ,
চিনি- ১ কাপ বা স্বাদ মতো,
ঘি-প্লেটে গ্রিজ করার জন্য,
গরম দুধ-১ বড় চামচ,
কোকোয়া পাউডার-২ ছোট চামচ,
পেস্তা কুচি - সাজানোর জন্য।
কিভাবে বানাবেন
১.প্রথমে একটি পাত্রে দুধ নিয়ে সেটাকে গরম করে ঘন করে নিতে হবে।।
২.দুধ ঘন হয়ে আসলে সেটার মধ্যে গ্রেট করে রাখা ছানা যোগ করে ভালোভাবে নাড়াতে হবে যাতে কোনো দানা না থাকে।
৩.ছানা ভালো ভাবে মিশিয়ে নেওয়ার পর তার মধ্যে খোয়া যোগ করে আবারও ভালো করে মিশিয়ে নিতে হবে।
৪.সব ভালো ভাবে মিশে গেলে তার মধ্যে এলাচ গুঁড়ো যোগ করে মিশিয়ে নিতে হবে।
৫.এবার গ্যাস এর আঁচ কমিয়ে ঢাকা দিয়ে দিতে হবে ২ মিনিটের জন্য। যাতে গাজর ভালোভাবে সেদ্ধ হয়ে যায়।
৬.২মিনিট পর পর ঢাকা খুলে ভালো করে নাড়িয়ে দিতে হবে এবং খেয়াল রাখতে হবে যাতে প্যান এর মধ্যে লেগে না যায়।
৭.গাজর ভালোভাবে সেদ্ধ হয়ে গেলে তার মধ্যে স্বাদমতো চিনি যোগ করে ভালো ভাবে নাড়তে হবে যতক্ষণ না চিনির জল পুরোপুরি শুকিয়ে যায়।
৮.এবার গাজরের মিশ্রণটি একদম মাখা মাখা হয়ে আসলে প্যান থেকে নামিয়ে ঠান্ডা করতে হবে।
৯.গাজরের হালুয়া রুম তাপমাত্রায় এসে গেলে সেটাকে যে কোনো ধরনের চকোলেট মোল্ড নিয়ে তার মধ্যে গাজরের হালুয়া ভরে শেপ দিয়ে ডীপ ফ্রিজ এ ফ্রিজ করতে হবে।
১০.গাজরের হালুয়া ভালো ভাবে চকোলেট মোল্ড এ জমে গেলে সেটা একটি টুথপিক এর সাহায্যে বের করে গলিয়ে রাখা চকোলেট এর মধ্যে ভালোভাবে ডুবিয়ে তুলে নিতে হবে।
১১.এবার চকোলেট বার গুলিয়ে ফ্রিজে কিছুক্ষন রেখে দিতে হবে।
১২.ফ্রিজ থেকে বের করে ওপরে বাদাম কুচি ছড়িয়ে পরিবেশন করলেই তৈরি গাজর কা হালুয়া চকোলেট বার।
রোজ প্যারা
কী কী লাগবে
১.ঘি - ৪ বড় চামচ,
২.কনডেন্সড মিল্ক - ৩০০ গ্রাম,
৩.গুঁড়ো দুধ - ২.২৫কাপ,
৪.উষ্ণ গরম দুধ - ১/৪ কাপ,
৫.কেশর - এক চিমটি,
৬.এলাচ গুঁড়ো - ১/২ছোট চামচ,
৭.ক্লিন ফ্লিম,
৮.গোলাপি বা লাল খাওয়ার রং ১ ছোট চামচ
কিভাবে বানাবেন
১.প্রথমে একটি পাত্রে 2 বড় চামচ ঘি নিয়ে তার মধ্যে কনডেন্সড মিল্ক দিয়ে দিতে হবে। এবার দুটোকে ভালো ভাবে মেশাতে হবে।
২.দুধ ও কনডেন্সড মিল্ক ভালো ভাবে মিশে গেলে তার মধ্যে পরিমাণমতো গুঁড়ো দুধ অল্প অল্প করে দিয়ে ভালো ভাবে মেশাতে হবে যাতে কোনোরকম দানা না থাকে।
৩.ওপরের সব উপকরণ ভালোভাবে মিশে গেলে তার মধ্যে এলাচ গুঁড়ো দিয়ে আরেকবার ভালো করে মিশিয়ে নিতে হবে।
৪.মিশ্রণটি ততক্ষন পর্যন্ত নাড়তে হবে যতক্ষণ না প্যান থেকে আলাদা হয়ে একটি মন্ডর মতো তৈরি হয়।
৫.মন্ডর মতো হয়ে গেলে একটি প্লেটে নামিয়ে ঠান্ডা করে নিতে হবে।
৬.মিশ্রণটি ঠান্ডা হয়ে যাওয়ার পর হাতের তালুতে অল্প ঘি মেখে ভালো করে ডলে নিতে হবে যাতে একটি মিহি ডো তৈরি হয়।
৭.এবার মিহি করে মাখা ডো এর মধ্যে পচন্দ মতো খাবার রং দিয়ে আবার একবার ভালো করে মেখে নিতে হবে।
৮.এবার একটি ক্লিঙ ফ্লিম নিয়ে তার ওপর ঘি দিয়ে ভালো করে ব্রাশ করে নিতে হবে।
৯.এবার ডোটিকে ক্লিঙ ফ্লিম এর উপরে নিয়ে ভালো করে রুটির মতো বেলে নিতে হবে।
১০.এবার একটি বোতলের ঢাকনা দিয়ে ছোট ছোট আকারে কেটে নিতে হবে পাপড়ির মতো।
১১.এবার একটি একটি করে পাপড়ি নিয়ে গোলাপ ফুলের মতো বানিয়ে নিলেই তৈরি হয়ে যাবে রোজ প্যারা।
মতিচুর রাবরী পারফেট
কী কী লাগবে
মতিচুর লাড্ডু - ৫ টা,
ফুল ফ্যাট মিল্ক - ৩০০এম.এল.,
এলাচ গুঁড়ো- ১ ছোট চামচ,
চিনি- স্বাদমতো,
কুচি করা বাদাম সাজানোর জন্য।
কিভাবে বানাবেন
১.প্রথমে একটি পাত্রে দুধ গরম বসতে হবে।
২. তারপর তার মধ্যে এলাচ গুঁড়ো দিয়ে ভালো করে মিশিয়ে নিতে হবে.
৩. দুধ ততক্ষন পর্যন্ত জ্বাল দিতে হবে যতক্ষণ না দুধ পরিমানে অর্ধেক হয়ে যায়।
৪.দুধ অর্ধেক হয়ে আসলে তাতে স্বাদমতো চিনি যোগ করে ভালো করে মেশাতে হবে।
৫.চিনি পুরো মিশে গিয়ে দুধ যখন রাবরীর মতো ঘন হয়ে আসবে তখন গ্যাস বন্ধ করে এটাকে ঠান্ডা করতে হবে।
৬. ঠান্ডা হয়ে গেলে ফ্রিজ রেখে দিতে হবে 1 ঘন্টা।
৭.এবার মতিচুর লাড্ডু গুলিকে ভালো করে গুঁড়ো করে নিতে হবে হাতের সাহায্যে।
৮.রাবরী পুরোপুরি ঠান্ডা হয়ে গেলে একটি ট্রান্সপারেন্ট গ্লাসে প্রথমে গুঁড়ো করে রাখা মতিচুর লাড্ডু ছড়িয়ে দিতে হবে। একটা লেয়ারের মতো হবে।
৯.তার ওপর ঠান্ডা করে রাখা রাবরী দিয়ে আরেকটি লেয়ার তৈরি করতে হবে।
১০.এবার রাবরীর লেয়ার এর উপরে আবার গুঁড়ো করে রাখা মতিচুর লাড্ডুর লেয়ার দিয়ে হবে।
১১.এবার কুচি করে রাখা বাদাম কুচি দিয়ে ওপরে সাজিয়ে দিতে হবে।
১২.এভাবে সব গ্লাস তৈরি হয়ে গেলে গ্লাস গুলিকে ফ্রিজে রেখে ঠাণ্ডা করে পরিবেশন করুন।
রেসিপি এবং ছবি সৌজন্যেঃ কমলিকা ভৌমিক
অনুলিখন: সুস্মিতা মিত্র
Comments