ধরুন, হঠাৎ করে না জানিয়ে বাড়িতে অতিথি এলো, আর এসেই আপনার রান্নার প্রশংসায় পঞ্চমুখ মুখ হয়ে সেই স্বাদ চেখে দেখার আবদার জানালো। ভারী মুশকিল! অ্যাপে অর্ডার করে চিন্তামুক্ত হবেন সে উপায় ও নেই!বাড়িতে যা যা আছে তাই দিয়েই বানিয়ে ফেলতে পারেন চমৎকার থালি। কী কী করবেন দেখে নিন....
আম-বাদাম-কুলফি
কী কী লাগবে:
১/২ লিটার ফুল ক্রিম দুধ,
১০০ গ্রাম খোয়া ক্ষীর,
১৫০ গ্রাম চিনি,
৪ টে এলাচ,
২ টো পাকা আমের পাল্প,
আমন্ড,
কাজু,
পেস্তা ছোট করে কুচানো ৪চামচ,
কুচোনো আমসত্ত্ব ২টেবিল চামচ
কিভাবে বানাবেন:
প্রথমে একটি পাত্রে দুধ জ্বাল দিয়ে ঘন করতে হবে, দুধ একটু ঘন হয়ে এলে তাতে খোয়াক্ষীর চিনি এবং এলাচ মিশিয়ে আরো কিছুক্ষণ জ্বাল দিতে হবে।
এবার এটা ঠান্ডা হলে আমের পাল্প, বাদাম কুচি এবং আমসত্ত্ব কুচি ভালো মতো মিশিয়ে যে পাত্র গুলিতে কুলফি জমাতে চাইছেন তার মধ্যে ঢেলে ৫-৬ ঘন্টা ফ্রিজে রেখে দিলে তৈরি হয়ে যাবে আম- বাদাম-কুলফি।
যদি কুলফির স্টিক তৈরি করতে চান তাহলে ঘন্টাখানেক বাদে কাঠিটা পাত্রের ঠিক মাঝখানে বসিয়ে দেবেন। এবার ইচ্ছা মত সাজিয়ে পরিবেশন করুন।
কাঁচকলা ইলিশের ভর্তা
কী কী লাগবে:
একটা কাঁচকলা,
২টো ইলিশের লেজ,
দুটো অন্য যে কোনো ইলিশের পিস,
দুটো কাঁচা লঙ্কা, দুটো শুকনো লঙ্কা,
দুটো মাঝারি সাইজের পেঁয়াজ কুচি,
স্বাদ অনুযায়ী নুন,
সরষের তেল,
লেবুর রস এক চামচ
কিভাবে বানাবেন:
কাঁচকলা সেদ্ধ করে নিতে হবে। মাছ ধুয়ে পরিষ্কার করে নুন হলুদ মেখে নিতে হবে।
তারপর প্রয়োজন মতো সরষের তেল গরম করে মাছ গুলো হালকা ভেজে তুলে রাখুন।
এবার ওই তেলে শুকনো লঙ্কা দুটো ভেজে নিন।
মাছ ঠান্ডা হলে কাটা ছাড়িয়ে রাখুন।
এবার নুন আর ভাজা শুকনো লঙ্কা দিয়ে পেঁয়াজ কুচি টাকে ভালো মতো মেখে তারমধ্যে কাঁটা বেছে রাখা মাছ, কাঁচকলা সেদ্ধ, মাছ ভাজার তেল, কাঁচা লঙ্কা কুচি, লেবুর রস সব একসাথে মিশিয়ে ভালোমতো মেখে নিতে হবে। ব্যস তৈরি হয়ে গেল কাঁচকলা ইলিশের ভর্তা। গরম ভাতে অমৃত।
কড়াইশুঁটির পুরভরা কুমড়ো ফুলের বড়া
কী কী লাগবে
কুমড়ো ফুল ১ আঁটি
কড়াইশুঁটি বাটা ১ কাপ
নুন চিনি স্বাদমতো
বেসন ২ কাপ
হলুদ গুঁড়া ১/২ চা চামচ
লঙ্কা গুঁড়ো ১/২ চামচ
সাদা তেল পরিমাণমতো
আদা+কাঁচালঙ্কা বাটা ১/২ চা চামচ
হিং ১ চিমটি
কিভাবে বানাবেন
১ চা চামচ তেল গরম করে তাতে হিং, আদা কাঁচা লঙ্কা বাটা, নুন, চিনি, কড়াইশুঁটি বাটা দিয়ে কষে ভাজা ভাজা হলে নামিয়ে নিন।
কুমড়ো ফুল পরিস্কার করে ওতে পুর ভরে রাখুন।
বেসন, নুন, হলুদ, পরিমাণ মতো জল দিয়ে ঘন মিশ্রন বানিয়ে নিন।
তেল গরম করে কুমড়ো ফুল ও মিশ্রনে ডুবিয়ে সোনালী করে ভেজে তুলে নিন।
নিমপাতা শুক্তো
কী কী লাগবে
১ কাপ নিমপাতা
১ কাপ ছোট করে আলু কাটা
১ কাপ পেঁপে কাটা
১ কাপ কাঁচকলা কাটা
১ কাপ বেগুন কাটা
হাফ চা চামচ পাঁচফোড়ন
৫ – ৭ টি বড়ি
২-৩ টি তেজপাতা
৩ টে শুকনো লঙ্কা
১ টেবিল চামচ আদা বাটা
১ টেবিল চামচ পোস্ত বাটা
১ টেবিল চামচ চারমগজ বাটা
১ কাপ দুধ
স্বাদমতো চিনি
স্বাদমতো নুন
৪ টেবিল চামচ সরষের তেল
কিভাবে বানাবেন
কড়াই এর মধ্যে সরষের তেল গরম করে তাতে বড়িগুলি ভেজে তুলে রাখতে হবে।
তারপর নিমপাতা ভেজে তুলে রাখতে হবে।
এরপর কড়াইয়ের তেলের মধ্যে পাঁচফোড়ন, তেজপাতা, শুকনোলঙ্কা ভাল করে ভেজে নিতে হবে।
এর মধ্যে আদা বাটা এবং নুন দিয়ে দিতে হবে।
সমস্ত সবজি দিয়ে দিতে হবে। উষ্ণ গরম জল দিয়ে ঢাকা দিয়ে রাখতে হবে।
ঢাকা খুলে পোস্ত বাটা, চারমগজ বাটা, দুধ, প্রয়োজনমতো মিষ্টি দিয়ে, ভেজে রাখা বড়ি এবং ভেজে রাখা নিমপাতা দিয়ে গরম গরম পরিবেশন করুন ‘নিমের শুক্তো’।
ডাব চিংড়ি
কী কী লাগবে
চিংড়ি মাছ ৩০০ গ্রাম
সাদা সরষে ১ চামচ+কালো সরষে ১চামচ+ ৩ টে কাঁচালঙ্কা+ নুন দিয়ে বাটা
ডাবের ভেতরের শাস বাটা হাফ কাপ
নারকেলের দুধ ৩ টেবিল চামচ
২ কাঁচা লঙ্কা চেরা
নুন চিনি স্বাদ অনুযায়ী
সর্ষের তেল ৪ টেবিল চামচ
হলুদ গুঁড়ো ১ চা চামচ
একটা ডাব
কিভাবে বানাবেন
ধুয়ে পরিষ্কার করা চিংড়ি মাছ কে প্রথমে নুন হলুদ মেখে রাখতে হবে।
এবার একে একে সরষে বাটা, ডাবের মালাই /শাস বাটা টা, কাঁচা লঙ্কা, স্বাদ অনুযায়ী নুন চিনি, হলুদ গুঁড়ো, কাঁচা সরষের তেল এবং নারকেলের দুধ দিয়ে মাছ টাকে ভালো মত মেখে নিন।
ডাবের মুখটা গোল করে এমনভাবে কেটে নিতে হবে যাতে ভেতরে চিংড়ি মাছটা ভরতে সুবিধা হয় কেটে নেয়ার পর ডাবের ওপরের ঢাকনাটা রেখে দিতে হবে।
এবার মসলা দিয়ে মেখে রাখা মাছটা চামচের সাহায্যে ডাবের ভেতরে ভরে নিন এবং ওপরে ঢাকনাটা দিয়ে বন্ধ করে আটা মাখা দিয়ে সিল করে দিন। এবার কড়াইতে কিছুটা জল গরম করে তার মধ্যে একটা ছোট বাটির ওপর ডাবটা বসিয়ে দিন এবং ওপর থেকে ঢেকে দিয়ে প্রায় কুড়ি মিনিট মত ভাপে হতে দিন।
এটা মাইক্রো ওভেনেও করা যায় সে ক্ষেত্রে মাইক্রো মোডে ফুল পাওয়ারে ১০ থেকে ১৫ মিনিট রান্না করলেই ডাব চিংড়ি তৈরি হয়ে যাবে।
যেভাবেই রান্না করুন না কেন গ্যাস বন্ধ করে বা মাইক্রোওভেন অফ করার পর কিছুক্ষণ ওভাবেই রেখে দিন ডাবটা।
খানিকটা ঠান্ডা হলে ওপরের আটার সিল খুলে পরিবেশন করুন গরম গরম ভাতের সাথে।
রেসিপি এবং ছবি সৌজন্যেঃ সুনন্দা মজুমদার
Comments