‘অদ্ভুত আঁধার এক এসেছে এ-পৃথিবীতে আজ।’
২০২০ পলে পলে মনে করিয়ে দিচ্ছে জীবনানন্দের পংক্তি। অসহনীয় দুঃস্বপ্নের দিকে যেন ধাপে ধাপে এগিয়ে চলেছি আমরা। ঘরবন্দী, কর্মহীন, স্থিতিহীন জীবনের সমাপ্তি খুঁজছে সারা দুনিয়া। সামাজিক দূরত্বে থাকতে থাকতে ক্রমাগত হারিয়ে ফেলছি নিজেদেরই। করোনার সংক্রমণের হিসেব-নিকেশ, আক্রান্ত-মৃতের পরিসংখ্যান, সীমানাবিহীন কর্মহীনতা, সার্বিক ক্ষতির আশঙ্কায় দিন গুণছি সবাই। আর এইসব মন খারাপের দিনে চলে যান আমাদের প্রিয় মানুষেরা। আমরা হারিয়ে ফেলি মাত্র তেপান্ন বছরের প্রিয় অভিনেতাকে, আমাদের ‘মকবুল’, আমাদের ‘পান সিং’ ইরফানকে। বড় তাড়াতাড়ি চলে গেলেন ইরফান। বিদায় জানানো মন নরম হওয়ার আগেই খবর আসে আবার আরব সাগরের তীর বেয়ে। এবারে ঋষি কাপুর। আজীবনের চকোলেট বয়। ক্যানসার লড়াইয়ে বাজি হেরে যাওয়া দুই যোদ্ধা। সাত-সকালের খবর বাসি হওয়ার আগেই বিদায় জানালেন বাঙালির ময়দানের রাজা চুনী গোস্বামী। তাড়া কি এতই বেশি ছিল? নাকি এসব এই ‘বিষ’ বছরের অভিসম্পাত?
তবু এই বেদনাভার বয়ে নিয়ে গুজরান করতেই হবে আমাদের লকডাউনের কঠিন দিনগুলো। নিজের পছন্দের কাজ খুঁজে নিতে হবে নিজেদেরই, পাশে থাকতে হবে স্বজনের। বিনোদন এখন নেহাতই এক পরিহাস মাত্র। তার নাম বরং দেওয়া যাক বেঁচে থাকার রসদ। আমাদের ইন্টারনেট সংস্করণের দ্বিতীয় সংখ্যায় আপনাদের জন্য রইল শাক-সবজির গুণাগুণ। কোন অসুখে কোনটা খাবেন, আর কোনটা খাবেন না? অসুখমুক্ত পৃথিবী গড়ার যুদ্ধে কোমর বেঁধে লেগে পড়ি সবাই। উদ্যোগ তাই সুস্থ থাকার।
ওদিকে বৈশাখ মাস এসেছে, গরম পড়েছে মৃদুমন্দ। দুপুর-বিকেল আশমান কালো করছে কালবৈশাখী। এই সময় মন চায় মিঠে আম, কাঁচা আম। এ বছর সেসব ইচ্ছের রাশ ভারী। তবু যারা কিনতে পারছেন, বা বাড়ির গাছ ঝাঁকিয়ে ঝুড়ি ভর্তি করছেন, তাঁদের জন্য রইল ফলের রাজার সরেস রেসিপি। মন ভালো করার জন্য নতুন রেসিপির কিন্তু জুড়ি নেই, আর তা যদি আমের হয়, তাহলে তো পোয়াবারো।
ভালো থাকুন, সুস্থ থাকুন, নিয়ম মানুন। সামাজিক দূরত্ব বাড়লে মানসিক দূরত্ব কমাই চলুন।
দেবযানী মুখোপাধ্যায়
সম্পাদক