top of page
Search

বেশি ওজন=মরন ফাঁদ, ভীত নয় সচেতন হোন

বিষয়টা আর পাঁচটা বিষয়ের মতো মোটেই উপেক্ষা করার নয়। এই মুহূর্তে ওবেসিটি যেভাবে গোটা বিশ্বে জাল ছড়িয়েছে, তার পরিণাম মৃত্যু ছাড়া অন্য গত্যন্তর নেই। বিশ্ব পরিক্রমা করে একেবারে সাম্প্রতিক ছবির পর্যালোচনা সঙ্গে এর হাত থেকে মুক্তি এবং সুস্থভাবে বেঁচে থাকার পথের আলোচনায় টিম অনন্যা।



সুতনু বরাবর চেয়েছিল, তাদের একটা ফুটফুটে মেয়ে হোক। কিন্তু তা হল না। তাতে সুতনু যে আপসেট, এমনটা নয়। বছর দুই পর আবার সম্ভাবনা এলে ঋদ্ধি সুতনুকে বলেছিল, 'এবার তোমাকে একটা মিষ্টি মেয়ে দেবো মশাই! সুতনু ভাবতো, ছোট্ট ছিপছিপে গড়নের মেয়ে হবে, মাথা ভর্তি চুল। ফোকলা দাঁত নিয়ে মিষ্টি মিষ্টি হেসে যাবে। ঋদ্ধি বলেছিল মেয়ে হলে নাম রাখব সুবর্ণা। সুতনু বলেছিল না, মেয়ের নাম হবে বৃষ্টি। ছেলে মেঘ আর মেয়ে বৃষ্টি। মেঘ বৃষ্টি নিয়ে আমাদের সংসার। আমাদের দু' কামরার পৃথিবী। সরু সরু ছোট্ট ফোঁটা, ভিজিয়ে দেবে আমাদের। ঋদ্ধি আচমকাই বলে উঠেছিল, বৃষ্টির ফোঁটা মোটাও হয় কিন্তুা যখন সুতনুকে নার্স ডেকে দেখাল, যে ওর মেয়ে হয়েছে, তখন সুতনুকে আর পায় কে। সে কি আনন্দ, আর আনন্দ... ডক্টর সুতনুকে বলেছিলেন, অভিনন্দন মিস্টার রয়। মেয়ে তো এমনি ঠিকই আছে। একটু ওভার ওয়েট। বেশ চলছিল। মেঘ, বৃষ্টি, ঋদ্ধিকে নিয়ে সুতনুর জমজমাট সংসার। মেঘ বৃষ্টি যখন যা চাইছে, সুতনু তা নিয়ে হাজির। যা খেতে চাইছে, তাই-ই।




মেঘ বৃষ্টির প্রকৃতি আলাদা। মেঘের খাওয়া নিয়ে কোনও সমস্যা নেই। যা দেওয়া হবে, তাই খেয়ে নেবে লক্ষ্মীছানার মতো। খুব হাইপার। নো ইনডোর গেমস। ছোটাছুটি, লাফালাফি। আর বৃষ্টি? একেবারে ঘরকুনো। বাইরের জগতের সঙ্গে কোনও যোগাযোগই নেই। কার্টুন চ্যানেল, কম্পিউটার আর ইনডোর গেমস। টিচাররাও বলেন, বৃষ্টি বড়ই অলস। তবে হ্যাঁ, খাবার বিষয়ে ওকে নিয়ে কোনও সমস্যা নেই। তা যদি চটর পটর হয়, তাহলে তো কথাই নেই। ছোটবেলায় প্রায় জোর করেই খাওয়ানো হত। দিদুন মনে করতেন, বেশি করে না খেলে হৃষ্টপুষ্ট হবে না যে। মেয়ে মানুষ, ভালো করে খেতে হবে না। এই করে করে মেয়েটা গাট্টাগোট্টা হয়েছে বেশ। আর পাঁচটা বন্ধুর থেকে ও বেশ এগিয়ে। ভাত ডালে যত অরুচি, পিৎজা, বার্গার খেতে খুব পছন্দ করে। পছন্দ চকলেটে। প্যাকেট চিপসে রুচির অভাব দেখা যায় না। চলছিল তো। এরই মধ্যে একদিন স্কুল থেকে ফোন। বৃষ্টি হঠাৎ অসুস্থ হয়ে পড়েছে। মা ছুটল। বাবার অফিসে ফোন। বাবা সুতনুও ঊর্ধ্বশ্বাসে গাড়ি উড়িয়ে মেয়ের স্কুলে। সেখান থেকে হাসপাতাল। নামি হসপিটালের দামি বেডে শুয়ে সুতনু ঋদ্ধির মেয়ে বৃষ্টি। আরএমও এসে জানালেন, কার্ডিওলজিস্ট ডাঃ চক্রবর্তীর আন্ডারে।

মা ঋদ্ধি জানতে চাইলেন, কেন? ডাঃ চক্রবর্তী কেন? কী হয়েছে মামনের? হার্টের কোনও সমস্যা?

হ্যাঁ, আসলে বৃষ্টির একটা অ্যাটাক করেছিল। তেমন মারাত্মক না হলেও... স্যার আপনাদের সঙ্গে কথা বলতে চান। বিকেলে ক্যাথ ল্যাবে ওরা দুজন দেখা করলেন ডাঃ চক্রবর্তীর সঙ্গে। ডাঃ চক্রবর্তী ওদের দেখা মাত্র খুব বকলেন। 'আরে, করেছেন কী? মেয়েটার তো সর্বনাশ করে ফেলেছেন। এইটুকু বয়েসে...


বৃষ্টি ওবেসিটির শিকার। ওর বয়সের তুলনায় ওর শরীরী ওজন অনেক বেশি। ঠিক করে খাওয়া দাওয়া, একটু পরিশ্রম করানোর দরকার ছিল। এই বয়সে হার্টের ব্যামো, এতো ভালো কথা নয়! ঋদ্ধি এমনিতে বুদ্ধিমতী। কিন্তু মেডিকেল সায়েন্সে সে সরস্বতী। জ্বরে ক্যালপল আর অম্বলে জেলুসিলের বেশি আর এগোয়নি। ডাক্তারবাবুর কথা শেষ না হতেই ফস করে বলে ফেলল, ওবেসিটি? মানে তো মোটা। মামন এমন কি মোটা। ওর থেকে সহেলি আরও মোটা। তাহলে ওরও কি ওবেসিটি আছে? এইতো গত মাসে ওর পেটের ব্যাথায় কিছু খুঁজে না পেয়ে ডাক্তারবাবু বললেন, থাইরয়েডের টেস্ট করানো দরকার। করানো হল টেস্ট। ডক্টর বললেন, সবই তোনর্মাল। তাহলে, কেন এমন হল...

ডাঃ চক্রবর্তী বুঝলেন, এদের কাউন্সেলিং দরকার। শুধু এরা কেন, আমাদের দেশের বেশিরভাগ মানুষই জানেন না, তাদের কী হয়েছে? বা যে রোগের কথা বলা হয়েছে, তার সম্পর্কে সম্যক ধারণা?

পরের দিন চলল কাউন্সেলিং এর প্রথম পাঠ।

অতিরিক্ত ওজন:

শরীরে চর্বির পরিমাণ বেড়ে গেছে। অতিরিক্ত ওজন বা স্থূলতা। মানুষের শরীরে স্বাভাবিক অবস্থায় সঞ্চিত চর্বি, মোট ওজনের শতকরা প্রায় ১৪ ভাগ থাকে। সবক্ষেত্রে দেহের ওজন বেশি হলেই স্কুলতা বলা যায় না। যেমন একজন খেলোয়াড়ের দেহের ওজন বেশি থাকতে পারে তার শরীরে সুশৃঙ্খলভাবে বর্ধিত মাংসপেশির জন্য, যা হয়তো ওজন নির্ধারণের ফর্মুলায় ফেললে ওজনাধিক্যের মধ্যে হতে পারে। যাকে কখনই স্থূলতা বলা যাবে না। সে জন্য দেহের জমাট বাঁধা চর্বি পরিমাপের মাধ্যমে ওজনাধিক্য বা স্থূলতা নির্ণয় করা শ্রেয়।




যেভাবে হয়:

অতিরিক্ত ওজন হওয়ার পেছনে মূল কারণ, শরীরের প্রয়োজন থেকে বেশি খাবার খাওয়া অর্থাৎ বেশি ক্যালোরির খাবার খাওয়া। শরীরের প্রয়োজন মেটানোর পর বাড়তি খাবারগুলো চর্বি হয়ে দেহকোষে জমা হয়। কিছু চর্বি শরীরে জমা থাকা দরকার, প্রয়োজনে শক্তি সরবরাহ করার জন্য। কিন্তু চর্বি বেশি জমা হলেই ওজনাধিক্য তৈরি হবে।


শিশু ও কিশোরদের শারীরিক স্কুলতা বা ওবেসিটির হার গত চার দশকে দশগুণ বেড়েছে। তারমানে দাঁড়াচ্ছে, গোটা বিশ্বে বারো কোটি চল্লিশ লক্ষ ছেলে মেয়ে এখন অতিরিক্ত মোটা। প্রতিষ্ঠিত গবেষণা প্রতিষ্ঠান ল্যানচেট দুশোটির বেশি দেশের ওবেসিটির প্রবণতা বিশ্লেষণ করে এই সিদ্ধান্তে পৌঁছেছে। গবেষণায় আমরা দেখতে পাচ্ছি, যুক্তরাজ্যে ৫ থেকে ১৯ বছর বয়সীদের মধ্যে প্রতি ১০ জনের এক জনই ওবিস। এই ভবিস শিশুরা ভবিষ্যতে ওবিস পূর্ণ নাগরিক হয়েই বেড়ে ওঠে। আর তারা মারাত্মক স্বাস্থ্য ঝুঁকিতে জীবন কাটায়, জানাচ্ছেন বিশেষজ্ঞরা। গবেষণা সংস্থা সাবধানতার লক্ষণরেখা টেনে জানিয়ে দিয়েছেন, যে হারে বিশ্বে ওবেসিটি বাড়ছে, তাতে ২০২৫ সালে আক্রান্তের সংখ্যা দাঁড়াবে ৯২০ বিলিয়ন পাউণ্ড। প্রধান গবেষক এবং এম্পেরিয়াল কলেজ, লন্ডনের অধ্যাপক মাজিদ এজ্জাতি জানিয়েছেন যদিও যুক্তরাজ্য সহ উচ্চ আয়ের ইউরোপীয় দেশগুলোতে শিশুদের ওবেসিটির হার নিয়ন্ত্রণে রয়েছে বলে মনে হচ্ছে, কিন্তু বিশ্বের বহু জায়গায় এতা আশঙ্কাজনকভাবে বেড়ে গেছে। গবেষকরা মনে করছেন, এর জন্য মূলত দায়ী, ভুল করে দেয়, এমন খাবারের সহজ লভ্যতা সঙ্গে এসব খাবারের মাত্রাহীন প্রচার।

ওবেসিটি সব থেকে বেড়ে গেছে পূর্ব এশিয়ায়। সম্প্রতি চিন ও ভারতে এই হার ফুলে-ফেঁপে উঠতে দেখা গেছে। পলিনেশিয়া এবং মাইক্রোনেশিয়ায় সব থেকে ওবেসিটির হার বেশি।

'প্রথম পাঠ' থেকে বেরিয়ে সুতনু ও ঋদ্ধির মাথা বনবন করছে। ডঃ চক্রবর্তীর কথা অনুযায়ী ওরা অ্যাপয়েন্টমেন্ট করল, মেডিসিনের অধ্যাপক ডাঃ বোসের কাছে। বৃষ্টিকে নিয়ে কথা বলতে হবে।

ডাঃ বোসের কাছে মেয়েকে নিয়ে বাবা মা হাজির। ডাঃ বোস সব শুনে বললেন। যা হওয়ার তাই হয়েছে। এখন আপনাদের অনেক সতর্ক হতে হবে। ওকে আপনারা মানসিক উৎসাহ দিন।

ওজন কমাতে আপনাদের আগে এগিয়ে আসতে হবে। বড়দের নিজের ব্যাপারে নিজেকেই দায়িত্ব নিতে হবে। কিন্তু তাই বলে নিতান্তই একা নয়। বড়রা মানসিক জোর পেতে পারেন তাদের সঙ্গীর কাছ থেকে, বন্ধুদের কাছ থেকে। এমন মানুষ নির্বাচন করতে হবে যে আপনাকে মূল্য দেবে। আপনার কথা শুনবে। আপনার শরীরচর্চার সময় আপনাকে সঙ্গ দেবে।

পুষ্টিকর খাবার খেতে দিন:

নতুন করে খাদ্যাম্রস শুরু করতে হবে, যাতে খাদ্যে ক্যালোরির পরিমাণ কমে যায়। মনে রাখতে হবে করলোরি কমাতে খাবারের রুটিন, তৃপ্তি ও খাদ্য তৈরির সহজ পদ্ধতির কোনোটিই যেন বাদ না যায়। সবচেয়ে ভালো পথ, আপনি বেশি বেশি ফল, সবজি এবং আঁশজাতীয় খাবার খান। সব সময় চেষ্টা করুন যেন প্রতিদিনের খাবারে বৈচিত্র্য থাকে। এবং রুচি ও পুষ্টি অপরিবর্তিত থাকে। কাজের মধ্যে থাকার চেষ্টা করুন।

শুধু খাদ্য নিয়ন্ত্রণই ওজন কমাতে পারে না। প্রতিদিনের খাদ্যতালিকা থেকে ৫০০ ক্যালোরি অন্তত কমাতে হবে। বড়দের ক্ষেত্রে ওজন কমতে পারে প্রতি সপ্তাহে আধ কেজি। আবার ৩৫০০ ক্যালোরি কমালেই মাত্র ১/২ কেজি ফ্যাট কমবে। তাই প্রতিদিন হাঁটা উচিত। সপ্তাহে অন্তত ৪ দিন, প্রতিদিন ৪০ থেকে ৬০ মিনিট স্বতস্ফূর্ত হাঁটলে তার ক্যালোরি কমবে।


ওজন কমাতে কেন শরীর চর্চা করবেন?

শরীর চর্চার উদ্দেশ্য হল ক্যালোরি পোড়ানো, কতটুকু ক্যালোরি খরচ হলো তা নির্ভর করে আপনার শরীরচর্চার পরিমাণ ও কত সময় ধরে করলেন তার ওপর। সবথেকে ভালো উপায়, প্রতিদিন ৩০ মিনিট হাঁটা। এছাড়া লিফটে না উঠে সিঁড়ি দিয়ে ওঠা, যতটা সম্ভব আশপাশের বাজারঘাট, কাজকর্ম হেঁটেই করার চেষ্টা করুন। জেনে রাখুন, বর্তমান আমাদের দেশে প্রায় ২৫ শতাংশ মানুষ এই অবস্থার শিকার। এই মুহূর্তের রিপোর্ট অনুযায়ী পৃথিবী জুড়ে স্কুলতাই মৃত্যুর অন্যতম কারণ হিসেবে চিহ্নিত।

ওজন নিয়ন্ত্রণ করার কিছু টিপস:

আমরা বুঝতে পারি না শরীরের ওজন কেন বাড়ছে বা কীভাবে বাড়ছে। এজন্য আসলে নগরকেন্দ্রিক লাইফস্টাইল-ই দায়ী। এছাড়াও ত্রুটিপূর্ণ খাদ্যাভ্যাস, বংশগত কারণেও ওজন বেড়ে থাকে। ওজন বৃদ্ধি যে কারণেই হোক না কেন অতিরিক্ত ওজন বিভিন্ন শারীরিক সমস্যা ও রোগের জন্ম দেয়। ওজনাধিক্যের কারণে ডায়াবেটিস, উচ্চরক্তচাপ, হৃদরোগ, কিডনি সমস্যা, বাত, জয়েন্টে পেন ইত্যাদি রোগ দেখা দেয়। সাম্প্রতিকগবেষণায় দেখা যাচ্ছে যে, বিভিন্ন ধরণের করনসারের সঙ্গে ওজনাধিক্যের সম্পর্ক রয়েছে। এছাড়া বাড়তি ওজনের জন্য অনেক সময় সামাজিকভাবেও হেনস্তা হতে হয়। এটা ভূক্তভোগী মাত্রই জানেন। এই জটিলতা কমানোর জন্য ওজন নিয়ন্ত্রণ একান্ত প্রয়োজন।


ওজন কমানোর জন্য আগে জানতে হবে আপনার আদর্শ ওজন কত?

আদর্শ ওজনের চেয়ে কত বেশি আছে, কোনও শারীরিক সমস্যা আছে কিনা। এইবিষয়গুলো সম্পর্কে ভালোভাবে জেনে ওজন নিয়ন্ত্রণে মনোযোগী হতে হবে। ওজন নিয়ন্ত্রণের জন্য প্রয়োজন আপনার একান্ত আগ্রহ আর মোটিভেশন। ব্যক্তির যদি একান্ত আগ্রহ থাকে তবে কাঙ্ক্ষিত লক্ষ্যে পৌঁছানো সহজ হবে। এক্ষেত্রে পথ্যের বড় ভূমিকা আছে বইকি। পথ্য নির্বাচনের আগে আপনার দৈনিক করলোরি চাহিদা সম্পর্কে জানতে হবে। তারপর খাদ্য তালিকায় কালোরিবহুল খাদ্য কমিয়ে কম করলোরিযুক্ত খাবার যোগ করতে হবে। মনে রাখতে হবে, প্রয়োজনের অতিরিক্ত করলোরি শরীরে মেদ জমতে সাহায্য করে।

খেতে বাধা নেই:

সবধরনের শাক-সবজি, ফলমূল, মাছ, মুরগীর মাংস, দুধ, কুসুমছাড়া ডিম, দই খান। পরিমিত পরিমাণে খাবার খেতে পারেন। যেমন ভাত, রুটি, পাউরুটি ও খাসির মাংস (চর্বি ছাড়া) বাদাম ইত্যাদি।

একেবারেই খাবেন না:

মিষ্টি ও মিষ্টি জাতীয় খাবার, চর্বি, মাখন, ঘি, পনির, তেলে ভাজা খাবার, ফাস্টফুড, চকলেট আইসক্রিম ইত্যাদি। খাদ্য নিয়ন্ত্রণের সঙ্গে দরকার পর্যাপ্ত ঘুম ও শারীরিক পরিশ্রম। ব্যায়াম করা সম্ভব না হলে দৈনিক কমপক্ষে ১ ঘন্টা হাঁটতে হবে। আর একবার ওজন নিয়ন্ত্রণে এলে চেষ্টা করতে হবে যাতে পুনরায় বেড়ে না যায়।

কলা খেয়ে অতি সহজে কমান ওজন পাকা কলা ওজন কমানোর ক্ষেত্রেও সদর্থক ভূমিকা পালন

করতে পারে। সম্প্রতি ওয়েট ম্যানেজমেন্ট প্রোগ্রাম অফ আটলান্টা তাদের একটি গবেষণাপত্রে জানিয়েছে এই তথ্য। গবেষণাপত্রে বলা হয়েছে, প্রতিদিন দু'টো পাকা কলা খাওয়ার অভ্যাস নানাভাবে উপকার করে শরীরের। শরীরে অতিরিক্ত মেদ ও ভুঁড়ি হতে দেয় না।


কীভাবে কলা ওজন কমাতে সাহায্য করে?

গবেষণাপত্রে বলা হচ্ছে-

• পাকা কলায় থাকে প্রচুর পরিমাণে পটাসিয়াম। এই পটাসিয়াম শরীরে জল জমে থাকতে বাধা দেয়। ফলে পেট ফুলে যাওয়া বা শরীরের অন্য কোনও অংশে জল জমার কারণে সেই অংশ ফুলে থাকার সমস্যা থেকে মেলে নিষ্কৃতি। ফলে শরীর অনেকটা রোগা দেখায়।

• পাকা কলা ভিটামিন বি-তে সমৃদ্ধ। ভিটামিন বি শরীরে মেদ জমতে বাধা দেয়। যেসব জিন মেদ জমার জন্য দায়ী, সেগুলিকে সরাসরি প্রভাবিত করে ভিটামিন বি। ফলে শরীরের, বিশেষত পেটের মেদ হ্রাস পায়।

• নিয়মিত কলা খাওয়ার অভ্যাস তেল-মশলাযুক্ত খাবার খাওয়ার ইচ্ছে হ্রাস করে। ফলে ওজন কমানো সহজ হয়। • কলায় প্রচুর পরিমাণে প্রো-বায়োটিক উপাদান থাকে। ফলে অস্ত্রে উপকারী ব্যাকটেরিয়ার পরিমাণ বৃদ্ধি পায়। পরিণামে হজমের উন্নতি হয়। আর হজমের উন্নতিহলে চট করে শরীরে মেদ জমতে পারে না।

হতে পারে প্রতি সপ্তাহের ডায়েট চার্ট:

সম্পূর্ণরূপে অ্যালকোহল জাতীয় পানীয় বর্জন করুন। অবশ্যই প্রতিদিন ৩-৭ লিটার জল খেতেহবে। লেবু জল, সোডা জল, কফি, চা ইত্যাদি পানীয় পান করতে পারবেন তবে ক্রিম, ক্রিমজাতীয় খাবার ও চিনি একেবারে বর্জন করতে হবে।

১ম দিন

কলা ছাড়া যত ইচ্ছে ফল খান, অন্য কোনও খাবার খাবেন না।

২য় দিন

পছন্দ অনুযায়ী শাক-সবজি কাঁচা বা রান্না করে খেতে পারেন। রান্না অবশ্যই মশলা ছাড়া হতে হবে। পছন্দের শাক-সবজি সেদ্ধ করে জল ফেলে অল্প তেলে ভেজে নিন

লবণসহ।

তৃতীয় দিন

কলা ছাড়া বাকি ফলমূল শাকসবজি যত ইচ্ছে খাবেন

৪র্থ দিন

এইদিনে আপনি ৮টি মাঝারি আকারের কলা ও ২০০ মিলি দুধ খাবেন। অন্য কিছু নয়।

৫ম দিন

অল্প পরিমাণ চর্বিহীন মাংস ও ৬টি টমেটো খান।

৬ষ্ঠ দিন

এইদিন ইচ্ছেমতো চর্বিহীন মাংস ও শাক- সবজি খাবেন।

৭ম দিন

এই দিন বাদামি চাল, ফলের রস এবং সকল প্রকার শাক-সবজি ইচ্ছেমতো খেতে পারেন।

Commentaires


bottom of page