top of page
Search

নবম আন্তর্জাতিক যোগ দিবসে সূর্য্যনমস্কারের খুঁটিনাটি নিয়ে আলোচনায় যোগাচার্য্য মধুবন্তী দে...

Updated: Jun 22, 2023

আজ একুশে জুন, নবম আন্তর্জাতিক যোগ দিবস। এবছরের থিম "বসুধৈব কুটুম্বকম", আন্তর্জাতিক ট্যাগলাইন "হর আঙ্গন যোগ" বা "ঘরে ঘরে যোগ" এবং গ্লোবাল থিম "মানবতা"।



•আজকের দিনে দাঁড়িয়ে প্রতিটি ঘরে ঘরেই আমরা যোগ সম্বন্ধে কিছু না কিছু ধারনা রাখি, তার মধ্যে সূর্য্যনমস্কার একটি ভিন্ন সুপরিচিত বিষয়।


•সূর্য্যনমস্কার শব্দটির আক্ষরিক অর্থ সূর্য্য উপাসনা। বহু প্রাচীন কাল থেকেই আমরা সূর্য্যের পুজা করে আসছি কারন সূর্য্য সুস্বাস্থ্য এবং পরম আয়ুর প্রতীক; এমনকি আধ্যাত্মিক চেতনার ও প্রতীক।এটি কিছু আসনের সংযোজন এবং শ্বাস প্রশ্বাসের বিশেষ সমন্বয়স্বরূপ।


•সূর্য্যপ্রনাম ১২ কি ধাপ নিয়ে গঠিত, তাতে ৭টি আসন রয়েছে যা আমাদের চক্রজাগরন বা কুন্ডলিনী জাগরনের সহায়তা করে, মন্ত্র উচ্চারণ ও শ্বাস প্রশ্বাস তথা প্রানায়ামের উপস্হিতি ও যথাযথ ব্যবহার সূর্য্যপ্রনামকে পূর্নতা প্রদান করে। তাই একে কোনোভাবেই সাধারণ করিয়া বলা যেতে পারে না। এটি আমাদের শারিরীক, মানসিক এবং আধ্যাত্মিক চেতনার বিকাশে সহায়তা করে থাকে।


•সূর্য্যনমস্কার প্রধানত তিনটি তত্ত্ব নিয়ে গঠিত।


১. রূপ

২. লয়

৩. উর্জা


•আসুন দেখে নিই সূর্য্যনমস্কারের ৭টি আসন:

•প্রনামাসন



•হস্তোত্থানাসন


• পদহস্তাআসন



•অশ্ব সঞ্চালন



•অশ্বসঞ্চালন



•অষ্টাঙ্গ নমস্কার


•ভুজঙ্গাসন


এই পাঁচটি আসনের পর থেকে একে একে পর্বতাসন, অশ্বসঞ্চালন, পদহস্তাসন, হস্তাত্থানাসন ও প্রনামাসনের পুনরাবৃত্তি হয়। ৭+৫= ১২ টি ধাপ। তবে এক্ষেত্রে খেয়াল রাখতে হবে ৬ নম্বর আসন'টি অষ্টাঙ্গনমস্কার নামে পরিচিত। এর কখনো পুনরাবৃত্তি হয় না।


এবার আসুন জেনে নিই শ্বাস প্রশ্বাসের ছান্দিক প্রক্রিয়াটি কি রকম:


১. প্রনামাসন : উল্লেখ্যহীন অথবা সাধারন

২. হস্তোত্থানাসন : শ্বাস গ্রহন (পূরক)

৩.পদহস্তাসন: শ্বাস ত্যাগ (রেচক)

৪. অশ্বসঞ্চালন : শ্বাস গ্রহন (পূরক)

৫. পর্বতাসন : শ্বাস ত্যাগ (রেচক)

৬. অষ্টাঙ্গ নমস্কার: শ্বাস প্রশ্বাসহীন(কুম্ভক)

৭: ভূজঙ্গাসন : শ্বাসগ্রহন (পূরক)

৮. পর্বতাসন : শ্বাসত্যাগ (রেচক)

৯.অশ্বসঞ্চালন : শ্বাস গ্রহন (পূরক)

১০. পদহস্তাসন: শ্বাস ত্যাগ (রেচক)

১১. হস্তোত্থানাসন : শ্বাস গ্রহন (পূরক)

১২. প্রনামাসন : উল্লেখ্যহীন অথবা সাধারন


এবার চলে আসা যাক মন্ত্রোচ্চারনে। প্রতিটি আসনের জন্য ভিন্ন ভিন্ন মন্ত্রের উল্লেখ রয়েছে,যা প্রকৃত'ই সূর্য্যের নামের সমার্থক। এছাড়াও কিছু বীজমন্ত্রের উল্লেখ দেখতে পাওয়া যায়, যা ক্রমানুসারে প্রতিটি আসনের পারে পারে উচ্চারণ করা হয়। এই মন্ত্রগুলির নিষ্পত্তি ঋকবেদ থেকে হয়েছে বলে ধারনা করা হয়।


সূর্য্যনমস্কারের প্রধান মন্ত্র হলো:


"আদিত্যস্য নমস্কারাম ইয় কুর্বন্তি দিনে দিনে।

আয়ুঃ প্রজ্ঞাঃ বলম বীর্যম তেজস্তেষাং চ জায়তে।।"


অর্থাৎ যে ব্যাক্তি একদিন সূর্য্যনমস্কার অভ্যাস করেন, তিনি পরমায়ূ, জ্ঞান, বল, জীবনীশক্তি এবং আভ্যন্তরীন প্রভা তথা তেজ শক্তির অধিকারী হন।


•সূর্য্যনমস্কারের উপকারিতা:


১.মাংসপেশীর নমনীয়তা বৃদ্ধি ও সংরক্ষণ কার্য্যে সহায়তা করে।


২.হৃদয় সম্পর্কিত প্রশিক্ষন এবং হরমোনের ক্রিয়ার ভারসাম্য রক্ষায় সহায়তা করে। আসনগুলির ছন্দ আমাদের শরীরের রক্ত সঞ্চালন ঠিক রাখে তথা কোলেস্টরল মাত্রাকে রক্ষনাবেক্ষণ করে।


৩.পাচনক্রিয়া উন্নত করে এবং মেদ ঝরাতে সাহায্য করে।


৪.শক্তিবৃদ্ধিতে সহায়তা করে এবং সচেতনতা বাড়ায়।


৫.পরিপোষক পদার্থ বা পোষকতত্ত্বের পোষন‌কার্যকেও উন্নত করে।


৬.মানসিক শান্তি ও একাগ্রতা বৃদ্ধিতে সহায়তা করে।


৭.কোষ্ঠকাঠিন্য ও অন্যান্য পেট সংক্রান্ত সমস্যাকে দূর করতে সাহায্য করে।


৮.শারীরিক শক্তি বৃদ্ধি ও ধৈর্য্য ক্ষমতা বৃদ্ধি করে।


৯.মানসিক ক্ষমতা বাড়ায় তথা মানসিক স্হিতিশীলতা বৃদ্ধিতে সহায়তা করে।


১০. সৃজনশীলতা বৃদ্ধি করে।


১১.সঠিক শ্বাস প্রশ্বাস ও আসনের সমন্বয় আমাদের দক্ষিন ও বাম মস্তিষ্কের কাজের মধ্যে সুসামঞ্জস্য নিয়ে আসে।


১২. এটি সুন্দর স্বাস্থ্যকর উজ্জ্বল ত্বক, লাবন্য ও শারিরীক মানসিক শক্তির পুনরুজ্জীবন প্রদান করে।


সাবধানতা:


কোন‌ কোন পরিস্থিতিতে সূর্য্যনমস্কার করা উচিত নয়:


১. উচ্চরক্তচাপ

২.স্লিপ ডিস্ক

৩.সাইটিকা

৪.মেন্সট্রুয়েশন

৫.প্রেগন্যান্সির বিশেষ অবস্থা

৬.হার্নিয়া

৭. কার্ডিয়াক ডিস্অর্ডার

৮.আলসার

৯. ভীষন জ্বর


bottom of page