top of page

করোনা থেকে বাঁচতে ও বাঁচাতে শরীরী প্রতিরোধ গড়ে তুলুন ভিটামিন B কে আপন করুন - সমীর চট্টোপাধ্যায়

এই পৃথিবীতে এই মুহূর্তে যে কজন মানুষ বেঁচে আছেন, তাঁরা প্রায় প্রত্যেকেই নিজেকে নতুনভাবে চিনলেন যেন। এমন অভিজ্ঞতা এই প্রথম। এই প্রথম বুঝতে পারলেন, শরীরে জোঝার মত শক্তি না থাকলে শরীর যেকোনও মুহূর্তে বিদ্রোহ ঘোষণা করতে পারে। শিকার হতে পারে বড়সড় বিপর্যয়ের।


অতএব আপনার শরীরকে আপনিই পারেন, যুদ্ধক্ষেত্রের বিজয়ী সৈনিক তৈরি করতে। প্রতিরোধ ক্ষমতা তৈরি করতে। প্রত্যেক মানুষের শরীরেই রোগ প্রতিরোধ করার সহজাত ক্ষমতা থাকে। কিন্তু বিভিন্ন কারণে যেমন দূষণ, ভেজাল খাবার, অপুষ্টি অনিয়মিত জীবনযাপনের ফলে এই রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কমে যেতে থাকে। ফলে সামান্য রোগের কারনেই কাতর হয়ে যেতে হয়। যেখানে করোনার মত ভাইরাসের আক্রমণ থেকে তো বাঁচার কোনও উপায়ই থাকে না। তাই আগে দরকার শরীরের প্রতিরোধ গড়ে তোলা। আর তার জন্য যার দ্বারস্থ হওয়া আগে জরুরি তা হল, ভিটামিন বি-এর। যারা জানেন, তাঁরা বুঝতে পারছেন, আর যারা জানেন না, তাঁরা নিশ্চয়ই জানার জন্য উৎসুক! ‘রোজকার অনন্যা’র সম্পাদক ও প্রকাশক তাঁদের পাঠককুলকে নিরাপত্তার বেস্টনিতে আটকে রাখতে চান। তাই শরীরী প্রতিরোধ গড়ে তুলতে এমনই একটা লেখার বরাদ দিয়েছেন। এ কদিন বাড়িতে বসে পড়াশুনো করা আর বন্ধুবান্ধব, বিশেষত ডক্টর বন্ধু, বিশেষজ্ঞদের সঙ্গে কথা বলা ছাড়া আর কী বা করার ছিল! যা জেনেছি, বুঝেছি, তাই-ই আপনাদের জানাতে চাইছি। উদ্দেশ্য একটাই, আপনারাও ভালো থাকুন, আমরাও ভালো থাকি। তবে আলোচনার শুরুতে একটা কথা বলতে চাই, এই আলোচনার শেষে আপনারা কেউ ভেবে নেবেন না, এটাই চিকিৎসার পথ বা এগুলো মানলে রোগ আপনাকে অ্যাটাক করবে না! সে হয়ত করবে। চিকিৎসার ক্ষেত্রে চিকিৎসক আছেন। তবে এগুলো যদি মেনে খাওয়াদাওয়াটা করতে পারেন, তাহলে যেকোনও রোগের আক্রমণই আপনাকে খুব সহজে কাবু করতে পারবে না।

চলুন, শুরুতে আগে আমরা জেনেনি, ভিটামিন বি কি? কেন তা দরকার আমাদের স্বাস্থ্যের জন্য? আমাদের শরীরের কোষের স্বাস্থ্যের উন্নয়ন করে। আমাদের শরীরের সঠিক ভাবে বেড়ে ওঠার জন্য ভিটামিন অত‍্যন্ত‍্ জরুরি। এদের মধ্যে ভিটামিন বি খুব কার্যকর। ভিটামিন বি এর মধ্যে আবার ৮ টি ভাগ আছে। যেমন ভিটামিন বি ১, ভিটামিন বি ২, ভিটামিন বি ৩, ভিটামিন বি ৪, ভিটামিন বি ৬, ভিটামিন বি ৭, ভিটামিন বি ৮, ভিটামিন বি ১২। এই সব ভিটামিনগুলিকে একসাথে ভিটামিন বি কমপ্লেক্স বলে।



ভিটামিন বি-এর উৎস

ভিটামিন বি আমাদের শরীরের জন্য অতন্ত্য জরুরি। মাছ, মুরগির মাংস, পাঠার মাংস, গম ইত্যাদি খাবারে প্রচুর পরিমানে ভিটামিন বি ১ এবং ভিটামিন বি ২ থাকে। ব্রকোলি, মাশরুম, দই, ভুট্টা, ফুলকপি, আলু, তরমুজ, বাঁধাকপি, কলা, বিভিন্ন ধরণের বেরি ফল ইত্যাদি। সবুজ রঙের সবজি, বীটরুট, দুধ এবং দুধের থেকে যে খাবার হয় যেমন ছানা, চীজেও প্রচুর ভিটামিন বি থাকে।

ভিটামিন বি এর ফল পাওয়ার জন্য আমরা সাধারনভাবে যে খাবারের উল্লেখ করেছি, তা খাওয়াই যথেষ্ট। তবে কারোর কারোর শরীরের গঠন অনুযায়ী প্রচুর পরিমানের ভিটামিন দরকার পরে। অনেক সময় খাবারে সেই ভিটামিন বি-এর পরিমান কম পরে যায়। তখন অনেকেই ভিটামিনের সাপ্লিমেন্ট খেয়ে থাকেন। ভিটামিন সাপ্লিমেন্ট কিন্তু সব সময় চিকিৎসকের পরামর্শ নিয়েই খাওয়া উচিত। যদি একেবারেই আমাদের শরীরে ভিটামিনের ভাটা পরে তাহলেই আমাদের উচিত সাপ্লিমেন্ট খাওয়া। আমাদের উচিত সাধারণ খাবার খেয়ে ভিটামিন বি-এর প্রয়োজন মেটানো।

ভিটামিন বি-এর অভাবে যেসব রোগ হয়

আগেই বলেছি, ভিটামিন বি কিন্তু কোনও একক ভিটামিন নয়, এটি একটি গ্রুপ ভিটামিন। এই গ্রুপে রয়েছে ৮টি ভিটামিন যেগুলোকে একত্রে ভিটামিন বি কমপ্লেক্স বলা হয়। এবার একটু বিশদে বলার চেষ্টা করবো এই ৮টি ভিটামিনের মধ্যে কোনটির অভাবে কি কি রোগ হয়।

* ভিটামিন বি১ বা থায়ামিন-এর অভাবে যেসব রোগ

  • বেরিবেরি রোগে আক্রান্ত হওয়া

  • কার্ডিওভাসকুলার বা হৃৎযন্ত্রের রোগে আক্রান্ত

  • নিঃশ্বাস ছোট হয়ে যাওয়া।বড় করে নিঃশ্বাস নিতে কষ্ট হওয়া

  • পা ঘামা

  • ওজন কমে যাওয়া

  • শর্ট টাইম মেমোরি লস

* ভিটামিন বি২ বা রিবোফ্লেবিন-এর অভাবে যেসব রোগ

  • কৌণিক চাইলাইটিসে আক্রান্ত হওয়া, মুখের কোণে ফাটল ধরা

  • ঠোঁট লাল হয়ে যাওয়া

  • ত্বক শুষ্ক হয়ে যাওয়া

  • শীত ছাড়াও অর্থাৎ যে কোনও সিজনেই ঠোঁট ফাটা

  • মুখের ভেতর প্রদাহ, বিশেষত মুখের আস্তরণের প্রদাহ

  • মুখের আলসার

  • জিহ্বার প্রদাহ

  • গলা ব্যথা দেখা দেওয়া

  • স্ক্রোটাল ডার্মাটাইটিস

  • আয়রণের অভাবজনিত রক্তস্বল্পতা দেখা দেওয়া

  • উজ্জ্বল আলোতে চোখের সমস্যা

  • চোখের চুলকানি

  • কখনও কখনও চোখের রক্তক্ষরণ

* ভিটামিন বি৩ বা নায়াসিনের এর অভাবে যেসব রোগ

  • চুল উঠা বা চুল পড়া

  • বিভিন্ন রকমের চর্মরোগ দেখা দেওয়া

  • ত্বকের বিভিন্ন স্থান ফুলে যাওয়া

  • জিহ্বার উপরে বা নিচে ফুলে ওঠা

  • অনিদ্রায় ভোগা

  • ডায়রিয়ায় আক্রান্ত হওয়া

  • শরীরের বিভিন্ন অঙ্গ দুর্বল হয়ে যাওয়া

  • মানসিকভাবে সিদ্ধান্তহীনতায় ভোগা

  • জীবনযাপনে বিশৃঙ্খলা দেখা দেওয়া

  • হৃদরোগে আক্রান্ত হওয়া

  • স্মৃতিভ্রংশ দেখা দেওয়া অর্থাৎ স্মৃতিশক্তি লোপ পাওয়া



* ভিটামিন বি৫ বা প্যানটোথেনিক অ্যাসিড-এর অভাবে যেসব রোগ

  • অল্পতেই অবসাদে আক্রান্ত হওয়া

  • অনিদ্রায় ভোগা, বার বার ঘুম ভেঙ্গে যাওয়া

  • কারণে অকারণে মাঝে মাঝেই বিষন্নতায় ভোগা

  • মনের মধ্যে মাঝে মাঝেই খিটখিটে ভাব তৈরি হওয়া

  • হঠাৎ হঠাৎ বমি হওয়া

  • প্রায়ই পেট ব্যথা অনুভব করা

  • পা জ্বালা পোড়া হওয়া

  • শ্বাস প্রশ্বাসের সংক্রমণ

* ভিটামিন বি৬-এর অভাবে যেসব রোগ

  • কোনও সংক্রমণ দেখা দিলে তা থেকে প্রায়ই অসুস্থ হওয়া

  • মুখের কোণের ত্বকে ফাটল ধরা

  • জিহ্বা ফুলে যাওয়া বা জিহ্বায় ঘা হওয়া

  • অবসাদে ভোগা

  • পেরেথেসিয়াসে আক্রান্ত হওয়া যাতে হাত ও পায়ে এক ধরণের অসাড়তা দেখা দেওয়া

  • একটু কাজ করলেই ক্লান্ত বোধ করা

  • সাধারণ ঝামেলায় অনেক টেনশন বোধ করা এবং অল্পতেই বিরক্ত হয়ে যাওয়া

  • ত্বক তৈলাক্ত হয়ে যাওয়া, শরীরের বিভিন্ন স্থানে কখনও কখনও লালচে বর্ণ ধারণ করা, বিশেষ করে মুখে ফুসকুড়ি হওয়া।

* ভিটামিন বি৭ বা বায়োটিন এর অভাবে যেসব রোগ

  • অকালে চুল পড়ার সমস্যায়

  • চোখ, মুখ, নাক এবং কখনও কখনও যৌনাঙ্গের চারদিকে লালচে ফুসকুড়ি উঠা

  • চোখের ভেতরটা শুকিয়ে যাওয়া

  • মুখের রুচি হারানো এবং ক্ষুধামন্দায় আক্রান্ত হওয়া

  • জিহ্বার রং পরিবর্তন হওয়া, বিশেষ করে ম্যাজেন্টা হয়ে যাওয়া

  • অলসতা, ক্লান্তি ও অবসাদে পড়া

  • কম ঘুম বা ঘুমহীনতায় ভোগা

  • হাত ও পায়ে অসাড়তা অনুভব এবং কাতরতা বোধ

* ভিটামিন বি৯ বা ফোলেট এর অভাবে যেসব রোগ

  • হালকা বা মারাত্মক অবসাদ দেখা দেওয়া

  • জিহ্বা ফুলে যাওয়া, কখনও কখনও মুখের ভেতর হালকা ঘা হওয়া

  • চুল বর্ণহীন বা ধূসর হয়ে ওঠা

  • শারীরিক দূর্বলতা, বিশেষ করে পরিশ্রমের পর

  • ত্বক ফ্যাকাশে হয়ে যাওয়া

  • শরীরের বিভিন্ন স্থানের চামড়া ফ্যাকাশে হয়ে ওঠা

  • মেজাজ খিটখিটে হয়ে ওঠা

* ভিটামিন বি১২ এর অভাবে যেসব রোগ

  • মাঝে মাঝে হাত, পায়ে অসাড়তা অনুভব করা

  • জিহ্বার মসৃণতা হারিয়ে যাওয়া

  • অবসাদে ডুবে যাওয়া

  • সাধারণ কাজের পর অনেক বেশি শারীরিক দূর্বলতা অনুভব করা

  • মুখে ঘা

  • হঠাৎ হঠাৎ মেজাজের পরিবর্তণ হওয়া

  • দৃষ্টি ঝাপসা হয়ে যাওয়া

  • নিঃশ্বাস নিতে সমস্যা হওয়া

  • মাথা ঘোরা

  • ত্বকের ফ্যাকাশে হয়ে ওঠা

ভিটামিন বি কমপ্লেক্স পাবেন যে খাবারে

ভেবে দেখেছেন কি ডাক্তারবাবুরা কেন সব সময় ব্যালেন্সড্ ডায়েটের কথা বলেন? সুস্বাস্থ্য রাখার জন্য শরীরের প্রয়োজনীয় উপাদান আসে এক এক খাবার থেকে। অর্থাৎ আপনি জানেন যে সুস্বাস্থ্যের জন্যে সব ধরণের খাবারই প্রয়োজন। একই ধরণের খাবারে তা আসা সম্ভব নয়। সব ধরণের ভিটামিন বি শরীরের জন্যে একই কাজ করে না। উপরন্তু, বিভিন্ন ধরণের ভিটামিন বি বিভিন্ন ধরণের খাবার থেকেই আসে। যে সব খাদ্যে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন বি কমপ্লেক্স আছে, আসুন সেগুলো সম্পর্কে এবার বলি।

দেশি মুরগি

আমাদের দেশে সারা বছরই মুরগি পাওয়া যায়। মুরগি অর্থাৎ চিকেন ভিটামিন বি কমপ্লেক্স-এর একটি বড় উৎস। এমনকি, মুরগিতে প্রচুর পরিমাণে প্রোটিন ও মিনারেল রয়েছে যা একজন মানুষের শরীরে প্রয়োজনীয় পুষ্টি সাপ্লাইয়ের জন্যে যথেষ্ট। রান্না করা কিংবা রোস্ট করা মুরগিতে যথেষ্ট পরিমাণে ভিটামিন বি৩ বা নায়াসিন, ভিটামিন বি৫ বা প্যানটোথেনিক অ্যাসিড এবং ভিটামিন বি৬ বা পাইরিডক্সাইন আছে। আমরা জেনেছি যে এই বি ভিটামিনগুলো শরীরের মেটাবোলিজম প্রক্রিয়ার জন্যে প্রয়োজনীয়।

প্রতি ১০০ গ্রাম সাধারণ মুরগিতে রয়েছে

  • ভিটামিন বি২ বা রিবোফ্লেভিন – ৭% আরডিআই

  • ভিটামিন বি৩ বা নায়াসিন – ৬৯% আরডিআই

  • ভিটামিন বি৬ বা পাইরিডক্সাইন– ৩০% আরডিআই

  • ভিটামিন বি১২ বা কোবালামিন – ৬% আরডিআই

সামুদ্রিক মাছ

যদিও মাছেরা তাদের শরীরে ভিটামিন বি১২ ফর্ম করতে পারে না, তবু ভিটামিন বি কমপ্লেক্সের একটা বড় উৎস হচ্ছে বিভিন্ন ধরণের মাছ। মাছেরা তাদের শরীরে থাকা নানা রকমের ব্যাকটেরিয়া দ্বারা সৃষ্ট বি ভিটামিন গ্রহণ ও তাদের কোষে সেগুলো ধারণ করার ক্ষমতা রাখে। সার্ডিনস, ম্যাকেরেল, শেলফিশ এবং স্যামনসহ নানা রকম সামুদ্রিক মাছে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন বি রয়েছে। এসব মাছের শরীরের টিস্যুতে ভিটামিন বি ছাড়াও অন্যান্য পুষ্টির ঘনত্ব আছে। একটা সার্ডিন মাছের ১০০ গ্রামে দৈনিক প্রয়োজনীয় ভিটামিন বি১২ এর ১০০ ভাগ উপাদান রয়েছে। মাছের মধ্যে স্যামন মাছেই সবচেয়ে বেশি ভিটামিন বি পাওয়া যায়।

১০০ গ্রাম রান্না করা স্যামন মাছে রয়েছে

  • ভিটামিন বি১ বা থায়ামিন – ১৮% আরডিআই

  • ভিটামিন বি২ বা রিবোফ্লেভিন – ২৯% আরডিআই

  • ভিটামিন বি৩ বা নায়াসিন – ৫০% আরডিআই

  • ভিটামিন বি৫ বা প্যানটোথেনিক অ্যাসিড– ১৯% আরডিআই

  • ভিটামিন বি৬ বা পাইরিডক্সাইন– ৪৭% আরডিআই

  • ভিটামিন বি১২ বা কোবালামিন – ৫১% আরডিআই

এরপরও স্যামন একটি লো-মারকারি মাছ, যাতে প্রচুর পরিমাণে ওমেগা-৩ ফ্যাট রয়েছে। স্যামনে প্রচুর প্রোটিন ও সেলেনিয়ামও আছে। শুধু স্যামনই নয়, যেকোনও সামুদ্রিক মাছেই এই উপকার পাবেন।


রান্না করা কিংবা সিদ্ধ ডিম

ফ্রাইড, বয়েল্ড ডিম ভিটামিন বি-এর অত্যন্ত বড় উৎস। বস্তুত, ডিমে প্রায় সকল ধরণের বি ভিটামিন পাওয়া যায়। আর ডিমের হলুদ অংশ তো ভিটামিন বি১২ এর দুর্দান্ত উৎস। যা আমাদের শরীরে রক্তের শ্বেত কণিকা তৈরিতে ভূমিকা রাখে। ডিমের মধ্যে শরীরের বিপাক প্রক্রিয়া ঠিক রাখা, ইমিউনিটি সিস্টেমকে কার্যকর রাখা এবং শরীরের সেল বৃদ্ধির জন্যে দরকারি ভিটামিন উপাদান নায়াসিন, বায়োটিন ও পাইরিডক্সাইন রয়েছে। একটি বড় সাইজের ডিমের সাদা ও হলুদ উভয় অংশে ৩৩% বায়োটিন আরডিআই রয়েছে। এছাড়াও ডিমে অন্যান্য ভিটামিন বি রয়েছে প্রচুর।

 
 
 

Comments


ssss.jpg
sssss.png

QUICK LINKS

ABOUT US

WHY US

INSIGHTS

OUR TEAM

ARCHIVES

BRANDS

CONTACT

© Copyright 2025 to Debi Pranam. All Rights Reserved. Developed by SIMPACT Digital

Follow us on

Rojkar Ananya New Logo.png
fb png.png

 Key stats for the last 30 days

bottom of page