জনসাধারণের জন্য খুলে দেওয়া হলো রাষ্ট্রপতি ভবনের অমৃত উদ্যান। কী দেখবেন সেখানে?
- রোজকার অনন্যা
- Mar 26
- 2 min read
রাষ্ট্রপতি ভবন ভারতের রাষ্ট্রপতির সরকারি বাসভবন, যা নয়াদিল্লিতে অবস্থিত। এটি ভারতের সবচেয়ে বৃহৎ ও সুদৃশ্য সরকারি ভবনগুলোর মধ্যে একটি। ৩৩০ একর বিস্তৃত এই ভবনটি শুধু রাষ্ট্রপতির কার্যালয় নয়, বরং এটি ভারতের ঐতিহ্য, ইতিহাস এবং স্থাপত্যশৈলীর এক অনন্য নিদর্শন।

রাষ্ট্রপতি ভবনের পরিচিতি
অবস্থান: রাজপথ, নয়াদিল্লি, ভারত
স্থাপত্যশিল্পী: স্যার এডউইন লুটিয়েন্স
নির্মাণকাল: ১৯১২-১৯২৯ (১৭ বছর)
আয়তন: ৩৩০ একর
কক্ষ সংখ্যা: ৩৪০+
ইতিহাস ও নির্মাণ
ব্রিটিশ শাসনামলে, দিল্লিকে ভারতের নতুন রাজধানী ঘোষণা করার পর ব্রিটিশ গভর্নর-জেনারেলের বাসভবন হিসেবে ১৯১২ সালে রাষ্ট্রপতি ভবনের নির্মাণ শুরু হয়। ১৯৪৭ সালে ভারত স্বাধীন হওয়ার পর, এটি ভারতের রাষ্ট্রপতির সরকারি বাসভবনে রূপান্তরিত হয়।
স্থাপত্যশৈলী
রাষ্ট্রপতি ভবনের স্থাপত্যশৈলী ইন্দো-সারাসেনিক ও ক্লাসিকাল ইউরোপিয়ান স্টাইলের মিশ্রণ।
✔️ ভবনটিতে রয়েছে দালানযুক্ত স্তম্ভ এবং গম্বুজাকৃতির ছাদ
✔️ অভ্যন্তরীণ অংশে মুঘল ও রাজস্থানি নকশা
✔️ প্রধান গম্বুজটি সংস্কৃত "স্তূপ" স্থাপত্যের আদলে তৈরি
রাইসিনা হিল ও মুঘল গার্ডেন
✔️ রাষ্ট্রপতি ভবনটি রাইসিনা হিলের ওপরে নির্মিত
✔️ পিছনের দিকে বিস্তৃত মুঘল গার্ডেন, যেখানে বছরে একবার "উদ্যান উৎসব" হয়
✔️ মুঘল গার্ডেনে বিভিন্ন প্রজাতির ফুল, বিশেষত টিউলিপ, গোলাপ ও অর্কিড রয়েছে
রাষ্ট্রপতি ভবনের গুরুত্বপূর্ণ অংশ
দুরবার হল: রাষ্ট্রপতির শপথ গ্রহণ ও গুরুত্বপূর্ণ অনুষ্ঠানের স্থান
অশোক হল: অভ্যন্তরীণ সজ্জার জন্য বিখ্যাত
রাষ্ট্রপতি গ্রন্থাগার: ঐতিহাসিক গ্রন্থ ও দলিল সংরক্ষণ করা হয়
মুঘল গার্ডেন: দর্শনার্থীদের জন্য অন্যতম আকর্ষণীয় স্থান
কীভাবে পরিদর্শন করবেন?
পরিদর্শনের সময়: প্রতি সপ্তাহে নির্দিষ্ট দিনে দর্শনার্থীদের জন্য উন্মুক্ত
বুকিং: রাষ্ট্রপতি ভবনের সরকারি ওয়েবসাইট থেকে অনলাইনে টিকিট বুকিং করতে হয়
সিকিউরিটি: সরকারি পরিচয়পত্র বাধ্যতামূলক
রাষ্ট্রপতি ভবন কেন দর্শন করবেন?
✔️ ভারতের ঐতিহ্যবাহী স্থাপত্য দেখতে
✔️ ইতিহাস ও প্রশাসনিক গুরুত্ব জানতে
✔️ মুঘল গার্ডেনের সৌন্দর্য উপভোগ করতে
রাষ্ট্রপতি ভবন শুধুমাত্র প্রশাসনিক ভবন নয়, এটি ভারতের গণতন্ত্র, সংস্কৃতি ও স্থাপত্যের এক অনন্য প্রতীক।

কোলকাতা থেকে রাষ্ট্রপতি ভবনে কীভাবে ভ্রমণ করবেন
রাষ্ট্রপতি ভবন নয়াদিল্লিতে অবস্থিত, এবং কোলকাতা থেকে সেখানে পৌঁছানোর জন্য বিভিন্ন উপায় রয়েছে।
বিমান পথে (সবচেয়ে দ্রুত ও সুবিধাজনক)
সময়: প্রায় ২-২.৫ ঘণ্টা (ফ্লাইট) + ৩০-৪৫ মিনিট (এয়ারপোর্ট থেকে রাষ্ট্রপতি ভবন)
বিমানবন্দর: নেতাজি সুভাষচন্দ্র বসু আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর (CCU) → ইন্দিরা গান্ধী আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর (DEL)
এয়ারলাইনস: ইন্ডিগো, এয়ার ইন্ডিয়া, ভিস্তারা, স্পাইসজেট, গো ফার্স্ট
বিমানবন্দর থেকে রাষ্ট্রপতি ভবনে যাওয়ার উপায়:
ক্যাব (উবার/ওলা) (~৪০ মিনিট)
মেট্রো: এয়ারপোর্ট এক্সপ্রেস লাইন → ইয়েলো লাইন সেন্ট্রাল সেক্রেটারিয়েট মেট্রো স্টেশন (~৪৫ মিনিট)
ট্রেনে (সাশ্রয়ী ও আরামদায়ক)
সময়: প্রায় ১৭-২৪ ঘণ্টা
কোলকাতা থেকে দিল্লি যাওয়ার প্রধান ট্রেন:
রাজধানি এক্সপ্রেস – সবচেয়ে দ্রুত (~১৭ ঘণ্টা)
দুরন্ত এক্সপ্রেস – নন-স্টপ (~১৭ ঘণ্টা)
সিয়ালদহ-নয়াদিল্লি এক্সপ্রেস (~২৪ ঘণ্টা)
পূর্বা এক্সপ্রেস (~২২ ঘণ্টা)
নয়াদিল্লি রেলস্টেশন থেকে রাষ্ট্রপতি ভবনে যাওয়ার উপায়:
মেট্রো: ইয়েলো লাইন নয়াদিল্লি মেট্রো স্টেশন → সেন্ট্রাল সেক্রেটারিয়েট স্টেশন (₹৩০, ~১৫ মিনিট)
অটো-রিকশা/ট্যাক্সি (₹১০০-₹২০০, ~১৫-২০ মিনিট)
সড়কপথে (NH19 মাধ্যমে)
সময়: ~২২-২৪ ঘণ্টা
দূরত্ব: ~১,৫০০ কিমি
সেরা রুট: কোলকাতা → ধানবাদ → বারাণসী → কানপুর → আগ্রা → দিল্লি
যাতায়াতের বিকল্প:
নিজস্ব গাড়ি
প্রাইভেট বাস (সময় বেশি লাগে, ~২৮-৩০ ঘণ্টা)
রাষ্ট্রপতি ভবন পরিদর্শনের উপায়
প্রবেশ: সরকারি ওয়েবসাইটের মাধ্যমে অনলাইন বুকিং করতে হয়
ওয়েবসাইট: https://rashtrapatisachivalaya.gov.in
পরিচয়পত্র: প্রবেশের জন্য বাধ্যতামূলক
সেরা সময়: অক্টোবর থেকে মার্চ
Comments