top of page

চোখের নীরব ঘাতক গ্লুকোমা: কী করবেন এই সমস্যায়?

চোখ আমাদের পাঁচটি ইন্দ্রিয়ের মধ্যে অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ। অথচ এমন একটি রোগ রয়েছে, যা ধীরে ধীরে দৃষ্টিশক্তিকে হরণ করে নেয় কোনও রকম ব্যথা বা স্পষ্ট উপসর্গ ছাড়াই। সেই নীরব ঘাতক রোগটির নাম গ্লুকোমা।

গ্লুকোমা কী?

গ্লুকোমা মূলত চোখের স্নায়ু (optic nerve) ধ্বংস করে দেয় এমন এক ধরনের রোগ। চোখের ভিতরের তরল পদার্থ (aqueous humour) নির্দিষ্ট ভারসাম্যে না থাকলে চোখের চাপ (intraocular pressure) বেড়ে যায়। অতিরিক্ত চাপ ধীরে ধীরে স্নায়ুকে ক্ষতিগ্রস্ত করে, যার ফলে চিরতরে দৃষ্টিশক্তি হারিয়ে যেতে পারে।


কেন একে ‘নীরব ঘাতক’ বলা হয়?

গ্লুকোমার প্রাথমিক অবস্থায় কোনও উপসর্গ দেখা দেয় না। ধীরে ধীরে পার্শ্ববর্তী (peripheral) দৃষ্টিশক্তি কমে আসে, কিন্তু চোখের সামনে স্পষ্ট দেখায় বলে রোগী বুঝতে পারেন না। একবার সম্পূর্ণ দৃষ্টি নষ্ট হলে তা আর ফিরে আসে না। তাই একে ‘Silent Thief of Sight’ বলা হয়।


গ্লুকোমার ধরন:

1. প্রাইমারি ওপেন-অ্যাঙ্গল গ্লুকোমা:

সবচেয়ে সাধারণ রূপ। ধীরে ধীরে গঠিত হয়। উপসর্গ কম।


2. অ্যাঙ্গল-ক্লোজার গ্লুকোমা (Acute):

হঠাৎ চোখে ব্যথা, ঝাপসা দেখা, বমি বমি ভাব হতে পারে।


3. সেকেন্ডারি গ্লুকোমা:

অন্য রোগের ফলেও হতে পারে (যেমন চোখে আঘাত, ডায়াবেটিস)।


4. জেনেটিক বা কনজেনিটাল গ্লুকোমা:

শিশুদের মধ্যে জন্মগতভাবে দেখা যায়।


ঝুঁকিপূর্ণ কারা?

৪০ বছরের বেশি বয়সী ব্যক্তি

যাদের পরিবারে গ্লুকোমার ইতিহাস রয়েছে

উচ্চ রক্তচাপ বা ডায়াবেটিস আছে

যাঁরা দীর্ঘদিন স্টেরয়েড ব্যবহার করছেন

চোখে পূর্বে আঘাত লেগেছে

গ্লুকোমার প্রাথমিক উপসর্গ নেই বললেই চলে, তবে কিছু লক্ষণ দেখা দিতে পারে:

চোখে ধূসর বা কুয়াশা জমার মতো দেখানো

রাতের আলোয় রংধনুর মতো বলয় দেখা

পার্শ্ববর্তী জিনিস কম দেখা

চোখে চাপ বা ব্যথা (acute glaucoma হলে)

হঠাৎ দৃষ্টিশক্তি হ্রাস পাওয়া


কী করবেন?

✅ নিয়মিত চোখ পরীক্ষা করুন:

বিশেষ করে ৪০ বছরের পর থেকে বছরে অন্তত একবার চোখের ডাক্তার দেখানো জরুরি।


✅ আইওপি (Intraocular Pressure) পরীক্ষা:

চোখের চাপের মাপ জরুরি।


✅ অপটিক নার্ভ পরীক্ষা ও ভিজুয়াল ফিল্ড টেস্ট:

গ্লুকোমার ডায়াগনোসিসের জন্য প্রয়োজন।


✅ ওষুধ ও প্রয়োজনে অস্ত্রোপচার:

গ্লুকোমা সম্পূর্ণ নিরাময়যোগ্য নয়, তবে ওষুধ, আই-ড্রপ, লেজার বা অস্ত্রোপচারের মাধ্যমে চোখের চাপ নিয়ন্ত্রণে রাখা সম্ভব।


✅ জীবনশৈলীর পরিবর্তন:

চোখে অপ্রয়োজনীয় চাপ না দেওয়া, সময়ে ঘুম, ডায়াবেটিস ও ব্লাড প্রেসার নিয়ন্ত্রণে রাখা।


গ্লুকোমা এমন এক রোগ, যা দৃষ্টি নষ্ট হওয়ার অনেক আগেই ধরা পড়লে নিয়ন্ত্রণে রাখা যায়। কিন্তু সমস্যা হলো, আমরা প্রায়ই চোখের যত্নে যতটা সচেতন থাকা উচিত, থাকি না। তাই এখনই সময় নিয়মিত চেক-আপের অভ্যাস গড়ে তোলার। মনে রাখবেন গ্লুকোমা ঠেকানোর মূল উপায় হল সময়মতো শনাক্তকরণ। চোখ থাকলেই দুনিয়া দেখা যায়। সেই চোখের যত্নে আজ থেকেই সচেতন হই। গ্লুকোমাকে না বলুন, সচেতনতার পথেই দৃষ্টিশক্তি বাঁচান।

Comments


ssss.jpg
sssss.png

QUICK LINKS

ABOUT US

WHY US

INSIGHTS

OUR TEAM

ARCHIVES

BRANDS

CONTACT

© Copyright 2025 to Debi Pranam. All Rights Reserved. Developed by SIMPACT Digital

Follow us on

Rojkar Ananya New Logo.png
fb png.png

 Key stats for the last 30 days

bottom of page