দুদিনের ছুটিতে ঘুরে আসুন বর্গী রাজার প্রাসাদ, ইটাচুনা রাজবাড়ী থেকে।
- রোজকার অনন্যা
- Mar 15
- 2 min read
ইটাচুনা রাজবাড়ী, হুগলি জেলায় অবস্থিত একটি ঐতিহাসিক জমিদার বাড়ি। এটি ১৭৬৬ সালে নির্মিত হয়েছিল এবং বলা হয়, রাজবাড়ীটি মরাঠা বংশোদ্ভূত জমিদারদের দ্বারা প্রতিষ্ঠিত হয়। এর সঙ্গে বাংলায় মরাঠাদের আক্রমণের (বর্গি আক্রমণ) সংযোগ রয়েছে, যার ফলে এটি "বর্গিদের রাজবাড়ী" নামেও পরিচিত।

প্রতিষ্ঠাতা ও জমিদার বংশ:
এই রাজবাড়ীটি সিং দেউ নামে এক মরাঠি জমিদার প্রতিষ্ঠা করেন। তিনি বাংলায় আসার পর এখানকার জমিদারত্ব লাভ করেন এবং রাজবাড়ী নির্মাণ করেন। তাঁর বংশধরেরা বহু প্রজন্ম ধরে এই জমিদার বাড়ির দেখাশোনা করেছেন।
মরাঠা ও বাংলার সম্পর্ক:
১৭৪০-এর দশকে বাংলায় মরাঠাদের আক্রমণের ফলে "বর্গি আক্রমণ" নামে পরিচিত একটি সময় তৈরি হয়।
সেই সময় অনেক মরাঠি বংশের লোকজন বাংলায় স্থায়ীভাবে বসতি গড়ে তোলে এবং জমিদার হয়ে ওঠে।
ইটাচুনার জমিদার বংশও মরাঠি শিকড় থেকে উদ্ভূত বলে মনে করা হয়।
রাজবাড়ীর স্থাপত্য ও বৈশিষ্ট্য:
বিশাল ফটক ও রাজকীয় স্থাপত্য যা বাংলার জমিদার বাড়ির ঐতিহ্য বহন করে।
বাড়ির ভেতরে সুন্দর দালান, অন্দরমহল, প্রাচীন পুকুর ও মন্দির রয়েছে।
রাজবাড়ীর নির্মাণশৈলীতে বাংলা ও মরাঠি স্থাপত্যশিল্পের মিশ্রণ দেখা যায়।

বর্তমান পরিস্থিতি:
বর্তমানে ইটাচুনা রাজবাড়ী একটি হেরিটেজ হোমস্টে হিসেবে পরিণত হয়েছে, যেখানে পর্যটকরা থাকতে পারেন এবং বাংলার জমিদার ঐতিহ্য উপভোগ করতে পারেন। এটি বিভিন্ন সিনেমার শুটিং লোকেশন হিসেবেও ব্যবহৃত হয়েছে, যেমন "লোটন", "পরিণীতা" এবং বেশ কিছু বাংলা ও হিন্দি ছবি।
কিভাবে যাবেন?
ট্রেনে: হাওড়া থেকে খড়গপুর লাইনের খান্যন স্টেশন (Khanyan Station) অবধি ট্রেনে যেতে হবে। সেখান থেকে অটো বা টোটো নিয়ে রাজবাড়ী পৌঁছানো যায়।
গাড়িতে: কলকাতা থেকে প্রায় ৮০ কিমি দূরত্ব, গাড়িতে NH19 (Grand Trunk Road) ধরে ২-৩ ঘণ্টায় পৌঁছানো যায়।

কি দেখবেন?
রাজবাড়ীর স্থাপত্য:
ঐতিহ্যবাহী বাংলার জমিদার বাড়ির বিশাল ফটক, প্রাচীন কারুকার্য ও আভিজাত্যপূর্ণ পরিবেশ।
পুকুর ও বাগান:
রাজবাড়ীর ভেতরে বড় পুকুর এবং সুন্দর বাগান রয়েছে, যা প্রাকৃতিক সৌন্দর্যে ভরপুর।
প্রাচীন মন্দির:
কাছাকাছি কিছু পুরনো মন্দিরও রয়েছে, যেখানে ইতিহাস ও ধর্মীয় গুরুত্ব দেখা যায়।
লোকসংস্কৃতি ও রিসোর্ট অভিজ্ঞতা:
এখন এটি হেরিটেজ হোমস্টে হিসেবে ব্যবহৃত হয়, যেখানে ঐতিহ্যবাহী বাঙালি খাবার ও সংস্কৃতি উপভোগ করা যায়।
কোথায় থাকবেন?
ইটাচুনা রাজবাড়ী নিজেই হেরিটেজ হোমস্টে হিসেবে চালু রয়েছে, যেখানে থাকতে চাইলে আগে থেকে বুকিং করতে হবে। আশেপাশের কিছু রিসোর্ট বা হোটেলেও থাকতে পারেন।
সবচেয়ে ভালো সময় ভ্রমণের জন্য:
শীতকালে (অক্টোবর থেকে ফেব্রুয়ারি) আবহাওয়া সুন্দর থাকে, তাই এটি রাজবাড়ী ভ্রমণের জন্য আদর্শ সময়।
留言