সায়েন্স সিটি থেকে মাত্র ৪১ কিমি গাড়িতে পাড়ি দিলেই পৌঁছে যাবেন রূপকথার রাজ্যে! আক্ষরিক অর্থেই রূপকথার রাজ্য! সেখানে রয়েছে রুপোর কাঠি, সোনার কাঠি। তবে সেসব কাজে লাগে না। এখানকার রূপসী প্রকৃতি সদা জাগ্রত। সোনার কাঠি, রুপোর কাঠি ছোঁয়াতে হবে না। বরং সেই কাঠি ছুঁইয়ে দেবে প্রকৃতির রূপমাধুরী! অপূর্ব মানে অপূর্ব! তার কোনও রকমফের নেই। শুধু 'দেখো রে নয়ন মেলে জগতের কী বাহার'! এই বাহারের হার নেই। শুধুই জিত।

টি-টোয়েন্টির উত্তেজনা নয়, টেস্ট খেলার আনন্দ। অর্থাৎ রয়েসয়ে প্রকৃতির সঙ্গে সখ্য করা, আলাপ করা। জলরাশির ভিতর চোখ কাড়ে সবুজ। এমন সবুজের দেখা মেলেনি বহুদিন। বড় কাছে টানে এখানের প্রকৃতি। জায়গাটির নাম ধুতুরদহ। নামটি হয়তো শোনা কিন্তু যাব যাব করে যাওয়া হয়নি। হয়তো শোনাও হয়নি। এবার তোঘুরে আসুন, হলফ করে বলা যায় ঠকবেন না।

ধুতুরদহ শান্ত একটি গ্রাম। মনের চাপ মুক্ত করার জন্য আদর্শ জায়গা। প্রকৃতির অঢেল সৌন্দর্যে গা-ভাসিয়ে লেকের জলে ছিপ ফেলে মাছ ধরা, ভুলিয়ে দেবে সবকিছু। আগে একটি স্পিড বোট ছিল। ছিল কেন এখনও আছে। তবে চলে না এখন। কোভিডের সময় অব্যবহারে খারাপ হয়ে গেছে। সারাইয়ের ব্যবস্থা হচ্ছে। এখানকার সবুজ দিগন্তে উন্মুক্ত আকাশ দেখতে দেখতে সময় কেটে যাবে কখন বুঝতেই পারবেন না যতক্ষণ না ঘড়ির দিকে নজর যায়! ক্লান্ত শরীর চাঙ্গা করার জন্য সুইমিং পুলে সাঁতার কাটুন। মানসিক চাপ কাটবে, শরীর হবে ফুরফুরে। ভাল লাগবে কলকাতার কাছেই গ্রামজীবনের কাছাকাছি হওয়া।

ধুতুরদহে দেখা যায় স্থানীয় পাখিদের আনাগোনা। তারা ডেকে ডেকে যায় অতিথিদের উদ্দেশে। হয়তো স্বাগত জানায়। লেকের ধারে হাঁটতে বেশ লাগে। মন যেন চলে যায় কৈশোরে বা বাল্যে। মাঠে নেমে পড়ুন খেলতে। যদি পারেন গ্রাম ঘুরে নিন। আপনি যদি আরও একটু বেশি পরিকল্পনা করেন, তাহলে মালঞ্চ দেখার চেষ্টা করুন। কাছেই বিদ্যাধরী নদী। অপূর্ব লাগে নদীর ওপর সূর্যাস্ত দেখতে। রিসর্টে বলুন, ওঁরা ব্যবস্থা করে দেবেন। দেশীয় নৌকা ঘুরে নেওয়া যেতে পারে একচক্কর।

সবমিলিয়ে ধুতুরদহ বেড়ানো দারুণ! নিজেকে লাগবে একেবারে তরতাজা। আপনি যদি মৎস্যপ্রেমী তাহলে ধুতুরদহ থেকে মাত্র ১৫ কিমি দূরে মালঞ্চ। এই ছোট্ট শহরে রয়েছে বিশাল মাছের বাজার। মালঞ্চয় মাছ তো পাবেনই, সঙ্গে উপরি পাওনা ইছামতি আর বিদ্যাধরী নদীর মিলন। এখান থেকে সূর্যাস্ত অসাধারণ। সবকিছু দেখে, উপভোগ করে, মাছ কিনে বাড়ি ফিরুন।
কীভাবে যাবেন:
সায়েন্স সিটি থেকে গাড়িতে বাসন্তী হাইওয়ে ধরে ৪১ কিমি। মিনাখা পৌঁছাতে হবে। কলকাতা থেকে মালঞ্চগামী বাসে বা শেয়ার গাড়িতে মিনাখায় নেমে অটোতে ধুতুরদহ।
Comments