top of page

শিলাইদহ কুঠিবাড়ি, রবিঠাকুরের অমর সৃষ্টির নীরব সাক্ষী!

বাংলা সাহিত্য ও সংস্কৃতির এক অবিচ্ছেদ্য নাম রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর। তাঁর অসংখ্য কালজয়ী রচনা শুধুমাত্র বাংলা ভাষাকেই সমৃদ্ধ করেনি, বরং বিশ্বসাহিত্যের ভাণ্ডারেও অনন্য অবদান রেখেছে। এই মহান কবির সাহিত্যসাধনার এক নির্জন, প্রাকৃতিক, অথচ গভীরতর পটভূমি ছিল শিলাইদহ কুঠিবাড়ি। পদ্মার কোল ঘেঁষে এই নিঃশব্দ প্রাসাদ আজও দাঁড়িয়ে আছে রবীন্দ্রনাথের সৃষ্টির নীরব সাক্ষী হয়ে।

শিলাইদহ কুঠিবাড়ি বর্তমানে কুষ্টিয়া জেলার কুমারখালী উপজেলায় অবস্থিত। ১৮০৭ সালে এটি নির্মাণ করেছিলেন রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের পূর্বপুরুষরা। জমিদারি দেখাশোনার কাজে ঠাকুর পরিবার এই কুঠিবাড়িকে ব্যবহৃত করত। তবে এই বাড়িকে চিরস্মরণীয় করে তুলেছেন কবিগুরু নিজেই-কারণ এখানেই বসে সৃষ্টি করেছেন তিনি গীতাঞ্জলি, সোনার তরী, চিত্রা, চৈতালী, নৌকাডুবি, চোখের বালি সহ বহু অনন্য সাহিত্যকর্ম।


১৮৮৯ সাল থেকে রবীন্দ্রনাথ নিয়মিতভাবে শিলাইদহে যাতায়াত শুরু করেন। কুঠিবাড়ির প্রাকৃতিক সৌন্দর্য, পদ্মার নৌকাবিহার, কৃষকদের জীবনযাত্রা- সব কিছু মিলিয়ে তিনি এখান থেকে গভীরভাবে অনুপ্রাণিত হন। এখানেই তিনি পদ্মা নামে একটি হাউসবোটে থাকতেন এবং রচনা করতেন তাঁর কবিতা, গান ও গল্প।


তিনি নিজেই লিখেছেন,"এই নিস্তব্ধ প্রকৃতির মাঝে মানুষের হৃদয় যেন সহজেই সৃষ্টির সংগীতের সঙ্গে মিলেমিশে যায়।"


ইট-চুন ও লাল ইটের তৈরি দুইতলা এই কুঠিবাড়ির স্থাপত্য ভিন্নধর্মী। এতে রয়েছে প্রশস্ত বারান্দা, উঁচু ছাদ, কাঠের জানালা ও দৃষ্টিনন্দন বাগান। বর্তমানে এটি একটি জাদুঘরে পরিণত হয়েছে, যেখানে রবীন্দ্রনাথের ব্যবহৃত আসবাবপত্র, পাণ্ডুলিপি, ছবিপত্র ও অন্যান্য স্মৃতিচিহ্ন সংরক্ষিত আছে। প্রতি বছর ২৫শে বৈশাখ উপলক্ষে এখানে উদযাপিত হয় “রবীন্দ্র জন্মজয়ন্তী”, যেখানে হাজারো দর্শনার্থী সমবেত হন।

শিলাইদহ ছিল রবীন্দ্রনাথের একান্ত নির্জন সৃষ্টিক্ষেত্র। কলকাতার কোলাহল থেকে দূরে এই স্থান তাঁকে দিয়েছিল এক আত্মিক প্রশান্তি ও সৃষ্টির উদ্দীপনা। ‘গীতাঞ্জলি’ যে কবিকে নোবেল এনে দেয়, তার অনেক কবিতা জন্ম নিয়েছে এই কুঠিবাড়ির বারান্দায় বসে। শিলাইদহ কুঠিবাড়ি শুধু একটি প্রাসাদ নয়, এটি রবীন্দ্রনাথের অনুভবের স্থান, বাংলার চিরায়ত প্রকৃতির সঙ্গে তাঁর অন্তরঙ্গ সখ্যের প্রতীক। বাংলা সাহিত্যের এই তীর্থভূমি আজও আমাদের স্মরণ করিয়ে দেয়- একজন কবির নিঃশব্দ একাকীত্ব কিভাবে বিশ্বসাহিত্যের শ্রেষ্ঠ সৃষ্টি হয়ে ওঠে। কুঠিবাড়ির প্রতিটি ইট, প্রতিটি ঘর যেন এখনো রবিঠাকুরের কলমের শব্দে সুর বাঁধে।


শিলাইদহ কুঠিবাড়ি আজও দাঁড়িয়ে আছে রবীন্দ্রনাথের গানের সুর, কবিতার ছন্দ ও ভাবনার গভীরতাকে বুকে নিয়ে-এক নিরব, অথচ বলিষ্ঠ সাক্ষ্য হয়ে।

Comments


ssss.jpg
sssss.png

QUICK LINKS

ABOUT US

WHY US

INSIGHTS

OUR TEAM

ARCHIVES

BRANDS

CONTACT

© Copyright 2025 to Debi Pranam. All Rights Reserved. Developed by SIMPACT Digital

Follow us on

Rojkar Ananya New Logo.png
fb png.png

 Key stats for the last 30 days

bottom of page