৪০-এর পর চাই চোখের বাড়তি যত্ন..
- রোজকার অনন্যা
- Jun 7
- 2 min read
৪০ বছর পার হতেই শরীরের নানা অঙ্গ-প্রত্যঙ্গের মতো চোখেও ধরা পড়ে বয়সের ছাপ। দৃষ্টিশক্তির স্বাভাবিক হ্রাস, চোখ শুকিয়ে যাওয়া, ঝাপসা দেখা কিংবা রাতে স্পষ্ট দেখতে অসুবিধা, এসবই সাধারণ সমস্যা। তবে একটু যত্ন নিলেই চোখকে রাখা যায় সুস্থ ও সতেজ। আসুন জেনে নিই কীভাবে ৪০-এর পরেও চোখের স্বাস্থ্য বজায় রাখা যায়..

চোখের ব্যায়াম
১. চোখ ঘূর্ণায়মান: চোখ বৃত্তাকারে ঘুরিয়ে নিন। প্রথমে ক্লকওয়াইজ এবং পরে এন্টি ক্লকওয়াইজ।
২. মনোযোগ: একটি বিন্দুতে মনোনিবেশ করুন এবং তারপরে আপনার দৃষ্টি অন্য বিন্দুতে স্থানান্তর করুন, প্রক্রিয়াটি পুনরাবৃত্তি করুন।
৩. ম্যাসাজ: রক্ত সঞ্চালন উন্নত করতে বৃত্তাকার গতিতে আপনার চোখ আলতো করে ম্যাসাজ করুন।
খাদ্য এবং পুষ্টি
১. ওমেগা-৩ সমৃদ্ধ খাবার: চোখের স্বাস্থ্য বজায় রাখতে আপনার খাদ্যতালিকায় স্যামন, আখরোট এবং চিয়া বীজের মতো ওমেগা-৩ সমৃদ্ধ খাবার অন্তর্ভুক্ত করুন।
২. পাতাযুক্ত সবুজ শাকসবজি: লুটেইন এবং জেক্সানথিন সমৃদ্ধ শাকসবজি, পালং শাক এবং কলার্ড শাকসবজি খান, যা ম্যাকুলাকে রক্ষা করে।
৩. ভিটামিন-এ সমৃদ্ধ খাবার: কর্নিয়া এবং রেটিনাকে সমর্থন করার জন্য আপনার খাদ্যতালিকায় ভিটামিন এ সমৃদ্ধ খাবার যেমন মিষ্টি আলু, গাজর এবং গাঢ় পাতাযুক্ত সবুজ শাকসবজি অন্তর্ভুক্ত করুন।

চোখের সুরক্ষা
১. ইউভি সুরক্ষা: ইউভি রশ্মির ক্ষতি রোধ করতে ইউভি সুরক্ষা সহ সানগ্লাস পরুন।
২. নীল আলো সুরক্ষা: ডিজিটাল ডিভাইস থেকে চোখের চাপ কমাতে নীল আলো ফিল্টারিং চশমা বা অ্যাপ ব্যবহার করুন।
৩. চোখ সুরক্ষা সরঞ্জাম: খেলাধুলা, ডি আই ওয়াই প্রকল্প বা অন্যান্য কার্যকলাপের সময় প্রতিরক্ষামূলক চশমা পরুন যা আপনার চোখের জন্য ঝুঁকি তৈরি করতে পারে।
নিয়মিত চেক-আপ
১. বার্ষিক চক্ষু পরীক্ষা: আপনার চোখের স্বাস্থ্য পর্যবেক্ষণ করতে এবং সম্ভাব্য সমস্যাগুলি আগে থেকেই সনাক্ত করতে বার্ষিক চক্ষু পরীক্ষার সময়সূচী করুন।
২. গ্লুকোমা স্ক্রিনিং: গ্লুকোমার জন্য স্ক্রিনিং করুন, বিশেষ করে যদি আপনার পারিবারিক ইতিহাস বা অন্যান্য ঝুঁকির কারণ থাকে।
৩. ম্যাকুলার ডিজেনারেশন স্ক্রিনিং: ম্যাকুলার ডিজেনারেশনের জন্য স্ক্রিনিং করুন, বিশেষ করে যদি আপনার পারিবারিক ইতিহাস বা অন্যান্য ঝুঁকির কারণ থাকে।
জীবনযাত্রার পরিবর্তন
১. ধূমপান ত্যাগ করুন: ছানি, ম্যাকুলার ডিজেনারেশন এবং অন্যান্য চোখের সমস্যার ঝুঁকি কমাতে ধূমপান ত্যাগ করুন।
২. স্বাস্থ্যকর ওজন বজায় রাখুন: ডায়াবেটিসের ঝুঁকি কমাতে স্বাস্থ্যকর ওজন বজায় রাখুন, যা চোখের সমস্যার কারণ হতে পারে।
৩. আদ্রতা বজায় রাখুন: চোখকে আর্দ্র রাখতে এবং শুষ্কতা রোধ করতে হাইড্রেটেড থাকুন।
অতিরিক্ত টিপস
১. চোখ ঘষা এড়িয়ে চলুন: চোখ ঘষা এড়িয়ে চলুন, কারণ এতে চোখের ছোট রক্তনালী ভেঙে যেতে পারে এবং ফোলাভাব দেখা দিতে পারে।
২. পর্যাপ্ত ঘুম: দিনের চাপ থেকে চোখকে পুনরুদ্ধার করতে পর্যাপ্ত ঘুম প্রয়োজন।
৩. দীর্ঘক্ষণ স্ক্রিন টাইম এড়িয়ে চলুন: দীর্ঘক্ষণ স্ক্রিন টাইম এড়িয়ে চলুন, কারণ এটি চোখের উপর চাপ এবং শুষ্কতা সৃষ্টি করতে পারে।
চোখ আমাদের জীবনের আলো। একটু যত্ন, একটু সচেতনতা এতেই ৪০-এর পরেও চোখ থাকবে উজ্জ্বল ও সুস্থ। নিজের চোখের যত্ন নিন, কারণ আপনি দেখেন এই চোখ দিয়েই পৃথিবীর রং।
-সুদেষ্ণা ঘোষ
Comments