top of page

অরণ্যে জলের গন্ধ, রূপমাধুরীর ভেলকি ভালকির জঙ্গলে!

রূপমাধুরীর ভেলকি ভালকির জঙ্গলে! হাত বেড়ালেই এমন মনহরা এক জঙ্গলে পৌঁছানো যায়, যাঁরা গেছেন তাঁরা ছাড়া আর কেউ বিশ্বাস করবেন বলে মনে হয় না! নীল আকাশে ভাসে সাদা মেঘের ভেলা। নীচে শাল, পিয়াল, পলাশের রাজ্য। শীতে সোনাঝুরি ফুল। আদিগন্ত বিস্তৃত ফসলের খেত। ঢালা লালমাটির রাস্তা।

সবমিলিয়ে ভালকির ভেলকিতে দৃষ্টিতে থমকে যায়! কলকাতার কাছেই ছিমছাম এক অরণ্যের সঙ্গে সখ্য করা যায় তা অনেকেরই হয়তো অজানা। তাই জানলে খারাপ লাগবে না। তাই এবারের শীতে কাছেপিঠে বেড়ানোর ঠিকানা হোক ভালকি মাচান। নিজেকে উজাড় করে দিয়ে দু'দিন হারিয়ে যেতে মন্দ লাগবে না। বরং বেশ নিশ্চিন্তিই লাগবে।


ভালকির শাল-গলাশের জঙ্গলের মধ্যে রয়েছে বিশাল উঁচু কাট পুরোনো শুদ্ধ, যার পরিচিতি মাচান। সবমিলিয়ে ভালকিমাচান। মাচানের কাছেই ছোট। এক জলাশয়। মনে হয়, এই জলাশয়ে জল খেতে আসত বন্যজন্তুর দল। সেইসময় তারা শিকারির খপ্পরে পড়ত। শিকারের উদ্দেশে অতীতে তৈরি হয়েছিল মাচানগুলো। একসময় নাকি প্রচুর ভালুক ছিল এই জঙ্গলে। দলমা থেকে অরণ্যের পথ ধরে নেমে আসত হাতির পাল। এখন কিছুই নেই। তবে স্থানীয়েরা বলেন, এই জঙ্গলে। এখন আছে বনবিড়াল, শিয়াল, বাঁদর, বুনোগুয়োর। আর আছে বহুরকম পাখি আর প্রজাপতি।

ভালকিমাচানে যাওয়ার পথটি একেবারে ছবির মতো সুন্দর। নীল আকাশ, নির্জন অরণ্য, বাতাসে পাতা খসার শব্দ, পাখির ডাক শোনা আর আদিবাসী গ্রামের মজা নেওয়ার জন্য কোনও বিকল্প নেই ভালকি মাচানের। তার ওপর যখন দূর থেকে কানে আসে মাদলের আওয়াজ তখন মনে হয় এ যেন মুক্ত জীবনের সুর। মাদলের সুরে দুলে ওঠে অরণ্য, দোল খায় খেতের ফসলও। কোলাহল মুক্ত এমন জায়গা দু'টি চোখে পড়েনি হাতের কাছে।


যদি নিবিড় আরণ্যকে রোম্যান্টিক


অন্য সৌন্দর্য, অন্য মজা! জঙ্গলের পথে হাঁটতে ভীষণই ভাল লাগে। ঘণ্টির টুং টাং শব্দ, পাখির কলতান আর শীতের কুয়াশা মোড়া সৌন্দর্য, মন ভাল করে দেবে। দূরে দেখলেন বাঁকে করে খেজুর রস নিয়ে যাচ্ছেন, তাঁকে ডেকে জমিয়ে খেজুর রসও খেতে পারবেন। এ হল ডাবল মজা। এ মজার ভাগ হবে না। তবে, গেস্ট হাউসে বললেও ওরা ব্যবস্থা করে দিতে পারেন।

হাঁটতে হাঁটতে হঠাৎ নাকে আসে জলের গন্ধ। অরণ্যে জলের গন্ধা কেন? আসলে, ভালকি মাচান জঙ্গলের কাছেই রয়েছে যমুনাদিখি। তাই অরণ্য বাতাসে পরিবেশে চান তাহলে জ্যোৎস্না ভরা রাতে আসতেই হবে ভালকি মাচান্য পূর্ণিমার কামরাঙা জ্যোৎস্নায় ভেসে যায় ভালকি মাচানের অরণ্য। কাঁসার থালার চাঁদ দাঁড়িয়ে থাকে অরণ্যের গাছগাছালির মাথায়। মনে হবে, টুক করে যদি পেড়ে নেওয়া যেত। তা তো হয় না। কল্পনা থেকে যায় মনের ভিতর। তাই ভেসে যেতে ভরা জোৎস্নার অরণ্যে। অমাবস্যার রাতে আবার অন্য মজা। অন্ধকারে একধরনের আনন্দ থাকে, ভাল লাগা থাকে, সেইসবই পাওয়া যায় অমাবস্যার রাতে। এক, দুই, তিন... গুনতে গুনতে তারা গোনা এ এক খেলা ভালকি মাচানে অমাবস্যার রাতে!


ভোরের ভালকি মাচানের আবার ভেসে আসে জলের গন্ধ। জলের একট গন্ধ আছে যা জাদুর মতো টানে। তাই ভালকি ছেড়ে যমুনাদিঘিতে টুনা মেতে আর থাকা যায় না। থাকবার জায়গাটির নাম আম্রপালি গেস্ট হাউস। বিশেষ একটি আমের নামে নামকরণ। হবে। নাই বা কেন, যমুনাদিঘিতে প্রায় দিভিত প্রজাতির দু'শোর মতো আম গাছ রয়েছে। এছাড়াও আছে বহুরকম ফলের গাছ। গাছগাছালি ঘেরা যমুনাদিঘিতে জলাশয় আছে ৪৪-৪৫টি। আগে কোটি। করার ব্যবস্থা ছিল, বর্তমানে নেই। একটি জলাশয়ের ওপরে রয়েছে থাকবার জন্য দুটি এসি রুম। ভাড়া ১৪০০ টাকা। সেখানে চা কফি বা খাবার খেতে খেতে নিরালায় সময় কাটে ভাল। ঘুরে বেড়ানো যায় জলাশয়ের ধারে ধারে। চাঁদনি রাতে জলাশয় আর গাছগাছালির মিলনে অপূর্ব এক মায়াবী পরিবেশ তৈরি হয় যমুনাদিঘিতে। ভালকিমাচান জঙ্গল আর যমুনাদিঘি থেকে বেড়িয়ে আসুন। খারাপ লাগবে না।

কীভাবে যাবেন: শান্তিনিকেতন যাওয়ার পথে বর্ধমানের পরেই গুসকরা। এখানে নেমে গাড়িতে। মানকর স্টেশন থেকেও যাওয়া যায়। কলকাতা থেকে সরাসরি গাড়িতে দুর্গাপুর এক্সপ্রেস ওয়ে ধরে বর্ধমানের পারাজ রেলওয়ে স্টেশন। মোড় থেকে ডান দিকে অভিরামপুর হয়ে সোজা ভালকি মাচান। পারাজ থেকে মাত্র ১৬ কিমি। কলকাতা থেকে দূরত্ব কমবেশি ১৫০ কিমি।


কোথায় থাকবেন: অরণ্য সুন্দরী, ভাড়া ১০০০-১৫০০ টাকা। প্রাতঃরাশ থেকে রাতের খাবার ৪৫০ টাকা। যোগাযোগ: 09153420133.


যমুনাদিঘিতে থাকবেন আম্রপালি গেস্টহাউসে। ভাড়া- ৭০০ থেকে ১৪০০ টাকা। সঙ্গে যোগ হবে ১২% জিএসটি। খাওয়াদাওয়া যেমন খাবেন তেমন। যোগাযোগ: 07908040694

 

Comments


ssss.jpg
sssss.png

QUICK LINKS

ABOUT US

WHY US

INSIGHTS

OUR TEAM

ARCHIVES

BRANDS

CONTACT

© Copyright 2025 to Debi Pranam. All Rights Reserved. Developed by SIMPACT Digital

Follow us on

Rojkar Ananya New Logo.png
fb png.png

 Key stats for the last 30 days

bottom of page