সেকালের কলকাতায় কেমন ছিল বিজয়াদশমীর দিনগুলো' চর্চায় কমলেন্দু সরকার, সঙ্গে চমৎকার সব বিজয়াদশমী স্পেশ্যাল নোনতা-মিষ্টির রেসিপির আয়োজনে তনুজা আচার্য্য।
সেকালের কলকাতায় বিজয়া দশমী
কমলেন্দু সরকার
সেকালের কলকাতায় দুর্গাপুজো ছিল বনেদি এবং ধনী গৃহের পুজো। বারোয়ারি পুজোর পত্তনই হয়নি তখনও। কলকাতায় বারোয়ারি দুর্গাপুজোর শুরু বিশ শতকের প্রথম দশকে। তাই সেকালের কলকাতায় দুর্গাপুজো বলতে ছিল প্রধানত বাড়ির পুজো। সেইসব পুজো বাড়িতে নানারকম আনন্দ অনুষ্ঠানও হত। বাই নাচ থেকে শুরু করে যাত্রা-থিয়েটারও। সেখানে সাধারণ মানুষের প্রবেশ নিষিদ্ধ ছিল না।
যাইহোক, সেইসময় যেসব বাঙালি বাড়িতে দুর্গাপুজো হত, সেসব বাড়ির সদস্যেরা মনে করতেন, দুর্গা বা উমা কন্যারূপে প্রতিবছর বাপের বাড়ি আসেন মাত্র দিন কয়েকের ছুটিতে। তাই কন্যার আদরের কোনও সীমা ছিল না, থাকত না কোনও ত্রুটি। আর দশমীর দিন মেয়ে বাপের বাড়ি থেকে বিদায় নিয়ে স্বামীর গৃহ কৈলাসে ফিরে যান। মেয়ে ফিরে যাচ্ছেন। আবার একবছরের অপেক্ষা। স্বভাবতই বাড়ির সব সদস্যেরই মন ভারাক্রান্ত। কিন্তু বাড়ির মেয়েকে কি বিষাদ ভারাক্রান্ত হৃদয়ে বিদায় জানানো যায়? তাই প্রতিটি বাঙালি বাড়িতেই চলত মিষ্টি মুখের আয়োজন। আর সেকারণেই দশমীর দিন বিকেলের পর অর্থাৎ প্রতিমা জলে পড়লেই বিষাদের আবহেই সমানতালে চলত মিষ্টিমুখের আয়োজন। যা আজও অব্যাহত প্রতিটি বাঙালি বাড়িতে। সেকালে ছানার মিষ্টি ছিল আড়ম্বরের একটা অংশ। যা ছিল বনেদি বাঙালি বাড়িতে অপরিহার্য।
ওইসব বনেদি এবং ধনী বাড়ির মা-মেয়েরা উমা বা দুর্গাকে বিদায়বরণ করতেন ছানার সন্দেশ দেবীর মুখে দিয়ে। আজও সেই প্রথা চলে আসছে বাড়ির পুজো-সহ বারোয়ারি পুজোতেও। মনে করা হত, বাপের বাড়িতে উমার মুখে ছানার সন্দেশ দেখেই নীলকণ্ঠ পাখি কৈলাসে উড়ে যেত, উমার পতিগৃহে ফেরার সন্দেশ নিয়ে। এখানে সন্দেশ-এর অর্থ সংবাদ।
পুজোর শেষ দিন বিজয়া দশমী, এই দিনটিতেও রয়েছে একাধিক নিয়মকানুন। এর অন্যতম নীলকণ্ঠ পাখি উড়িয়ে দেওয়ার রীতি। কিন্তু কেন বিজয়া দশমীতে নীলকণ্ঠ পাখি ওড়ানো হয়! দেখে নেওয়া যাক নীলকণ্ঠ পাখি ওড়ানোর পিছনের কারণগুলি।
জানা যায়, রাবণবধের আগে নীলকন্ঠ পাখির দেখা পেয়েছিলেন শ্রীরামচন্দ্র। আবার অন্য মত বলছে, নীলকণ্ঠ পাখি পথ দেখিয়ে নিয়ে গিয়েছিল রামচন্দ্র আর তাঁর দলবলকে। তাই নীলকন্ঠ পাখির দর্শন পাওয়া নাকি অত্যন্ত শুভ। তাই মনে করা হয়, বিজয়া দশমীর দিন নীলকন্ঠ পাখি দেখতে পাওয়া যায় তাহলে পাপ মুক্তি হয় পাশাপাশি পূরণ হয় মনের সমস্ত সাধ।
আরও একটি ব্যাখ্যাও শোনা যায়, সমুদ্র মন্থনে শুধু অমৃত নয়, বিষ ওঠে। সেই বিষ দেবাদিদেব মহাদেব পান করলে তাঁর কণ্ঠ নীল বর্ণ হয়ে ওঠে। তিনি পুরো বিষ নিজের কণ্ঠে ধারণ করেন। তাই তাঁর আর এক নাম নীলকণ্ঠ। তাই নীলকণ্ঠ পাখিকে তাঁরই আর এক রূপ বলে মনে করা হয় বাংলায়। আর ধরে নেওয়া হয়, দশমীর দিন দেবী দুর্গার নিরঞ্জনের আগে নীলকণ্ঠ পাখি ওড়ালে তাহলে সেই পাখি কৈলাসে গিয়ে মহাদেবকে আগাম খবর দেয় তাঁর ঘরনি উমা ফিরছেন।
তাই বিজয় দশমীর দিন বহু বাড়ি থেকেই নীলকণ্ঠ পাখি ওড়ানোর চল ছিল। বর্তমানে নীলকণ্ঠ পাখির সংখ্যা প্রভূত পরিমাণে কমে যাওয়ায় নীলকণ্ঠ পাখি কেনাবেচার ওপর রয়েছে সরকারি বিধিনিষেধ। তবুও অনেকেই লুকিয়ে-চুরিয়ে নীলকণ্ঠ পাখি আনেন এবং বিজয়া দশমীর দিন আকাশে উড়িয়ে দেন নীলকণ্ঠ পাখিটি। এখনও অনেকেই মনে করেন, নীলকণ্ঠ পাখিটি কৈলাস গিয়ে মহাদেবকে খবর দেবে উমার প্রত্যাবর্তনের।
যোগেশ রায় বিদ্যানিধি'র 'শ্রীশ্রী দুর্গা' গ্রন্থে 'দেবীর বোধন ও বিসর্জন', শ্রী রাজমোহন নাথ, তত্ত্বভূষণ লেখাটিতে দেবীর বিসর্জন সম্পর্কে পাওয়া যাচ্ছে, ''নদীর স্রোতে প্রতিমা বিসর্জনের পর শবরোৎসব, জল ও কর্দম ক্রীড়া। সে সময় অশ্রাব্য, অকথ্য ভাষায় গান হইত। ইহা দুর্গোৎসবের অঙ্গ, কালিকাপুরাণ ব্যবস্থা করিয়াছেন। তাহাতে কেউ রুষ্ট হইত না৷... আমার মনে হয় লোকের বিশ্বাস ছিল, নববর্ষের প্রথম দিন অশ্লীল ভাষা শুনিলে দেহ শুচি হয়, যম রাজা সে বৎসর স্পর্শ করেন না।"
আবার ফিরে আসি বাড়ির পুজোর দশমীর দিন। মুখ মিষ্টিতে। পুরনো দিনের কারওর কারওর কথায় বা লেখায় জানা যাচ্ছে, উনিশ শতকের মাঝামাঝি অর্থাৎ ১৭০-১৭৫ বছর পূর্বে ছানার মন ছিল ১৫ থেকে ২০ টাকা। যা ছিল মধ্য এবং নিম্নবিত্ত মানুষের ক্রয়ক্ষমতার বাইরে। তাই তাঁরা বাড়িতে তৈরি গুড় বা চিনির নারকেল নাড়ু, ছাঁচের মিষ্টি, মালপোয়া, রসবড়া ইত্যাদি দিয়ে আগত অতিথিদের সঙ্গে বিজয়া সারতেন। ধনী বা উচ্চবিত্তেরা বিজয়া করতেন ছানার মিষ্টি দিয়ে, প্রধানত সন্দেশ দিয়ে। মধ্যবিত্তদের মধ্যে সন্দেশ দিয়ে বিজয়া করা অনেক পরে আসে।
মহেন্দ্রনাথ দত্ত তাঁর 'কলকাতার পুরাতন কাহিনী ও প্রথা' বইয়ে 'দুর্গাপূজা'য় লিখছেন, 'বিজয়ার দিন পাড়ার বুড়ো ব্রাহ্মণদের কিঞ্চিৎ প্রণামী দিয়া প্রণাম করিতে হইত। বিজয়ার দিন নারিকেলছাবা দেওয়া হইত। বিজয়ার কোলাকুলিতে সন্দেশ বা অন্য কোনো খাবার চলিত না। তখনকার দিনে অনেক ভট্টাচার্য বামুন বার্ষিকী পাইতেনেখন সেটা উঠিয়া গিয়াছে। বিজয়ার রাত্রে পরস্পরের বিরোধ ভুলিয়া কোলাকুলি করিতে হইত'।
হরিপদ ভৌমিক তাঁর 'সেকালে কলিকাতার দুর্গোৎসব' গ্রন্থের 'সেকালে কলিকাতার ঠাকুর ভাসান' প্রবন্ধে লিখছেন, '... সেকালে দুর্গাপুজোর ভাসানের শোভাযাত্রাকে বিশেষ করে বাবুবাড়ির ঠাকুর ভাসানকে 'রসের শোভাযাত্রা' বলা হত।... ঠাকুর ভাসান দেখতে তখন কলকাতা জুড়ে প্রচণ্ড উৎসাহ দেখা যেত। বিশেষ করে বিডন স্ট্রিটের মোড় থেকে নিমতলা ঘাট পর্যন্ত শোভাযাত্রাকে সামনে রেখে আনন্দের হাট বসে যেত। চিৎপুর অঞ্চলে আবার নিষিদ্ধপল্লীর মেয়েদের প্রতিমা দেখার ভীড় দেখাটাও--- অনেকের কাছে বিশেষ দর্শন মনে হত। সেকালে ভাসানের দিন কলকাতায় গাড়ির আকাল পড়ে যেত।...'
সেকালের ভাসান সম্পর্কে ক্ষিতীন্দ্রনাথ ঠাকুর জানিয়েছেন-- 'সেকালে ঠাকুর ভাষান একটা দেখার জিনিষ ছিল। তখন যে রকম জাকজমকের সঙ্গে ঠাকুর অর্থাৎ প্রতিমাগুলি সাজান হত, আজকাল সে রকম সাজানো দেখা যায় না। সেকালে ধনীদের মধ্যে কার প্রতিমা বেশী সুন্দর সাজানো হল, তা নিয়ে প্রতিদ্বন্দ্বিতা চলত।... তখন প্রতিমাগুলিকে বিভিন্ন রাস্তা ঘুরিয়ে জগন্নাথ ঘাট বা নিমতলা ঘাটে নিয়ে যাওয়া হত। সেই সময় ঘাটে বিসর্জন হত না, দুটি পানসি নৌকো জোড়া করে--- মাঝ গঙ্গায় নিয়ে প্রতিমা বিসর্জন দেওয়া হত।' (সেকালে কলিকাতার দুর্গোৎসব, হরিপদ ভৌমিক)।
হুতোমও বলছেন, 'ক্রমে সহরের বড় রাস্তা চৌমাথা লোকারণ্য হয়ে উঠলো, বেশ্যালয়ের বারণ্ডা আলাপিতে পূরে গ্যাল, ইংরাজি বাজনা, নিশেন, তুরুকসোয়ার ও সার্জ্জন সঙ্গে প্রতিমারা রাস্তায় বাহার দিয়ে ব্যাড়াতে লাগলেন--- তখন "কার প্রতিমা উত্তম" "কার সাজ ভাল" "কার সরঞ্জাম সরেস" প্রভৃতির প্রশংসারই প্রয়োজন হচ্চে, কিন্তু হায়! "কার ভক্তি সরেস" কিন্তু কেউ সে বিষয়ে অনুসন্ধান করে না--- কর্মকর্তাও তার জন্য বড় কেয়ার করেন না'।'...
ঠাকুর বা প্রতিমা জলে পড়বার পর আর কিছু থাকে না। কেবল ধ্বনি ওঠে 'আসছে বছর আবার হবে।' পুজো কিংবা চণ্ডীমণ্ডপে শান্তিজল নেওয়ার পর চলে কোলাকুলি আর প্রণাম পর্ব। তারপর মিষ্টিমুখের পালা।
সেকালের কলকাতায় ধনী গৃহে বা বনেদি বাড়িতে দুর্গাপুজোর বিজয়া দশমীর সকাল থেকেই মিষ্টি তৈরির জন্য ভিয়েন বসিয়ে করা হত বিজয়ার মিষ্টি। ঢাকের বোলে বিজয়া দশমীর সুর বাজলেই ময়রার হেঁশেলে পাক দেওয়া হত ছানার সন্দেশ, মনোহরা, সীতাভোগ ইত্যাদি। বিজয়া দশমীতে বাঙালির সংস্কৃতির সঙ্গে ওতপ্রোতভাবে জড়িয়ে আছে বিজয়ার মিষ্টি। তাই দশমীর সকাল থেকেই আজও গ্রামবাংলা থেকে শুরু করে মফসসল, শহরের সর্বত্র ভিড় দেখা যায় মিষ্টির দোকানে।
নারকেল মিষ্টি দিয়ে এখন বিজয়া কথা অনেকেই ভাবতে না-পারলেও এখনও বহু বাঙালি বাড়িতে বিজয়া দশমীর পর অতিথিদের আপ্যায়নে নারকেল নাড়ু দৃশ্যমান। একটা সময় মহালয়ার পর থেকেই বাড়ির মহিলাদের ব্যস্ততা শুরু হত বিজয়া দশমীর প্রস্তুতি। নারকেল এনে ঘষে-মেজে সন্দেশের ছাঁচগুলিকে প্রস্তুত করে রাখা, নারকেল নাড়ু পাকিয়ে রাখা, ছাঁচে নারকেলের সন্দেশ, চন্দ্রপুলি তৈরি করে রাখা হত।
যদিও কালের নিয়মে বদল ঘটেছে বহুকিছুর। তবুও একালেও বাঙালির বিজয়া দশমীর সঙ্গে জড়িয়ে রয়েছে বাংলার সংস্কৃতি। তাই আজও দশমীর পর প্রতিটি বাঙালি বাড়িতে মিষ্টি আসে। তাই বাঙালির কাছে বিজয়া দশমীর সঙ্গে মিষ্টি জড়িয়ে আছে বহুযুগ ধরে, আছে বাঙালির আবেগ, বাঙালির ঐতিহ্য। তাবদশমীর সঙ্গে বাঙালির মিষ্টির প্রতি টান, ভালবাসা আজও এখন বহন করে চলেছে সেকালের মতো একালের বাঙালিরাও। এই এক জায়গায় সেকাল-একাল মলেমিশে একাকার!
কেমন হয়, বিজয়ার শুভেচ্ছা জানাতে বাড়িতে বন্ধুবান্ধব, পাড়া প্রতিবেশী অথবা আত্মীয়স্বজন কেউ এলে, যদি পাত সাজানো যায় বাড়িতে বানানো টক-ঝাল-মিষ্টিতে! কী কী বানানো যেতে পারে রইলো তার সন্ধান দিলেন তনুজা আচার্য্য....
পালক পনীর চাট
কী কী লাগবে
পনীর ১০০ গ্রাম, পালংশাক পাতা ১০-১২ টা, চালের গুঁড়ো ৩ চামচ, বেসন ৪ চামচ, নুন স্বাদমতো, লঙ্কা গুঁড়ো ১চামচ, চাটমশলা ১ চামচ, তেল পরিমাণমতো।
বাকি উপকরণ: টকদই, তেঁতুলের চাটনি, ধনেপাতা পুদিনাপাতার চাটনি, পেঁয়াজ কুচি, লঙ্কা কুচি, ধনেপাতা কুচি, ভাজা মশলা, লাল লঙ্কা গুঁড়ো, চাট মশলা, ভুজিয়া।
কীভাবে বানাবেন
পনীর ছোট ছোট টুকরো করে কেটে নুন, লঙ্কা গুঁড়ো, চাট মশলা মাখিয়ে ভেজে তুলে নিন। অন্য একটি পাত্রে চালের গুঁড়ো, বেসন, নুন, লঙ্কা গুঁড়ো ফেটিয়ে তাতে পালং শাকের পাতা গুলো ডুবিয়ে ভেজে তুলে নিন।
এবার পরিবেশন করার পাত্রে একে একে পালং পাতা ফ্রাই, ভাজা পনীর, টকদই, তেঁতুলের চাটনি, ধনেপাতা পুদিনাপাতার চাটনি, পেঁয়াজ কুচি, লঙ্কা কুচি, ধনেপাতা কুচি, ভাজা মশলা, লাল লঙ্কা গুঁড়ো, চাট মশলা, ভুজিয়া ছড়িয়ে সুন্দর করে সাজিয়ে পরিবেশন করুন।
লবঙ্গ লতিকা
কী কী লাগবে
ময়দা ১ কাপ, ঘি ১ চামচ, খোয়াক্ষীর ১০০ গ্রাম, সাদা তেল প্রয়োজন মতো, লবঙ্গ প্রয়োজন মতো, জল পরিমান মতো, চিনি ১ কাপ, এলাচ ২-৩ টে।
কীভাবে বানাবেন
ময়দা, ঘি, পরিমাণ মতো জল দিয়ে মেখে রাখুন। খোয়াক্ষীর ভালো করে মেখে নিন। ময়দা লেচি কেটে বেলে মাঝে খোয়াক্ষীরের পুর রেখে চৌকো করে মুড়ে একটি করে লবঙ্গ গেঁথে দিন। তেল গরম করে ভেজে তুলে নিন। চিনি আর জল ফুটিয়ে ঘন সিরাপ বানিয়ে তাতে ডুবিয়ে তুলে নিন।
নলেন গুড়ের সন্দেশ
কী কী লাগবে
ছানা ৫০০ গ্রাম, নলেন গুড় ৫০ গ্রাম, ভেলি গুড় ৩০ গ্রাম
কীভাবে বানাবেন
ছানা কাঠের পাটায় ভালো করে মথে নিন। কড়াইতে গুড় জ্বাল দিয়ে ছানা মিশিয়ে নাড়তে থাকুন। শুকনো হলে নামিয়ে ঠাণ্ডা করুন। হাতে আর কাঠের ছাঁচে ঘি মাখিয়ে সন্দেশ গুলো গড়ে নিন।
গুলাব জামুন
কী কী লাগবে
গুড়ো দুধ ১ কাপ, ময়দা ৩ চামচ, এলাচ গুঁড়ো ১/২ চা চামচ, ঘি ১ চামচ, গরমদুধ ৬-৭ চামচ, তেল পরিমাণমতো, গোটা এলাচ ৩-৪ টে, চিনি ১ কাপ, দেড় কাপ জল।
কীভাবে বানাবেন
একটি পাত্রে একে একে গুঁড়ো দুধ, এলাচ গুঁড়ো, ময়দা, ঘি আর গরম দুধ একসাথে ভালো করে মেখে ছোট ছোট বলের আকারে গড়ে নিন। কড়াইতে চিনি, জল আর গোটা এলাচ জ্বাল দিয়ে ঘন সিরা বানিয়ে নিন। অন্য একটি কড়াইতে তেল গরম করে অল্প আঁচে বল গুলো ভেজে গরম সিরা তে ১ ঘন্টা ডুবিয়ে রেখে পরিবেশন করুন।
ক্ষীর কদম
কী কী লাগবে
খোয়া বানানোর জন্য: ঘি ১ চামচ, দুধ ১ কাপ, গুঁড়ো দুধ ১ কাপ, কনডেন্সড মিল্ক ৩ চামচ।
বাকি উপকরণ: দুধ ১ লিটার, লেবুর রস ২ চামচ, চিনি ১কাপ + ১ চা চামচ, জল দেড় কাপ, এলাচ ২টি, গুঁড়ো ক্ষীর ৪ চামচ, লাল খাবার রং এক চিমটে, ভ্যানিলা এসেন্স ১/২ চা চামচ।
কীভাবে বানাবেন
খোয়া বানানোর জন্য প্রথমে কড়াইতে ঘি, দুধ, গুড়ো দুধ দিয়ে নাড়তে থাকুন। ঘন হয়ে এলে কনডেন্সড মিল্ক দিয়ে নাড়তে নাড়তে একদম শুকনো হয়ে এলে ঠাণ্ডা করে নিলেই খোয়া ক্ষীর তৈরী।
এবার বাকি দুধ জ্বাল দিয়ে তাতে লেবুর রস মিশিয়ে ছানা কেটে জল ঝরিয়ে নিন। অর্ধেক পরিমাণ ছানা বেশ ভালো করে মেখে তাতে লাল খাবার রং মিশিয়ে ছোট ছোট বল বানিয়ে নিন। দেড় কাপ জল আর ১ কাপ চিনি জ্বাল দিয়ে ঘন সিরা বানিয়ে তাতে ছানার বল গুলো ফুটিয়ে মিস্টি গুলো বানিয়ে নিন।
এবার খোয়া ক্ষীরের সাথে বাকি অর্ধেক ছানা, ভ্যানিলা এসেন্স ও ১ চামচ চিনি একসাথে মেখে নিন। মাঝে একটা করে মিস্টি আর ওপরে খোয়া ক্ষীরের মিশ্রন দিয়ে বলের মতো গড়ে গুঁড়ো ক্ষীরে গড়িয়ে নিলেই তৈরী ক্ষীরকদম।
বেসনের লাড্ডু
কী কী লাগবে
বেসন ৩০০ গ্রাম, ঘি ১/২ কাপ, গুঁড়ো চিনি ১কাপ, এলাচ গুঁড়ো ১ চা চামচ, পেস্তা কুচি পরিমাণমতো।
কীভাবে বানাবেন
শুকনো কড়াইতে প্রথমে অল্প আঁচে বেসন ১০ মিনিট মতো ভাজুন। সুন্দর গন্ধ বেরোতে শুরু করলে অল্প অল্প করে ঘি মেশান আর নাড়তে থাকুন। ঘি ওপরে ভেসে উঠলে এলাচ গুঁড়ো মিশিয়ে গ্যাস বন্ধ করে চিনি ও পেস্তা কুচি দিয়ে ভালো করে মেশান। হাতে ঘি মেখে অল্প গরম থাকতে থাকতে লাড্ডু গুলো বানিয়ে নিন।
কটোরি চাট
কী কী লাগবে
কটোরির জন্য: ময়দা ৩০০ গ্রাম, খাবার সোডা ১/২ চা চামচ, তেল আন্দাজমতো, নুন ১ চা চামচ।
পুরের জন্য: সেদ্ধ আলু ২টি, ঘুগনী, টকদই, চিনি ১ চামচ, তেঁতুলের চাটনি, ধনেপাতা পুদিনাপাতার চাটনি, পেঁয়াজ কুচি, ভাজা মশলা, লাল লঙ্কা গুঁড়ো, চাট মশলা, ভুজিয়া।
কীভাবে বানাবেন
একটি পাত্রে ময়দা, নুন, খাবার সোডা, ২চামচ তেল ও পরিমাণমতো জল দিয়ে মেখে নিন। লেচি কেটে লুচির মতো বেলে একট
স্টিলের বাটিতে এমন ভাবে বসাতে হবে যাতে একটি বাটির আকার নেয়। এবার ডুবো তেলে মুচমুচে করে ভেজে তুলে নিতে হবে।
এবার ভেজে নেওয়া কাটোরির মধ্যে একে একে টুকরো করা সেদ্ধ আলু, ঘুগনী, টকদই, তেঁতুলের চাটনি, ধনেপাতা পুদিনাপাতার চাটনি, পেঁয়াজ কুচি, ভাজা মশলা, লাল লঙ্কা গুঁড়ো, চাট মশলা, ভুজিয়া ছড়িয়ে ইচ্ছে মতো সাজিয়ে পরিবেশন করুন।
Comments