top of page

ভোজনরসিক স্বামীজি এবং প্রিয় খাবারদাবার, পিঠে-পার্বণ (একডজন পিঠে-পুলি)

বীর সন্ন্যাসী স্বামী বিবেকানন্দের ১৫৯তম জন্মজয়ন্তীতে অনন্যা পরিবারের সকল সদস্যদের পক্ষ থেকে জানাই বিনম্র শ্রদ্ধাঞ্জলি। ভোজনরসিক স্বামীজি এবং প্রিয় খাবারদাবার নিয়ে লিখেছেন ফুড ব্লগার অরিন্দম সরকার।

খাবার ব্যাপারে একটা কথা আমি মনে প্রাণে বিশ্বাস করি। লোকে বলে - যে মানুষটা খেতে ভালোবাসে, নিঃসন্দেহে সে ভালো লোক। কিন্তু আজ কালকার দিনে সবাই অন্যের ঝেড়ে খেতেই ব্যস্ত। এরকম অবস্থায় শুধু খেতে ভালোবাসে নয়, তার সাথে খাওয়াতেও ভালোবাসে এমন লোকই সত্যিকারেরই ভালো মানুষ হয়। আমার এই খেয়ালটা স্বামীজীর মানুষকে খাওয়ানোর প্রতি ভালবাসা দেখেই জেগেছে। একজন মানুষ যিনি সব ব্যাপারে পারদর্শী, যেখানে হাত দেন সেখানেই সোনা ফলে - যেটাই করেন সেটাই সেরার সেরা। কী করে সম্ভব! আমার ধারণারও বাইরে। তিনি বলতেন একজন সন্ন্যাসী যদি ভালো করে রাঁধতে না পারে তাহলে সে বড় মাপের সাধু হতে পারে না। গুরুর খালি পেটে ধর্ম হয় না বাণীটি বুকে করে পাশ্চাত্যে বেদান্ত থেকে বিরিয়ানি তিনি প্রচার করেছিলেন। একবার ওনাকে জিজ্ঞেসা করা হয় উনি কোন সম্প্রদায়ের সন্ন্যাসী, গিরি না পুরী? উত্তরে বলেছিলেন কচুরি সম্প্রদায়ের সন্ন্যাসী। ভোজনরসিক স্বামীজীর শংকরের লেখা একখানি মাত্র বই পড়েছিলাম । তাতে যা বুঝলাম- ইসকনের সন্ন্যাসী কয়েক মাস আগে স্বামীজীকে নিয়ে যে আলটপকা মন্তব্য করেছিলেন, সেটা বোধহয় স্বামীজি জানতেন এমন কেউ ভুলভাল বকবে ওনাকে নিয়ে একটা সময়, তাই তার উত্তর গুলো আগেই সময় অসময়ে খেয়ালে অখেয়ালে দিয়ে গেছে মাঝে মধ্যে।

স্বামীজীর খাবার সম্পর্কে ঘাটাঘাটি করতে গিয়ে উপলব্ধি করলাম ভালো রাঁধুনি না হলে খাবারের স্বাদ তৃপ্তি সহকারে আস্বাদন করা যায় না। ভালো খেতে চাইলে জানতে হবে ভালো রান্না করা। স্বামীজীর রান্নার অভ্যাসটা তার বাবা বিশ্বনাথ দত্ত মহাশয়ের কাছ থেকেই এসেছে। গল্পটা বলি। তাহলে একটু আয়েশ করে ... কাজের জন্য বিশ্বনাথ দত্তকে উত্তর ভারতে বেশি ঘোরাঘুরি করতে হতো। মাঝে মধ্যেই দিল্লি লখনউ চলে যেতেন। মোঘলসরাই অবধি ট্রেনে, তারপর টাঙ্গায় চড়ে বাকি পথ। দিল্লি থেকে উনি লাহোরে যান, আর সেখানে ওনার পসার খুব ভালো হয়। চোদ্দ বছর বয়েসে বাবার সাথে দেখা করতে কিশোর নরেন্দ্রনাথ যান মধ্যপ্রদেশের রায়পুরে।

তখন নাগপুর অবধি ট্রেন চলত আর পরপর নাগপুর থেকে গরুর গাড়িতে চেপে রায়পুর অবধি পৌঁছতে লেগে যেত বেশ কয়েক দিন। এখানেই রন্ধনবিদ্যা সম্পর্কে তার স্বাভাবিক প্রবণতার উল্লেখ পাওয়া যায়। বাবার সাহায্যে আর অনুকরণে ইনি এই মহাবিদ্যায় বেশ পারদর্শী হয়ে উঠেছিলেন। কলকাতায় ফিরে এসে ছেলের পড়াশুনার সুবিধার জন্য বিশ্বনাথ ভিটেবাড়ির কাছেই আরেকটা বাড়ি ভাড়া করেন । সিমলা স্ট্রিটের এই গোঁসাই বাড়িতে রান্নার খেয়াল চাপলে এখানেই প্রতিষ্ঠা পায় Greedy Club। ক্লাবের প্রধান কাজ ছিল রান্না নিয়ে নানারকম পরীক্ষা নিরীক্ষা করা। বাল্যকাল থেকেই যেটা করবো সেটাই হবে সেরার সেরা এরকম একগুঁয়ে জেদী মানসিকতা ছিল ওনার মধ্যে। রান্নাবান্নার ক্ষেত্রেও তার ব্যতিক্রম হয় নি। বন্ধু বান্ধব খেলার সাথীদের কাছে এক - দু আনা যা জোগাড় হত বাকিটা নিজে দিয়ে আয়োজন করতেন চড়ুইভাতির। পোলাও, মাংস, নানা রকমের খিচুড়ি রান্নার দ্বায়িত্ব সানন্দে নিজের কাধে নিতেন স্বামীজি।

ছোট থেকেই ঝাল খাবারের প্রতি ঝোঁক ছিল ওনার, তাই মাংসে অতিরিক্ত লঙ্কা পড়ত। হাঁসের ডিম ফেটিয়ে চালে মাখিয়ে কড়াইশুঁটি আর আলু দিয়ে ভুনি খিচুড়ির জন্ম এখানেই - অন্যান্য পোলাওয়ের থেকে এটি বেশ উপাদেয় ছিল। ছোট ভাই মহেন্দ্রনাথ দত্ত লিখেছেন তখন কলকাতায় পাঁঠার মাথা বিক্রি হত না, মাংসের দোকানে কথা বলে পাঁঠার মাথাগুলোর ব্যবস্থা করতেন। দিনে দশ বারোটা পাঁঠার মাথা হয়ে যেত, সাথে সের দুই আড়াই ওলন্দ কড়াইশুঁটি একসাথে ফুটিয়ে একটা তরকারি হত। বিকেলবেলা দুই ভাই স্কুল থেকে ফিরে কড়াইশুঁটি দেওয়া পাঁঠার ব্রেনের তরকারি খেতেন একেকজন গোটা ষোলো খানা রুটি দিয়ে। একবার মিরাটে তিনি মনস্থির করলেন গুরুভাইদের শিক কাবাব খাওয়াবেন, সব আয়োজন হল, শিকের আর ব্যবস্থা হলো না, পাশেই আশফল গাছের ডাল ভেঙে তাতে মাংস গেঁথে শিক কাবাব বানানো হলো। শুধু লংকা নয়, ওনার মিষ্টির প্রতিও প্রবল টান ছিল। এই রসগোল্লার প্রতি লোভের জন্যই ওনার সাথে রামকৃষ্ণের সাক্ষাৎ হয়। সালটা ১৮৮০-৮১, নরেন তখন সতেরো - আঠারোর আগুন গিলে খাওয়া বাংলা মায়ের দামাল ছেলে। নরেন্দ্রনাথের ধারণা ছিল, রামকৃষ্ণ উন্মাদ পাগল, একটু সামলে থাকাই ভাল। একদিন রামদাদা মনে ডাক্তার রাম চন্দ্র দত্ত বলেন, বিলে তুই এদিক ওদিক ঘুরে বেড়াস, দক্ষিণেশ্বরে এক পরমহংস আছেন, দেখতে যাবি? নরেনের উত্তর ছিল, সেটা তো মুকখু, কি সে পেয়েছে যে তার কাছে শুনতে যাবো? ... একটা আকাট মুকখু কালীর পূজারী, কৈবর্তদের বামুন - সেইটার কাছে শিখতে হবে? এরকম মন্তব্য করার পর শেষে বলেছিলেন, যদি সে রসগোল্লা খাওয়াতে পারে তো ভালো, নইলে কান মলে দেবো, আকট মুখখুটাকে সিধে করে দেবো। শুধু রসগোল্লা নয়, গজার প্রতি তার আলাদা রকমের টান ছিল। একবার বন্ধুরা মিলে এক হাঁড়ি গজা কিনে এনেছে, স্বামীজীর ভাগে যা পড়েছে টা নিয়ে তিনি সন্তুষ্ট নন, উনি একটা গজা হাঁড়ি থেকে তুলে নিয়ে তাতে জিভ বুলিয়ে আবার হাঁড়িতে রেখে, তোরা কেউ গজা খাসনি, সব এঁটো হয়ে গেছে রে বলে গোটা হাঁড়ির গজা একাই শেষ করেছিলেন।

বড় বড় মানুষদের বড়সড় ব্যাপার। ওনাদের থেকে অনুপ্রেরণা নিতে হয় শুধু। এই যেমন স্বামীজি বাড়ির বাইরের খাবার বেশ পছন্দ করতেন, আমিও তাকেই অনুকরণ করি মাত্র। কাশিপুরের ফাগুর দোকানের কচুরি ছিল তার পরমপ্রিয়। গঙ্গার ঘাটের দিকে বেড়াতে গেলে প্রায়ই চানাচুর কিনে খেতেন। কারো সাথে দেখা হলে বলতেন, খা খা টক ঝাল দুটোই আছে। ঠাকুর বলতেন লক্ষ ব্রাহ্মণ ভোজনের চেয়ে শুধু নরেনকে খাওয়ানো অনেক ভালো। একবার কোনো এক মাতব্বর ঠাকুরের কানে তুলেছিলেন, ঠিক যেমন আমার বাবার কাছে আমার নামে লোকে বলে, আপনার ছেলেকে দেখলাম আসমায় বসে আছে বা পার্ক সার্কাসের জমজম থেকে বেরোতে - অনেকটা ওরকম। আপনি নরেনকে এত ভালবাসেন কেন? নিজের ছোট হুঁকোয় আপনি নরেনকে তামাক খেতে দিলেন, হুঁকো যে এঁটো হয়ে গেল। ও যে হোটেলে খায়, ওর এঁটোতে কি খেতে আছে? উত্তরে ঠাকুর বলেছিলেন, তাতে তোর কি? তুই শালা যদি হবিশ্যিও খাস, আর নরেন হোটেলেও খায়, তাহলেও তুই নরেনের সমান হতে পারবি না। একবার নরেন হোটেলে খেয়ে এসে ঠাকুরকে বললেন, মহাশয় আজ হোটেলে সাধারণে যাকে অখাদ্য বলে তা খেয়ে এসেছি। ঠাকুর বুঝলেন, নরেন এটা বাহাদুরি জহির করার জন্য বলেন নি বরং তাকে সতর্ক করেছেন যাতে ঘরের ঘটি বাটি ইত্যাদি ছুঁতে দিতে যদি ঠাকুরের আপত্তি থাকে তাহলে তিনি যেন আগে থেকে সাবধান হতে পারেন। ঠাকুর তো অন্তর্যামী, উনি উত্তর দিলেন, শোর গরু খেয়ে যদি কেউ ভগবানের মন রাখে টা হলে ওটা হবিশ্যান্নের তুল্য, আর শাক পাতা খেয়ে যদি বিষয় বাসনায় ডুবে থাকে তা হলে ওটা শোর গরু খাওয়ার সমতুল্য।

আমি নিজে এসব মনগড়া কথা বলছি না, "যুগনায়ক বিবেকানন্দ" নামক জীবনীগ্রন্থ থেকে লেখক শঙ্কর তার আহারে অনাহারে বিবেকানন্দ বইতে এই লাইন কোট করেছেন। এই যে নরেন কম বয়েসে এত বাইরে খেত, তখন তার একরকম মত ছিল বাড়ির বাইরের খাবারের প্রতি। নরেন থেকে বিবেকানন্দ হবার পর, এদেশ বিদেশ ঘোরার পর তিনি অনুভব করেন, এই যে ঘরে ঘরে অজীর্ণতা, এটা বাজারের ময়রার দোকানে খাওয়ার ফল। পাড়াগাঁয়ে এত অজীর্ণতার প্রধান কারনই হল লুচি কচুরি। ভাজা জিনিসগুলো আসলে বিষ। ময়রার দোকান হল যমের বাড়ি। ঘি তেল গরম দেশে যত কম খাওয়া যায়, ততই কল্যাণ। ঘিয়ের চেয়ে মাখন তাড়াতাড়ি হজম হয়। ময়দায় কিছুই নেই, খালি দেখতে সাদা। গমের সমস্ত ভাগ আছে এমন আটাই সুখাদ্য। ময়রার দোকানের খাদ্যদ্রব্যে কিছু নেই , উল্টে আছে বিষ। আগে লোকে কালেভদ্রে ঐ পাপগুলো খেতো, এখন শহরের লোক, বিশেষ করে বিদেশী যারা শহরে বাস করে তাদের নিত্যভোজন হচ্ছে এসব খাবার। খিদে পেলে কচুরি জিলিপি না খেয়ে মুড়ি কিনে খাও, সস্তাও হবে, কিছু খাওয়াও হবে। জামের রস জমিয়ে সিরকা বানাতেন - যা হজম আর ডায়াবেটিসের জন্য বেশ উপকারী। আমরা বরাবর শুনে এসেছি দুধের সঙ্গে মাংস খায় না, স্বামীজি কিন্তু দুধ আর মাংসের বিরোধ মানতেন না।

নরেনকে খাওয়ানোর

ব্যাপারে ঠাকুরের বিরাট আগ্রহ ছিল। বলেছি না, খেতে নয়, খাওয়াতে যারা ভালবাসেন তারাই ভালো মানুষ - এর প্রমাণ বহু জায়গায় পাবেন। যাই হোক, গল্পে ফিরে আসি। শ্রীরামকৃষ্ণ একদিন একবাটি প্রসাদী মাংস নিয়ে নরেনের জন্য অপেক্ষা করছেন, নরেন এলে তাকে প্রসাদী মাংস খাওয়াবেন। তার আস্তে দেরি হওয়ায় সকলে কৌতুক করে মাংস চাইতে শুরু করেন ঠাকুরের কাছ থেকে। সে সবে কান না দিয়ে নরেন আসলে তাকে খাইয়ে ঠাকুর তৃপ্ত হলেন। মা আর হৃদু মুখার্জি জানতেন, ঠাকুর বলেছিলেন, "যখন আমি খাবারের আগভাগ অপরকে দিয়ে খাবো, তখন জানবি আমার দেহ আর বেশিদিন থাকবে না"। ঠাকুর নিজের আহার নিবেদন করে প্রথমে নিজে আগভাগ নিতেন, পরে অপরকে দিতেন। একদিন নরেন দক্ষিণেশ্বরে গেছে, বিকেলে ঠাকুরকে জলখাবারে কিছু সন্দেশ দেওয়া হয়েছিল। তিনি কিন্তু সেদিন আগে নরেনকে আগে খেতে দিলেন। ভাগ্নে হৃদু বলেছেন, "আমার বুকটা কেঁপে উঠলো। আমি বুঝতে পারলাম, তিনি আর দেহ রাখবেন না। " অল্পদিনের মধ্যেই তিনি পরলোক গমন করেন এবং একথা সত্য যে, পরমহংসদেব নরেন ছাড়া অন্য কাউকে খাবারের আগভাগ দেন নি।

ভদ্রলোক যেমন এলাহী খাওয়া দাওয়া করেছেন একসময় তেমন অনাহারে তীব্র কষ্ট পেয়েছেন। বাবার মৃত্যুর পর থেকে, মনে মোটামুটি ওই ১৮৮৪ থেকে ১৮৯১ সাল অবধি টানা সাত বছর কখনো অনাহারে কখনো অর্ধাহারে কাটে ওনার। বিদেশের মাটিতে ভাগ্যে যেসব দিন খাওয়া জুটত সেই দিনগুলোতে ডিমের পোচ, টোস্ট, আপেল, কলা, কফি এসবই খেতেন। আম কলা ওখানে পাওয়া যেত না - দুটোই প্রিয় ফলের মধ্যে পড়ে ওনার। একদম পছন্দ করতেন না পেয়ারা। আমেরিকা গিয়ে তিনি ঝিনুক খাওয়া শিখেছিলেন। বিদেশে আরেকটা জিনিসের সাথে তার পরিচয় হয় - আইসক্রিম। তবে বরফ যে উনি বিদেশে গিয়ে প্রথম মুখে দেন এমনটা নয়। ছেলেবেলায় ডাবের ভেতরে চিনি আর বরফ ঢুকিয়ে খেতেন। তখন কলকাতায় ফ্রিজ কি জিনিস তেমন কেউই জানত না, বরফ আসত জাহাজে করে বিলেত থেকে। প্রথমবার বিদেশ থেকে ফেরার সময় স্বামীজি যেসব জিনিস এনেছিলেন তার মধ্যে ছিল রোস্ট করার যন্ত্র।

ওনার সম্পর্কে যতটা জানার চেষ্টা করেছি বারবার মনে হয়েছে উনি সমস্ত মাপকাঠির ঊর্ধ্বে। কিছু পরিমাপ করার জন্য তো আপনাকে অন্য আরেকটি সম মানের জিনিসের সাথে আপনাকে তুলনা করতে হবে, বিবেকানন্দকে কার সাথে তুলনা করবেন? একদিকে সন্ন্যাসী হয়ে আমিষ খাচ্ছেন, আরেকদিকে অনাহারে দিনের পর দিন কাটিয়েছেন। যার মুখ থেকে বেরিয়েছে জীব সেবাই শিব সেবা, তিনিই আবার তিরোধানের দুপুরেও মাছ খেয়েছিলেন। স্বামীজির খাদ্যাভ্যাস খুব সংক্ষেপে আপনাদের সামনে তুলে ধরেছি, ওনার ব্যাপ্তি এতই বিরাট, এতই ব্যাপক... ওনার সম্পর্কে লিখতে গিয়ে কখনো সমুদ্রের গভীরে তলিয়ে গেছি, কখনো ব্রহ্মাণ্ডে হারিয়ে গেছি। সব শেষে একটাই কথা বলার, সবার বিবেক হোক।

 

পিঠে-পার্বণ

ছোটবেলায় মকর সংক্রান্তির দিন পিঠে খাওয়ার কথা ভাবলেই মনে পড়ে কুয়াশা ঢাকা শীতের সকালে সুন্দর করে নিকোনো উনুনের পাশে বসে আগুন পোহানোর সাথে সাথে পিঠে ভাজা দেখা আর নলেনগুড়ে ডুবিয়ে গরম গরম চিতই বা আশকে পিঠে খাওয়া। আর বেঁচে যাওয়া চিতই দিয়ে পরদিন হতো দুধ চিতই।


চিতই পিঠা


কী কী লাগবে

আতপ চাল ভিজিয়ে গুঁড়ো করা ২ কাপ, গরম জল পরিমাণ মতো, নুন স্বাদ মতো।

ছবি সৌজন্যেঃ সায়ন্তনী মহাপাত্র

কীভাবে বানাবেন

চাল গুড়ো চালুনিতে চেলে নিয়ে ওর মধ্যে গরম জল আর নুন মিশিয়ে পাতলা মিশ্রন বানান। মাটির বা লোহার ছাঁচ খুব ভালো করে গরম করুন। সরষের তেল আর জল মিশিয়ে রাখুন। ছাঁচে ঐ তেল ব্রাশ করে একহাতা করে চাল বাটার মিশ্রন দিয়ে ঢাকা দিন। ২-৩ মিনিট পর তুলে নিলেই তৈরী চিতই পিঠে বা আশকে পিঠে।

আর শীতের পিঠে দিয়ে জলখাবারের কথা ভাবলেই শুরু তে নাম আসে সরু চাকলির। বানানো যেমন সহজ, বিউলির ডাল, নতুন আতপচাল আর মৌরির গন্ধে ভরপুর এই পিঠের সাথে একটু নলেন গুড় কি আলুভাজা যাই দেবেন জমে যাবে।


সরু চাকলি

কী কী লাগবে

গোবিন্দ ভোগ চাল ২ কাপ, বিউলির ডাল ১ কাপ, মৌরি বাটা ১ চা চামচ, নুন স্বাদ মতো, ভাজার জন্য পরিমাণ মতো ঘি বা Shalimar's সাদা তেল।

কীভাবে বানাবেন

চাল ও ডাল ভিজিয়ে রেখে মিহি করে বেটে নিন। মৌরিবাটা ও নুন মিশিয়ে একসাথে ফেটিয়ে পরিমাণ মতো জল দিয়ে মিশ্রন বানিয়ে নিন। ননস্টিক প্যানে ঘি অথবা সাদা তেল ব্রাশ করে একহাতা করে মিশ্রন ছড়িয়ে অল্প আঁচে ভাজুন। বেশী ভাজবেন না। নলেন গুড়ের সাথে পরিবেশন করুন।



দুধপুলি অনেকরকম হয়, তারমধ্যে রাঙালু দিয়ে বানানো দুধপুলি প্রথম খেয়েছিলাম এক আত্মীয়ের বাড়িতে। এতো ভালো লেগেছিলো,, পরে নিজেও বানিয়েছি বেশ কয়েকবার। আর এখন তো বাড়ির সবাই ও ভীষন পছন্দ করে, আর পৌষ সংক্রান্তি তে এই পিঠে তাই মাস্ট।


দুধ পুলি


কী কী লাগবে

চালের গুঁড়ো ২ কাপ, নুন ১ চিমটি, জল ২ কাপ মতো, নারকেল কোরা ২ কাপ, চিনি বা গুড় ৩/৪ কাপ, দুধ ২ লিটার, চিনি বা গুড় স্বাদ মতো, এলাচ গুঁড়ো ১/৩ চা চামচ।

ছবি সৌজন্যেঃ সায়ন্তনী মহাপাত্র

কীভাবে বানাবেন

২ কাপ জল তলা ভারী পাত্রে ফুটতে দিন। আধ কাপ জল সরিয়ে রেখে ১/২ চা চামচ নুন দিন। চালের গুঁড়ো মিশিয়ে গ্যাস বন্ধ করে ঢেকে রাখুন। ঠাণ্ডা হলে ভালো করে মেখে নিন। পুরের জন্য চিনি বা গুড় আর নারকেল অল্প আঁচে নাড়ুন হয়ে গেছে বুঝলে এলাচ গুঁড়ো মিশিয়ে নামান। এবার হাতে ঘি মেখে চালের গুড়োর মন্ড থেকে লেচি কেটে মাঝে পুর ভরে পুলি গুলো বানিয়ে নিন। দুধ আর চিনি বা গুড় জ্বাল দিয়ে পুলি গুলো সেদ্ধ করুন। ওপরে ভেসে উঠলে এলাচ গুঁড়ো মিশিয়ে নামান।

রাঙালুর দুধপুলি


কী কী লাগবে

সেদ্ধ রাঙালু ১ কাপ, চালের গুঁড়ো ২ কাপ, নুন স্বাদ মতো, Shalimar's সাদা তেল/ ঘি ১+১ টেবিল চামচ, নারকেল কোরা ২ কাপ, পাটালি গুড় ১+১ কাপ, দুধ ১ লিটার, এলাচ গুঁড়ো ১/২ চা চামচ

ছবি সৌজন্যেঃ সায়ন্তনী মহাপাত্র

কীভাবে বানাবেন

১ টেবিল চামচ ঘি গরম করে নারকেল কোরা, ১ কাপ গুড় দিয়ে পাক দিয়ে নিন। সেদ্ধ রাঙালু, চালের গুঁড়ো, নুন, ১ টেবিল চামচ ঘি, অল্প অল্প গরম জল দিয়ে শক্ত ডো মতো করে নিন। ভেজা কাপড় দিয়ে ঢেকে ঠাণ্ডা হলে লেচি কেটে মাঝে পুর ভরে পুলি গুলো বানিয়ে নিন। অন্য একটি তলা ভারী পাত্রে দুধ জ্বাল দিয়ে ঘন করে গুড় দিয়ে ভালো করে নেড়ে পুলিগুলো দিয়ে সেদ্ধ হতে দিন। উপরে ভেসে উঠলে বুঝবেন হয়ে গেছে। এলাচ গুঁড়ো মিশিয়ে নামান।


সবথেকে ভালো চসির পায়েস কোথায় খেয়েছি বললে সবার আগে বলবো ছোটপিসির কথা। ওই রকম যত্ন নিয়ে দিনরাত এক করে একদম নিখুঁত পিঠে বানাতে ওই একজনকেই দেখেছি আমার ছোটবেলায়। প্রতিটা সমান মাপের চসি। ওখান থেকেই শিখেছি, একদম হাতে ধরে শিখিয়েছে, আর বানানোর সময় মনে করে করে ওইমতোই বানাতে চেস্টা করি।

নতুন গুড় দিয়ে চসির পায়েস


কী কী লাগবে

আতপ চালের গুঁড়ো ২৫০ গ্রাম, দুধ ২ কেজি, নতুন গুড় ৫০০ গ্রাম, নুন স্বাদ মতো, এলাচ গুঁড়ো ১/২ চা চামচ, তেজপাতা ১টি, Shalimar's সাদা তেল/ঘি ২ টেবিল চামচ।


কীভাবে বানাবেন

জল গরম করে ফুটে উঠলে তাতে নুন আর ঘি দিয়ে অল্প অল্প করে চালের গুঁড়ো দিন আর নাড়তে থাকুন। মন্ড মতো হলে নামিয়ে ঠাণ্ডা করুন। তারপর হাতে চালের গুঁড়ো বা ময়দা মেখে চসি গুলো কেটে নিন। অন্য পাত্রে দুধ আর তেজপাতা জ্বাল দিয়ে ঘন করুন। গুড় দিয়ে মিশিয়ে চসিগুলো দিয়ে সেদ্ধ হতে দিন। এলাচ গুঁড়ো মিশিয়ে নামিয়ে ঠাণ্ডা হলে পরিবেশন করুন।


সাধারণত দুরকম পাটিসাপটা হয় বাড়িতে। ক্ষীরের পুর ভরে নয়ত নারকেলের পুর ভরে। বাড়িতে হয় সাথে কয়েকজন খুব কাছের মানুষ আছের যারা পিঠে বানিয়ে পাঠাতে ভোলেন'না কোনো বছর'ই। তার মধ্যে পাটিসাপটা থাকবেই। তাই সব পৌষ সংক্রান্তিতে পাটিসাপটা করলে একটু অন্যরকম করতে চেষ্টা করি। চকলেট খুব পছন্দের ফ্লেভার বাড়ির সবার তাই তাকে সঙ্গে নিয়েই একটু অন্যরকম পাটিসাপটা।

ক্ষীরের পাটিসাপটা

কী কী লাগবে

ক্রেপসের জন্য: বাসমতি চাল ১ কাপ, ১ ঘণ্টা জলে ভিজিয়ে রাখুন, সুজি ১/৩ কাপ, ময়দা ১/৩ কাপ, খেজুর গুড় বা চিনি ৪ টেবিল চামচ, দুধ ১/২ কাপ + প্রয়োজনে একটু বেশি

ফিলিং এর জন্য: খোয়া ক্ষীর দেড় কাপ, নারকেল কোরা ১/২ কাপ, সবুজ এলাচ ৪-৫ টি, ভাজার জন্য ঘি/Shalimar's সাদা তেল

ছবি সৌজন্যেঃ মৌমিতা ঘোষ

কীভাবে বানাবেন

প্রথমে ভিজিয়ে জল ঝরানো চাল বড় কাগজের ওপর ছড়িয়ে দিন যাতে শুকিয়ে যায়। এবার একটি গ্রাইন্ডারে চাল গুড়িয়ে নিন। পুর বানানোর জন্য প্রথমে একটি প্যান নিন এবং "ফিলিং" শিরোনামের নীচের সমস্ত উপাদান নিয়ে নিন। আঁচে বসিয়ে সমানে নাড়তে থাকুন। জল শুকিয়ে নরম মিশ্রন তৈরী হলে আঁচ বন্ধ করে ঠান্ডা হতে দিন। একটি বড় বাটিতে চাল, সুজি এবং ময়দা মিশিয়ে নিন। দুধ মিশিয়ে পাতলা মিশ্রন বানিয়ে নিন। একটি ছোট নন-স্টিক ফ্ল্যাট প্যান গরম করে কয়েক ফোঁটা গলানো ঘি লাগিয়ে পুরো প্যানে ছড়িয়ে দিন। একহাতা করে এই মিশ্রণ ছড়িয়ে মাঝে পুর ভরে রোল করে নিন। একই ভাবে সবগুলো পাটিসাপটা বানিয়ে নিন।

টু ইন ওয়ান পাটিসাপটা


কী কী লাগবে

আতপ চালের গুঁড়ো ২ কাপ, ময়দা ১ কাপ, নুন স্বাদ মতো, দুধ পরিমাণ মতো, চিনি ১+১/২ কাপ, ডেসিকেটেড কোকোনাট ১কাপ, ঘি ১ টেবিল চামচ, চকলেট সস ও চকো চিপস পরিমাণ মতো, ভাজার জন্য Shalimar's সাদা তেল।

কীভাবে বানাবেন

ঘি গরম করে ডেসিকেটেড কোকোনাট, ১/২ কাপ চিনি, চকলেট সস মিশিয়ে নেড়ে পুর বানিয়ে নিন। একটি পাত্রে চালের গুঁড়ো, ময়দা, নুন, ১ কাপ চিনি ও পরিমাণ মতো দুধ দিয়ে ঘন মিশ্রন বানিয়ে ঢেকে রাখুন ১ ঘন্টা। অর্ধেক পরিমাণ অন্য পাত্রে ঢেলে চকলেট সস মেশান। এবার ননস্টিক প্যানে তেল ব্রাশ করে দুরকম মিশ্রন ছড়িয়ে ইচ্ছে মতো ডিজাইন করে মাঝে নারকেলের পুর আর চকোচিপস দিয়ে মুড়ে নিলেই তৈরী ভিন্ন স্বাদের টু ইন ওয়ান পাটিসাপটা।


সবার বাড়িতে এইদিন পিঠে হয়, থালা ভর্তি পিঠে পুলি আদানপ্রদানের চল ও রয়েছে দেশ গাঁয়ে। পিঠে যেন এক শিল্পে। চরম পারদর্শীতায় তৈরী হওয়া নিখুঁত কারুকাজ। তাই একটু অন্যরকম কিছু করতে চাইলে এই পিঠে করতে পারেন। কলাপাতায় মুড়ে তৈরি এই পিঠাকে পাতা পোড়া বা খিরা পড়া পিঠা বলে।

খিরা পড়া পিঠা


কী কী লাগবে

সুগন্ধি আতপ চাল ১ কাপ, চিনি ১/২ কাপ, দুধ ৪ কাপ, জল ৩/৪ কাপ, নারকেল কোরা ১/৩ কাপ, Shalimar's সাদা তেল/ঘি ১+১ চামচ, কিশমিশ ১ মুঠো, কাজুবাদাম ১ মুঠো, এলাচ গুঁড়ো ১ চিমটে, কলাপাতা বড় ২টি।

ছবি সৌজন্যেঃ সায়ন্তনী মহাপাত্র

কীভাবে বানাবেন

চাল ধুয়ে ৩/৪ কাপ জলে ভিজিয়ে রাখুন ৪ ঘন্টা। কিশমিশ ভিজিয়ে রাখুন। বেটে নিন, আলাদা কোনো জল দেবেন না। একটি তলা ভারী পাত্রে কাজুবাদাম ভেজে নিন। ঐ পাত্রে দুধ জ্বাল দিন। চিনি মেশান। গলে গেলে চালবাটা মিশিয়ে নেড়ে ঘি বাদে বাকি সব উপকরণ মিশিয়ে নামিয়ে নিন। তলা ভারী পাত্রে কলাপাতা বিছিয়ে ঘি মাখিয়ে এই মিশ্রণটি ছড়িয়ে দিন। ওপরে আরো দু পরত ঘি মাখানো কলাপাতা দিয়ে মুড়ে অল্প আঁচে রান্না করুন। একদিক হয়ে গেলে উল্টে অন্যদিক ও লাল করে ভাজুন। ঠান্ডা হলে কেটে পরিবেশন করুন। মোটামুটি সব পিঠেই দু-তিন দিনের মধ্যে খেয়ে শেষ করে ফেলতে হয়। দুধের জিনিস, রেখে দিলে স্বাদ নষ্ট হয়ে যেতে পারে! ভাজা পিঠে এক্ষেত্রে সবথেকে ভালো অপশন। গরম ভাজা হোক কি বাসি দুইয়ের স্বাদ ই হয় মুখে লেগে থাকার মতো!


মুগডালের ভাজা পিঠে


কী কী লাগবে

২ টো নারকেল, ৩৫০ গ্রাম খেজুর গুড়/ পাটালি গুড়, ৬০০ গ্রাম সোনা মুগ ডাল, ১০০ গ্রাম চালের আটা, ১ টা রাঙ্গালু, ১/৩ চা চামচ Shalimar's হলুদ গুঁড়ো, ১ চা চামচ চিনি, ৩৫০ মি.লি. Shalimar's সাদা তেল

ছবি সৌজন্যেঃ দেবযানী চ্যাটার্জী

কীভাবে বানাবেন

নারকেল কুরিয়ে নিয়ে একটি প্যানে ২ মিনিটের জন্য কম আঁচে রান্না করুন। পাটালি গুড় দিয়ে ভালো ভাবে মেশান। এরপর কম আঁচে ৭-৮ মিনিট রান্না করুন যাতে একটি আঠালো পুর তৈরি হয়। নামিয়ে পুর ঠান্ডা করে নিন। রাঙালু ছোট ছোট টুকরো করে কেটে নিন। মৃদু আঁচে মুগ ডাল ২ মিনিট ভাজুন। ডাল ২-৩ বার ধুয়ে জল ফেলে দিন। প্রেসার কুকারে নুন, হলুদ, রাঙ্গালুর টুকরো দিয়ে জল ততটুকুই দিন যাতে ডাল ঢেকে যায়। তিনবার সিটি বেরোনো অবধি রান্না করে নিন। হয়ে গেলে, কুকার খুলে গরম ডালে চালের আটা যোগ করুন। পুরোটা দেবেন না, অল্প অল্প করে দেবেন ও মাখতে থাকুন। ডাল, আটা ও রাঙালু ভালো করে মসৃন করে মাখবেন যাতে লুচির ময়দার মতো মাখা হয়। এরপর দশ মিনিট একটি ভেজা কাপড় দিয়ে ঢেকে রেখে ছোট ছোট লেচি কেটে নিন। এরপর হাতে চ্যাপ্টা করে কচুরির পুর ভরার মত নারকেলের পুর ভরে বন্ধ নৌকার মত আকৃতি দিন। সবকটা পিঠে এইভাবে গড়ে নিন। এরপর কড়াইতে সাদা তেল গরম করে মাঝারি আঁচে সোনালি রঙ না হওয়া পর্যন্ত ভেজে নিন । ভাজা পিঠে খুব ভালো লাগে যদি একদিন রেখে তবে খাওয়া হয়।


গোকুল পিঠা


কী কী লাগবে

১ কাপ নারকেল কোরা, ১ কাপ খোয়া, ৪০০ গ্রাম পাটালি গুড়, ১৫০ গ্রাম ময়দা, ২ টেবিল চামচ সুজি, ১ টেবিল চামচ চালের আটা, ২ কাপ (২৫০ মিলি) ফুল-ক্রিম দুধ, ১/৪ চা চামচ নুন, জল ৩ কাপ, ৩০০ মিলি Shalimar's সাদা তেল, ১ টেবিল চামচ ঘি

ছবি সৌজন্যেঃ দেবযানী চ্যাটার্জী

কীভাবে বানাবেন

একটি নন-স্টিক প্যান গরম করে নারকেল কোরা দিয়ে কম আঁচে রান্না করুন যতক্ষণ না নারকেল হালকা বাদামি হয়। খোয়া দিয়ে কম আঁচে রান্না করুন, যতক্ষণ না খোয়া সম্পূর্ণরূপে নারকেলের সাথে মিশে যায়; মিশ্রণটি ঘন হওয়া পর্যন্ত রান্না করুন। এবার অর্ধেক গুড় দিয়ে মিশ্রণটি আঠালো না হওয়া পর্যন্ত রান্না করুন। নামিয়ে ঠাণ্ডা করে নিন। এই পুর থেকে ছোট ছোট বলের মত লেচি তৈরী করে রাখুন। একটি পাত্রে দুধ গরম করে সুজি ১৫ মিনিট ভিজিয়ে রাখুন। এবার ময়দা, চালের আটা ও নুন দিন। এরপর বাকি গুড় তিন কাপ জলের সঙ্গে ফুটিয়ে একটি পাতলা রস তৈরী করুন ও তৈরী হয়ে গেলে ছেঁকে নিন। একটি কড়াইতে সাদা তেল ও ঘি গরম করুন। পুরের বল গুলি সামান্য চ্যাপ্টা করে ময়দার মিশ্রনে ভালো করে ডুবিয়ে গরম তেলে খাস্তা করে ভেজে নিন। এরপর এই ভাজা পিঠা গরম সিরাপে ২-৩ মিনিট ভিজিয়ে রেখে ছেঁকে অন্য একটি পাত্রে রাখুন। গোকুল পিঠে গরম অথবা ঠান্ডা করে ইচ্ছে মতো সাজিয়ে পরিবেশন করুন।


রাঙ্গালুর মালপোয়া


কী কী লাগবে

ময়দা ১ কাপ, সুজি ১ কাপ, সেদ্ধ করা রাঙ্গালু ১ কাপ, চিনি ১/২ কাপ, লবণ ১/২ চা চামচ, মৌরি ১/২ চা চামচ, ঘন করা দুধ পরিমান মত, বেকিং সোডা ১/৪ চা চামচ, ভাজার জন্য Shalimar's সাদা তেল

চিনির সিরাপের জন্য: চিনি ১ কাপ, জল ১/২ কাপ, এলাচ ২-৩ টি, জাফরান ৫-৬ টি

কীভাবে বানাবেন

চিনি আর জল জ্বাল দিন। পাতলা রস বানিয়ে, এলাচ আর জাফরান মিশিয়ে নামিয়ে নিন। অন্য একটি পাত্রে সমস্ত শুকনো উপকরণ (ময়দা, সুজি, সেদ্ধ রাঙ্গালু, চিনি, লবণ, মৌরি, বেকিং সোডা) একসাথে মিশিয়ে নিন। দুধ মিশিয়ে প্যানকেকের মতো পাতলা ব্যাটার বানিয়ে নিন। তেল গরম করে একহাতা করে ব্যাটার দিয়ে লাল করে ভেজে তুলে নিন। সিরাপে মালপোয়া গুলো কিছুক্ষন ডুবিয়ে রেখে পরিবেশন করুন।

ছবি সৌজন্যেঃ মৌমিতা ঘোষ

মুগসামালি


কী কী লাগবে

বাইরের খোলার জন্য:

মুগ ডাল ১ কাপ, লাল ইয়াম/রাঙ্গালু ২টি, ময়দা ১ কাপ, চালের গুঁড়ো ১/২ কাপ

স্টাফিংয়ের জন্য: নারকেল কোরা ২ কাপ, খোয়া ক্ষীর ১ কাপ, খেজুর গুড় ১ কাপ, সবুজ এলাচ ৩-৪ টি

চিনির সিরাপের জন্য: চিনি ১ কাপ, জল ২ কাপ, Shalimar's সাদা তেল বা ঘি ভাজার জন্য


কীভাবে বানাবেন

প্যানে স্টাফিংয়ের সব উপকরণ নিয়ে মাঝারি আঁচে নাড়তে থাকুন। হয়ে গেলে নামিয়ে নিন। মুগডাল আর রাঙালু আলাদা আলাদা সেদ্ধ করে ছেঁকে নিন। একসাথে মেখে নিন। ময়দা, চালের গুঁড়ো ওর মধ্যে মিশিয়ে ভালো করে মেখে নিন। মাঝে পুর ভরে অর্ধচন্দ্রাকৃতি পুলির মতো গড়ে নিন। তেল গরম করে সোনালী করে ভেজে তুলে নিন। চিনি, জল ফুটিয়ে সিরা বানিয়ে নিন। পুলি গুলো ওর মধ্যে কিছুসময় ভিজিয়ে রেখে পরিবেশন করুন।


Comments


Rojkar Ananya New Logo copy.jpg

Your key stats for the last 30 days

Follow us on

fb png.png

©2023 to Debi Pranam. All Rights Reserved

bottom of page