top of page
Search

চলুন ঘুরে আসি নীল পাহাড়ের দেশে.. সঙ্গে অসমীয়া রান্না..

ব্রহ্মপুত্রে ঘেরা নীল পাহাড়ের দেশ, আসাম। মধ্যে ঝলমলে গুয়াহাটি, দ্য লাইট অফ দ্য ইস্ট..



অসম স্টেট মিউজিয়াম

গুয়াহাটি শহরের প্রাণকেন্দ্রে অসমিয়া সংস্কৃতি ও ইতিহাস চর্চার ধারক এই মিউজিয়ামটি।


কামাক্ষ্যা মন্দির

গুয়াহটির পশ্চিম প্রান্তে সতীর একান্ন পীঠের এক পীঠ এই মন্দিরটি। পুরাণ অনুসারে, সতীর যোনি পড়েছিল এখানে।


উমানাদা মন্দির

ব্রহ্মপুত্র নদে ঘেরা পিকক আইল্যান্ডে শিবের উপাসনার জন্য নির্মিত এই মন্দিরটি। চারপাশে জলে ঘেরা এই পিকক আইল্যান্ডের সৌন্দর্যের টানে যেতেই পারেন।

সুয়ালকুচি

গুয়াহাটি থেকে ৩৫ কিলোমিটার দূরে অসমিয়া হস্তশিল্পের খনি সুয়ালকুচি। ছোট্ট এই জনপদের প্রায় প্রতিটি বাড়িতেই রয়েছে বাঁশের তৈরি তাঁত। অসমিয়া মেখলা, সিল্কের শাড়ি, চাদর। এছাড়াও গুয়াহাটি থেকে দেখে নিতে পারেন জনার্দন মন্দির, পান বাজার, গুয়াহাটি প্লানেটোরিয়াম, রাজু সংগ্রহশালা, নবগ্রহ মন্দির, ভুবেনেশ্বরী মন্দির, পাণ্ডু, বশিষ্ট আশ্রম।


কীভাবে যাবেন

কলকাতা থেকে গুয়াহাটি বিমান যোগ রয়েছে। হাওড়া থেকে গুয়াহাটি পর্যন্ত অজস্র ট্রেন রয়েছে। সময় লাগে প্রায় ১৮-২০ ঘন্টা। শিয়ালদহ থেকে রয়েছে সকাল ৬টা ৩৫ মিনিটের কাঞ্চনজঙ্ঘা এক্সপ্রেস। কলকাতা ষ্টেশন থেকে রয়েছে রাত ৯টা ৪০ মিনিটে কলকাতা গুয়াহাটি গরীবরথ এক্সপ্রেস।


কোথায় থাকবেন

হোটেল সুরাদেবী, ফোন: ০৩৬১ ২৫৪৫০৫০,

হোটেল প্রেসিডেন্সি, ফোন: ০৩৬১ ২৫৪৪৯১১।

হাফলং

ছবির মতো আঁকা একটি শৈলশহর। পাহাড়ের উপর থেকে নীচের দিকে তাকালে রামধনু দেখা যায়। হাফলং থেকে মাত্র নয় কিলোমিটার দূরে আছে পরিযায়ী পাখিদের অস্বাভাবিক মৃত্যুস্থল জাটিঙ্গা।


কীভাবে যাবেন

গুয়াহাটি থেকে দূরত্ব ২৯৭ কিমি। নিয়মিত ট্রেন চলাচল করে। লামডিং থেকেও ৪.৪৫-এ বারাকভ্যালি এক্সপ্রেস আর ২০.১৫-এ কাছাড় এক্সপ্রেস যায় এই হিলস্টেশনে।


কোথায় থাকবেন

অসম পর্যটনের ট্রারিস্ট লজ। যোগাযোগ: ডিসি হাফলং, ফোন:

০৯৮৫৬২৪২০৩২ অফিস অফ টুরিস্ট ইনফরমেশন অফিসার, হাফলং, ফোন: ০৩৬ ৭১২৭ ২৬৯৪।


মানস

হিমালয়ের পাদদেশে মানস নদীর তীরে আরও একটি অভয়ারণ্য।


কোথায় থাকবেন

হোটেল সুরাদেবী, ফোন: ০৩৬১ ২৫৪৫০৫০, হোটেল প্রেসিডেন্সি, ফোন: ০৩৬১ ২৫৪৪৯১১।

বাঘ ছাড়াও নানারকম বন্যপ্রাণী দেখা যায় এখানে। বিশেষ করে পিগমি হণ আর গোল্ডেন লাঙ্গুর বিশ্বে একমাত্র এখানেই দেখা যায়।


কীভাবে যাবেন

গুয়াহাটি থেকে বাসে বা জিপ ভাড়া করে যাওয়া যায়।

থাকবেন কোথায় মাথঙ্গুড়ি বনবাংলো


যোগাযোগ: ফিল্ড ডিরেক্টর, মানস টাইগার প্রজেক্ট। ফোন: ০৩৬৬৬ ২৬১৪১৩, ০৯৪৩৫১, ২৪৯৪৯

জোড়হাট

চায়ের চুমুকে দার্জিলিং না অসম বলে দিতে পারেন যাঁরা, তাঁদের তীর্থক্ষেত্র এই জোড়হাট। শুধু চা চাষই নয়, দেশের সবচেয়ে বড় চা গবেষণাগারটিও কিন্তু এখানেই।


কীভাবে যাবেন

গুয়াহাটি থেকে সরাসরি জোড়হাট ১২০৬৭ জনশতাব্দী এক্সক্সপ্রেস পাবেন রবিবার বাদে প্রতিদিন সকাল সাড়ে ছ'টায়।


থাকবেন কোথায়

পিডব্লডির রেস্ট হাউস, প্রশান্তি ট্রারিস্ট লজ। যোগাযোগ: ০৩৭৬ ২:৩২১৫৭৯।

শিবসাগর

ছয় শতাব্দীরও বেশি সময় ধরে রাজত্ব করা আসামের অহম সাম্রাজ্যের কেন্দ্রবিন্দু এই শিবসাগর। ইতিহাসপ্রেমীদের বরাবরের পছন্দের জায়গা।


কীভাবে যাবেন

জোড়হাট থেকে দূরত্ব ৫৬ কিমি। নিয়মিত বাস যাতায়াত করে।


থাকবেন কোথায়

পর্যটন দফতরের শিবসাগর ট্যুরিস্ট লজ, ফোন: ০৯৯৫৩৪৭৬০৬২। হোটেল সিদ্ধার্থ, ফোন: ০৩৭৭২ ২২২২৭৬।

ডিব্ৰুগড়

ভারতের চা-রাজধানী ডিব্রুগড়। তবে পর্যটনপ্রেমীরা বলেন, ব্রহ্মপুত্রের আসল রূপ দেখতে হলে আসতেই হবে ডিব্রুগড়ে। ট্রেকিং, মাউন্টেনারিং, ক্যাম্পিং এর ব্যবস্থা রয়েছে।


কীভাবে যাবেন

গুয়াহাটি থেকে সরাসরি বাস পাবেন।


থাকবেন কোথায়

হোটেল নটরাজ, ফোন: ০৩৭৩ ২৩২৭২৭৫। হোটেলদেবিকা, ফোন: ০৩৭৩ ২৩২৫৯৫৬।

কাজিরাঙ্গা ন্যাশনাল পার্ক

নানারকম জীবজন্তু রয়েছে এই জঙ্গলে। তবে মূলত একশৃঙ্গ গন্ডারের জন্য ই এখানে যাওয়া যেতে পারে।


কীভাবে যাবেন

গুয়াহাটি থেকে প্রতিদিন শিবসাগর, ডিব্রুগড় এবং তিলুকিয়া যাওয়ার বাস কাজিরাঙ্গার পাশ দিয়েই যাতায়াত করে।


থাকবেন কোথায়

পর্যটন দফতরের প্রশান্তি ট্যুরিস্ট লজ। ফোন: ০৭৮৯৬৩৫৩৬৩৯।

এছাড়াও সময় হলে অসমে আরও জায়গা ঘোরার তালিয়ার যোগ করতে পারেন। যেমন, তেজপুরের কাছে ভালুকপং। পাহাড় অরণ্যে ঘেরা শান্ত শহর। পবিতোরা ওয়াইল্ডলাইফ স্যাংচুয়ারি, তিনসুকিয়া অভয়ারণ্য।


আসাম ট্যুরিস্ট ইনফরমেশন সেন্টার গভমেন্ট অফ আসাম, আসাম হাউস, ৮, রাসেল স্ট্রিট, কলকাতা- ৭০০০৭১,

ফোন- ৯১-৩৩-২২২৯৫০৯৪


আসামের হেঁশেল থেকে...


অসাধারণ প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের পাশাপাশি এখানকার খাবার ও বেশ সুষম এবং খাওয়ার পদ্ধতিও অন্যান্য জায়গার তুলনায় কিছুটা আলাদা। রান্নাগুলো ও বেশ ঝঞ্ঝাটমুক্ত এবং প্রকৃতির সঙ্গে সম্পর্কযুক্ত, যা এখানকার জীবনযাত্রার প্রতিচ্ছবিকে তুলে ধরে। বিভিন্ন দেশের খাবার তৈরির পদ্ধতিকে আঞ্চলিকভাবে মিশিয়ে অসমিয়া খাবার গুলো তৈরি করা হয়।আসামের কোনও প্রত্যন্ত অঞ্চলে যদি আপনি ঘুরতে যান তাহলে এখনও দেখতে পাবেন তারা তাদের অতিথিকে আপ্যায়নের জন্য বাঁশের তৈরি মাদুর অথবা পিঁড়িতে বসতে দেয়। এর সাথেই বেল ধাতু দিয়ে তৈরি বেশ ভারী পাত্রে তারা খাবার পরিবেশন করে। আজ রইলো এইরকম ই বেশ জনপ্রিয় কিছু রান্নার পাকপ্রনালী।




মসুরটেঙ্গা


কী কী লাগবে

৪ টুকরো কই বা কাতলা মাছ, হাফ চামচ নুন, হাফ চামচ হলুদ, হাফ কাপ সরষের তেল, ১টা ঝিঙ্গে (টুকরো করা), ৪টে টোম্যাটো (টুকরো করা), ১/৪ চামচ মেথি, হাফ চামচ লেবু রস


কীভাবে বানাবেন

মাছে হলুদ নুন মাখিয়ে ভেজে নিন। মাছ ভাজা হলে সেই তেলেই অল্প আঁচে মেথি দিন। তাতে ঝিঙ্গে আর হলুদ দিয়ে ৭-৮ মিনিট রান্না করুন। ঝিঙ্গে নরম হয়ে এলে টোম্যাটোগুলো দিন। ৪-৫ মিনিট ঢাকা দিয়ে রেখে সবজিগুলোকে হাতার পেছন দিয়ে ভালো করে স্ম্যাশ করুন। ৩ কাপ গরম জল দিয়ে কিছুক্ষণ রাখুন। এবারে ভাজা মাছগুলো দিয়ে দিন। ৫-৬ মিনিট পর নামিয়ে লেবুর রস ছড়িয়ে দিন। গরম ভাতের সঙ্গে পরিবেশন করুন।

ইরি পুলু


কী কী লাগবে

ইরি পুলু নেস্ট, খাবার সোডা, সরষের তেল, পেঁয়াজ কুচি, নুন, হলুদ গুঁড়ো, আদা রসুন বাটা, কিউব করে কাটা আলু আর কুমড়ো।


কীভাবে বানাবেন

একটা পাত্রে জল গরম করে তাতে দিতে হবে ইরি পুলু নেস্ট এবং এক চা চামচ সোডা। জল ফুটে গেলে ইরি পুলু তুলে নিতে হবে। এবার প্যানে সামান্য সরষের তেল গরম করে ভাজতে হবে কাটা পেঁয়াজ। স্বাদ মতো দিতে হবে নুন এবং হলুদ। সঙ্গে আদা এবং রসুনের পেস্ট। এবার আলু এবং কুমড়ো কিউব করে কেটে ভেজে নিতে হবে। এবার গরম জলে ছাড়তে হবে আলু, কুমড়ো এবং ইরি পুলু। ব্যস তৈরি হয়ে গেল অসমের ঐতিহ্যবাহী ডিশ!



কালো মুসুর ডাল দিয়ে শামুক


কী কী লাগবে

কালো মুসুর ডাল, ছোট শামুক, তেজপাতা, পেঁয়াজ কুচি, শুকনো লঙ্কা, নুন, সর্ষের তেল, ধনেপাতা কুচি


কীভাবে বানাবেন

ডাল আর শামুক ভালো ভাবে ধুয়ে আলাদা আলাদা নুন মিশিয়ে সেদ্ধ করে নিন। তেল গরম করে তেজপাতা, শুকনো লঙ্কা ফোড়ন দিয়ে পেঁয়াজ কুচি গোলাপী করে ভাজুন। সেদ্ধ ডাল আর শামুক মিশিয়ে রান্না করুন। শেষে ধনেপাতা কুচি ছড়িয়ে নামিয়ে নিন।

চালকুমড়ো দিয়ে পাতিহাঁস


কী কী লাগবে

পাতিহাঁসের মাংস, চালকুমড়ো ছোট টুকরো করা, পেঁয়াজ কুচি, আদা রসুন বাটা, শুকনো লঙ্কা বাটা, জিরে ধনে বাটা, নুন, হলুদ গুঁড়ো, গোটা জিরা, তেজপাতা, শুকনো লঙ্কা, গরমমশলা বাটা, সরষের তেল


কীভাবে বানাবেন

তেল গরম করে তেজপাতা, শুকনো লঙ্কা, গোটা জিরা ফোড়ন দিন। পেঁয়াজ কুচি লাল‌ করে ভেজে একে একে আদা রসুন বাটা, শুকনো লঙ্কা বাটা, জিরে ধনে বাটা, নুন, হলুদ গুঁড়ো দিয়ে কষুন। মাংস দিয়ে কষে ঢেকে সেদ্ধ হতে দিন। সেদ্ধ হলে চালকুমড়ো দিয়ে আবার ও ভালো করে কষুন। ঢেকে মজতে দিন। তেল ভেসে উঠলে গরমমশলা বাটা মিশিয়ে নামিয়ে নিন।

কালো তিল বাটা রুই


কী কী লাগবে

রুই মাছ ৮ পিস, সর্ষের তেল পরিমাণ মত, কালো তিল ৪ টেবিলচামচ, পেঁয়াজ ২ টি, গোটা জিরে ১/২ চামচ, দারচিনি স্টিক ১ টি বড়, আদা রসুনবাটা ২ টেবিলচামচ, টমেটো ১ টি, ক্রাশড্ গোলমরিচ ১/২ চামচ, হলুদ ১ চামচ, ভাজা জিরে গুঁড়ো ১ টেবিলচামচ, কাঁচা লংকা ২ টি, গরমমশলা ১/২ চামচ, গোটা শুকনো লংকা ২ টি, তেজপাতা ১ টি, কাশ্মীরি লংকাগুঁড়ো ১/২ চামচ, ধনেপাতা ১/৪ কাপ, নুন ১ দেড় চা চামচ।


কীভাবে বানাবেন

মাছে আধ চা চামচ হলুদ, আধ চা চামচ নুন ও ক্রাশড্‌ গোলমরিচ দিয়ে ম্যারিনেট করে রাখতে হবে আধঘন্টা। কড়াইতে পরিমাণ মতো তেল গরম করে ভেজে তুলে নিতে হবে মাছগুলো।

এবার কালোতিল শুকনো কড়াইতে ২-৩ মিনিট রোস্ট করে নিয়ে এবং তাতে অল্প জল মিশিয়ে বেটে নিতে হবে। পেঁয়াজ ও টমেটো আলাদা করে বেটে নিতে হবে। এবার কড়াইতে ১/৪ কাপ তেল দিয়ে দারচিনি স্টিক, গোটা জিরে, তেজপাতা, গোটা শুকনো লঙ্কা ফোড়ন দিয়ে একে একে পেঁয়াজ বাটা, টমেটো বাটা, কালো তিল বাটা দিয়ে ভালো করে কষে ১ চামচ নুন, হলুদ, কাশ্মীরি লঙ্কা গুঁড়ো ও ভাজা জিরের গুঁড়ো দিয়ে আবারো কষে অল্প জল দিয়ে ফুটিয়ে নিতে হবে। এবার ভাজা মাছ, কাঁচা লঙ্কা, গরমমশলা গুঁড়ো ও ধনেপাতা কুচি ছড়িয়ে গরম গরম ভাতের সাথে পরিবেশন করুন হবে সুস্বাদু ‘কালো তিল বাটা রুই’।

bottom of page