top of page

ধনী ধোনি ধ্বনি...ধোনির প্রিয় ৭টি রান্না.. ক্যাপ্টেন কুল এবং তার অদ্বিতীয় ফ্যাশন স্টাইল..

মহেন্দ্র সিং ধোনি এখনও কত জনপ্রিয় তা তিনি মাঠে থাকলেই জানা যায়। এখনও তিনি মাঠে বাকি দশজনের অনুপ্রেরণা। ক্রিকেট দুনিয়ায় ধোনির বিকল্প এখনও ধোনিই। তাই ধোনি মাঠে থাকলেই এখনও ধ্বনি। লিখছেন জনপ্রিয় ক্রীড়া-সাংবাদিক অশোক রায়


ree

ree

আইপিএলে চেন্নাই অধিনায়কত্ব আগেই ছেড়েছিলেন। গোটা দেশ তবু অপেক্ষায় ছিল ভারতের সফলতম অধিনায়ক মহেন্দ্র সিং ধোনি এবারও কি উইকেটের পিছন থেকে ‘মগজাস্ত্র’ এবং 'বিধ্বংসী' ব্যাটের সফল প্রয়োগ ঘটিয়ে চেন্নাই সুপার কিংসকে ষষ্ঠবার জিতিয়ে নতুন রেকর্ডের চুড়োয় পৌঁছে দিতে পারবেন? শেষপর্যন্ত সমর্থকদের প্রত্যাশা পরিণতি পেল না, এটা বলার জন্য যতখানি হতাশার, বোধহয় ততটাই দুঃখের। কিন্তু একটা কথা ভাবলেই আশ্চর্য লাগে--- ১০ বছর আগে টেস্ট ক্রিকেট থেকে সরে যাওয়ার পরেও কেন আজও তাঁর সমর্থনে গলা ফাটায় আসমুদ্রহিমাচল! শুধু আইপিএলে ধোনিকে দেখার জন্য কেন মুখিয়ে থাকে মানুষ? কেন ভারতের সব স্টেডিয়ামে থিকথিকে হলুদ জার্সিতে ভিড় জমে ওঠে দর্শকাসনে? এই প্রতিবেদনে ১০ মিনিট ধোনি-চর্চার মাধ্যমে আমরা সেই ‘রহস্য’ একটু বুঝে নেওয়ার চেষ্টা করি কেন আন্তর্জাতিক ক্রিকেট থেকে সরে-থাকা একজন ক্রিকেটারকে ঘিরে আজও মানুষের মুখে ফুটে ওঠে এই উন্মত্ত-উন্মাদনা, মনে ঝরে পড়ে আনন্দ-আকুলতা? কেন আগ্রাসী আমজনতা ক্রিকেটের স্বপ্ন-ভ্রমণে তাঁর সঙ্গী হতে চায় বারবার! আসুন দেখি, মানুষটার জীবন-সড়কে মুগ্ধতার কোন কোন মাইলফলক রয়ে গেল, যা আগামী প্রজন্মকে ক্রিকেট শিক্ষায় উদ্বুদ্ধ করবে।

ree

আসলে, ধোনি এমনই এক ‘কমপ্লিট’ ক্রিকেটার, যিনি একইসঙ্গে একজন বিধ্বংসী ব্যাটার, একজন কৃতি কিপার এবং তারচেয়েও বড় একজন ক্ষুরধার বুদ্ধিসম্পন্ন অনবদ্য অধিনায়ক! আর এই শান্ত, সমাহিত, সৌজন্যবোধের মোড়কে আবৃত গোটা প্যাকেজটির নাম মহেন্দ্র সিং ধোনি। মানুষের মান্যতায় আজও তিনি ব্যাটসম্যান-কিপার-ক্যাপ্টেন প্রজাতির এক অকৃ্ত্রিম সুপারম্যান, আমাদের চিরস্থায়ী বিশ্বাস আর সর্বজনীন সুখস্মৃতির সর্বোচ্চ পছন্দের পরিচয়। তাঁর প্রতি এই অবিমিশ্র আবেগ, শিহরিত সম্ভ্রম, নমিত শ্রদ্ধা, অপার মুগ্ধতার জায়গাটাই তৈরি হয়েছে তাঁর নিরুদ্বেগ আভিজাত্য আর বহুমুখী বিধ্বংসী পারফরম্যান্সে। 'আমার মা সব পারে' এই বিশ্বাসের মতো ‘মাহি’-র ওপরেও মানুষের এই বিশ্বস্ত ধারণা দৃঢ়ভাবে তৈরি হয়ে গিয়েছে যে, ক্রিকেটের ২২ গজে এই লোকটি দেশ এবং দলের প্রয়োজনে সব কাজই নিষ্ঠাভরে, বিচক্ষণতার সঙ্গে শেষ করার চেষ্টা করেন। আসলে, তাঁর মধ্যে এক নয়, আমরা খুঁজে বেড়াই একসঙ্গে কয়েকজনকে। ব্যাপারটা একটু খুলে বলি। বর্তমান কর্পোরেট কালচারে ‘মাল্টিটাস্কিং’ নামে একটি শব্দ খুব চালু।

একজন মানুষকে একসঙ্গে দেওয়া হয় একাধিক দায়িত্ব পালন করতে। এবং এটা করা হয়, বলা বাহুল্য, যথেষ্ট যোগ্যতা ও বিবেচনা করেই। ধোনির সার্বিক পারফরম্যান্স দেখলেই মনে হয় এই রকম বিবিধ ও বহুমুখী কাজে বহাল থাকার আদর্শ মানুষটি শুধুমাত্র তিনিই। বহু ক্ষেত্রেই ব্যাটিং (৫৩৮ আন্তর্জাতিক ম্যাচে ১৬টি সেঞ্চুরিসহ ১৭ হাজার প্লাস রান), উইকেটকিপিংয়ে (৮২৯ শিকার) সঙ্গে অধিনায়কের (সর্বাধিক মোট ৩৩২টি ম্যাচ) গুরুদায়িত্ব পালন করতে হয়েছে। বোঝাই যাচ্ছে, প্রতিটি কাজই আলাদা। ব্যাপারটা অনেকটা বাড়ির সেই গৃহিণীর মতো, যিনি মাথা একদিকে কাত করে ঘাড় আর কাঁধের বিচিত্র সহাবস্থানের মধ্যে মোবাইল রেখে কথা বলার সঙ্গে সঙ্গে ছেলে-মেয়ের বাক্সে স্কুলের ‘টিফিন’ গুছিয়ে দেন, খেয়াল রাখেন বাড়ির কর্তা অফিস বেরোনোর আগে অ্যাটাচিটা না-ভোলেন এবং একইসঙ্গে নজর রাখেন আভেনে বসানো রান্নার কড়াইটিতেও।


ree

ree

এই ক্ষেত্রে এসে পড়ে প্রাধান্য বা অগ্রাধিকার দেওয়ার বিষয়টি। অস্বীকার করা যাবে না, মাহি সর্বদাই নিজস্ব স্বচ্ছ ও পরিষ্কার ধারণার পরিসীমায় আবদ্ধ থেকেছেন। উদাহরণ হাতের কাছেই মজুত--- ২০১১ বিশ্বকাপ ক্রিকেটে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ফাইনালে যথেষ্ট ঝুঁকি নিয়ে ‘ইন-ফর্ম’ ব্যাটসম্যান যুবরাজ সিংকে ব্যাটিং অর্ডারে আচমকা পিছিয়ে দিয়ে নিজেই চার নম্বরে নেমে ৯১ রানে নট আউট থেকে যেভাবে ‘ছক্কা’ হাঁকিয়ে উইনিং স্কোর করেছিলেন, তার ‘ডুপ্লিকেট’ পাওয়া যাবে? কী করছি, কেন করছি, কতটুকু করছি-- এই ব্যাপারগুলো সম্পর্কে সুস্পষ্ট ধারণা ছিল বলেই ‘সমাধান’ ও ‘সাফল্য’ তাঁর ক্ষেত্রে এসেছে হাত ধরাধরি করেই।

ree

একটা সহজ প্রশ্নের উত্তর ভাবুন, একজন ক্যাপ্টেন কি কখনও টিমমেটদের ‘বন্ধু’ হন? স্বাভাবিক ধারণা, সাধারণত হন না। যিনি সর্বোচ্চ পদের দায়িত্বপ্রাপ্ত, যিনি ‘নির্দেশ’ দেন, ‘নিয়ন্ত্রণ’ করেন, তিনি কখনও টিমমেটদের ‘ইয়ার’, ‘দোস্ত’ হতে পারেন না। কিন্তু অধিনায়কের প্রতিটি পদক্ষেপ যদি বুঝিয়ে দেয়, এই মানুষটা আর যাইহোক, বিপদের সময় নিজেকে বাঁচানোর প্রয়োজনে সব দোষ অন্যের ঘাড়ে চাপিয়ে সরে পড়বেন না অথবা ক্ষীরটুকু নিজে খেয়ে উচ্ছিষ্টটা অবশিষ্টদের জন্য রেখে চলে যাবেন না, তাহলে বন্ধুত্বের চেয়েও দামি আরেকটি শব্দ মনে, মননে এবং মানসিকতায় জন্মায়, যার নাম ‘বিশ্বাস’।

ree

যাঁরা মাহির ‘প্রেস কনফারেন্স’-এর সঙ্গে পরিচিত তাঁরা নিশ্চয়ই জানেন, দল যখন জেতে, তখন বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই ধোনি ‘ম্যাচের সেরা’ ক্রিকেটারটিকেই পাঠাতেন সাংবাদিকদের মুখে। কিন্তু দল হারলে যাবতীয় সমালোচনা সামলাতে অন্য কেউ নয়, সামনে থাকতেন তিনিই। সহ-খেলোয়াড়দের প্রতিটি শ্বাসের মধ্যে এই ‘বিশ্বাস’ ব্যাপারটা ঢুকিয়ে দিতে পেরেছিলেন বলেই তিনি ছিলেন ‘প্লেয়ার্স ক্যাপ্টেন’।

ree

অনেকেই হয়তো সেভাবে লক্ষ করেননি, ২০১১ ক্রিকেট বিশ্বকাপের ফাইনালে দুরন্ত ওভারবাউন্ডারি হাঁকিয়ে ৯১ রানে অপরাজিত থেকে ম্যাচ জিতিয়ে চ্যাম্পিয়ন করার পরে গোটা ওয়াংখেড়ে যখন বাঁধনছেঁড়া আবেগে আত্মহারা, তখন স্বেচ্ছায় এবং সন্তর্পণে হই-হুল্লোড়ের পুরো ধামাকাটি সচিন-কেন্দ্রিক করে তুলতে নিজে সরে যান টিমমেটদের পিছনে! এই নিয়ে পরে প্রশ্ন করা হলে খুব সহজ ভঙ্গিতে ‘ম্যাচের সেরা’ ধোনি বলেছিলেন, “বিশ্বকাপ জেতার আনন্দটা আমাদের সকলের। কিন্তু এই জয়টা আমরা সচিন তেন্ডুলকরকে উৎসর্গ করেছি। তাই ‘পাজি’ আজ সামনে থাকুক।”

ree

ক্রিকেটের সবথেকে বড় উৎসবে অমন চোখধাঁধানো ‘অ্যাচিভমেন্ট’-এর পরেও সসম্মানে সামনে আসার সর্বোত্তম সুযোগটি অধিনায়কোচিত অধিকারে পেতেই পারতেন ধোনি। কিন্তু ইচ্ছেটাকে প্রলোভনের পর্যায়ে সংক্রমিত হতে দেননি। এই প্রসঙ্গে আরও একটা উদাহরণ দিই। ২০১৫ বিশ্বকাপ তখনও শুরু হতে সপ্তাহ দুয়েক দেরি।

ree
ree

সেইসময় জন্মায় তাঁর প্রথম ও একমাত্র সন্তান ‘জিভা’। অনেকেই অনুরোধ করেছিলেন দেশে গিয়ে একটিবার এই অবস্থায় স্ত্রী-কন্যাকে দেখে আসতে। স্বামী হিসেবে, বাবা হিসেবে সেই অনুরোধের যথেষ্ট গ্রহণযোগ্য ও যুক্তিগ্রাহ্য কারণ থাকা সত্ত্বেও ধোনি কিন্তু সে পরামর্শকে পাশ কাটিয়েছিলেন। জাতীয় কর্তব্যের প্রতি তাঁর এই নিষ্ঠা স্থান পেয়েছিল ব্যক্তিগত স্বার্থের ওপরে। কথায় আছে ‘ক্রিকেট নিঃস্বার্থপরতার শিক্ষা দেয়'। এই স্বার্থ-সংযমই ধোনির ক্রিকেট শিক্ষার প্রথম ধাপ।

কেমন ক্যাপ্টেন ধোনি? এই প্রশ্নের উত্তর অন্য কেউ দেওয়ার আগেই জবাব দেবে তাঁর রেকর্ড। তিনিই যে ভারতীয় ক্রিকেটের সর্বোত্তম অধিনায়ক, নিংড়ানো তথ্যেই থাকবে তাঁর সমর্থন। ধোনিই ভারতের একমাত্র অধিনায়ক, যাঁর ট্রফি ক্যাবিনেটে একইসঙ্গে শোভা পাচ্ছে ২০০৭ প্রথম টি/২০ বিশ্বকাপ, ২০১১ একদিনের ক্রিকেট বিশ্বকাপ এবং ২০১৩ চ্যাম্পিয়ান্স ট্রফি।তিন-তিনটি আইসিসি ট্রফি জেতার নজির বিশ্বে আর কোনও ক্রিকেট অধিনায়কের নেই। কেউ কেউ বলতেই পারেন ধোনির ‘লাক’ ফ্যাক্টরের কথা। হ্যাঁ, ‘চ্যাম্পিয়ান্স-লাক’ বলে একটা কথা চালু আছে কোনও কোনও মহলে। কিন্তু শুধুমাত্র ভাগ্যের সহায়তা নিয়ে বিশ্ব পর্যায়ের তিন-তিনটি সেরা ট্রফি জয় সম্ভব? এভাবে এত তাচ্ছিল্যের সঙ্গে বললে তাঁর উজ্জ্বলতার উৎসবকে উপেক্ষা করার মতো শোনাবে।

ree

ree

টেস্ট ক্রিকেটে তাঁর সর্বাধিক ২৭টি জয়ের ভারতীয় রেকর্ড তো আর অমনি-অমনি তৈরি হয়নি! মানতেই হবে, পরিস্থিতির সঙ্গে থেকে যুদ্ধ করাটা এক ধরনের ‘আর্ট অব লিভিং’। সাইকোলজির ছাত্র-ছাত্রীদের এই কারণেই ‘মেন্টাল প্রোগ্রামিং’ নিয়ে পড়াশোনা করতে হয়। স্রোতের সঙ্গে এবং বিরুদ্ধে সাঁতার কাটতে কাটতেই ধোনি মাঠে সিংহের মতো দাপুটে, গম্ভীর, কুশলী ক্রিকেটার ও অধিনায়ক হয়ে উঠেছিলেন। শেষবার আইপিএল জেতার পরে গ্রেগ চ্যাপেলের মতো প্রশংসাবিমুখ মানুষও মাহি-বন্দণায় মুখর হয়ে জানিয়েছিলেন “অনুপ্রাণিত করার দিক দিয়ে নেতা হিসাবে ধোনি অনায়াসেই বসতে পারেন বিখ্যাত মাইক ব্রিয়ারলি, ইয়ান চ্যাপেল, মার্ক টেলর বা ক্লাইভ লয়েডের সঙ্গে একাসনে (যাক, কারওর কারওর বুদ্ধি দেরিতে হলেও পরিণত হয় তাহলে)। মনের সুইচ ‘অন’ ‘অফ’ করতে জানতেন বলেই অধিকাংশ সময়েই মাহি আবেগতাড়িত হয়ে পরিস্থিতি বিচারে বিভ্রান্তির শিকার হননি।

ree

এই প্রক্রিয়াটাও যথেষ্ট শিক্ষণীয়। বিশ্বকাপের ফাইনাল থেকে শুরু করে, পাকিস্তান কিংবা অস্ট্রেলিয়ার বিরুদ্ধে হাড্ডাহাড্ডি ম্যাচের আগের রাতে অন্য অনেকেরই যখন টেনশনে ‘নিদ নাহি আঁখি পাতে’ অবস্থা হয়, তখন ধোনিকে কেউ কখনও অকারণ আগাম আশঙ্কায় ঘুম হারাতে দেখেননি। কারণ, ম্যাচের দিন সতেজ হয়ে নামার ধারণাটা তাঁর গড়ে উঠেছিল নিজের আবির্ভাব ম্যাচের আগের রাত থেকেই। ধোনির সহজ ও পরিষ্কার মনোভাবই হল, ‘বর্তমানে বাঁচো’। খেলতে নেমে আগের বল কী হয়েছে, পরের বল কী হবে, সেটা নিয়ে ভাবনা অর্থহীন। যে-ডেলিভারিটা আসছে তা থেকে এই মুহূর্তে ‘সেরা-অর্জন’ কতটা করা যায়, ভাবনায় থাক শুধু সেটাই। আগের বলের ‘স্নিক’ ভুলে যাও।

ree

কোনওক্রমেই মনে রেখো না ‘বিট’ হওয়াটা। এটা বলা যতটা সহজ, ভাবনা থেকে সরানো মোটেই তত সহজ কাজ নয়। এই প্রক্রিয়া একটা নিরন্তর অভ্যাসের ফসল। যে-কোনও চ্যালেঞ্জ বা চাপকে কিছু করে দেখানোর সুযোগ হিসেবে নিতে শিখতে হবে। উদাহরণ চাই? ২০০৫ সালে ডাম্বুলায় মহামান্য গ্রেগ চ্যাপেলের সেই টালমাটাল সময়ে রাহুল দ্রাবিড়ের নির্দেশে শ্রীলঙ্কার বিরুদ্ধে ধোনিকে হঠাৎই বলা নেই কওয়া নেই ওপেন করতে বলা হল শেহবাগের সঙ্গে। মাত্র দু’রান করে আউট হলেন ধোনি। এর পরে আবারও ২০০৬ সালে ইংল্যান্ডের বিরুদ্ধে জামশেদপুরে ওপেন করতে পাঠানো হল ‘গ্রেট ফিনিশার’ হিসেবে প্রতিষ্ঠিত ধোনিকে। এবার কিন্তু আর ভুল হয়নি। ৩টি ছক্কা আর ১০টি বাউন্ডারি হাঁকিয়ে ৯৬ রান করেন মাহি।

ree

প্রশ্ন উঠতেই পারে, বিশেষত সাদা বলের ক্রিকেটে ধোনির ব্যাটিং কোথায় আলাদা? আইপিএলের ইতিহাসে চেন্নাই সুপার কিংস ফাইনালে উঠেছে বার দশেক, যার মধ্যে জিতেছে ৫ বার। দক্ষিণ আফ্রিকার প্রাক্তন অধিনায়ক, চেন্নাই সুপার কিংসের প্রাক্তন টিমমেট ফাফ দু’প্লেসি বলেছেন, “বিশ্বের সেরা ‘ফিনিশার’ নিঃসন্দেহে মহেন্দ্র সিং ধোনি। কীভাবে তিনি একটি ইনিংস শুরু করেন, ক্রমশ ছড়ান এবং ফিনিশ করেন তা আগ্রহভরে দেখার ও শেখার।” আসলে, শেষপর্যন্ত ম্যাচটাকে টেনে নিয়ে যাওয়া এবং শেষ ওভারে পুরো চাপটা অসহায় বোলারের ওপর চাপিয়ে খোশ মেজাজে চায়ের সঙ্গে গরম-গরম মুচমুচে ফিশ-ফ্রাই রসিয়ে খাওয়ার এই রেসিপি আর রসনাতৃপ্তির পেটেন্ট একমাত্র মাহির।

ree

বিখ্যাত ওয়েস্ট ইন্ডিয়ান পেসার ও ভাষ্যকার ইয়ান বিশপ একবার বলেছিলেন, “যদি শেষ ওভারে ১৫ রানও দরকার হয়, তাহলে চাপটা বোলারের ওপরই থাকে, ধোনির ওপরে নয়।” এই সর্বজনবিদিত ধারণাটা তো আকাশ ফুঁড়ে তৈরি হয়নি। এটাও দীর্ঘ পরীক্ষিত, দাপটে প্রদর্শিত এবং দারুণ- সাফল্যে প্রতিষ্ঠিত। অথচ ‘গ্রেট ফিনিশার’ হিসাবে বিখ্যাত মাহি একবার শ্রীলঙ্কার বিপক্ষেই ২০০৮ সালে একটা ম্যাচ ‘ফিনিশ’ করে ফিরেছিলেন ৫০ রানে ‘নট আউট’ থেকে।

ree

ভাবতে পারেন, দলের স্বার্থে এবং পরিস্থিতির প্রয়োজনে, একদিক সামলে সেই ইনিংসে একটা বাউন্ডারিও মারেননি তিনি! তাঁর একটা ‘পেটেন্ট’ হেলিকপ্টার শট আজও মানুষের স্মৃতিতে উজ্জ্বল। ব্যাটের সঙ্গে বলের সংযোগ মুহূর্তে ইস্পাতের চেয়েও দৃঢ়তার সঙ্গে কবজির প্রয়োগ, নিখুঁত টাইমিং এবং মিড-উইকেটের ওপর দিয়ে বল দর্শকাসনে পাঠানোর মধ্যে চরম স্পর্ধার প্রকাশ থাকত স্পষ্ট। হেলায় ওড়ানো হেলিকপ্টার শটে যাবতীয় মেধা ও মেহনতকে নিমেষে নস্যাৎ করার ঔদ্ধত্যই ধোনির প্লাস পয়েন্ট। এখন কেউ কেউ হেলিকপ্টার শট ‘কপি’ করার চেষ্টা করলেও ধোনির একচ্ছত্র আধিপত্যে কেউ ভাগ বসাতে পারেননি।

ree

এটা সকলেই মানেন, ব্যাটিং অর্ডারে সাত নম্বরে টেল-এন্ডারদের সঙ্গে এই মানুষটাই খেলতে নামতেন মাথায় ক্যালকুলেটর নিয়ে। প্রতিপক্ষের ওপর প্রভাব বিস্তারের রিমোট কন্ট্রোলটি থাকে ধোনর মগজে।ভাবা যায়, আন্তর্জাতিক এবং একইসঙ্গে উত্তেজক ম্যাচকে দমবন্ধ করা অবস্থায় একেবারে শেষ ওভার পর্যন্ত টেনে নিয়ে গিয়ে ‘ওভার বাউন্ডারি’ হাঁকিয়ে ম্যাচ জিতিয়ে ফিরেছেন, এমন ঘটনা ঘটেছে নয় নয় করে ২৪ বার! যার মধ্যে রান চেজে ১৩ বার (রান চেজে ৪৭ বার নট আউটও থেকেছেন)! ওয়ান-ডে ম্যাচে ধোনির গড় ৫০ প্লাস, নট আউটই থেকেছেন ৮৪ বার। অর্থাৎ নট আউট থাকার ধারাবাহিকতাতেও অন্যেরা ধোনির কাছে ধরাশায়ী।

ree

এখানেও একটা সহজ থিয়োরি ফলো করতেন তিনি--- ‘সব কিছু সহজ রাখো’। এক সাক্ষাৎকারে ধোনি জানিয়েছিলেন "একসঙ্গে অনেক ভাবনার ভিড় মনের মধ্যে জমানো ঠিক নয়। ভাবনা জমতে না-দিলে মনের ভিতর ফাঁকা জায়গা থাকে। প্রয়োজন অনুযায়ী পরিকল্পনা করার জন্য মনকে কাজে লাগানো যায়। কী রকম ‘ইজি থিঙ্কিং’ ভাবুন! মাহির হাতে এই শান্তভাবে, নিরুত্তাপ ভঙ্গিতে বিপক্ষকে ধ্বংস করার আনন্দ উপভোগ করতেই ভারতের যেখানেই আইপিএলের খেলা থাকুক, সেখানকার দর্শকাসন হলুদ জার্সিতে সেজে ওঠে।

ree

আর অদ্ভুত-আকর্ষণে আজও রব তোলে “ধোনি-ধোনি।” বুঝতে অসুবিধা হওয়ার কথা নয়, কেন, কোন আকর্ষণে, সানি গাভাসকরের মতো কিংবদন্তিও নিজের শার্ট টান করে বুক পেতে চেয়ে নেন তাঁর অটোগ্রাফ? হ্যাঁ, এটা ঠিক, বয়সের কারণে ধোনির ব্যাটে অতীত ঝলক কিঞ্চিৎ ফ্যাকাশে।এবারের আইপিএল বলছে, মাহির ব্যাট কখনও ‘খরস্রোতা’, কখনও ‘খরাক্লিষ্ট’! চোটে আর ফ্যাটে ধোনি একটু শ্লো। মুস্কিল হচ্ছে, ৬ কিংবা ৭ নম্বর ‘স্লট’-এ যাঁরা নামেন, তাঁদের কাছে ‘ঝিমুনি’ নয়, ‘ঝলক’ আশা করে দর্শক, সমর্থক, দল। অথচ, আন্তর্জাতিক মানের বোলারদের বিরুদ্ধে একেবারে শেষপর্বে ক্রিজে ঢুকে ২২ গজের তাপ-উত্তাপ মাপার আগেই ব্যাটে ‘রেডিমেড-রেমাল’ তোলা চাট্টিখানি ব্যাপার নয়। এই ‘কঠিনতম’ দায়িত্বটা দীর্ঘদিন কাঁধে নিয়েছেন তিনি।

ree

অনেকেই বলেন মহেন্দ্র সিং ধোনি ‘কুল’ ক্যাপ্টেন। এই প্রসঙ্গে একটি ‘চুপকথা’ কাহিনি আছে। কেরিয়ারের শুরুর দিকে ধোনি যখন ভারতীয় দলে প্রতিষ্ঠা পাওয়ার লক্ষ্যে এগোচ্ছেন, তখন (২০০২) তাঁর জীবনে ‘প্রথম প্রেম’-এর উন্মেষ জাগিয়ে আসেন ‘প্রিয়াঙ্কা’। প্রিয়াঙ্কা ঝা-এর জন্ম কলকাতাতে। ধোনির ‘বায়োপিক’ ‘দ্য আনটোল্ড স্টোরি’ ছবিতে প্রিয়াঙ্কার চরিত্রটি আনার জন্য ধোনির অনুমতি চান পরিচালক নীরজ পান্ডে (অভিনয় করেন দিশা পাটানি)। ঝাড়খণ্ড থেকে প্রথম ক্রিকেটার হিসেবে ভারতীয় দলে খেলার আগ্রহে রেলের চাকরি ছেড়ে দেওয়ার কথা যখন মনস্থ করেন ধোনি, তাঁর পরিবারের সকলেই বাধা দেন।

ree

মাহির ক্রিকেটীয় দক্ষতার প্রতি ভরসা রেখে প্রিয়াঙ্কা পাশে দাঁড়ান সার্বিক সমর্থন নিয়ে। কিন্তু একসঙ্গে জীবন কাটানোর শপথ নিয়েও সেই প্রেম শেষপর্যন্ত পরিণয়ের দরজা অবধি পৌঁছায়নি। এক মোটর দুর্ঘটনায় মৃত্যু হয় প্রিয়াঙ্কার। এই আচমকা খবরে ধোনি এতটাই বিধ্বস্ত, বিমর্ষ হয়ে পড়েন যে মাস ছয়েক তিনি ব্যাট গ্লাভস স্পর্শ করেননি বলে শোনা যায়। এই পর্বে মানসিক সাহায্য করেন তাঁর প্রথম জীবনের কোচ কেশবরঞ্জন ব্যানার্জি, যিনি ধোনিকে স্কুলজীবনে গোলকিপার থেকে উইকেটকিপার হিসেবে গড়ে তোলেন।

ree

এই মৃত্যুর পরে তাঁর সামগ্রিক চিন্তা, চেতনা, মানসিকতা, দৃষ্টিভঙ্গি অনেকটাই বদলে যায় যা ভবিষ্যৎ জীবনে নতুনভাবে নিমগ্ন, স্থিতধি হতে সাহায্য করে। যার প্রকাশ হয়তো আমরা তাঁর আপাত-গম্ভীর এবং নিরুত্তাপ শারীরিক প্রকাশ ভঙ্গিতে দেখতে পাই। তারপর সময় এগিয়ে যায় নিজের নিয়মে। কেউ ফুরিয়ে যাওয়ার জন্যেই হয়তো ‘বিন্দু’ হয়েই জন্মায়। কেউ দীর্ঘজীবী হওয়ার জন্য অমৃতের সন্ধান করে যান আজীবন।

ree

এবং এর পরে ধোনির সঙ্গে রোমান্সের নানা কাহিনি উঠে আসে নানা সময়ে, নানা খবরে। শোনা যায় দীপিকা পাড়ুকোনের প্রতি অনুরক্ত ছিলেন ধোনি। এতটাই যে তাঁর কথাতেই নিজের মাথার লম্বা চুল কেটে ফেলেন। সেইসময় ধোনির খেলা থাকলে মাঠে জেতেন দীপিকা। শোনা যায়, এরপর ২০০৯ সালে দক্ষিণ ভারতীয় নায়িকা সাই লক্ষ্মী এবং ‘গজনি’ ছবির নায়িকা আশিন লোখান্ডওয়ালার সঙ্গে সম্পর্ক তৈরি হয়। আইপিএলের প্লে-অফ ম্যাচের আগে তিনি নাকি যান ওই নায়িকার বাড়ি। অবশেষে ২০১০ সালে সাক্ষী সিং রাওয়াতের সঙ্গে পরিণয়সূত্রে আবদ্ধ হন।

ree

অন্য সকলের মতো ধোনিও একদিন চূড়ান্ত অবসর নেবেন বাস্তব এটাই । কারণ, চলমানতাই জীবন। খেলা ছাড়ার পরে এক ক্রিকেট-নিষ্ঠ, নম্র চরিত্র, নির্জন-নির্লিপ্তিতে চলে যাবেন, এমনটা হতেই পারে না। কারণ, ধোনির মতো ক্রিকেটার তো শুধু তথ্যে, তত্ত্বে বাঁচেন না, থেকে যান মানুষের মনে আর আমরা থাকব ধোনি সড়কে চিরন্তন প্রতিধ্বনি শোনার আগ্রহেই।

ধোনির প্রিয় ৭টি রান্না..

সঞ্চিতা দাস

ree

ডাল মাখানি


কী কী লাগবে

মুসুর ডাল- ১ কাপ

রাজমা- একমুঠো

বিউলির ডাল- ১ কাপ

স্বাদমতো নুন

পেঁয়াজ কুচি- ২ কাপ

আদা-রসুনের পেস্ট- ২ চামচ

টমেটো পিউরি- ২ কাপ

লঙ্কা গুঁড়ো- ১/২ চামচ

ধনে গুঁড়ো- ১ চামচ

গরম মশলা- ১ চামচ

মাখন পরিমাণমতো

ফ্রেশ ক্রিম- ৩ চামচ (বড়)

ধনেপাতা কুচি- ১ চামচ


কীভাবে বানাবেন

কুকারে ডাল, রাজমা নুন আর সামান্য জল দিয়ে সেদ্ধ হতে দিন। অন্তত পাঁচটা সিটি দিন। এবার প্যানে ঘি দিয়ে তাতে পেঁয়াজ দিয়ে ভালো করে নেড়ে নিন। এবার পেঁয়াজ লাল হয়ে এলে ওর মধ্যে আদা-রসুনের পেস্ট, টমেটো পিউরি, লঙ্কা গুঁড়ো আর স্বাদমতো নুন দিয়ে নাড়ুন। এবার ওর মধ্যে ধনেপাতা কুচি মিশিয়ে দিন। এবার এতে ডাল দিয়ে মেশান। অতিরিক্ত ঘন মনে হলে সামান্য দুধ যোগ করতে পারেন। এবার কিছুক্ষণ ফুটতে দিয়ে ধনে জিরে গুঁড়ো, গরম মশলা দিয়ে নেড়ে নিন। অন্য একটা প্যানে মাখন দিয়ে লঙ্কা গুঁড়ো দিন, এবার তা ডালের উপর ঢেলে দিন। এবার ফ্রেশ ক্রিম আর ধনেপাতা কুচি ছড়িয়ে দিলেই তৈরি ডাল মাখনি। স্বাদমতো সামান্য চিনিও যোগ করতে পারেন। ডাল মাখনি গরম গরম পরিবেশন করুন রুটি কিংবা নানের সঙ্গে।

ree

গাজরের হালুয়া


কী কী লাগবে

গাজর - ১/২ কেজি ফ্যাটযুক্ত দুধ - ১ লিটার

ঘি - ৩-৪ টেবিল চামচ

চিনি- স্বাদ অনুযায়ী

খোয়া ক্ষীর - ২০০ গ্ৰাম

ড্রাই ফ্রুটস কুঁচো - ১ কাপ

এলাচ গুঁড়ো - ১ চা চামচ


কীভাবে বানাবেন

প্রথমে গাজর গ্ৰেট করে নিন। ছোট ছোট টুকরো করে মিক্সার গ্ৰাইন্ডারে এক- দু'বার ঘুরিয়ে মিহি করে নিতে পারেন। এবারে প্যানে দুধটা একটু ঘণ করে ফুটিয়ে নামিয়ে ঠান্ডা করুন। অন্য একটি প্যানে ঘি দিয়ে গাজরটা হালকা নেড়ে নিন। গাজরটা হালকা ভাজা হয়ে এলে আসতে আসতে দুধটা মিশিয়ে দিন ও নাড়তে থাকুন। অবশ্যই মনে রাখবেন এই রান্নাটি কম আঁচেই করতে হবে এবং সচেতন থাকতে হবে। নয় নীচে পোড়া লেগে যাওয়ার সম্ভবনা থাকে। এবারে চিনি ও ড্রাই ফ্রুট কুচি মিশিয়ে নাড়তে থাকুন। পুরোটা ঘন হয়ে এলে, খোয়া ক্ষীর ও এলাচ গুঁড়ো মিশিয়ে নিন। হালকা বাদামী রঙের ও ঘন হয়ে এলে গ্যাস বন্ধ করে নামিয়ে নিন। গ্যাস থেকে নামানোর আগে একদম সামান্য পরিমাণে ঘি ছড়িয়ে দিতে পারেন ওপরে।

হালুয়া একেবারে তৈরি। তবে গরমের থেকে ঠান্ডা করে খেতেই বেশি ভালো লাগে। তাই ফ্রিজে রেখে বা ঘরের স্বাভাবিক তাপমাত্রায় রেখে ঠান্ডা করুন। অন্তত ঘন্টা দুয়েক পড়ে অপরে ড্রাই ফ্রুট ছড়িয়ে পরিবেশন করুন।

ree

বাটার চিকেন


কী কী লাগবে

চিকেন, বাটার, টমেটো কুচি, পেঁয়াজ কুচি, শুকনো লঙ্কা, দারুচিনি, এলাচ, টকদই, গোলমরিচ, জিরে, কাশ্মীরি লঙ্কা গুঁড়ো, হলুদ গুঁড়ো, চিনি, জিরে গুঁড়ো, নুন, সাদা তেল, কসৌরি মেথি ও ফ্রেশ ক্রিম।


কীভাবে বানাবেন

প্রথমে চিকেন ভালো করে ধুয়ে জল ঝরিয়ে নিন। এ বার তাতে নুন, হলুদ, লঙ্কাগুঁড়ো, টকদই দিয়ে ম্যারিনেট করে রেখে দিন। কড়াইয়ে তেল দিন। এরপর ম্যারিনেট করা চিকেনে কর্নফ্লাওয়ার মাখিয়ে ভালো করে ভেজে নিন। ওই তেলেই লঙ্কা, গোটা গরম মশলা, পেঁয়াজ, টমেটো দিয়ে ভালো করে ভেজে নিন। এরপর কড়াইয়ে সামান্য তেল দিয়ে তাতে এই মিশ্রণটি দিন। হলুদ গুঁড়ো, লঙ্কার গুঁড়ো, জিরে গুঁড়ো, স্বাদমতো নুন দিয়ে কষাতে থাকুন। এরপর ভাজা চিকেনটা দিয়ে দিন। ভালো করে কষাতে থাকুন। যোগ করুন ফ্রেশ ক্রিম। বেশি করে বাটার দিন। এ বার গা মাখা একটা ঝোল বানান। এরপর উপর থেকে কসৌরি মেথি ছড়িয়ে পরিবেশন করুন বাটার চিকেন।

ree

ক্ষীর বা পায়েস


কী কী লাগবে

গোবিন্দ ভোগ চাল ১ কাপ, দুধ ২ কেজি, চিনি স্বাদমতো, নুন এক চিমটি, খোয়া ক্ষীর ২০০ গ্রাম, ঘি ২+১ টেবিল চামচ, এলাচ গুঁড়ো ১/২ চা চামচ, ড্রাই ফ্রুটস, কেশর।


কীভাবে বানাবেন

দুধ জ্বাল দিয়ে ঘন করে নিন। চালের সাথে ১ টেবিল চামচ ঘি মেখে ওর মধ্যে দিয়ে সেদ্ধ হতে দিন। নুন, চিনি আর গ্রেট করা খোয়া ক্ষীর দিয়ে ভালো করে মিশিয়ে নিন। অন্য একটি প্যানে ঘি গরম করে ড্রাই ফ্রুটস হালকা ভেজে ওর মধ্যে মেশান। এলাচ গুঁড়ো আর কেশর মিশিয়ে ঠান্ডা হলে পরিবেশন করুন।

ree

মাটন কারি

কী কী লাগবে

মাটন ৫০০ গ্রাম, আলু বড় ৪ টুকরো, পেঁয়াজ ১৫০ গ্রাম, আদা রসুন বাটা ২ টেবিল চামচ, টকদই ১০০ গ্রাম, হলুদ গুঁড়ো ১ চা চামচ, জিরে গুড়ো ১ চা চামচ, ধনে গুঁড়ো ১ চা চামচ, কাশ্মীরি লাল লঙ্কার গুঁড়ো ২ চা চামচ, সরষের তেল ৫ টেবিল চামচ, গরম মশলা ফোড়নের জন্য, তেজপাতা ১ টি, শিলে বাটা এলাচ ১/২ চা চামচ, নুন স্বাদ অনুযায়ী, ঘি ১ চা চামচ


কীভাবে বানাবেন

মাংস ধুয়ে নিয়ে তাতে টক দই, গুঁড়ো মশলা, ১ টেবিল চামচ সরষের তেল, আদা রসুন বাটা ভালো করে মিশিয়ে নিয়ে তিন থেকে চার ঘন্টা ম্যারিনেড হতে দিন। মাটনের ম্যারিনেশন হয়ে গেলে, আলু গুলো নুন হলুদ দিয়ে ভালো করে ভেজে তুলে রাখুন। ঐ তেলে তেজপাতা ও গোটা গরমমশলা ফোড়ন দিয়ে সুন্দর গন্ধ বের হলে লম্বা করে কাটা পেঁয়াজ লাল লাল করে ভেজে নিন। এবার ম্যারিনেড করা মাটন দিয়ে অন্ততঃপক্ষে ৩০ মিনিট কম আঁচে কষিয়ে নিন। নুন, আলু ও ১ গ্লাস গরম জল মিশিয়ে ঢেকে রান্না করুন আরো ২০ মিনিট। নামানোর আগে এলাচ বাটা ও গরমমশলা দিয়ে গ্যাস বন্ধ করে পাঁচ মিনিট ঢেকে পরিবেশন করুন।

ree

এগ স্যালাড


কী কী লাগবে

ডিম: ২টি

পেঁয়াজপাতা: সামান্য

শশা: ১ টি

টমেটো: ১ টি

গোলমরিচ: আধ চা চামচ

চিলি ফ্লেক্স: আধ চা চামচ

লেবুর রস: ১ টেবিল চামচ

লেটুস পাতা: ২-৩টি


কীভাবে বানাবেন

প্রথমে ডিম সেদ্ধ করে নিন। খেয়াল রাখবেন ডিম যেন ভাল ভাবে সেদ্ধ হয়। এ বার সেদ্ধ ডিমের খোসা ছাড়িয়ে ছোট ছোট টুকরো করে নিন। একটি পাত্রের মধ্যে টুকরো করা ডিম, শশা কুচি, টমেটো কুচি, পেঁয়াজ পাতা এবং লেটুস কুচি করে দিয়ে দিন। স্বাদ অনুযায়ী নুন, গোলমরিচ এবং চিলি ফ্লেক্স যোগ করুন। ঝাল খেতে অসুবিধা হলে চিলি ফ্লেক্সের বদলে অরিগ্যানো বা অন্য কোনও মশলা দিতে পারেন।

সব শেষে উপর থেকে লেবুর রস ছড়িয়ে সব উপকরণ ভাল ভাবে মিশিয়ে নিন।

ree

চিকেন সসেজ পিজ্জা


কী কী লাগবে

ময়দা ২ কাপ

ইস্ট ১ চামচ

চিনি ১ চামচ

গ্রিলড চিকেন সসেজ ২টি (স্লাইস করা)

টপিং এর জন্য ( পেঁয়াজ, ক‍্যাপসিকাম, ব্ল‍্যাক অলিভ)

গ্রেটেড চিজ ১ কাপ

নুন গোলমরিচ গুঁড়ো স্বাদ মত

মিক্সড হার্ব ১ চামচ

পিজ্জা সস ৪ চামচ

অলিভ অয়েল পরিমাণ মত


কীভাবে বানাবেন

১ কাপ উষ্ণ গরম জলে চিনি গুলে ওর মধ্যে ইস্ট দিয়ে ঢাকনা বন্ধ করে ১০ মিনিট রাখুন। বুদবুদ উঠলে বুঝবেন ইস্ট এক্টিভ হয়েছে। এবার ময়দার মধ্যে ইস্ট এর মিশ্রন দিয়ে মেখে নিন। ডো তে অলিভ অয়েল মাখিয়ে রাখুন ৩০ মিনিট।

লেচি কেটে মোটা করে বেলে নিন। কাটা চামচ দিয়ে ফুটো ফুটো করে দিন।

এবার তাতে পিজ্জা সস মাখিয়ে একে একে স্লাইস করা চিকেন সসেজ, পেঁয়াজ, ক‍্যাপসিকাম, ব্ল‍্যাক অলিভ দিন।

ওপর থেকে গ্রেট করা চিজ, নুন গোলমরিচ গুঁড়ো, মিক্সড হার্ব, অলিভ অয়েল ছড়িয়ে ১৮০° প্রিহিটেড ওভেন এ রাখুন ১৫ মিনিট। গরম গরম পরিবেশন করুন।


ক্যাপ্টেন কুল এবং তার অদ্বিতীয় ফ্যাশন স্টাইল

ধোনি মাঠে যেমন সপ্রতিভ তেমনই মাঠের বাইরে। তাঁর স্টাইলিং নিয়ে লিখলেন এলিজা ভৌমিক...

ree

একদা ভারতীয় দলের অপরিহার্য ক্রিকেট খেলোয়াড় বিশ্বকাপজয়ী অবসরপ্রাপ্ত ক্যাপ্টেন মহেন্দ্র সিং ধোনি। কিংবা ওঁর ফ্যানেদের আদরের ক্যাপ্টেন কুল ক্রিকেট মাঠে তার পারফরমেন্সের দিক থেকে যেমন কুল এবং অবশ্যই অদ্বিতীয়, মাঠের বাইরে কোনও ইভেন্ট বা ছোটখাটো কাজে বেরোনোর সময় তাঁর পোশাকের ক্ষেত্রেও একেবারেই অদ্বিতীয় তিনি। ধোনির স্টাইলের মূল মন্ত্র 'simplicity with elegance'. তাঁর প্রতিটি লুক দেখলেই বোঝা যায় স্টাইলিংয়ের ছোটখাটো ডিটেলসের প্রতি তার কতটা নজর। অ্যাথ লিজার এবং ক্যাজুয়ালেই তাঁকে বেশি দেখা গেলেও ফরমাল পোশাকেও তিনি অনবদ্য।

ree

বেশিরভাগ জায়গায় হোয়াইট শার্ট বা হোয়াইট পোলোনেক টি শার্ট আর ফিটেড জিনসে ধোনিকে দেখা যায়। এই পোশাক ক্যাজুয়াল হলেও ক্লাসিক। তবে কেমোফ্লেজ কার্গো প্যান্ট কিংবা কেমোফ্লেজ জ্যাকেটও ক্যাপ্টেন কুলের বিশেষ পছন্দ। তবে এই প্রিন্টটি পছন্দ হওয়ার আরেকটা কারণ বোধহয় ইন্ডিয়ান আর্মিতে ওঁর সাম্মানিক লেফটেন্যান্ট কর্নেল পদটি। ২০১১ সালে ক্রিকেটার হিসেবে দেশের প্রতি তার বিশেষ সার্ভিসের জন্য ইন্ডিয়ান আর্মি থেকে এই পদটি তাকে দেওয়া হয়। ক্যাজুয়াল পোশাককে সম্পূর্ণ করার জন্য ক্যাপ্টেন কুল ট্রেন্ডি স্নিকার, স্টাইলিশ ঘড়ি এবং সানগ্লাস দিয়ে অ্যাক্সেসরাইজ করেন।

ree

ধোনির কালেকশনে প্রচুর পরিমাণ ক্যাজুয়াল জ্যাকেটও রয়েছে। এছাড়া ক্যাজুয়ালসের ক্ষেত্রে তাঁর বিশেষ পছন্দ Turms-এর ফ্যাশনেবল অ্যান্ড ইন্টালিজেন্ট অ্যাপারেলস। তার সিমপ্লিসিটির জন্য আজও তার 'বয় নেক্সট ডোর' ইমেজটা থেকেই গেছে। তবে বয়সের সঙ্গে এসেছে স্মার্টনেস, আর আছে তাঁর বিচক্ষণতা। যে-কারণে অ্যাক্টিভ ইন্ডিভিজুয়াল হিসেবে তিনি বেছে নিয়েছেন Turms-এর মতন একটি অ্যাপেরেল ব্র্যান্ড, এই ব্র্যান্ডের পোশাকের বিশেষত্ব হল এই পোশাকগুলির ওপর কোনও দাগ লাগে না, পোশাক ভিজলেও বোঝা যায় না এবং খুব তাড়াতাড়ি নোংরাও হয় না।

ree

মহেন্দ্র সিং ধোনি Turms- এর ব্র্যান্ড অ্যাম্বাসেডর হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে নিজের ওয়ারড্রবে এই ইনোভেটিভ টেকনোলজির পোশাকগুলিকে জায়গা দিয়েছেন। হেয়ারকাট এর ক্ষেত্রেও বিভিন্ন সময় নতুন ট্রেন্ড উপহার দিয়েছেন ক্যাপ্টেন কুল। ইন্টারন্যাশনাল টিমের হয়ে প্রথমদিকে খেলার দিনগুলোতে তার কাঁধ অব্দি লম্বা স্ট্রেট চুল সকলেরই মনে থাকবে, তেমনি একসময় তার ঘাড় অব্দি চুলের কথাও মনে থাকবে সকলের।

ree

কখনও যেমন চুলে ট্রেন্ডি কালার ব্যবহার করেছেন ক্যাপ্টেন কুল, কখনও বা ঘাড় অব্দি সামান্য ওয়েভি চুলে হাইলাইট করে নতুন ট্রেন্ড সেট করেছেন। কখনও শর্ট হেয়ারকাট-এর সঙ্গে স্পাইক্স আবার কখনও ফেডেড লুক ক্রিয়েট করেছেন তিনি। এমনকী দাড়ির ক্ষেত্রেও কখনও একগাল চাপ দাড়ি, কখনও ক্লিন শেভড লুক, কখনও দু'দিনের না-কাটা দাড়ি আবার কখনও কাঁচা-পাকা দাড়িতে নতুন নতুন ট্রেন উপহার দিয়েছেন ফ্যানদের। তবে বলাই বাহুল্য প্রতিটি স্টাইলে এবং লুকেই তাঁকে অত্যন্ত আকর্ষণীয় লাগে। আজও ফ্যানদের তাঁর পরবর্তী হেয়ার স্টাইলের ওপর চোখ থাকে।

 
 
 

Comments


ssss.jpg
sssss.png

QUICK LINKS

ABOUT US

WHY US

INSIGHTS

OUR TEAM

ARCHIVES

BRANDS

CONTACT

© Copyright 2025 to Debi Pranam. All Rights Reserved. Developed by SIMPACT Digital

Follow us on

Rojkar Ananya New Logo.png
fb png.png

 Key stats for the last 30 days

bottom of page