ছট পূজার উৎপত্তি ও দেবসেনার গল্প, শাড়ি ম্যাজিক, সরষের তেলের গুণাগুণ, রবিবারের গল্প: নিশিডাক
- রোজকার অনন্যা

- 6 hours ago
- 11 min read
ছট পূজার উৎপত্তি ও দেবসেনার গল্প

কার্তিক মাসের শুক্লপক্ষের ষষ্ঠী তিথি, এই দিনেই সারা উত্তর ভারতজুড়ে পালিত হয় মহাপবিত্র ছট পুজো। সূর্য দেবতা ও তাঁর পত্নী উষা-প্রত্যুষা বা ষষ্ঠী মাতার আরাধনায় নিবেদিত এই উৎসব আজ শুধু বিহার, ঝাড়খণ্ড বা পূর্ব উত্তরপ্রদেশেই নয়, ছড়িয়ে পড়েছে সমগ্র ভারতবর্ষ জুড়ে। এমনকি পশ্চিমবঙ্গের নদীয়া, উত্তর ও দক্ষিণ ২৪ পরগনা, কলকাতা, হাওড়াতেও এই পূজার উৎসবমুখর রূপ স্পষ্ট হয়ে উঠছে প্রতি বছর।

ছট পুজোর মূল শিকড় পৌরাণিক ও লোকবিশ্বাসের গভীরে প্রোথিত। কিংবদন্তি অনুযায়ী, রাজা প্রিয়ব্রত ও রাণী মালিনীর কোনো সন্তান ছিল না। তারা পুত্র কামনায় পুত্রকামেষ্ঠী যজ্ঞ আয়োজন করেন। সেই যজ্ঞের অগ্নিকুণ্ড থেকে এক বাটি ক্ষীর বেরিয়ে আসে। রাণী সেই ক্ষীর ভক্ষণ করলে গর্ভধারণ করেন, কিন্তু শিশুটি মৃত অবস্থায় জন্ম নেয়। শোকে তিনি আত্মহত্যার উদ্দেশ্যে নদীতে ঝাঁপ দিতে গেলে এক দেবী তাঁকে রক্ষা করেন। নিজেকে দেবসেনা বা ষষ্ঠী মা বলে পরিচয় দিয়ে তিনি রাণীকে বলেন, তাঁর এবং সূর্য দেবতার পূজা করলে তিনি সন্তান দান ও সন্তানের রক্ষা করবেন। রাণী সেই মতে পূজা করলে সন্তানের আশীর্বাদ লাভ করেন। সেই থেকেই সূর্য ও ষষ্ঠী মাতার আরাধনায় শুরু হয় ছট পুজোর প্রথা।

প্রখ্যাত নৃতত্ত্ববিদ কে. এস. সিং তাঁর প্রবন্ধ "Solar Traditions in Tribal and Folk Cultures of India"-তে উল্লেখ করেছেন, ছট পুজো একদিকে সূর্যোপাসনা, অন্যদিকে মাতৃদেবীর পূজার এক অপূর্ব সংমিশ্রণ। তাঁর মতে, "ছঠি মা" হলেন সন্তান দাতা ও রক্ষাকর্ত্রী। অসুর ও দেবদের মহাযুদ্ধের পর সুখ ও শান্তি ফিরিয়ে আনতে দেবীর আবির্ভাব ঘটে বিহারে। তিনি মাতৃদেবী ধর্মের প্রভাবে গঠিত হলেও, সূর্য উপাসনার মূল বৈশিষ্ট্য আজও অটুট আছে।
ব্রহ্মবৈবর্ত পুরাণে দেবসেনাকে দেবতা কার্তিকের পত্নী হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে। রবার্ট এল. ব্রাউনের বিশ্লেষণ অনুযায়ী, দেবসেনার এই চরিত্রটি ষষ্ঠী মাতার সঙ্গে একীভূত হয়। তাই আজকের লোকবিশ্বাসে ছঠি মা কখনও সূর্য দেবতার পত্নী, কখনও বা মাতৃদেবীর রূপে পূজিতা হন।

অনেক আচার-অনুষ্ঠানের মতো, ছট পুজোর উল্লেখও পাওয়া যায় ভারতীয় মহাকাব্যে। রামায়ণ-এ বলা হয়েছে, বনবাস থেকে অযোধ্যায় ফিরে আসার পর রাম ও সীতা রাবণ বধের প্রায়শ্চিত্ত হিসেবে ছট ব্রত পালন করেছিলেন। বিহারের মুঙ্গের জেলার মানুষ বিশ্বাস করেন, সীতাই প্রথম এই ব্রত করেছিলেন, এবং আজও সেখানে সীতা চরণ মন্দির সেই কিংবদন্তির সাক্ষী বহন করে।
মহাভারত-এও সূর্যপুত্র কর্ণ কুরুক্ষেত্র যুদ্ধে যোগ দেওয়ার আগে সূর্য দেবতার উদ্দেশ্যে যে আচার পালন করেন, তাকে ছট পুজোর আদি রূপ বলা হয়। পরবর্তীতে দ্রৌপদী ও পাণ্ডবরাও তাঁদের রাজ্য পুনরুদ্ধারের প্রার্থনায় একই ব্রত পালন করেন।

ছট পুজোর মূল দর্শন ‘শুদ্ধতা, সংযম ও নিবেদন’। ভক্তরা টানা চার দিন ধরে কঠোর নিয়মে এই পূজা পালন করেন। প্রথম দিন ‘নহায় খায়’, দ্বিতীয় দিন ‘খরনা’, তৃতীয় দিনে সন্ধ্যা অর্ঘ্য আর শেষ দিনে উষা অর্ঘ্য দিয়ে পূজা সমাপ্ত হয়। সূর্যোদয়ের সময় নদী, জলাশয় বা গঙ্গার ঘাটে দাঁড়িয়ে উপাসনা করা হয়। হাতে থাকে দেউড়ি, সোপানায় সাজানো ফল, ঠেকুয়া, গুড়ের পিঠা, নারকেল, আখ, কলা, ও ফুল।
ছট পুজো শুধুমাত্র ধর্মীয় উৎসব নয়, এটি প্রকৃতির প্রতি কৃতজ্ঞতা জ্ঞাপনেরও এক প্রতীক। সূর্যের আলো ও শক্তি জীবনের উৎস। সেই চেতনার উদযাপন এই পূজার অন্তরস্থ দর্শন। জল, মাটি, বায়ু ও আলো এই চার মৌলিক উপাদানের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদনই ছটের মূল সুর।

আধুনিক সময়ে শহর ও গ্রাম নির্বিশেষে ছট পুজো হয়ে উঠেছে মিলনোৎসব। নারীরা যেভাবে শুদ্ধ মন, কঠোর ব্রত ও অনমনীয় বিশ্বাস নিয়ে এই পূজা পালন করেন, তা প্রকৃতিই যেন নারীশক্তির প্রতীক হয়ে ওঠে।
ছট পুজো আজ এক আঞ্চলিক উৎসবের সীমা ছাড়িয়ে ভারতের সাংস্কৃতিক ঐক্যের প্রতীক হয়ে উঠেছে। সূর্যের জ্যোতি আর মাতৃদেবীর করুণায় জীবনের নবীন আভাস খুঁজে নেয় মানুষ। যেমন রাণী মালিনীর জীবনে দেবসেনা সন্তান দান ও আশার আলো এনেছিলেন, তেমনি আজও লক্ষ লক্ষ ভক্তের জীবনে ছঠি মা আলো, আশীর্বাদ আর আশার প্রতীক হয়ে বিরাজ করেন।
শাড়ি ম্যাজিক!
এলিজা

‘শাড়ি’ শব্দটা যতই পরিচিত হোক না কেন, সেটা আমাদের ছেলেবেলার চোখে লেগে থাকা এক রঙিন স্বপ্ন, অথবা মা-দিদিমার ঘ্রাণমাখা পুরনো অভিজ্ঞতা, আজকের নারীর শাড়ি কিন্তু উপযুক্ত ব্লাউজ ছাড়া অসম্পূর্ণ। একটা শাড়ির সঙ্গে ঠিকঠাক ব্লাউজ মানে, আত্মবিশ্বাসটাও যেন শাড়ির আঁচলে জড়িয়ে নেওয়া। আজকের আলোচনা সেই অল্প পরিসরের ম্যাজিক নিয়ে যা একটা শাড়ির লুককে "নট সো গুড" থেকে "মাইন্ড ব্লোয়িং"-এ পৌঁছে দিতে পারে। একটা ব্লাউজ গাইড, যা আপনার শাড়ির সঙ্গে সামঞ্জস্য রাখবে, শরীরের গঠনের সঙ্গে তাল মিলিয়ে চলবে, আর আপনাকে ঠিক আপনার মতো করেই গ্ল্যামারাস করে তুলবে।
শাড়ির ডিজাইন অনুযায়ী ব্লাউজ বাছা
ম্যাচিং বনাম কনট্রাস্ট
গর্জাস বা সিম্পল: যেকোনো শাড়ির সঙ্গেই মানিয়ে যেতে পারে পুরোপুরি ম্যাচিং ব্লাউজ। সাদামাটা হলেও তার নিজস্ব স্টাইল থাকে। আর যদি চান একটু চমক? তবে কনট্রাস্ট রঙের ব্লাউজ ট্রাই করুন। শাড়ির রঙটাই যেন আরও বেশি ফুটে ওঠে। এম্ব্রয়ডারি ও অলংকার শাড়িতে যদি অনেক কাজ থাকে, ব্লাউজ হোক মিনিমাল। আবার একেবারে সাদামাটা শাড়ির সঙ্গে ভারী এমব্রয়ডারি বা ইউনিক এমবেলিশমেন্ট ব্লাউজ বদলে দিতে পারে পুরো মুড, এক টুকরো রোদের মতো।

নেকলাইন, স্লিভ ও ব্যাক ডিজাইন নিয়ে খেলুন:
নেকলাইন স্টাইলস
রাউন্ড নেক: ক্লাসিক ও কমন সাধারণ দিনগুলোয় একেবারে পারফেক্ট।
ভি-নেক: মুখকে লম্বা ও পাতলা দেখায় সিম্পল, অথচ ইলিগ্যান্ট।
হল্টার নেক: সাহসী, পার্টির জন্য আদর্শ।
বোট

নেক/স্কয়ার নেক: লুকে একটা স্টাইলিশ এজ এনে দেয়।
ব্যাক ডিজাইন
কাট-আউট ব্যাক/কীহোল ডিজাইন: এলিগ্যান্সের সঙ্গে স্টাইলিশ এজ।
ব্যাকলেস: আপনি যদি কনফিডেন্ট হন হোক একদম বোল্ড।
নেট ব্যাক/শিয়ার প্যানেল: একটু ডেলিকেট, একটু স্টেটমেন্ট লুক।

স্লিভ স্টাইলস
স্লিভলেস: আরামদায়ক, হালকা, কনটেম্পোরারি।
ক্যাপ স্লিভ: নারীকণ্ঠে এক কোমল ছোঁয়া।
থ্রি-কোয়ার্টার স্লিভ: ব্যালান্সড ফর্মাল ও ইজি।
ফুল স্লিভ: ভারী শাড়ি বা শীতের অনুষ্ঠান একেবারে মানানসই।
কাপড় অনুযায়ী ব্লাউজের চরিত্র
সিল্ক: রাজকীয়, বিয়ে বা উৎসবের জন্য আদর্শ।
চিফন/জর্জেট: হালকা ও মোহময় সন্ধ্যা বা গেট-টুগেদারে উপযুক্ত।
অর্গানজা: এলিগ্যান্ট, স্ট্যান্ডআউট ক্লাসি পার্টির জন্য।
সিকুইন: আলোয় ঝলমল রাতের পার্টিতে ফাটাফাটি লুক।
হ্যান্ডলুম/খাদি: যেকোনো দিনে দারুণ ইন্ডি লুক আনতে পারফেক্ট।

বডি টাইপ অনুযায়ী ব্লাউজ স্টাইল
অ্যাপল বডি (উপরে ভারী, নিচে পাতলা)
✔ ফুল স্লিভ বা এলবো স্লিভ, হালকা কাপড়, সলিড কালার
✖ ভারী গলার কাজ, প্লাঞ্জিং নেক
পিয়ার বডি (উপরে পাতলা, নিচে ভারী)
✔ বোট নেক, ক্যাপ স্লিভ, শোল্ডার হাইলাইট
✖ ভারী স্লিভস বা ঢোলা কাট
আওয়ারগ্লাস বডি (কমর স্পষ্ট)
✔ ফিটেড ব্লাউজ, সুইটহার্ট নেক, প্রিন্সেস কাট
✖ বক্সি ফিট বা খুব ঢোলা কাট
রেকট্যাঙ্গুলার বডি (সব দিকেই প্রায় সমান)
✔ পেপলম, রাফল, অফ-শোল্ডার
✖ স্ট্রেট বা একেবারে সাদামাটা কাট
ইনভার্টেড ট্রায়াঙ্গেল (চওড়া শোল্ডার)
✔ ভি-নেক, কাওল নেক, কোমর এমবেলিশড
✖ প্যাডেড শোল্ডার বা হেভি টপ

ওভাল বডি (মধ্যাংশে ভারী)
✔ এম্পায়ার লাইন, এ-লাইন ব্লাউজ, স্কুপ নেক
✖ কোমর চেপে ধরা ডিজাইন
অ্যাথলেটিক বডি (টোনড ও ব্যালান্সড)
✔ হল্টার নেক, কাটআউট, পেপলম নারীত্বের ছোঁয়া
✖ স্লাচি বা শেপলেস ব্লাউজ
পেটিট বডি (ছোটখাটো গঠন)
✔ শর্ট ব্লাউজ, হাই নেক, ভার্টিকাল স্ট্রাইপ
✖ লম্বা ব্লাউজ, ভারী এমব্রয়ডারি
প্লাস-সাইজ বডি (কার্ভ ফ্লন্ট করতে চান)
✔ স্ট্রাকচারড ফিট, ভি-নেক, ডার্ক টোনস
✖ বক্সি ফিট বা মাইক্রো প্রিন্ট

মুখশ্রী ও ইভেন্ট অনুযায়ী নেকলাইন
হার্ট শেপ ফেস: সুইটহার্ট বা ভি-নেক
রাউন্ড ফেস: অ্যাঙ্গুলার নেকলাইন বোট নেক বা স্কয়ার
স্কয়ার ফেস: স্কুপ বা সুইটহার্ট সফট ফিনিশ
ওভাল ফেস: যেকোনো কাট মানানসই, ব্যক্তিত্বটাই মুখ্য
ব্লাউজ একটা অভিব্যক্তি। এটা শুধু সেলাই করা এক টুকরো কাপড় নয় এটা আপনার শরীর, মনের ভাষা আর অনুষ্ঠানের আবহ প্রকাশ করে। শাড়ি যখন পরছেন, ব্লাউজের ডিজাইন যেন আপনার কণ্ঠস্বর হয়ে ওঠে। চোখ রাখুন শাড়ির বোল্ড ড্রেপিং স্টাইলের জন্য। নিয়ম ভাঙুন, নিজের মতো করে ফ্যাশন তৈরি করুন। কারণ, আপনি নিজেই একটা ট্রেন্ড।
সরষের তেলের ১০টি অজানা তথ্য

১.প্রাকৃতিক কীটনাশক হিসেবেও ব্যবহৃত হয়:
সরষের তেল শুধু রান্নার উপকরণ নয় অনেক কৃষক এটি প্রাকৃতিক কীটনাশক হিসেবে ব্যবহার করেন, বিশেষ করে জমিতে পোকার আক্রমণ প্রতিরোধে।
২.ক্যান্সার প্রতিরোধে সহায়ক উপাদান: এই তেলে থাকে গ্লুকোসাইনোলেট নামক একটি যৌগ, যা অ্যান্টি-ক্যান্সার প্রপার্টিজ রাখে বলে কিছু গবেষণায় দাবি করা হয়েছে।
৩.খাদ্য সংরক্ষণেও কার্যকর: পুরানো দিনে, খাবার দীর্ঘদিন ভালো রাখতে সরষের তেল ব্যবহার করা হতো। এর জীবাণুনাশক গুণ থাকার ফলে খাবারে পচন ধরতো না।
৪.ত্বকের গোপন রক্ষক:
প্রাচীন ভারতে এটি শিশুদের মাসাজে ব্যবহৃত হতো, কারণ সরষের তেল সূর্যের ক্ষতিকর রশ্মি থেকে ত্বককে রক্ষা করে এবং সংক্রমণ প্রতিরোধ করে।

৫.ঔষধী গুণাগুণ:
আয়ুর্বেদ শাস্ত্রে সরষের তেলকে শুধু রান্নার তেল নয়, বরং একটি শক্তিশালী ঔষধ হিসেবে বিবেচনা করা হয়। ঠান্ডা, সর্দি, হাঁচি, গা-ব্যথা ইত্যাদিতে এর ব্যবহার খুবই প্রচলিত।
৬.গলার ব্যথা উপশমে উপকারী: গরম সরষের তেল গলায় মালিশ করলে বা হালকা গরম করে নাভিতে দিলে গলার ব্যথা ও সর্দি কমে যায় এই ঘরোয়া টোটকাটি অনেকেই জানেন না।
৭.খুশকি দূর করতে পারদর্শী: চুলে খুশকির সমস্যা থাকলে, সরষের তেল হালকা গরম করে চুলে লাগালে এটি স্ক্যাল্পের ড্রাইনেস কমায় এবং খুশকি দূর করে।

৮.জুতোর ফাটা সারাতে সাহায্য করে: ঠান্ডার সময় ফাটা জুতো বা চামড়া (leather) ফাটলে সরষের তেল সেখানে লাগালে তা আবার নরম ও মসৃণ হয়ে যায়।
৯.মশার প্রতিরোধে কার্যকর: সরষের তেল ও কর্পূর মিশিয়ে ঘরে দিলে মশা আসে না, এটি এক পুরনো ও কার্যকরী টোটকা।
১০.সিঙ্কে বা লোহার বাসনে মরচে পড়া আটকায়:
লোহার বাসন বা রান্নার সিঙ্কে হালকা করে সরষের তেল মেখে রাখলে মরিচা পড়ে না এবং ধাতব জিনিস অনেকদিন টিকেও থাকে।
নিশিডাক
রজতশুভ্র মজুমদার

"আসবেন নাকি?" মাস্কপরা রুগ্ন নির্জীব লোকটার ডাক বড় আন্তরিক। প্যাচপ্যাচে কাদা রাস্তায়
গোলাপি জিন্সে নাজেহাল ডাহুকি যেন ধড়ে প্রাণ ফিরে পেল সে ডাকে। কালবিলম্ব না করে সে উত্তর দিল, "হ্যাঁ, যাব।"
"তোর ভয় পাবে না তো?" ডাহুকির কানের
কাছে মুখ নিয়ে গিয়ে বিহান ফিসফিস করে জিজ্ঞেস করল।
"ভয়?" ডাহুকি বিস্মিত হল, "ভয় কাকে, স্যার?"
"না, মানে, দেখে যা মনে হচ্ছে... ওটা একটা হানাবাড়ি কিনা!"

"সো হোয়াট?" ডাহুকি খিলখিল করে হেসে
উঠল, "স্যার, আই উড ডেফিনিটলি এনজয় ইট।"
রাত্রি আটটা-সাড়ে আটটার মধ্যেই রাস্তাটা কেমন নিস্তব্ধ,
জনমানবহীন! হবে না-ই বা কেন, গত চব্বিশ ঘণ্টায় এ তল্লাটে তো কম বৃষ্টি হয়নি! এখন বৃষ্টিটা একটু ধরে এসেছে ঠিকই, কিন্তু গভীর লোডশেডিংয়ে ডুবে আছে সমগ্র এলাকা। ট্রেন থেকে নেমে অজানা অচেনা রাস্তা ধরে ঝিরঝিরে বৃষ্টিতে এতটা পথ হেঁটে ক্লান্ত অবসন্ন
শরীরে এই মোড়ের আলো-আঁধারিতে এমন রোমাঞ্চকর একটা আশ্রয়ের সন্ধান পেয়ে, ডাহুকি মনে
মনে যারপরনাই উল্লসিত। ঘণ্টা খানেক আগে ট্রেনটা যখন মাঝ রাস্তায় হঠাৎই দাঁড়িয়ে পড়েছিল, কেউ ভাবতে পেরেছিল সে ওখানেই দেহ রাখবে আজকের মতো? "আর যাবে না ট্রেন," কেউ
একজন শুরু করেছিল। তারপর গুঞ্জন দাবানলের মতো ছড়িয়ে পড়েছিল গোটা ট্রেনে, "ট্রেন
আর যাবে না।"
"মানে? যাবে না মানে কী? মামদোবাজি নাকি?"
"বৃষ্টিতে ভিজে ট্রেনের কি জ্বর এল? যত্তসব!"
"কী হয়েছে, দাদা, ও দাদা..."
"স্টেশন অবধিও যাবে না?"
"এখান থেকে নেক্সট স্টেশন কত দূর?"

"একটা চলন্ত মালগাড়ির ওপরে রেলের ওভারহেডের
তার ছিঁড়ে পড়েছে। শুধু তাই নয়, লাইনের পাশে থাকা ইলেকট্রিক পোলও গিয়েছে বেঁকে। তারই জেরে একটার পর একটা ট্রেন দাঁড়িয়ে পড়ছে যেখানে-সেখানে। বুঝতে পারছেন না?"
কাল রাত থেকেই প্রবল বর্ষণে বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে
এলাকার ট্রেন চলাচল। তার ছিঁড়ে, গাছ ভেঙে সব লণ্ডভণ্ড! অগত্যা ট্রেন থেকে নেমে, পিঠে রুকস্যাক, হাতে ছাতা, এই এতটা রাস্তা হেঁটে পায়ের যা হাল হয়েছে ডাহুকির, তাতে এই আশ্রয়টা না পেলে তার যে কী অবস্থা হত, ভগবান জানেন! সে আর এক মুহূর্ত দেরি করতে রাজি নয়, "স্যার, চলুন না..."
"হ্যাঁ চল," বিহান দ্বিধা লুকোল।

"আসুন, আসুন..." পথ দেখিয়ে লোকটা সামনের
হানাবাড়ির দিকে এগোতে লাগল।
বাইরে থেকে হানাবাড়ি বলে মনে হলেও, হানাবাড়িতে যেমন শতাব্দীপ্রাচীন পাথরের দেয়াল, অসংখ্য
অন্ধকারাচ্ছন্ন কক্ষ, সংকীর্ণ গলি-বারান্দা কিংবা মাটির নীচে ঠান্ডা স্যাঁতসেঁতে কুঠুরির পর কুঠুরি থাকে, ভেতরে ঢুকে তেমন কিছুই না দেখে ডাহুকির কিছুটা আশাভঙ্গ হল।
"কী হল, পছন্দ হচ্ছে না?" বিহানের প্রশ্নে এ দিক-ও দিক ভাল করে দেখে ডাহুকি ঠোঁট ওলটাল, "উঁহু, না আছে প্রাচীন স্থাপত্যের ঘোরলাগা আকর্ষণ, না গা ছমছমে শিহরন! কী করে পছন্দ হবে, স্যার?"
"আর্ল অফ স্ট্র্যাথমোরের জমিদার ভবন এক্সপেক্ট করেছিলিস নাকি তুই?"
"ইয়া, গ্ল্যামিস ক্যাসেল! হাউ ফ্যান্টাস্টিক!"
"ওই প্রাসাদে জমিদার বংশের কয়েকজনের অপঘাতে মৃত্যু হয়েছিল, তাদের আত্মাই ঘুরে বেড়ায় প্রাসাদের আনাচেকানাচে।"

"যদি ভুল না করি, স্যার, ওখানেই তো কিং ডানকানকে হত্যা করেছিলেন ম্যাকবেথ!"
"শোনা যায়, প্রাসাদের একটি প্রদর্শনী কক্ষে ম্যাকবেথের শার্ট আর তরবারি রাখা আছে।"
"কিছু খাবেন তো আপনারা," বিহান-ডাহুকির আলোচনায় ব্যাঘাত ঘটিয়ে মাস্কপরা লোকটা সামনে এসে দাঁড়াল।
"একটু পরে," ডাহুকি স্পষ্টতই বিরক্ত।
"আলো ছাড়া অসুবিধে হচ্ছে না তো আপনাদের?" ফের প্রশ্ন করল লোকটা।

"না না, মোটেও না," ডাহুকি লোকটার চোখে চোখ রেখে বলল, "আমরা অ্যাডভেঞ্চার ভালবাসি, দাদা। এখানে কি ভূত দেখা যাবে?" লোকটা কোনও উত্তর দিল না। তার প্রতি ডাহুকির আচরণ অসৌজন্যমূলক ঠেকল বিহানের। সে গলা ঝেড়ে বলল, "আমাদের আশ্রয় দেওয়ার জন্য অনেক ধন্যবাদ তোমাকে। তোমার নামটাই তো জানা হয়নি।"
"আজ্ঞে, আমি বিভূতি দাশ, এই বাড়িটার দেখাশোনা করি।"
"আর উনি হলেন ডিটেকটিভ প্রজ্ঞানপরাঙ্গম পূততুণ্ড, সংক্ষেপে পিপিপি স্যার, আর আমি ওঁর অ্যাসিস্টেন্ট ডাহুকি," ঠোঁটদুটো সামান্য
ফাঁক করে এক চিলতে কাঁচা রোদের মতো হাসি ছড়িয়ে ডাহুকি নিজেদের পরিচয় দিল।

"আসলে আমরা যাচ্ছিলাম একটা কেসের তদন্তে।
রানিপুরের রাজমাতার অলঙ্কার চুরির কিনারা করতে। তারপর মাঝ পথে ট্রেন বিভ্রাট..." বিহান পরিষ্কার করে বুঝিয়ে দিল।
"হেঁ হেঁ, একটা রাত কাটিয়েই যান না স্যার, কোনও অসুবিধে হবে না, আমি তো আছি," লোকটা আশ্বস্ত করল।
"সে ঠিক আছে, কিন্তু..." বিহান দ্বিধাপূর্ণ চোখে তাকাল তার দিকে, "তুমি মুখে মাস্ক পরে আছ কেন?"
"আর বলবেন না, স্যার, এখানে করোনার যা উপদ্রব!"
"সে তো কবেই চুকেবুকে গিয়েছে, দাদা," ডাহুকি মুখ খুলল।
"না ম্যাডাম, এ জিনিস চুকেবুকে যায় না কোনও দিন। আপনারাও মাস্ক পরুন, খুব সাবধানে থাকুন," লোকটা ঘর থেকে বেরিয়ে গেল নিঃশব্দে। আর বিহানকে একা বসিয়ে রেখে ডাহুকি একটু ঘুরে দেখতে গেল বাড়িটা।

এ বাড়িটা আসলে একটা অসম্পূর্ণ দালান। প্লাস্টার হয়নি, কোনও কোনও ঘরে জানালা-দরজাও লাগেনি। ব্যাগভর্তি বালি-সিমেন্ট-সুরকির সঙ্গে দোতলা বাড়ির সর্বত্র ইতস্তত ছড়ানো মাস্ক,
পিপিই কিট, গ্লাভস, ছেঁড়া ওষুধের প্যাকেট, ভাঙা অক্সিজেন সিলিন্ডার, ফ্লো মিটার। ওপরের কয়েকটা ঘরে বাঁশ বাঁধা আছে। এখানে-ওখানে পড়ে আছে কাঠের পাটা–সজারুর কাঁটার মতো তার গা থেকে বেরিয়ে আছে রক্তপিপাসু পেরেক! এ রকমই একটা পেরেকে পা ফুটিয়ে চিৎকার
করে উঠল ডাহুকি, "উঃ!..." মোবাইলের টর্চ জ্বেলে বিহান একছুটে ওপরে উঠে
গেল! কিন্তু কোথায় ডাহুকি? একটা সাদা থান পরা অস্পষ্ট নারীমূর্তিকে দ্রুতগতিতে সিঁড়ি
দিয়ে নীচে নেমে যেতে দেখল সে। তার মাথার ঘোমটা, মুখে মাস্ক, হাতে ধরে আছে ওষুধের প্যাকেট। চোখের পলক ফেলতে না ফেলতেই সে হাওয়া! কে ওই মহিলা? ভূত? বিহান ভূতে বিশ্বাস করে না। সে মোবাইলের আলোয় ওপরের ঘরগুলো তন্নতন্ন করে খুঁজেও ডাহুকিকে দেখতে পেল না। শেষে গলা চড়িয়ে ডাকল, "ডাহুকি!..." কোথায় গেল ডাহুকি?
বিহান নীচে নেমে এল। সে এখন নীচের ঘরগুলোয় খুঁজছে ডাহুকিকে। খুঁজতে খুঁজতেই নজরে পড়ল একটা বড় সাইজের হলঘরের বিচিত্র চেহারা! ঘরটায় কোনও জানালা-দরজা নেই। ফলে ঘরে ঢোকার কোনও প্রশ্নই ওঠে না। ওই ঘরের সামনেই একটা বালির বস্তার ওপর ডাহুকি বসে, "স্যার, আমার পায়ে পেরেক ফুটেছে।"
"আমি তো মানা করেছিলাম ওপরে উঠতে। এই রকম
একটা নির্মীয়মাণ বাড়ির ভেতর এমন অন্ধকার দুর্যোগের রাতে লাফালাফি না করলেই নয়?"
"আসলে স্যার, আমি...মানে..." ডাহুকি আমতা-আমতা
করতে লাগল।
"বাড়াবাড়ি করিস না," বিহান বিরক্তি প্রকাশ করেও নিজেকে সংযত করে নিল, "ব্যান্ডেড আছে তোর কাছে?"
ততক্ষণে বিভূতি এসেছে ব্যান্ডেড নিয়ে। বিহান অবাক হয়ে লক্ষ করল ডাহুকির হাতে ওষুধের প্যাকেট। "ওটা কোথায় পেলি?" বিহানের প্রশ্নের কোনও উত্তর দিল না ডাহুকি। বিভূতি বলল, "ওটা রেমডেসিভির, স্যার। খুব
ভাল ওষুধ। ম্যাডামকে বলুন খেয়ে নিতে, আপনিও খান।"
"হোয়াট?" এই প্রথমবারের জন্য বিচলিত হল বিহান। এই ওষুধের প্যাকেট হাতেই তো সে সাদা থান পরা মহিলাকে নীচে নামতে দেখেছিল খানিক আগে। তবে কি তার চোখের ভুল? ডাহুকিকেই কি সে দেখেছিল আসলে? কিন্তু তার পরনে তো গোলাপি জিন্স আর সাদা কুর্তি! সে কী করে ঘোমটা দেওয়া সাদা থান আর মুখে মাস্ক পড়তে পারে? বিহান মেলাতে পারছে না কিছুতেই। ডাকসাইটে ডিটেকটিভ প্রজ্ঞানপরাঙ্গম পূততুণ্ড কি শেষে এই নাম না জানা মফঃস্বলের অন্ধকার হানাবাড়িতে এসেই জব্দ? বিস্ময়-বিস্ফারিত
চোখে সে দেখল, ওষুধের প্যাকেট থেকে একটা বড়ি বের করে ডাহুকি বাড়িয়ে দিচ্ছে তার দিকে, "এটা খেয়ে নিন, স্যার।"
ততক্ষণে হলঘরের ভেতর থেকে স্পষ্ট গোঙানির আওয়াজ আসে বিহানের কানে। কারা অমন আর্তনাদ করছে? কী বলছে তাঁরা? বিহান কান পেতে শুনছে আর্ত গলায় কেউ একজন অক্সিজেন ভিক্ষা করছে,
"একটু অক্সিজেন দাও, একটু অক্সিজেন!"
"কে তুমি? তোমার কী হয়েছে?" বিহান প্রশ্ন
করল বাইরে থেকে।
"আমি সেই হতভাগা শ্রমিক যে মাইলের পর মাইল
জাতীয় সড়ক ধরে হেঁটে এখানে মরতে এসেছিলাম।" আরেকজন আর্তনাদ করছে চাপা স্বরে, "আমার খুব জ্বর, আমাকে এখান থেকে বের করে নিয়ে চলো..."
"কে তুমি?"
"রোজার মাস, শেষ শুক্রবারের জুম্মার নামাজ হল না, ইফতার হল না, আমাকে এখানে ভরে দিয়ে গেল ওঁরা... তুমি আমাকে উদ্ধার করো!"
এরপর একটা বাচ্চার কান্নার আওয়াজ পেল বিহান, "আমার বাবা আমাকে ফেলে রেখে গিয়েছে এখানে। আমাকে বাড়ি পৌঁছে দাও প্লিজ! আমি মায়ের কাছে যাব।" তারপর শুনতে পেল কাশির শব্দ। খুব কাশছে কেউ, কাশতে কাশতেই
নিদারুণ কষ্টে বলছে, "চিতার ধোঁয়ায় সংক্রমণ ছড়াতে পারে বলে আমাকে পোড়াতে দেয়নি শ্মশানে। আমি এখন কী করব? আমার কি মুক্তি নেই, খোকা?" কী উত্তর দেবে বিহান? সে তো এমন অবস্থায় পড়েনি কখনও জীবনে! একটা অল্পবয়সি মেয়ের কণ্ঠস্বর শুনতে পাচ্ছে সে এখন, "মোড়ের মাথায় অচৈতন্য হয়ে পড়ে ছিলাম আমি, আমাকে জল দেয়নি কেউ। একটা
প্লাস্টিকে মুড়ে এখানে ঢুকিয়ে দিয়ে গিয়েছিল একদিন। আমি বেরোতে চাই এখান থেকে। আমাকে
বের করে দাও, প্লিজ!" একে একে চিৎকার করতে শুরু করেছে লোকাল ট্রেনের হকার, প্ল্যাটফর্মের
দোকানদার, পথশিশু, গৃহপরিচারিকা! এত মানুষের আর্তনাদ-হাহাকার-কান্নায় বিহান কিংকর্তব্যবিমূঢ়
হয়ে পড়ল। সে কি ছুটে পালাতে চেষ্টা করবে এখান থেকে? কিন্তু কোন দিকে পালাবে? মোবাইলটাও
সুইচ অফ হয়ে গিয়েছে। ঘুটঘুটে অন্ধকারে কিছুই তো ঠাহর করা যায় না। বৃষ্টি নেমেছে ঝমঝমিয়ে। সোঁ সোঁ বাতাস অবিরাম। থেকে থেকে বিদ্যুৎ চমকাচ্ছে। বিহান চিৎকার করে ডাকল, "বিভূতি... বিভূতি..."

হঠাৎ ঝিকিয়ে ওঠা বিদ্যুতের আলোয় বিহান দেখল তার
পায়ের কাছে পড়ে আছে ডাহুকি। কিন্তু কে তার শরীরে পিপিই কিট পরাল, মুখে মুখোশ, হাতে
গ্লাভস? ডাহুকি কথা বলছে না কেন? বিহান তাকে ডাকছে, কিন্তু সে সাড়া দিচ্ছে না। একবার, দুবার, তিনবার ডাকল বিহান, তাকে হাত ধরে টেনে তোলার চেষ্টা করল। কিন্তু না, ডাহুকি নিথর হয়ে পড়ে আছে। বিহানের সারা শরীর ঘামছে, জিভ শুকিয়ে গিয়েছে, চোখদুটো বুজে
আসছে, আর তাকানোর শক্তি নেই। ক্রমশ নিস্তেজ হয়ে পড়া শরীরটা শেষে এলিয়ে পড়ল ডাহুকি পাশেই।
যখন জ্ঞান ফিরল, ততক্ষণে ভোরের আলো এসে পড়েছে ডাহুকির গোলাপি রঙের জিন্সে। দুজনে ধীর
পায়ে বেরিয়ে এল রাস্তায়। আকাশে মেঘের লেশমাত্র নেই। দুধের সরের মতো আলো পড়ে চিকচিক
করছে রাস্তার জল। একটা অটো আসতেই বিহান হাত দেখাল, "স্টেশন যাবে?"
"রাম, রাম," হানাবাড়িটার দিকে তাকিয়ে অটো ড্রাইভার কপালে হাত ঠেকাল, "চলুন। আসলে এখানে আমরা দাঁড়াই না।"
"কেন, দাঁড়াও না কেন?" দুজনে অটোতে উঠে
বসল সন্তর্পণে।
"ওই যে ওই বাড়িটা... বড় অলক্ষুণে," অটো ড্রাইভার বাড়িটার দিকে আঙুল দেখাল,"জানেন, ওখানে ঢুকলে কেউ আর জ্যান্ত ফিরে আসে না!"
"মানে?"

"প্রথমে ওই বাড়িটা ছিল কোভিড আইসোলেশন সেন্টার। পরে যখন আর ভিড় সামলানো গেল না, দুদ্দার লোক মরতে লাগল, তখন সংক্রমণ থেকে বাঁচতে আধমরাদের ধরে এনে ওই বাড়ির একটা ঘরে ঢুকিয়ে জানালা-দরজায় ইট গেঁথে দেওয়া হয়েছিল, জানেন?"
"কী সাংঘাতিক!"
"বাড়ির মালিক বিভূতি দাশকে পর্যন্ত ওই ঘরে ঢুকিয়ে মেরে ফেলা হয়েছিল, ভাবতে পারেন?"
রানিপুরের রাজমাতার অলঙ্কার চুরির তদন্ত করতে ডিটেকটিভ প্রজ্ঞানপরাঙ্গম পূততুণ্ড অ্যাসিস্ট্যান্ট
ডাহুকি দত্তকে নিয়ে এখন ট্রেন ধরতে চলল।








Comments