top of page

পুরী মন্দিরের নিত্যদিনের পদ করমাবাঈ খিচুড়ি বা আদা হেঙ্গু খিচুড়ির রেসিপি দিলেন অমৃতা রায়।

পুরীর জগন্নাথ মন্দিরে প্রতিদিন সকালে যে খিচুড়ি নিবেদন করা হয়, তা শুধু একটি সাধারণ খাবার নয় এর সঙ্গে জড়িয়ে রয়েছে এক গভীর ভক্তির কাহিনি, এক মাতৃস্নেহময় সম্পর্কের গল্প। এই খিচুড়িকে বলা হয় “করমাবাঈ খিচুড়ি”, যার শিকড় পৌরাণিক বিশ্বাসে প্রোথিত। একসময় পুরীতে বসবাস করতেন করমাবাঈ নামে এক পরম ভক্তা। তিনি জগন্নাথকে নিজের পুত্র রূপে ভাবতেন এবং বালকজগন্নাথের স্নেহময় পুজো করতেন। একদিন তাঁর মনে ইচ্ছা জাগে জগন্নাথকে আর শুধু ফল-মূল নয়, বরং নিজের হাতে রান্না করা খাবার নিবেদন করবেন। জগন্নাথ সেই আহ্বানে সাড়া দিয়ে বলেন, “মা, যা-ই বানিয়েছো, তাই খাইয়ে দাও। খুব ক্ষিদে পেয়েছে।” করমাবাঈ স্নান না করেই তৎক্ষণাৎ খিচুড়ি রান্না করেন এবং জগন্নাথ তা ভালোবেসে খান। গরম খিচুড়ি মুখ না পুড়িয়ে দেয়, সে জন্য করমাবাঈ পাখা করতে থাকেন। এভাবেই শুরু হয় এই অতুলনীয় ভোগের যাত্রা, জগন্নাথ প্রতিদিন সকালে করমাবাঈর রান্না খিচুড়ি খেতে আসতেন।

কিন্তু একদিন এক সাধুর উপদেশে করমাবাঈ স্নান করে নিয়ম মেনে রান্না করতে গিয়ে দেরি করে ফেলেন। সেইদিন জগন্নাথ মন্দিরে যখন দুপুরের ভোগ চলছিল, তখন দেখা যায় তাঁর মুখে খিচুড়ির দাগ! প্রশ্ন উঠলে জগন্নাথ নিজেই বলেন, তিনি করমাবাঈর বাড়িতে খিচুড়ি খেয়ে এসেছেন। ঘটনাটি শুনে পুরোহিতেরা করমাবাঈর কাছে ক্ষমা চান এবং বলেন, তিনি যেন আগের মতোই স্নান ছাড়াই, ভক্তিভরে খিচুড়ি রান্না করে ভোগ নিবেদন করেন। এই ঘটনার স্মরণে, আজও পুরীর জগন্নাথ মন্দিরে সকালে “বালক ভোগে” খিচুড়ি নিবেদন করা হয়, যা করমাবাঈর নিঃস্বার্থ ভালোবাসার প্রতীক।


কী কী লাগবে

গোবিন্দভোগ চাল – ২ কাপ

গোটা মুগডাল – ১ কাপ

নারকেল কোরা – ১/২ কাপ

আদা কুচি – ১+১/২ টেবিল চামচ

Shalimar's Chef Spices জিরে গুঁড়ো – ২ চা চামচ

হিং – ১ চা চামচ

ঘি – ২ টেবিল চামচ/ Shalimar's sunflower oil

নুন – স্বাদ অনুযায়ী


কীভাবে বানাবেন

1. গোবিন্দভোগ চাল ধুয়ে জল ঝরিয়ে রাখুন।

2. গোটা মুগডাল ২–৩ ঘণ্টা গরম জলে ভিজিয়ে রাখুন। এরপর চাপকলে অল্প জল দিয়ে মুগডাল ৮০% সিদ্ধ করুন। জল যেন পুরোপুরি শুকিয়ে যায়।

3. একটি হাঁড়িতে চাল ও প্রয়োজন মতো জল দিয়ে আঁচে বসান। চাল ফুটে উঠলে এতে সেদ্ধ মুগডাল দিয়ে দিন

4. নুন মিশিয়ে মাঝারি আঁচে চাপা দিয়ে রান্না করুন।

5. ১০ মিনিট পর নারকেল কোরা, হিং, জিরে গুঁড়ো ও অর্ধেক পরিমাণ আদা কুচি দিয়ে ভালোভাবে মিশিয়ে নিন।

6. আরও ৫ মিনিট রান্না করুন। সব উপকরণ মিশে এলে উপর থেকে ঘি, বাকি আদা কুচি ও নারকেল কোরা ছড়িয়ে গরম গরম পরিবেশন করুন।

করমাবাঈ খিচুড়ি শুধুমাত্র একটি রান্নার রেসিপি নয়, এটি এক গভীর আত্মিক সম্পর্কের প্রতিফলন, যেখানে এক ভক্তার নিঃস্বার্থ ভালোবাসায় তৃপ্ত হন স্বয়ং জগন্নাথ। ধর্মীয় অনুশাসনের বাইরেও, ভক্তির বিশুদ্ধতা যে সর্বোচ্চ, সেই সত্যই বারবার উঠে আসে এই কাহিনিতে। করমাবাঈর মতো ভক্তেরা আমাদের শিখিয়ে দেন, প্রেম, নিষ্ঠা ও আন্তরিকতা দিয়েই ঈশ্বরকে পাওয়া যায়। আজও পুরীর জগন্নাথ মন্দিরে বালক ভোগে খিচুড়ির নিবেদন সেই অনুভবেরই এক অনন্ত স্মৃতি, যা সময়ের সীমানা পেরিয়ে অনুপ্রেরণা জোগায় প্রতি ভক্তহৃদয়ে।

Comments


ssss.jpg
sssss.png

QUICK LINKS

ABOUT US

WHY US

INSIGHTS

OUR TEAM

ARCHIVES

BRANDS

CONTACT

© Copyright 2025 to Debi Pranam. All Rights Reserved. Developed by SIMPACT Digital

Follow us on

Rojkar Ananya New Logo.png
fb png.png

 Key stats for the last 30 days

bottom of page