top of page
Search

আজ রান্নাঘরে নেতাজীর প্রিয় কিছু রেসিপি

জন্মের ১২৬ বছর পর'ও নেতাজী সুভাষচন্দ্র বসু কে নিয়ে মানুষের মধ্যে উন্মাদনার শেষ নেই। এতগুলো বছর বাদেও এই চরিত্র কে কেন্দ্র করে প্রতিনিয়ত লেখা হয় হাজার হাজার প্রবন্ধ, গল্প, উপন্যাস। তৈরী হয় নাটক, সিনেমা, ওয়েব সিরিজ। রহস্যের চাদরে মোড়া এহেন দেশনায়কের জীবনযাপন, ব্যাক্তিত্ব, সর্বোপরি দেশপ্রেমের কাহিনী আমাদের অন্তরাত্মাকে নাড়া দিয়ে যায়। স্বভাবতই মনে প্রশ্ন জাগে কিরকম খাবার খেতে তিনি পছন্দ করতেন। কটক শহরে জন্মগ্রহণ করায় তিনি উড়িয়া খাবার পছন্দ করতেন। তবে আদ্যপান্ত খাদ্যরসিক বাঙালি হওয়ার কারণে প্রাত্যহিক খাদ্যতালিকায় থাকতো মুগডাল, পালং শাকের বাটিচচ্চড়ি, মৌরলা মাছের ঝাল, খিচুড়ি, সবজি দিয়ে ভাতে ভাত ইত্যাদি। খুবই হালকা এবং কম তেলমশলায় রাঁধা খাবার তার প্রিয় ছিলো। প্রেসিডেন্সি কলেজে পড়াকালীন প্রতিদিন পাশের হিন্দু হোটেলে দ্বিপ্রাহরিক ভোজ সারতে যেতেন। গ্রামবাংলার মিষ্টি, বিশেষ করে বাড়িতে তৈরী মিষ্টি যেমন পাটিসাপটা, নাড়ু, রসোগোল্লা, পুলি, নারকেলের তক্তি, ছাতুর বরফি, চমচম খেতে খুব ভালোবাসতেন। এছাড়াও এসবের পাশাপাশি প্রতিদিনের খাবারের তালিকায় থাকতো কলা, দই এবং পান।


দিনে ২০-৩০ কাপ চা খেতেন এবং মুখে থাকত সুপুরি, লবঙ্গ ও হরিতকি। একটানা অনশন শেষে খেতেন লেবুর জল। দিনের পর দিন এইরকম অত্যাধিক পরিশ্রম এবং অনিয়মের কারণে ১৯৩৭ সালে তিনি খুব অসুস্থ হয়ে পড়েন এবং ডাক্তারের পরামর্শে ডালহৌসিতে হাওয়া বদলের জন্য যান। সেখানে একটি জলাধারের জল খেয়ে পেটের সমস্যা সেরে যাওয়ায় ঐ জলাধারটি আজ'ও সুভাষ বাউলি(জলাধার) নামে পরিচিত।

সমগ্র দেশের গর্ব এমন একজন ব্যাক্তিত্ব, যাকে ঘিরে আবর্তিত হয়েছে ইতিহাসের বহু অধ্যায়, সেই বিশেষ মানুষটির জন্মদিনে বিনম্র শ্রদ্ধার সাথে তার পছন্দের রান্নাগুলোর রন্ধনপ্রনালী রইলো সবার জন্য।



সবজি দিয়ে মুগডাল

কিভাবে বানাবেন

মুগডাল ভেজে ধুয়ে সেদ্ধ করে নিন। ওর মধ্যে জল, নুন, হলুদ, কুচোনো সবজি(ফুলকপি, গাজর, বিনস, টমেটো), মটরশুঁটি, চেরা কাঁচালঙ্কা, চিনি দিয়ে সেদ করুন। অন্য একটি প্যানে তেল গরম করে গোটা জিরে তেজপাতা, শুকনো লঙ্কা, আদাবাটা ফোড়ন দিয়ে নেড়ে ডালের মধ্যে ঢেলে দিন। ঘি গরম মশলা গুঁড়ো মিশিয়ে নামিয়ে নিন।


পালং শাকের বাটিচচ্চড়ি

কিভাবে বানাবেন

পালং শাক কুচিয়ে ভালো করে ধুয়ে জল ঝরিয়ে নিন। তেলে বড়ি ভেজে তুলে নিন। পাঁচফোড়ন দিয়ে ছোট ছোট ডুমো করে কাটা আলু, নুন, হলুদ, চেরা কাঁচালঙ্কা দিয়ে ভেজে শাক দিয়ে ঢেকে দিন। শাক নরম হয়ে সব সেদ্ধ হলে অল্প চিনি আর ভাজা বড়ি আধভাঙ্গা করে মিশিয়ে নামিয়ে নিন।


মুড়িঘন্ট

কিভাবে বানাবেন

মাছের মাথা নুন হলুদ গুঁড়ো মেখে ভেজে তুলে নিন। তেলে তেজপাতা, গোটা জিরে, গোটা গরমমশলা, শুকনো লঙ্কা ফোড়ন দিয়ে একে একে আদাবাটা, ডুমো করে কাটা আলু, নুন, হলুদ, চেরা কাঁচালঙ্কা দিয়ে ভাজুন। এবার এরমধ্যে গোবিন্দ ভোগ চাল দিয়ে কষে পরিমাণ মতো গরম জল দিয়ে ফুটতে দিন। আলু সেদ্ধ হয়ে মাখামাখা হলে ভাজা মাছের মাথা, কাজুবাদাম কিশমিশ, চিনি, ঘি, গরমমশলা গুঁড়ো মিশিয়ে ঢেকে রাখুন পরিবেশনের আগে পর্যন্ত।

মৌরলা মাছের ঝাল

কিভাবে বানাবেন

একটি পাত্রে মৌরলা মাছ, নুন, হলুদ গুঁড়ো, লঙ্কা গুঁড়ো, জিরে গুঁড়ো, পেঁয়াজ কুচি, আলু কুচি, সরষের তেল একসঙ্গে মেখে নিন। কড়াইতে তেল দিয়ে মেখে রাখা মাছ দিয়ে ঢেকে অল্প আঁচে রান্না করুন। সব মজে এলে ধনেপাতা কুচি মিশিয়ে নামিয়ে নিন।

পাটিসাপটা

কিভাবে বানাবেন

নারকেল কোরা, খেজুর গুড় আর খোয়া ক্ষীর একসাথে পাক দিয়ে পুর বানিয়ে নিন। চালের গুঁড়ো, ময়দা, নুন, চিনি আর পরিমাণ মতো দুধ দিয়ে ঘন মিশ্রন বানিয়ে নিন। ননস্টিক প্যানে তেল ব্রাশ করে একহাতা করে মিশ্রন ছড়িয়ে মাঝে নারকেলের পুর ভরে মুড়ে নিলেই তৈরী।


চিনির নাড়ু

কিভাবে বানাবেন

নারকেল কোরা, ঘি আর চিনি একসঙ্গে মেখে নিন। চিনি গলে গেলে আঁচে বসিয়ে নাড়তে থাকুন। খোয়াক্ষীর আর এলাচ গুঁড়ো মিশিয়ে পাক এলে নামিয়ে অল্প ঠান্ডা করুন। হাতে ঘি মেখে নাড়ু গুলো বানিয়ে নিন।


ছবি সৌজন্যেঃ সঞ্চিতা দাস


তথ্যসূত্র ও ঋণস্বীকারঃ রাজ, সিক্রেটস, রেভোলিউশানঃ আ লাইফ অফ সুভাষচন্দ্র বোস

bottom of page