top of page

গরমে ত্বক এবং চুলের নাজেহাল অবস্থা? ঘরোয়া পদ্ধতিতে কিভাবে যত্ন নেবেন দেখে নিন।

লিখছেন সোমা রায়।

ক্ষতিকারক সূর্যরশ্মি, ধুলো ধোঁয়ার থেকে ত্বক এবং চুলের যত্ন নিতে অনেকেই ভরসা রাখেন বাজারের নামীদামী প্রসাধনীর উপর। তাতে টান পড়ে পকেটে। বাড়িতে থাকা উপকরণ দিয়ে কিভাবে নেবেন ত্বক এবং চুলের যত্ন? রইলো মুশকিল আসান...


সানস্ক্রিন ব্যবহার করুন:

গরমকালে রোদের তাপে ত্বক পুড়ে কালচে হয়ে যেতে পারে। তা থেকে বাঁচতে সানস্ক্রিন অবশ্যই ব্যবহার করবেন। রোদে বেরোনোর প্রায় ১৫ মিনিট আগে, মুখ-হাত-পা এবং শরীরের খোলা অংশে সানস্ক্রিন লাগান। এক্ষেত্রে আপনার ত্বকের ধরণ অনুযায়ী সানস্ক্রিন বাছাই করুন। তবে শুধুমাত্র রোদ না, দীর্ঘক্ষণ কম্পিউটার বা ল্যাপটপের সামনে কাজ করার আগে এবং রান্না করার আগেও সানস্ক্রিন লাগানো প্রয়োজন।


হাইড্রেটেড থাকুন:

গরমকালে কম-বেশি সকলের ঘাম হয়। তাই বারবার মুখে জলের ঝাপটা দিন। এতে ত্বকে ঘাম বসবে না। সেই সঙ্গে ফ্রেশ লাগবে। গরমকালে শরীরে বেশি মাত্রায় টক্সিন বা দূষিত পদার্থ জমা হয়। তাই এইসময়টা বেশি করে জল খাওয়া উচিত। ফলে ত্বকের উজ্জ্বলতা বাড়বে।


টোনার ব্যবহার করুন:

গরমে দিনে অন্ততঃ দুবার টোনার ব্যবহার করা উচিত। কারণ টোনার ত্বকের তৈলাক্ত ভাব কমিয়ে দেয় এবং লোমকূপ পরিষ্কার রাখে।


ফেসিয়াল মাসাজ করতে হবে:


গরমে ত্বক বারবার ঘেমে যাওয়ায় বিশেষ যত্ন নেওয়া প্রয়োজন। এই সময়ে এমন ফেসিয়াল মাসাজ দরকার যা ত্বকের যত্ন নেওয়ার পাশাপাশি সজীব রাখে ও ঠান্ডার অনুভূতি দেয়। কী ধরনের ফেসিয়াল গরমের দিনে ত্বকের জন্য উপযুক্ত চলুন জেনে নিই।

অ্যালোভেরা ফেসিয়াল: রোদে পোড়া ত্বক, ইনফ্লেমেশন কমাতে গরমের দিনে অ্যালোভেরা ফেসিয়াল বেশ কার্যকর। অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট ও ভিটামিনে ভরপুর অ্যালোভেরা ত্বককে সজীব, সতেজ ও প্রাণবন্ত রাখে। এর সঙ্গে যদি মধু, হলুদ ও শসা মিশিয়ে নেওয়া যায় তাহলে ত্বক হাইড্রেটেড থাকবে এবং ঠান্ডার অনুভূতি দেবে দীর্ঘক্ষণ।


গ্রিন টি ফেসিয়াল: গরমের দিনে গ্রিন টি খাওয়া যেমন ভালো তেমনই উপকারী এই চা পাতার ফেসিয়াল। টক দই, মধু ও গ্রিন টি ভালো করে মিশিয়ে নিয়ে প্যাক তৈরি করে নিয়ে পরিষ্কার মুখে লাগিয়ে রাখুন পনেরো মিনিট। এরপর ঠান্ডা জল দিয়ে ভালো করে মুখ ধুয়ে নিন। এই ফেসিয়াল মাসাজে ত্বকে ফুটে ওঠে সজীব ভাব।


ফ্রুট ফেসিয়াল: গরমের দিনে শরীর হাইড্রেটেড রাখতে মৌসুমি ফল যেমন উপকারী, তেমনই ফল দিয়েই তৈরি ফেসপ্যাক খুবই কার্যকর। পেঁপে, কলা, টকদই, তরমুজ, স্ট্রবেরি দিয়ে তৈরি প্যাক অ্যান্টিঅক্সিডেন্টে ভরপুর। এতে রোদে পোড়া ত্বক দ্রুত উজ্জ্বল হয়।



গরমে পায়ের যত্ন কিভাবে নেবেন?


এই গরমে সারাদিন বাইরে থাকার ফলে গোড়ালি ঘামে বেশি এসময়। এছাড়া সদ্য যাওয়া শীতকালের স্মৃতিও কিন্তু রয়ে গেছে গোড়ালিতে। ফাটা বা মরা চামড়া জমে থাকা গোড়ালির খানিকটা বাড়তি যত্ন নিতে ঘরে তৈরি কিছু স্ক্রাবের সাহায্য নিতে পারেন।

চিনি ও মধুর প্যাক:

১/৪ কাপ মোটা দানার চিনির সঙ্গে ২ টেবিল চামচ মধু, ২ টেবিল চামচ নারকেলের তেল মিশিয়ে নিন। মিশ্রণটি গোড়ালিতে ঘষে ঘষে লাগান। ১৫ মিনিট ম্যাসাজ করে কুসুম গরম জল দিয়ে ধুয়ে ফেলুন।


বেকিং সোডার প্যাক:

ঈষদুষ্ণ জল নিন একটি বড় গামলায়। ৩ টেবিল চামচ বেকিং সোডা মিশিয়ে কিছুক্ষণ ডুবিয়ে রাখুন গোড়ালি। বেকিং সোডার সঙ্গে পর্যাপ্ত পরিমাণ জল মিশিয়ে পেস্ট বানিয়েও ম্যাসাজ করতে পারেন গোড়ালিতে।


কফি স্ক্রাব:

২ টেবিল চামচ কফি, ২ টেবিল চামচ মোটা দানার চিনি ও ১ চা চামচ নারকেল তেল মিশিয়ে স্ক্রাব বানিয়ে নিন। মিশ্রণটি ১৫ থেকে ২০ মিনিট ঘষুন গোড়ালিতে।


লবণ ও নারকেলের তেলের প্যাক:

এপসম সল্ট ও নারকেল তেল একসঙ্গে মিশিয়ে গোড়ালিতে ম্যাসাজ করুন। ১৫ মিনিট পর ধুয়ে ফেলুন।



চুলের যত্ন কিভাবে নেবেন?


গরমকালে ধুলো ধোঁয়া নোংরায় ঘাম হয়ে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্থ হয় চুল। রুক্ষতার পাশাপাশি চুল পড়ে যাওয়া কিংবা খুশকির সমস্যা তো আছেই। তাই চুলের চাই প্রতিদিনের যত্নআত্তি। প্রতিদিন চুলে শ্যাম্পু আর কন্ডিশনার ব্যবহার করা উচিত। এতে চুল থাকবে পরিষ্কার আর সতেজ। শ্যাম্পুর পাশাপাশি গরমে চুলের যত্নে প্রয়োজন তেলের। সুগন্ধী তেলের বদলে খাঁটি নারকেল তেলের ম্যাসাজ চুলের জন্য উপযোগী। এক্ষেত্রে স্নানে যাওয়ার আগে চুলে হালকা হাতে ম্যাসাজ করে নিতে হবে। যাদের চুল পড়ে যাওয়ার সমস্যা আছে তারা নারকেল তেলের সঙ্গে ক্যাস্টর অয়েল মিশিয়ে ব্যবহার করতে পারেন।

এছাড়াও ঘরোয়া কিছু প্যাক চুলে ব্যবহার করা প্রয়োজন।


রুক্ষ চুলের জন্য পাকা কলার প্যাক:

একটি পাকা কলার সঙ্গে একটি পেঁয়াজ, হাফ চা চামচ গ্লিসারিন আর এক চা চামচ মধু মিশিয়ে ভালো করে ব্লেন্ড করে চুলে ব্যবহার করলে ভালো ফলাফল পাওয়া যায়।


খুশকির জন্য:

দুই টেবিল চামচ মৌরি সঙ্গে এক টেবিল চামচ মেথি সারা রাত ভিজিয়ে রেখে সকালে পেস্ট করে তা চুলের গোড়া থেকে ডগা পর্যন্ত মাখতে পারেন। এর পর চুলে শ্যাম্পু করে নিলে খুব সহজেই খুশকি থেকে মুক্তি পাওয়া সম্ভব।


চুল পড়া কমানোর জন্য:


দুই টেবিল চামচ আমলকী পাউডার সঙ্গে এক টেবিল চামচ মেথি আর এক টেবিল চামচ শিকাকাই পাউডার মিশিয়ে চুলে ব্যবহার করলে চুল পড়ার সমস্যা খুব দ্রুত দূর হবে।


এই প্যাকগুলি সপ্তাহে দুই থেকে তিনবার ব্যবহার করতে হবে। এতে আপনার চুলে হারানো উজ্জ্বলতা যেমন ফিরে আসবে তেমনি চুল হবে সুন্দর আর এ গরমেও থাকবে প্রাণবন্ত। বাইরে বেরোনোর সময় আরো কিছু জিনিস মাথায় রাখতে হবে।


চুলেরও চাই এসপিএফ:


শুধু মুখে সানস্ক্রিন মাখলেই হবে না, একই যত্ন দরকার আপনার চুলেরও! বাড়ির বাইরে পা দেওয়ার আগে চুলে আর স্ক্যাল্পে সানস্ক্রিন লাগিয়ে মাসাজ করে নিন।


চুল বেঁধে রাখুন:


গরমে খোলা চুল মানেই প্রচণ্ড অস্বস্তি। তাই চুলটা বেঁধে রাখাই ভালো! বাহারি স্কার্ফ বা টুপিতে ঢেকে রাখুন চুল।


শ্যাম্পুর বাছাই এবং ব্যবহারের সঠিক পদ্ধতি:


চুলের সম্পূর্ণ দেখভাল করতে আপনার চুলের ধরন অনুযায়ী নারিশিং শ্যাম্পু মাখুন। নারকেল, শিয়া বাটার, আর্গান অয়েল-বেসড শ্যাম্পু চুলের পক্ষে ভালো। একই সঙ্গে শ্যাম্পু ঠিকমতো লাগানোও সমান জরুরি। চুলে কখনোই সরাসরি শ্যাম্পু লাগাবেন না। স্ক্যাল্পে ঘষে ফেনা করুন, তারপর সেই ফেনা চুলে লাগিয়ে ধুয়ে নিন। তাতে অতিরিক্ত শ্যাম্পুতে চুল রুক্ষ হবে না।


চুলের আর্দ্রতা রক্ষা জরুরি:


১. শ্যাম্পু ও কন্ডিশনার এর ব্যবহার:

গরম আর ঘাম চুল এতটা চটচটে করে দেয় যে, মনে হয় রোজ শ্যাম্পু করি! কিন্তু তাতে চুল রুক্ষ হওয়া অবশ্যম্ভাবী! সপ্তাহে তিনবারের বেশি কোনওমতেই শ্যাম্পু করবেন না আর প্রতিবার কন্ডিশনার অবশ্যই লাগাবেন! চুল ডিপ কন্ডিশনিং করতে কন্ডিশনারের বদলে হেয়ার মাস্ক লাগান। ঘরোয়া হেয়ার প্যাকও ব্যবহার করতে পারেন। ডিম, দই আর মধু দিয়ে তৈরি হেয়ার প্যাক শুকনো বিবর্ণ চুলের জন্য খুব উপকারী!


২. অয়েল মাসাজ ভীষন গুরুত্বপূর্ণ:


আর্দ্রতা চুলের গভীরে ধরে রাখতে কন্ডিশনিংয়ের পাশাপাশি থেরাপিউটিক হেয়ার অয়েল মাসাজ করতে পারেন। নারকেল, অলিভ আর আমন্ড অয়েল চুলের স্বাস্থ্য আর বাড়বৃদ্ধির পক্ষে খুব ভালো! সাত দিন বা চোদ্দ দিন অন্তর চুলে অয়েল মাসাজ নিন।


৩.হেয়ার মিস্ট ব্যবহার করুন:


এছাড়া হাতের কাছে রাখুন হাইড্রেটিং হেয়ার মিস্ট। রুক্ষতার হাত থেকে চুলকে রক্ষা করবে এই মিস্ট। অ্যালোভেরা জেলে জল মিশিয়ে পাতলা করে নিলেও দারুণ ঘরোয়া হেয়ার মিস্ট পেয়ে যাবেন।


৪.স্ক্র্যাচিং এড়িয়ে চলুন:


মাথার ত্বকে স্ক্র্যাচ করলে আরও বেশি ক্ষতিগ্রস্থ হতে পারে। জ্বালাভাব থেকে রক্তপাতও ঘটতে পারে। বিশেষ নজর না গিলে তা সংক্রমণের দিকেও এগিয়ে যেতে পারে। তাই চুল ও স্ক্যাল্পের যত্নের জন্য স্ক্র্যাচ করার ইচ্ছাকে নিয়ন্ত্রণ করুন। মাথার ত্বকে আঁচড়ালে চুলের সমস্যা বাড়বে এবং চুল পড়ারও কারণ হবে।


৫.খাদ্যাভাসে বদল:


সেবেসিয়াস গ্রন্থিগুলির অতিরিক্ত নিঃসরণও খুশকির কারণ। আপনার খাদ্যতালিকায় পরিবর্তন করা তেল উৎপাদন কমাতে পারে এবং খুশকির প্রবণতা নিয়ন্ত্রণ করতে পারে। পর্যাপ্ত পরিমাণে ভিটামিন বি এবং জিঙ্ক যুক্ত খাবার গ্রহণ করতে পারেন। এই প্যাচপ্যাচে গরমে শরীরকে হাইড্রেটেড রাখতে প্রতিদিন অন্তত আট গ্লাস জল পান করতে ভুলবেন না।

প্রতিদিন ডিম, মাছ, মাংস, বিভিন্ন প্রকারের ডাল গ্রহণ করুন। দৈনিক এক গ্লাস দুধ বা টক দই খেতে পারেন, যা চুল পড়া কমাতে সাহায্য করে। ভিটামিন এ: গাজর, মিষ্টিকুমড়া, টমেটো, মিষ্টি আলুতে ভিটামিন এ পাওয়া যায়। এগুলো নিয়মিত খেলে চুলা পড়া বন্ধ হয়।


 

Comentarios


ssss.jpg
sssss.png

QUICK LINKS

ABOUT US

WHY US

INSIGHTS

OUR TEAM

ARCHIVES

BRANDS

CONTACT

© Copyright 2025 to Debi Pranam. All Rights Reserved. Developed by SIMPACT Digital

Follow us on

Rojkar Ananya New Logo.png
fb png.png

 Key stats for the last 30 days

bottom of page