কলকাতার কয়েকটি ডাকাত কালী এবং রঘু ডাকাত
কমলেন্দু সরকার

ডাকাতে কালী মানেই একসময় বুঝতাম, কালীর কোনও ভয়ংকর রূপ! আমি যেখানে থাকি সেখান থেকে খুব বেশি হলে কিলোমিটার খানেক হাঁটাপথে রঘু ডাকাতের কালী। গঙ্গার ধারে। বাল্যকালে দেখেছি, রঘু ডাকাতের কালী নামে পরিচিত বলে সেই মন্দিরে চট করে কেউ যেতেন না বা বাড়ির বড়দেরও নিষেধ ছিল মন্দিরের ধারেকাছেও মাড়ানো। শুনেছিলাম, এক বয়স্ক পুরোহিত ছাড়া কেউই মন্দিরে যান না। বড় হয়ে দেখলাম, পুরোটাই মনগড়া কাহিনি! ভয়ের কোনও ব্যাপারই নেই।
যাইহোক, রঘু ডাকাতের কালীমন্দির বাংলার আদাড়েপাদাড়ে পাওয়া যায়। তাহলে কি রঘু ডাকাত নামে একাধিক ডাকাত ছিল। নাকি রঘু ডাকাত নামেই ত্রাসের যে কিংবদন্তি ছিল তারই সুবিধা নিত অন্য ডাকাতেরা! হয়তো তাই। রঘু ডাকাত ছিল প্রশাসনের কাছে মাথাব্যথা আর সাধারণ মানুষের কাছে ঈশ্বর। আসলে রঘু ডাকাতের ছিল রবিনহুড ভাবমূর্তি। রঘু ডাকাত ছিল বাংলার রবিনহুড, সাধারণ বাঙালির রবিনহুড। ধনীর ধনসম্পদ ডাকাতির একটা অংশ বিলিবণ্টন করতেন গরিব মানুষের মধ্যে। প্রশ্ন জাগে, বাংলার বুকে দাপিয়ে বেড়ানো কে এই ছিল এই বাঙালির রবিন হুড রঘু ডাকাত!
রঘু ডাকাত নিয়ে প্রচুর কাহিনি চালু আছে বাংলার গ্রামগঞ্জে, শহরের আনাচকানাচে। কিংবদন্তির ডাকাতসর্দার রঘু যখন সামন্তপ্রভুদের সামনে এসে দাঁড়াত তখন তাঁদের বুকের রক্ত জমাট বেঁধে যেত, হিম হয়ে যেত শরীর। এমনকী শ্বতাঙ্গপ্রভুদেরও। রঘু কখনও না-বলে ডাকাতি করতে যেত না। রক্তে লেখা চিঠি পাঠিয়ে জমিদারবাড়িতে যেত ডাকাতি করতে। দেড় দু'মাইল দূর থেকে কানফাটানো 'হা রে রে হা রে হা রে' শব্দ ধনীলোকদের হাড়হিম করে দিত। তবে শোনা যায়, সেকালের ডাকাতেরা কখনও কোনও বাড়ির মহিলার সম্মানহানি করেনি। তাঁরা বাড়ির মহিলাদের 'মাতৃজ্ঞানে' সম্মান জানাতেন। গায়ে হাত দেওয়া দূরের কথা। রঘু ডাকাত এবং সেকালের ডাকাতেরা ডাকাতিতে বেরোবার আগে কালীপুজো করতেন। শোনা যায়, নরবলিও দেওয়া হত মা কালীর সামনে। নরবলি নাহলে নিজের বুকের রক্ত দিয়ে পুজো সারত ডাকাত সর্দার। তারপর দলের সবাই গলায় জবা ফুলের মালা ঝুলিয়ে, কানে জবাফুল দিয়ে 'হা রে রে হা রে রে' কান বিদীর্ণ করা শব্দ তুলে বেরোতো ডাকাতির উদ্দেশে। কলকাতা শহরও এর বাইরে ছিল না। সেইসব ডাকাত কালী আজও রয়ে গেছে বহুতল আবাসন, ঝাঁ-চকচকে মলের পাশে! শুধু কলকাতা শহরে নয়, বাংলার গ্রামগঞ্জের মন্দিরেও নিয়মিত পূজিত হন মা কালী।

আবার ফিরে আসি রঘু ডাকাতের কথায়। জানা যায়, রঘু ডাকাতের জন্ম আঠারো শতকের শেষে। এক দরিদ্র কৃষক ঘোষ পরিবারের ছেলে রঘু। সেইসময় সারা বাংলা দাপিয়ে বেড়াচ্ছে ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানি। ইংরেজ সাহেবপ্রভুদের দাপটে অস্থির গ্রামবাংলার গরিব কৃষকেরা। নীলকর সাহেবরা বাংলার গ্রামে গ্রামে দমন-পীড়ন চালাত গরিব চাষিদের ওপর। কৃষকেরা জানত নীল চাষ করলে জমির উর্বরতা নষ্ট হবে। অন্যকোনও ফসল ফলবে না। তাই তারা নীলচাষে বিন্দুমাত্র আগ্রহী ছিল না। বাংলার গরিব কৃষকদের কথা শুনবে কেন ইংরেজপ্রভুরা। প্রতিবাদী চাষিদের কথা কানে না-তুলে ইংরেজের লোকলশকর তুলে আনত তাদের। তারপর চলত অমানুষিক অত্যাচার। এমনকী অত্যাচারের সম্মুখীন হত তাদের পরিবারকেও।
যতদূর জানা যায়, রঘু ডাকাতের বাবাও ছিলেন এমনই একজন নীল চাষে প্রতিবাদী এক অত্যন্ত সাধারণ কৃষক। ইংরেজের লোকজন এসে তুলে নিয়ে যায় একদিন। নীলকুঠিতে চলে তাঁর ওপর অকথ্য অমানবিক অত্যাচার। রঘুর বাবা নীলকর সাহেবদের অত্যাচার সহ্য করতে না-পেরে মারা যান। বাবার এই মৃত্যু কিছুতেই মেনে নিতে পারে না যুবক রঘু। তার ভিতর জন্ম নেয় তীব্র ক্রোধ এবং প্রতিহিংসা। রঘু মরিয়া হয়ে ওঠে বদলার জন্য। গ্রামে অত্যাচারিত আরও অনেক পরিবার ছিল। তাদের সকলকে একজায়গায় এককাট্টা করে রঘু। বাল্যকাল থেকেই লাঠিখেলায় পোক্ত রঘু। এবার তার দলের সকলকেই দক্ষ করে তোলে লাঠিখেলায়। তৈরি হল এক সুদক্ষ লাঠিয়াল বাহিনী। এই বাহিনী প্রথমেই রুখে দাঁড়াল নীলকর সাহেবদের অত্যাচারের বিরুদ্ধে।
রঘুর দলবল লুটপাট চালাতে শুরু করে একের পর এক নীলকুঠিতে। জ্বালিয়ে দেয় নীলকরদের ঘরবাড়ি। ক্রমশ রঘু ত্রাস হয় ওঠে অত্যাচারী জমিদার, মহাজন, সুদখোর এবং নীলকরদের কাছে! সাধারণ গরিবগুরবোদের ওপর অত্যাচার এবং তাদের সম্পত্তি অন্যায়ভাবে দখল করে নেওয়া ইত্যাদি দেখলেই রঘুর ভিতর জ্বলে উঠত প্রতিবাদের আগুন। সেই অত্যাচারী জমিদার, মহাজন বা সুদখোরের বাড়ি হানা দিত রঘু। সমস্ত দখল করা দলিলদস্তাবেজ সিন্দুক থেকে বার পুড়িয়ে দিত। সাধারণ মানুষের কাছ থেকে অন্যায়ভাবে নেওয়া অর্থ, গয়না কেড়ে নিয়ে সেই ব্যক্তিকে প্রায় নি:স্ব করে দিত রঘু। তারপর কেড়ে নেওয়া অর্থ, গয়নাগাটির একটা বড় অংশ ভাগ করে দিত সাধারণ মানুষের মধ্যে। ক্রমে ক্রমে রঘুর পরিচিতি হল বাংলার ডাকাত, রঘু ডাকাত। অত্যাচারীদের রঘুর পরিচিতি ডাকাত আর সাধারণ গরিব মানুষের কাছে ভগবান।
রঘু ডাকাতের পরিচিতি বাড়ার সঙ্গেসঙ্গেই বেড়েছিল শক্তি, ক্ষমতা। সেকালের গ্রামবাংলার যোগাযোগ এবং পুলিশের ব্যবস্থা তো আজকের মতো ছিল না, ছিল বেহাল অবস্থা। পাশাপাশি ছিল গ্রামবাসীর অকুণ্ঠ সহযোগিতা। তাই রঘু ডাকাতকে নাকি পুলিশ কোনওদিন ধরতে পারেনি। হয়তো সেইকারণে রঘুকে ঘিরে তৈরি হয়েছিল নানান কিংবদন্তি! গ্রামবাংলার সাধারণ গরিবগুরবো মানুষের কাছে রঘু ডাকাত নয়, খাতির ছিল বিপ্লবীর!
বাগহাটি বা বাঘটির জয়পুর গ্রামের বিধুভূষণ ঘোষ বা বুধো ডাকাত ছিল সম্পর্কে রঘু ডাকাতের ভাই। যদিও অনেকেরই মতে রঘু ডাকাত খাস কলকাতার লোক। চিতে ডাকাতের মতো। যাইহোক, রঘু আর বুধো ডাকাত দুই ভাই দিনের বেলা গ্রামের লোকজনের সঙ্গে খেতখামারে চাষবাস করলেও রাত্রিবেলা বেরোতো ডাকাতি করতে। দুই ভাইই সংগঠিত ডাকাতদলটি চালাত। একসময় দুই ভাইই পুলিশের ভয়ে গাঢাকা দিল বর্ধমানের দেবীপুরের জঙ্গলে। জঙ্গলের মধ্যেই তারা প্রতিষ্ঠা করল মা কালীর মন্দির।
সেকালে মানুষজন পদব্রজেই যাতায়াত করতেন এক জায়গা থেকে অন্য কোনও জায়গায়। রঘু ডাকাতের দল করত কি, জঙ্গলের ভিতর দিয়ে যাতায়াত করা ধনী মানুষদের টাকাপয়সা কেড়ে নিয়ে তাঁদের সর্বস্বান্ত করে বেঁধে রাখত। নিয়ে যেত কালীমন্দিরে। এরপর অমাবস্যা বা কোনও পুণ্যতিথি দেখে নরবলি দিত মায়ের মন্দিরের সামনে রাখা হাড়িকাটে। মায়ের পুজো হত শাস্ত্র মেনে পুরোহিত ডেকে। রঘু এবং বুধো ডাকাত মনে করত এতেই না কি তুষ্ট হতেন মা কালী।
রঘু-বুধো ডাকাতের সেই কালীমন্দির বর্তমানে পরিচিত কেবল রঘু ডাকাতের কালী হিসেবেই। লোকশ্রুতি চালু, মা কালী স্বপ্নাদেশ পেয়ে রঘু ডাকাত এই মায়ের মূর্তি পেয়েছিল পুকুরের নীচ থেকে। মা কালী নিজেই চেয়েছিলেন রঘু ডাকাতের হাতে পুজো। বর্তমানে রঘু ডাকাতের কালী বা সিদ্ধেশ্বরী কালী নামেই জনপ্রিয়। এখন সেইসব দিন আর নেই, ধনী গৃহে রক্তে লেখা চিঠি দিয়ে ডাকাতি করতে যাওয়ার ডাকাতেরাও আর নেই। তবে ভক্তেরা আজও আছেন। তাঁদেরই নিত্যপুজো পান মা সিদ্ধেশ্বরী কালী। কথিত আছে, রঘু আর বুধো ডাকাতের মায়ের পুজোয় থাকত ল্যাটামাছ পোড়া। আজও মায়ের উদ্দেশে নিবেদন করা হয় পোড়া ল্যাটামাছ।
বাংলার ডাকাতেরা ছিল মা কালীর ভক্ত। সবাই মায়ের পুজো করেই ডাকাতি করতে বেরোতো। ডাকাতেরা বার হত মা কালীর পুজো এবং নরবলি দিয়েই। তেমনই শোনা যায়। একবার তো রামপ্রসাদ নিজেই পড়েছিলেন রঘু ডাকাতের খপ্পরে৷ সেদিন ছিল ঘোর অমাবস্যা। প্রায় জনমানবহীন পথঘাট৷ রঘু আর বুধো ডাকাত সকাল থেকেই চিন্তিত আজ মায়ের সামনে নরবলি দেওয়ার জন্য কেউই নেই। কোনও কারণে মায়ের সেবক রামপ্রসাদ ফিরছিলেন এই পথে। তিনি ধরা পড়লেন রঘু ডাকাতের দলবলের হাতে। তাঁকে বেঁধে নিয়ে যাওয়া হল সর্দারের সামনে। রঘু ডাকাত বলল, 'ওকে বেঁধে হাড়িকাটে ঢোকা।' রামপ্রসাদ বললেন, 'তোমাদের একটা আমাকে বলি দেওয়ার আগে মাকে একটা গান শোনাতে দাও।' মাকে গান শোনাবে রামপ্রসাদের আবেদন মঞ্জুর হল। রামপ্রসাদ তাঁর উদাত্ত কণ্ঠে মায়ের উদ্দেশে ধরলেন, 'তিলেক দাঁড়া ওরে শমন বদন ভরে মাকে ডাকি/আমার বিপদকালে ব্রহ্মময়ী/আসেন কিনা আসেন দেখি/লয়ে যাবি সঙ্গে করে/তার এত ভাবনা কিরে...'
গান শেষ হতেই রঘু ডাকাতের চোখে জল, তা স্যাঙাতদেরও। রঘু দেখে হাড়িকাটে রামপ্রসাদ নয়, স্বয়ং মা কালী! রামপ্রসাদের পায়ে ভয়ে ভক্তিতে লুটিয়ে পড়ে রঘু ডাকাত। বারবার ক্ষমা চেয়ে সম্মানের সঙ্গে মুক্তি দেয় রামপ্রসাদকে। সেই কার্ত্তিক অমাবস্যার দিন থেকে নরবলি বন্ধ করে চালু হল পাঁঠাবলির নিয়ম।
কলকাতার কয়েকটি ডাকাত কালী
কাশীপুর রঘু ডাকাতের কালী (Dakat Kali)

এই রঘু ডাকাতের ডেরা ছিল গঙ্গার ধারে জঙ্গলঘেরা আলো-অন্ধকার এক অঞ্চলে। রঘু ডাকাতের হাতেই প্রতিষ্ঠিত চিত্তেশ্বরী সর্বমঙ্গলা কালী। লোকশ্রুতি, রঘু ডাকাত রক্তবস্ত্র না-পরে মায়ের পুজো করত শাস্ত্রমতে পট্টবস্ত্রে। রঘু বাবু। এই রঘু ডাকাত পরম বৈষ্ণব হলেও মায়ের পুজো করত শাক্ত মতে।
রঘু ডাকাতের পুজোয় মাঝেমধ্যেই দেওয়া হত নরবলি। পুজো সেরে মায়ের প্রসাদি জবাফুলের মালা আর কানে গুঁজে ডাকাতি করতে বেরোতো দলবলসহ। ডাকাতির অর্থের একটা বড় অংশ গরিব-দুঃস্থদের মধ্যে বিলিয়ে দিত। এই মন্দিরটি ছিল জঙ্গল ঢাকা। রঘু ডাকাতের মৃত্যুর পর মায়ের পুজোর দায়িত্ব নেন রামশরণ সিমলাই নামে এক ব্রাহ্মণ। তিনি স্বপ্নাবিষ্ট হয়ে কাশীপুর গান অ্যান্ড শেল ফ্যাক্টারি রোডে নতুন করে মন্দির প্রতিষ্ঠা করেন। কিংবদন্তি চালু আছে, সাধক রামপ্রসাদ কলকাতা থেকে হালিশহর নৌকাযোগে যেতে যেতে দেবীকে রামপ্রসাদী গান শুনিয়েছিলেন, ‘মা তারিণী শঙ্কর বৈরাগী।’
কাশীপুর আদি চিত্তেশ্বরী

দেবী চিত্তেশ্বরী কালী নন, দুর্গা। তবে তিনি ডাকাতদেরই দেবী। দেবীর আরাধনা করত চিতু ডাকাত বা চিত্তেশ্বর রায়। চিত্তেশ্বর থেকেই নাকি মা চিত্তেশ্বরী। ডাকাতি করতে যাওয়ার আগে চিতু ডাকাত দেবীর পুজো করত ষোড়শোপচারে। প্রায় পাঁচশো বছর আগে দেবীর প্রতিষ্ঠা। দেবীর নাম অনুসারেই জায়গাটির নাম পরে চিৎপুর হয়ে ওঠে। আবার কেউ বলে চিতু ডাকাতের নাম থেকেই চিৎপুর। চিত্তেশ্বরী দেবীর গায়ের রং হলুদ। গঙ্গায় ভেসে যাওয়া নিম গাছের কাঠ দিয়ে নির্মিত মায়ের মূর্তি। দেবী এখানে সিংহবাহিনী হলেও রয়েছে একটি বাঘের মূর্তি। অনেকেই মনে করেন, এই অঞ্চলে সেইসময় ছিল বাঘের খুব উপদ্রব। তাই এখানে বাঘ হল সুন্দরবনের দক্ষিণ রায়ের প্রতিনিধি। বাঘকে খুশি রাখতেই ডাকাতেরা দেবীপুজোর সঙ্গে বাঘেরও পুজো করত। এই মন্দিরে নাকি নিয়মিত নরবলি হত।
সোনাই কালী
তিনশো বছর আগে খিদিরপুরের সার্কুলার গার্ডেনরিচ রোড এলাকা ছিল জলা-জঙ্গলে ভরা। ছিল শ্মশানভূমি। সেই শ্মশানভূমিতে প্রতিষ্ঠিত হয়েছিলেন সোনাই কালী। প্রতিষ্ঠিতা রঘু ডাকাতের দাদা গোলকনাথ চক্রবর্তী। রঘু ডাকাত ঘোষ হলে দাদা চক্রবর্তী হবে না। তাহলে কী এ আর এক রঘু ডাকাত!
মা সোনাই কালী প্রতিষ্ঠিত হয়েছিলেন কার্তিক অমাবস্যায়। শোনা যায়, ডাকাতি করতে যাওয়ার আগে রঘু ডাকাত দেবীর পুজো করত। প্রতি কার্তিক অমাবস্যায় হয়ে থাকে বাৎসরিক উৎসব। দুর্গাপুজোর সপ্তমী থেকে নবমী। মাকে দেওয়া হয় অন্নভোগ। কালীপুজোয় মাকে দেওয়া হয় ছাপ্পান্ন ভোগ। বলিও হয়ে থাকে। ছাগবলির পাশাপাশি বলি হয় আখ, চালকুমড়ো ইত্যাদি। মায়ের পুজো হয় তন্ত্র ও বৈদিক মতে। সেইজন্য মাকে নিবেদন করা হয় কারণবারিও। ফলহারিণী কালীপুজোয় মাকে নিবেদন করা হয় শুধুমাত্র ফল৷ রটন্তী কালীপুজোয় দেওয়া হয় অন্নভোগ। সোনাই কালীর ভৈরব হলেন কমলেশ্বর। মন্দির খোলা ভোর ৫-৫.৩০ থেকে দুপুর ১টা, বিকেল ৪-১০টা। স্থানীয়রা ভরসা করেন সোনাই কালীর ওপর। মঙ্গল, শনিবার ছাড়াও প্রতি অমাবস্যায় প্রচুর ভক্তের ভিড় হয় সোনাই কালীর মন্দিরে।
বরানগর বাজারে সিদ্ধেশ্বরী কালী

সিঁথির মোড় দিয়ে সোজা ঢুকলে বরানগর বাজারে সিদ্ধেশ্বরী কালী মায়ের মন্দিরে ধাক্কা খেতে হবে। এ-মন্দির কলকাতার পুরনো মন্দিরগুলির একটি। সে আজ থেকে অনেক কাল আগের কথা। কমবেশি চারশো বছর তো হবেই! সেইসময় এসব এলাকা ছিল জলা-জঙ্গলে ভর্তি। ছিল হোগলা বন। ওই জঙ্গলে ছিল ভয়ংকর এক ডাকাত দল। ডাকাত সর্দার যখন হারে রে রে হারে রে রে বলে ডাক ছাড়ত হাড় হিম হয়ে যেত সকলের। এই ডাকাতদলই হোগলার মন্দির করে সিদ্ধেশ্বরী কালী মায়ের প্রতিষ্ঠা করে। ডাকাতির আগে নরবলি দিয়ে ডাকাতি করতে বেরোতো।
বরানগরের পথে যাওয়ার সময় রানি রাসমণির ঘোড়ার গাড়ি দুর্ঘটনায় পড়ে। গাড়ির চাকা ভেঙে যায়। সেইসময় উনি শুনতে পান পুরোহিতের মন্ত্রোচ্চারণ। তিনি গিয়ে দেখেন হোগলার মন্দিরে কালী মায়ের পুজো হচ্ছে। রাসমণি পুজো দেন। এখানকার পুরোহিতই নাকি দক্ষিণেশ্বরের জায়গার খবর দিয়েছিলেন রাসমণিকে।
এরপর দক্ষিণেশ্বরে যখন ঠাকুর রামকৃষ্ণ দেব ছিলেন তখন তিনি আসতেন এখানে। ঠাকুর কাছেই আসতেন প্রামাণিক ঘাটের ব্রহ্মময়ী কালীমন্দিরে। উনি ব্রহ্মময়ী মাকে বলতেন মাসি। যাইহোক, ঠাকুর রামকৃষ্ণ দেব সিদ্ধেশ্বরী কালীমন্দিরে পুজো করার পর পাশেই ফাগুর দোকানে কচুরি-জিলিপি খেয়ে দক্ষিণেশ্বর ফিরতেন। ফাগুর দোকানের স্মৃতি বয়ে চলেছে এখনও সেই দোকানটি। যদিও নামের বদল হয়েছে ফাগুর দোকানের।
কালীপুজোর দিন সিদ্ধেশ্বরী কালী মা রূপ ধারণ করেন রাজরাজশ্বরীর। মাকে পরানো হয় বেনারসি এবং সোনার গয়না। এদিন ৫১ পদ দিয়ে ভোগ নিবেদন করা হয় সিদ্ধেশ্বরী মাকে। মন্দির খোলা থাকে সকাল ৬-৬.৩০ থেকে বেলা ১-১.৩০টা। বিকেল ৫-৫.৩০-রাত ১০টা। সন্ধে ৭টা নাগাদ সন্ধ্যারতি শুরু। প্রতিদিনই ভক্ত সমাগম হয়। ভিড় হয় মঙ্গল, শনি আর প্রতি অমাবস্যায়। শোনা যায়, সিদ্ধেশ্বরী কালী মা খুবই জাগ্রত। এমনকী রাত পাহারায় থাকা অনেকেই শুনেছেন মায়ের পায়ের ঝম ঝম ঝম ঝম নূপুরের ধ্বনি!
মনোহর ডাকাতের ছানা কালী

মনোহর ডাকাতের কালীমন্দির হল দক্ষিণ কলকাতার পূর্ণদাস রোডে। এই ডাকাতের নামেই মনোহরপুকুর রোড। সেকালের কলকাতায় মনোহর বাগদি অর্থাৎ মনোহর ডাকাত ছিল ত্রাস। কলকাতার প্রায় সর্বত্রই ছিল গভীর জঙ্গল। দক্ষিণে ছিল আদি গঙ্গার নদীপথ। জঙ্গলে সাপ, বাঘ-সহ বহু হিংস্র জন্তুর সঙ্গে ভয় ছিল মনোহর ডাকাতের। সে ছিল ভয়ংকর। বহু পুণ্যার্থী এই পথেই যেতে কালীঘাট মন্দির। তাঁরা যাতায়াতের পথে অনেকসময় পড়তেন মনোহর ডাকাত আর তার দলবলের কবলে। উল্লেখ্য, ধনী ব্যক্তিদেরই টাকাপয়সা লুঠ করত মনোহর ডাকাত।
মনোহর ছিলঅকৃতদার। থাকত এক বয়স্ক মহিলা আত্মীয়ার সঙ্গে। আর থাকত তাঁর দলবল। নরবলির জন্য মনোহরের লক্ষ্য ছিল অত্যাচারী ধনীরা। বিশেষ করে, যেসব ধনী ব্যক্তি যারা গরিবদের ওপর অত্যাচার করতেন।
জঙ্গলের ভিতরই ছিল কালীমন্দির। মায়ের মূর্তি ছিল কষ্টিপাথরের। মনোহরের সেই মূর্তিই আজও মন্দিরে অধিষ্ঠাত্রী দেবী। একটা রহস্য আজও থেকে গেছে, মনোহর ডাকাতি করতে যাওয়ার আগে কালীমূর্তিটি দড়ি বেঁধে পাশের এক পাতকুয়োয় ফেলে দিয়ে যেত! কারণটি জানা যায় না! একদিন হল কী, মনোহর ডাকাত পাতকুয়া থেকে আর তুলতে পারল না ওই কালীমূর্তি! কাকতালীয়ভাবে মৃত্যু হল মনোহর ডাকাতের। এরপর মনোহর ডাকাতের ওই ছানা কালীর স্বপ্নাদেশ পান কামাখ্যাচরণ মুখোপাধ্যায়। দেবী বলেন, তিনি পাতকুয়ার গভীরে পড়ে আছেন, ফলে, তিনি আর নিত্য পুজো পাচ্ছেন না। তাঁকে যেন খুব সত্বর পাতকুয়া থেকে তুলে প্রতিষ্ঠা করা হয় মন্দিরে। কামাখ্যাচরণ মুখোপাধ্যায় ভোরবেলা সাততাড়াতাড়ি ঘুম থেকে উঠে আগে ওই পাতকুয়ায় যান। গিয়ে অবাক হন। তিনি দেখলেন পাতকুয়োর ভিতর পড়ে আছেন মা! তিনি মন্দির নির্মাণ করে মাকে প্রতিষ্ঠা করলেন। যেহেতু ছানা কালীর প্রকৃত পূজারি ছিল মনোহর ডাকাত, সেইকারণে এই কালীমন্দিরের নামকরণ এবং জনপ্রিয় হয় মনোহর ডাকাতের নামেই। আর একটা কথা বলে রাখা প্রয়োজন, ছানা কালীর অর্থ তাঁকে ছানা নিবেদন করা হত না। এখানে ছানা অর্থে ছোট।
রসা ডাকাতের রসাকালী

চিতু বা মনোহর ডাকাতের মতো সেকালের কলকাতায় আর এক ভয়ংকর ডাকাত ছিল রসা। সে ছিল সাধক ডাকাত। তার ডেরা ছিল আদি গঙ্গার ধারে। মনোহর ডাকাতের মতো রসা ডাকাতের নামেও রাস্তার নামকরণ রসা রোড। তবে রসার কালীমূর্তি ছিল ভয়ালদর্শন!
কালীভক্ত রসা ডাকাতের আর এক পরিচয় ছিল কালী মায়ের পাগল ছেলে। একদিকে কালীঘাট কালীমন্দির অন্যদিকে আদিগঙ্গা। ফলে, এই পথেই বহু কালীভক্ত মানুষ যেতেন কালীঘাট দর্শনে। জঙ্গলে ঘেরা আদিগঙ্গার ধার দিয়ে যাওয়ার সময় রসা ডাকাত আর তার দলবলের হাত থেকে নিস্তার ছিল না কালীভক্ত পুণ্যার্থীদের। রসা ডাকাতের প্রতিষ্ঠিত কালীই আজও পূজিত হন ম্যুর অ্যাভেনিউয়ে। রসা ডাকাতের নামানুসারেই এই কালীর নাম চাই রসা কালী।
অন্যান্য ডাকাতদের মতোই রসাও মায়ের পুজোতে নরবলি দিয়েই ডাকাতির উদ্দেশেই বার হতেন। অমাবস্যার রাতে মায়ের পুজো করা ছাড়াও তন্ত্রসাধনা করত রসা ডাকাত।
ভাইফোঁটার ভূড়িভোজ...

সুপর্না মন্ডল
কাতলা কাবেরী
কী কী লাগবে
৫-৬ টুকরো কাতলা মাছ
১ ইঞ্চি গ্রেট করা আদা
৩-৪ টি ছোটো এলাচ
২ টি দারচিনি র ছোটো স্টিক
৪-৫ টি কাঁচা লংকা
২-৩ টি মাখন
১ চামচ সাদা তেল
১ বাটি দুধ
২ চামচ কর্নফ্লাওয়ার
১ চামচ গোলমরিচ গুঁড়ো
নুন, চিনি স্বাদ অনুসারে
কীভাবে বানাবেন
মাছের টুকরো গুলোতে নুন মাখিয়ে রাখুন। প্যানে সাদা তেলের উপর মাখন দিয়ে গরম করে তাতে মাছ গুলো ভেজে নিন। ওই মাখনেই আদা ঘষা টা দিয়ে দিন। নাড়াচাড়া করে নিন। ততক্ষনে গরম মসলা আর্ কাঁচা লঙ্কা থেঁতো করে নিন। আদা কষে গেলে দুধ ঢালুন। দুধ ফুটে গেলে গরম মসলা আর কাঁচা লঙ্কা থেঁতো টা দিয়ে দিন। মাছ গুলো দিয়ে দিন। ঢাকা দিয়ে একটু ফুটতে দিন। আরো একটু দুধে কর্নফ্লাওয়ার টা গুলে দিয়ে দিন। দুধ ঘন হলে নুন, চিনি, গোলমরিচ গুঁড়ো দিন। শেষে মাখন আর চেরা কাঁচা লঙ্কা দিয়ে নামান।

ইলিশ ভাপা
কী কী লাগবে
৪ টুকরো ইলিশ
২ চামচ রাই সরষে
২ চামচ সাদা সরষে
২ চামচ পোস্ত
২ ফালি নারকেল
৫-৬ টি কাঁচা লংকা
৪-৫ চামচ সরষের তেল
১/২ চামচ হলুদ
কীভাবে বানাবেন
পোস্ত, সরষে, নারকেল, ১ টি কাঁচালঙ্কা বেঁটে নাও মসৃণ করে। কাঁচা তেল আর নুন দিয়ে ৫ মিনিট রেখে দিন। নুন হলুদ মাখিয়ে ইলিশ গুলো হালকা ভেজে নিন। কাঁচা ও করতে পারো। আমি একটু ভেজে নিই। এবারে ওই সরষে, পোস্ত র মিশ্রণে ইলিশ গুলো দিয়ে ২-৩ চামচ তেল, পরিমাণ মত নুন আর কিছু কাঁচা লংকা দিয়ে টিফিন বক্স এ ভরে ১৫-২০ মিনিট ভাপিয়ে নিন। খাওয়ার আগে আরো একটু কাঁচা সরষের তেল ছড়িয়ে পরিবেশন করুন।

তেল পেটি
কী কী লাগবে
৪ টি কাতলা মাছের তেল মোটা পেটি
২ টি কাশ্মীরি লংকা
১/২ চামচ জিরে
১/২ চামচ মৌরি
১/২ চামচ কাশ্মীরি লাল লংকা গুঁড়ো
নুন, চিনি স্বাদ মতো
সরষের তেল প্রয়োজন মত
১ টি টমেটো
১/২ কাপ টক দই
১/২ চামচ হলুদ
১/৩ চামচ পাঁচফোড়ন
২ টি মাঝারি পিয়াজ কুচি
১ চামচ আদা রসুন বাটা
১ চামচ গরম মসলা গুঁড়া
২ টি কাঁচালঙ্কা
কীভাবে বানাবেন
সরষের তেলে নুন হলুদ মাখানো পেটি গুলো দিয়ে ভেজে নিন। কাশ্মীরি লংকা জিরা ও মৌরি বেঁটে একটা মসলা বানিয়ে নিন। টক দই অল্প নুন দিয়ে ফেটিয়ে রাখুন। টমেটো কুচি করে রাখুন। এবার ওই মাছ ভাজা তেলেই পাঁচফোড়ন দিয়ে পেঁয়াজ কুচি গুলো দিন। ভাজা হলে আদা রসুন বাটা দিন কষিয়ে নিয়ে জিরে, মৌরি ও লংকার যে বাটা মসলা টা বানিয়েছিলে সেটা দিয়ে দিন। তারপর টক দই টা দিয়ে আঁচ কমিয়ে ঢাকা দিয়ে দিন। তেল ভেসে উঠে আসলে কাশ্মীরি লংকা গুঁড়ো, নুন, চিনি দিন। সব মিশে গেলে গরম জল দাও, ফুট উঠলে মাছ দিন। ঝোল কমলে কাঁচা লঙ্কা আর্ গরম মসলা গুঁড়া দিয়ে নামিয়ে নিন।

দুধ খেরো
কী কী লাগবে
১ টি ছোটো খেরো
১/২ কাপ মতো দুধ
১ চামচ আদা ঘষা
১/২ চামচ পাঁচফোড়ন
১/৪ চামচ হিং
২ চামচ মুগ ডাল
১ চামচ ঘি
৩ চামচ সরষের তেল
নুন, মিষ্টি স্বাদ মতো
কীভাবে বানাবেন
মুগ ডাল ধুয়ে শুকিয়ে রাখুন। খেরো ছোটো করে কেটে নিন। প্যান এ সরষের তেল গরম করে তাতে হিং আর পাঁচফোড়ন ফোরন দিন। মুগ ডাল টা একটু নেড়ে নিন। গন্ধ উঠলে আদা ঘষা টা দিয়ে তার উপরেই খেরো টা দিয়ে দিন। নুন দিন, আঁচ কমিয়ে ঢাকা দিন। জল দেওয়া যাবেনা। সেদ্ধ হয়ে আসলে দুধ দিন, চিনি দিন। এটা একটু মিষ্টি মিষ্টি হয় সেই বুঝে চিনি দেবেন। ঘি দিয়ে নামান।

রিক্তা দত্ত
চিংড়ি কাচ্চি পোলাও
কী কী লাগবে
গোবিন্দভোগ চাল ৩৫০ গ্রাম
চিংড়ি ১৫০ গ্রাম
আদারসুন বাটা ১/২ চা চামচ
লঙ্কা গুঁড়ো ১ চা চামচ
নুন স্বাদমতো
চিনি ২ চা চামচ
ভিনিগার ১ চা চামচ
আমচুর পাউডার ১ চা চামচ
গরম মসলা গুঁড়ো ১/২ চা চামচ
সাদা গোলমরিচ গুঁড়ো ১/২ চা চামচ
১ চিমটি
ঘি ৫ টেবিল চামচ
তেজপাতা ১ টি
টকদই ১.৫ টেবিল চামচ
কীভাবে বানাবেন
চিংড়ি ছাড়িয়ে নুন, আর ভিনিগার দিয়ে ম্যারিনেট করে ১০ মিনিট ফ্রিজে ঢাকা দিয়ে রাখুন।
এবারে চাল ভালো করে ধুয়ে জল ঝরিয়ে গরম মসলা গুঁড়ো, সাদা গোলমরিচ গুঁড়ো, ২ টেবিল চামচ ঘি, তেজপাতা দিয়ে ভালো করে মাখিয়ে রাখুন।
এবারে ম্যারিনেটেড চিংড়ি তে টক দই, লঙ্কার গুঁড়ো আর বাকি গরমমসলা গুঁড়ো দিয়ে আবারো ম্যারিনেট করুন। এবারে বাকি ঘি গরম করে ম্যারিনেটেড চিংড়ি গুলো দিয়ে হাল্কা করে নাড়াচাড়া করে নিন । তার উপরে ঘি দিয়ে মাখা চাল দিয়ে হালকা ভাজা ভাজা করে ৭৫০ মি.লি. জল দিয়ে ঢাকা দিয়ে দিন।
জল শুকিয়ে এলে নুন এবং চিনি দিন, ভালো করে মিশিয়ে নিন। কিছুক্ষন ঢাকা দিয়ে রেখে পরিবেশন করুন।

গোয়ালন্দ স্টিমারের মুর্গী ঝোল
কী কী লাগবে
মুরগি ৫০০ গ্রাম, মাঝারি আকারের পেঁয়াজ ৩ খানা , ছোটো রসুন একটা গোটা, আদা এক ইঞ্চি পরিমান, বড় কাঁচা লঙ্কা ৪-৫ টা, শুকনো লঙ্কা ২-৩ খানা, হলুদ এক চামচ, নুন পরিমান দেখে আন্দাজে, সরষের তেল, কুঁচো চিংড়ি মাছ ১০০ গ্রাম
কীভাবে বানাবেন
পেঁয়াজ একদম ছোটো কুচি কুচি করে কাটতে হবে। ঝাল মুড়িতে মাখার সময় যেমন কুচি করে, সেরকম। আদা রসুন আর লঙ্কাও(কাঁচা ও শুকনো) সেই ভাবে ছোটো ছোটো কুচি করে কেটে নিতে হবে/ থেঁতলে নিতে হবে।
এবারে মুরগি ভালো করে ধুয়ে একটা কাচ বা প্লাস্টিকের পাত্রে রাখুন (কোন ধাতব পাত্র নয়)।
পেঁয়াজ, রসুন আদা, লঙ্কা , হলুদ আর নুন দিন। ৬ টেবিল চামচ সরষের তেল দিন। কোনো রকম সাদা তেল দিয়ে এ রান্নাটা হবে না।
খুব ভালো করে দু হাত দিয়ে মাখুন বেশ সময় নিয়ে। এবারে ২ ঘন্টা রেখে দিন ঢাকা দিয়ে।
কুচো চিংড়ি ভালো করে ধুয়ে মাথা, খোলা ও পা বাদ দিয়ে দিন। এবারে বাকি চিংড়িটা খুব মিহি করে কেটে নিন। ছুরি দিয়ে বার বার কুঁচোতে থাকলেই হবে। হামান দিস্তা বা শিল-নোড়ার দরকার নেই। খুবই কম পরিমান হয়ে যাবে চিংড়িটা। কিন্তু ওই টুকুই লাগবে। তার বেশি না।
একটা ছোট ডেকচি বা কড়ায় ৩-৪ চামচ সরষের তেল দিন। চিংড়ি বাটা টা মুরগিমাখায় মিশিয়ে দিন। তেল গরম হয়ে গেলে মুরগি মাখা টা কড়ায় ছাড়ুন। চড়া আঁচ রাখবেন না। আঁচ অর্ধেক কমিয়ে রাখুন। ৩-৪ মিনিট নাড়ুন। তার পরে আঁচ একেবারে কমিয়ে দিন আর ঢাকা দিন ভালো ভাবে, যেন খুব বেশী বাস্প বেরিয়ে যেতে না পারে। আধ ঘন্টা পর ঢাকা খুলে আধ কাপ জল দিন, আর আবার ঢাকা চাপা দিয়ে ১০ মিনিট খুব কম আঁচে রান্না করুন। এবারে উনুন বন্ধ করে দিন। কিন্তু কড়ার ঢাকা খুলুন আরো ১০-১৫ মিনিট পর।

মনোমিতা কুন্ডু
তেল পাবদা
কী কী লাগবে
পাবদা মাছ ৪টি,
টক দই আধা কাপ,
আদা বাটা ১ চা চামচ,
ধনে ১ চামচ,
জিরে ১ চামচ,
শুকনো লঙ্কা ২ টি,
১/২ চা চামচ মৌরি,
কালো জিরে ১ চা চামচ,
কাঁচা লঙ্কা ২ টি,
নুন ,
হলুদ,
সর্ষের তেল,
আদা বাটা-১.৫ টেবিল চামচ
কীভাবে বানাবেন
পাবদা মাছ নুন হলুদ মাখিয়ে হালকা করে ভেজে নিন। গোটা মশলা গুলো (ধনে , জিরে, শুকনো লঙ্কা, মৌরি) শুকনো খোলায় নেড়ে গুঁড়ো করে নিন। সর্ষের তেল গরম করে কালোজিরা কাঁচালঙ্কা ফোড়ন দিয়ে আদা বাটা কষিয়ে নিন। এতে নুন, হলুদ আর ভাজা মশলা মিশিয়ে ফেটিয়ে নেওয়া দই দিন। দই কষে গেলে তেল ছাড়লে অল্প গরম জল দিয়ে পাবদা মাছ ভাজা গুলো দিয়ে দিন। ফুটে গিয়ে একটু তেল ছাড়লে নামিয়ে পরিবেশন করুন।

চিকেন শাহী কোর্মা
কী কী লাগবে
চিকেন হাড় সহ পিস ৭০০ গ্রাম, পেঁয়াজ ২ টি, আমন্ড ৮-১০টা, কাজু ৮-১০ টা, ১ চা চামচ চিরঞ্জি, ১ চা চামচ পোস্ত, ২ চামচ নারকেল গুঁড়ো, সাদা তেল , ঘি, ছোট এলাচ ৫-৭ টা, ৪ -৫ টা লবঙ্গ, ২ চা চামচ আদা বাটা, ২ চা চামচ রসুন বাটা, গরম মসলা গুঁড়ো, ১ চা চামচ জাফরান , ১ কাপ দুধ, ২ চা চামচ ধনে গুঁড়ো, লঙ্কা গুঁড়ো, ১ কাপ দই, নুন
কীভাবে বানাবেন
চিকেনের পিস গুলোতে ভালো করে নুন আর এক চামচ দই মাখিয়ে অন্তত এক ঘন্টা রেখে দিন। আমন্ড , কাজু, চিরঞ্জি, নারকেল গুঁড়ো আর পোস্ত শুকনো খোলায় রোস্ট করে গুঁড়ো করে নিন।পেঁয়াজ ভেজে বেরেস্তা বানান। ঠান্ডা হলে ওই বেরেস্তার সাথে দই মিশিয়ে বেটে নিন। দই বেরেস্তা বাটা আর বাদামের গুঁড়ো একসাথে মিশিয়ে আরেকবার বেটে নিন। এবার কড়াইতে ঘি গরম করে ছোট এলাচ ও লবঙ্গ ফোড়ন দিয়ে আদা রসুন বাটা কষে নিন। তাতে চিকেনের পিস গুলো দিয়ে সামান্য ধনেগুঁড়ো আর লঙ্কা গুঁড়ো দিয়ে ভালো করে ভাজুন। ভাজা হলে ওর মধ্যে বেরেস্তা আর বাদাম বাটার মিশ্রণ দিয়ে ভালো করে কষে নিন। সব শেষে গরম মশলা গুঁড়ো দিয়ে আর জাফরান ভেজানো দুধ দিয়ে ঢাকা দিয়ে দিন। পাঁচ মিনিট পর গ্যাস বন্ধ করে আরো পাঁচ মিনিট রাখুন। পরিবেশন করুন।

সাদা আলুর দম
কী কী লাগবে
মাঝারি মাপের আলু ২৫০ গ্রাম
আদা বাটা ১ টেবিল চামচ
টক দই ১০০ গ্রাম
কারি পাতা
গোটা সর্ষে
নুন
চিনি
নারকেল কোরা সামান্য
রোস্টেড ধনে গুঁড়া ১ টেবিল চামচ
জিরা গুঁড়ো ১ চা চামচ
এক চা চামচ লঙ্কাগুঁড়ো (স্বাদের জন্য চাইলে দিতে পারেন)
গরম মশলা গুঁড়ো ১ চা চামচ
দশটা কাজু বাদাম বাটা
শুকনো লঙ্কা দুটি
কাঁচালঙ্কা দুটি
খোসা ছাড়ানো কাঁচা চিনে বাদাম -সামান্য
সাদা তেল।
কীভাবে বানাবেন
প্রথমে আলু সেদ্ধ করে খোসা ছাড়িয়ে হালকা ভেজে নিন। ভাজার সময় অল্প নুন দেবেন কিন্তু কোন হলুদ দেবেন না। এবার কড়াইতে সাদা তেল গরম করে তাতে শুকনো লঙ্কা এবং গোটা সরষে ও কারি পাতা ফোড়ন দিন। এবার ওর মধ্যে আদা বাটা দই দিয়ে নুন দিয়ে ভালো করে কষান। এরপর ওতে ধনেগুঁড়ো জিরেগুঁড়ো এবং গরম মসলা একে একে দিন। অল্প ১/৪ কাপ জল দিন যাতে মশলা পুড়ে না যায়। সব কষে গেলে সবশেষে কাজুবাটা দিয়ে আরেকটুখানি কষিয়ে নিন। এবার আলু গুলো দিয়ে নাড়া চাড়া করে খুব সামান্য জল দিন ।স্বাদ মতো নুন মিষ্টি দিন। জল টেনে এলে এবার ওতে নারকেল কোরা ও কাঁচা চিনে বাদাম দিন। কয়েকটি কারি পাতা উপর থেকে ছড়িয়ে দিন। কিছুক্ষন নাড়া চাড়া করে মাখা মাখা হয়ে অল্প তেল বেরোলে নামিয়ে নিন।

পদ্মলুচির পায়েস
কী কী লাগবে
দুধ ১.5 লিটার, খোয়া ক্ষীর ১০০ গ্রাম , ময়দা দেড় কাপ, সাদা তেল , চিনি স্বাদ মতো, ছোট এলাচ গুঁড়ো, ড্রাই ফ্রুট ( কাজু, কিসমিস, পাস্তা, বাদাম), ঘি ৪ টেবিল চামচ,
কীভাবে বানাবেন
খোয়া ক্ষীর কে গুঁড়ো করে তার সাথে এক কাপ দুধ মিশিয়ে হালকা আঁচে পাক দিয়ে নিন। ঘন হয়ে এলে ড্রাই ফ্রুট মিশিয়ে নিয়ে একটা পুর তৈরি করুন , পুড়ে হালকা মিষ্টি দিতে পারেন।ময়দা টা ঘির ময়ান দিয়ে ভালো করে ঠেসে মাখুন। ছোট ছোট লুচি বেলে নিন। এবার একটা লুচির উপর খোয়া ক্ষীরের পুর দিন। আরেকটা লুচি দিয়ে ঢাকা দিয়ে ধরে নকশা কেটে পদ্মকোষের মতো আকার দিন। এই পদমলুচি গুলিকে সাদা তেলে ভেজে, তুলে রাখুন।আরেকটি পাত্রে দুধ ফুটিয়ে ঘন করে নিন। ওতে স্বাদ মতো চিনি দিন নিন।চিনি মিশে গেলে, এর মধ্যে ভেজে রাখা ক্ষীরের পুর ভরা পদ্মলুচিগুলো দিয়ে দিন। একটু ফুটে এলে উপর থেকে এলাচ গুঁড়ো এবং ড্রাই ফ্রুট কুচি ছড়িয়ে দিন।

পাপিয়া সান্যাল চৌধুরী
নবরত্ন কোরমা
কী কী লাগবে
ফুলকপি – ২ কাপ
আলু – ১ কাপ
বিনস্ - ১/২ কাপ
গাজর – ১/২ কাপ
আপেল – ১ কাপ
বেদানা – ১/২ কাপ
সেদ্ধ কড়াইশুঁটি – ১/৪ কাপ
সেদ্ধ মিষ্টি কর্ণ – ১/৪ কাপ
কাজু – ১/৪ কাপ
পনির – ২০০ গ্রাম
পেঁয়াজ – ১ টি – পিস করা
আদা – ২ চামচ (চপড্)
পোস্তদানা – ১ চামচ
চারমগজ – ১ টেবিল চামচ
ছোট এলাচ – ৬টি
কাঁচা লঙ্কা – ২ টি
কাজু – ১/৪ কাপ
জয়িত্রি – ১ টি ফুল
দারচিনি – ১ টি
কসুরি মেথি – ১ চামচ
গোটা জিরে – ১ চামচ
দুধ – ১ কাপ
ক্রিম – ১/৪ কাপ
কেশর – ১/২ চামচ
নুন ও চিনি – স্বাদমতো
বাটার – ৪ টেবিল চামচ
সাদা তেল – ৬ টেবিল চামচ
গরম মশালা গুঁড়ো – ১ চামচ
কীভাবে বানাবেন
প্রথমে একটি ননস্টিক প্যান-এ ৪ টেবিল চামচ তেল দিয়ে তাতে ফুলকপি হালকা করে ভেজে নিয়ে একে একে আলু, গাজর ও অল্প নুন যোগ করে ভালো করে ভেজে নিতে হবে।
সেদ্ধ করা কড়াইশুঁটি ও স্যুইট কর্ণ অ্যাড করে ভালো করে ফ্রাই করে নিয়ে নামিয়ে রাখতে হবে।
এবার ঐ একই পাত্রে ১ টেবিল চামচ সাদা তেল ও ২ টেবিল চামচ বাটার দিয়ে পিস করে রাখা পনির দিয়ে দিতে হবে।
হালকা ফ্রাই করে আপেল ও কাজু ও কিছুটা বেদানা দিয়ে, অল্প নুন অ্যাড করে (১/৪ কাপ), ফ্রাই করে সরিয়ে রাখতে হবে।
এবার একটি পাত্রে ১ কাপ জল গরম করতে বসাতে হবে। তাতে পেঁয়াজ, আদা, পোস্তদানা, চারমগজ দানা, কাজু (১/৪ কাপ) ও কাঁচালঙ্কা দিয়ে এক মিনিট ফুটিয়ে গ্রাইন্ডার জার-এ ট্রান্সফার করে নিতে হবে।
এবার ঐ জারে ছোট এলাচ, জয়িত্রির ফুল, কেশর মিশিয়ে পেস্ট বানিয়ে নিতে হবে।
এবার ননস্টিক প্যান-এ ১ টেবিল চামচ সাদা তেল ও ২ চামচ বাটার দিয়ে দারচিনি, কসুরি মেথি ও জিরে দিয়ে উপরোক্ত পেস্ট মিশিয়ে কষিয়ে ফ্লেম কম করে ১ কাপ দুধ ঢেলে দিতে হবে।
গরম হয়ে গেলে সমস্ত ভাজা সবজি দিয়ে, ক্রিম মিশিয়ে নিতে হবে।
নুন ও মিষ্টি পরিমাণ মতো দিতে হবে এবং ১ চামচ গরম মশালা মিশিয়ে ফ্লেম অফ্ করে দিতে হবে।
২-৩ মিনিট পর হালকা ঠান্ডা হয়ে গেলে আপেল ও পনির ভাজার মিশ্রণ মিশিয়ে ঢাকা দিয়ে রেখে দিতে হবে ৫ মিনিট।
একেবারে শেষে উপর থেকে বাকি বেদানার দানা ছড়িয়ে পরিবেশন করতে হবে।

গাট্টে কি কারি
কী কী লাগবে
বেসন – ১ কাপ
ফ্রেশ টক দই – ২ কাপ + ৩ টেবিল চামচ
হলুদ গুঁড়ো – ১/২ চামচ
আদা ও কাঁচা লঙ্কার পেস্ট – ১ টেবিল চামচ
কাশ্মীরি লঙ্কার গুঁড়ো – ১ চামচ
সাদা তেল – ২ টেবিল চামচ
জোয়ান – ১ টেবিল চামচ
কসুরি মেথি – ১ চামচ
বেসন – ১ টেবিল চামচ
ঘি – ১/৪ কাপ
ধনেপাতা – ২ টেবিল চামচ
কাজুবাদাম পেস্ট – ১/৪ কাপ
রোস্টেড মৌড়ি পাউডার – ১/২ চামচ
রোস্টেড জিরে পাউডার – ১/২ চামচ
রোস্টেড ধনে পাউডার – ১ চামচ
কিচেন কিং পাউডার – ১ চামচ
ফোড়নের জন্য লাগবেঃ
শুকনো লঙ্কা – ২ টি
জিরে – ১ চামচ
হিং – ১/২ চামচ
ছোট এলাচ – ৬ টি
নুন ও চিনি – স্বাদমতো
কিভাবে বানাবেন
একট বোলে বেসন নিয়ে তাতে ১/২ চামচ কাশ্মীরি লঙ্কার গুঁড়ো, ১/৪ চামচ হলুদ, ১/২ চামচ কিচেন কিং মশালা, ১ টেবিল চামচ জোয়ান, পরিমান মতো নুন দিয়ে তার সাথে ১ টেবিল চামচ ঘি দিয়ে ভালো করে ময়ান দিতে হবে।
এবার দই দিয়ে (৩ টেবিল চামচ) বেসন মাখতে হবে। প্রয়োজনে অল্প জল দেওয়া যেতে পারে।
একটি ডো-এর ফর্ম হলে (নরম হবে) উপর থেকে সামান্য তেল দিয়ে ১০ মিনিট রেস্ট-এ রাখতে হবে।
এবার ডো থেকে লম্বা, লম্বা পিস কেটে তার থেকে ছুড়ি দিয়ে ছোটছোট গাট্টা কেটে নিতে হবে।
এরপর জল গরম করতে বসাতে হবে এবং ফুটে গেলে তাতে গাট্টার পিসগুলো দিয়ে দিতে হবে।
গাট্টা গুলো জলের উপর ভেসে উঠলে নামিয়ে নিতে হবে।
এবার গ্রেভি বানানোর জন্য একটি বৌলে ১ কাপ দই নিয়ে তাতে বাকী হলুদ, লঙ্কা গুঁড়ো, জিরে, ধনে, মৌড়ি ও কিচেন কিং মশালা ও ১ টেবিল চামচ বেসন মিশিয়ে ভালো করে ফেটিয়ে নিতে হবে।
কড়াইতে বাকী ঘি দিয়ে ও ফোড়নের উপকরণ দিয়ে, ১ টেবিল চামচ আদা ও কাঁচা লঙ্কার পেস্ট মিশিয়ে ও সামান্য জল দিয়ে ফেটানো দই-এর মিশ্রণ টি দিয়ে দিতে হবে। ফ্লেম কমিয়ে ক্রমাগত নাড়াতে হবে এবং মাঝখানে কাজুবাদাম পেস্ট টা মিশিয়ে নিতে হবে।
এরপর গাট্টা গুলো মিশিয়ে পরিমাণ মতো নুন ও চিনি যোগ করে একদম শেষে কসুরি মেথি ও ধনেপাতা ছড়িয়ে পরিবেশন করতে হবে।

পনির কাঁচকলার কোফতাকারি
কী কী লাগবে
কাঁচকলা – ২ টি (বড়)
গ্রেটেড পনির – ১/৪ কাপ
হলুদ – ১ চামচ
রোস্টেড ভাঙ্গা কাজু – ২ টেবিল চামচ
টম্যাটো – ২ টি
বেসন – ৪ টেবিল চামচ
সরষের তেল – পরিমাণ মতো
ঘি – ২ চামচ
আদাবাটা – ২ চামচ
রোস্টেড জিরে পাউডার – ১ চামচ
গরমমশালা গুঁড়ো – ১/২ চামচ
কাশ্মীরি লঙ্কা গুঁড়ো – ১ চামচ
কসুরি মেথি – ১/২ চামচ
কাজু (গোটা) – ৩ টেবিল চামচ
দুধ – ১/৪ কাপ
কাঁচা লঙ্কা বাটা – ১ টেবিল চামচ
ধনেপাতা – ৪ টেবিল চামচ
নুন ও চিনি – স্বাদমতো
ফোড়নের জন্যঃ
শুকনো লঙ্কা – ১ টি
তেজপাতা – ১ টি
জিরে – ১ চামচ
গোটা গরম মশালা (দারচিনি – ১ টি + ৩ টি এলাচ + ৩ টি লবঙ্গ)
হিং – ১/৪ চামচ
কীভাবে বানাবেন
প্রথমে বেসন রোস্ট করে নিতে হবে।
টম্যাটো কেটে পেস্ট বানিয়ে নিতে হবে।
৩ টেবিল চামচ কাজু ১/৪ কাপ দুধ গরম করে তাতে কিছুক্ষণ রেখে পেস্ট বানিয়ে নিতে হবে।
এবার কাঁচকলা কেটে ১/২ কাপ জল, নুন ও সামান্য হলুদ সহ সেদ্ধ করে নিতে হবে।
জল থেকে তুলে কাঁচকলার খোসা ছাড়িয়ে নিতে হবে।
এবার একটি বড় বৌলে খোসা ছাড়ানো কাঁচকলা, পনির, কাঁচালঙ্কা (১/২) পেস্ট, ধনেপাতা (২ টেবিল চামচ), ১ চামচ আদার পেস্ট, রোস্টেড কাজু ও ৪ টেবিল চামচ রোস্টেড বেসন দিয়ে, ১/৪ চা চামচ গরম মশালা ও পরিমাণ মতো নুন ও চিনি মিশিয়ে ডো বানিয়ে নিতে হবে।
এবার ডো থেকে, হাতে তেল মাখিয়ে, কোফতার আকারের মতো অংশ বানিয়ে ১/২ ঘন্টা ফ্রিজে রেখে দিতে হবে।
এবার কড়াইতে সরষের তেল গরম করে কোফতা গুলি দু’পিঠ লাল করে ভেজে নিতে হবে।
এবার ননস্টিক প্যানে ৪ টেবিল চামচ তেল দিয়ে ১ চামচ আদাবাটা দিয়ে ও ১/২ চামচ কাঁচালঙ্কা পেস্ট দিয়ে একে একে হিং, জিরে, গোটা গরম মশালা, তেজপাতা, শুকনো লঙ্কা, টম্যাটো পেস্ট দিয়ে কষে নিতে হবে।
১/২ চামচ হলুদ ও ১/২ চামচ কাশ্মীরি লঙ্কা গুঁড়ো দিয়ে আবারো কষতে হবে।
এবার ফ্লেম কম করে কাজু পেস্ট ও সামান্য জল মিশিয়ে ক্রমাগতঃ নেড়ে যেতে হবে।
এরপর রোস্টেড জিরে পাউডার, বাকী গরম মশালা গুঁড়ো, নুন ও চিনি পরিমাণ মতো দিয়ে, ১ কাপ জল মিশিয়ে ফুটে যাবার পর কোফতা মিশিয়ে উপর থেকে ঘি, কসুরি মেথি ও ধনেপাতা কুচি মিশিয়ে পরিবেশন করতে হবে ভাতের সাথে।

সুতপা দে
কালীবাড়ির ভোগের মাংস
কী কী লাগবে
মাংস, জলে গোলা হিং, গোটা গরম মশলা, আদা বাটা, টক দই, জিরে গুঁড়ো, ধনে গুঁড়ো, লঙ্কা গুঁড়ো, হলুদ গুঁড়ো, নুন, চিনি, সরষের তেল ও ঘি
কীভাবে বানাবেন
প্রথমে মাংস ম্যারিনেট করতে হবে টক দই দিয়ে। কড়াইতে তেল গরম করে তাতে চিনি, গোটা গরম মশলা, হিং, আদা বাটা, দিয়ে ম্যারিনেট করা মাংস দিতে হবে। আন্দাজ মতো নুন, হলুদ, জিরে, ধনে দিয়ে ভাল করে কষিয়ে সেদ্ধ করতে হবে এর পর। শেষে গুঁড়ো গরম মশলা, ঘি ছড়িয়ে দিলেই তৈরি কালীবাড়ির ভোগের মাংস।

গার্লিক মটন বাহার
কী কী লাগবে
৩৫০ গ্রাম খাসির মাংস
২ চা চামচ পেঁয়াজ বাটা
১ চা চামচ রসুন বাটা
১ চা চামচ আদা বাটা
২ চা চামচ টক দই
১ চা চামচ জিরেগুঁড়ো
১ চা চামচ ধনে গুঁড়ো
১ চা চামচ লঙ্কাগুঁড়ো
১ চা চামচ হলুদ গুঁড়ো
৩ টে কাঁচালঙ্কা চেরা
প্রয়োজন অনুযায়ী এলাচ লবঙ্গ দারচিনি
১ চা চামচ কাশ্মীরি লঙ্কাগুঁড়ো
স্বাদমতো নুন
৪ টে গোটা রসুনের কোয়া
৩ চা চামচ টমেটো কুচি
১ গ্লাস জল
২৫ গ্রাম সরষের তেল
কীভাবে বানাবেন
প্রথমে কড়াই তেল গরম হলে গরম মসলার ফোড়ন দিতে হবে। এরপর মাংসগুলো দিয়ে দিতে হবে একটু নাড়াচাড়া করার পর। পেঁয়াজ বাটা আদা বাটা রসুন বাটা টমেটো কুচি জিরেগুঁড়ো ধনে গুঁড়ো হলুদ গুঁড়ো লঙ্কাগুঁড়ো কাশ্মীরি লঙ্কাগুঁড়ো কাঁচালঙ্কা চেরা টক দই নুন সব দিয়ে ভালো করে কষিয়ে নিতে হবে।
কষানো একটু হয়ে গেলে গোটা রসুনের কোয়া দিয়ে দিতে হবে। এরপর ভালো করে আপার কষাতে হবে। এরপর জল দিয়ে ঢাকা দিয়ে দিতে হবে।

বিনা তেলে মটন পানি ফ্রাই
কীভাবে বানাবেন
পাঁঠার মাংস -১কিলো, রসুন -৫-৬ কোয়া, কাঁচা লঙ্কা -৩-৪ তে, গোলমরিচ দানা ১০-১২ টা, লঙ্কা গুঁড়ো -১ চামচ, শুকনো লঙ্কা -৩ তে, জিরা গুঁড়ো -১ চামচ, গরম মসলা - ১ চামচ, লেবুর রস, নুন স্বাদ অনুসারে
কীভাবে বানাবেন
প্রথমে একটা কড়াই এ নিয়ে নেবো ১.৫ লিটার জল ফুটতে দিতে হবে জল ফুটে গেলে দিয়ে দেবো মাংস তারপর দিয়ে দেব রসুন,গোলমরিচ, শুকনো লঙ্কা, লঙ্কা গুঁড়ো, কাঁচা লঙ্কা, স্বাদ অনুসারে অনুসারে নুন (এই রান্না টি প্রেসার কুকার এ করা যাবে না সব উপকরণ মিশিয়ে ঢাকা দিয়ে রান্না করে নিতে হবে ৪০-৪৫ মিনিট। জল শুকিয়ে এলে দিতে হবে জিরা গুঁড়ো, গরম মসলা (এই সময় আঁচ বাড়িয়ে করতে হবে) ঝোল এ মাংস এর ই নিজের তেল বেরিয়ে গেছে এই সময় দেখা যাবে ও রান্না টি গাঢ় হয়ে যাবে l এবার সব শেষ দিয়ে দিতে হবে লেবুর রসl তৈরী হয়ে গেলো মাংস এর পানি ফ্রাই।
Comments