top of page

রূপসী কালিম্পং, ব্রেকফাস্টে হেলদি স্যালাড (৬টি রেসিপি), বিয়ের আগে কনের চুলের যত্ন, শিশুদের ডাউন সিন্ড্রোম, রবিবারের গল্প: ভয়ঙ্কর প্রেতাত্মা ভেরো..

রূপসী কালিম্পং

কালিম্পং এসে এস্কিমো হলাম শেষে...

পার্থময় চ্যাটার্জী


''হে ঐশ্বর্য্যবান,

তোমারে যা দিয়েছিনু সে তোমারি দান;

গ্রহন করেছ যত, ঋণী তত করেছ আমায়।

হে বন্ধু বিদায়।''


যখনই পাহাড় ছাড়ার সময় আসে তখনই শেষের কবিতার কথা গুলো মনে।তে ভাসে। জায়গাটার প্রেমে পড়েছিলাম বললে ভুল হবে,জায়গাটার প্রেমে এখনও আমি পাগল। যদি আর্থিক শক্তি থাকতো, যদি স্নেহ, মায়া মমতা গুলোকে সহজেই স্বার্থপরের মত ভুলতে পারতাম তবে আমি এই স্নিগ্ধ সুন্দর কে নিয়েই বাকি জীবন টাকে কাটিয়ে দিতাম। তাই যখন ব্যস্ত শহরে চলে আসি ভুলে যাই প্রকৃতি প্রেম, ছুটে মরি আর্থিক প্রেমের পেছনে ঠিক তখনই যদি রেড রোড ধরে যেতে যেতে, বৈশাখের দুপুরে শীতল গাড়ির ঝাপসা কাঁচের মধ্যে থেকে আমার শহর টাকে দেখি আর এফএম এর গানের আসর থেকে ভেসে আসে-

'...আরো একবার হাত টা ছুঁয়ে দেখ

আজও আমাদের ইচ্ছে গুলো এক"

আমি তখন সত্যি নিজেকে হারিয়ে ফেলে মনে মনে আবার শেষের কবিতার সেই লাইন গুলো আওড়াই

"যারা কাছে আছে,তারা কাছে থাক,

তারা তো পাবে না জানিতে,

তাহাদের চেয়ে কাছে আছ তুমি,

আমার হৃদয়খানিতে”।

প্রেম কি শুধু একটা সময়ে একজনের জন্যই আসে? আর যদি কারো মন একই সময়ে দুজনের জন্য দুভাবে নাড়া খায়? ভালোবাসাকে নির্দিষ্ট সংখ্যা বা গণ্ডিতে বেঁধে রাখা যায় না। তাকে বয়ে যেতে দিতে হয়, উড়তে দিতে হয় আকাশের মুক্ত বিহঙ্গের মতোই।

চিসাঙ এর প্রেমে আগেই পড়েছিলাম এবার চিসাঙ থেকে তাংতা যাবার পরে এবং টোডের কাছে আর এক স্বর্গীয় রূপ নিয়ে ঘুমিয়ে ছিল কালিম্পঙের রাজপুত্তুর কেরামতার নামের এই জায়গা টা। এটাকে পৃথিবী যেনো ভুল করে পেয়ে গেছে, স্বর্গের এক টুকরো জমি টুপ করে খোষে পড়েছে। তাইতো এটাকে এই অঞ্চলের ভারতীয়

শেষ গ্রপ ধরা হয়। একদম নতুন এক পর্যটন কেন্দ্র হতে চলেছে এই কেরামতার পাহাড়ী গ্রামটি। ইগলু টেন্ট থেকে নিয়ে , লেপচা দের পাথরের ঘরের থাকার অনুভূতি সবটাই পাবেন এখানে। একটু হাঁটলেই ট্রাই জংশন থেকে দোকালামের দৃশ্য। জানুয়ারী ফেব্রুয়ারী এর চার পাশের পাহাড় গুলো বরফে সাদা হতে থাকে। হাঁটা দূরত্বে বিদেশ ভূমি, ভুটান। তাংতা নদী আর দাওয়াই খোলা নদীর পাড়ে এই পাহাড়ী বাহারী গ্রাম কেরামতার। নদী তে স্নান,নদী পার করা প্রশিক্ষণ, নদী থেকে মাছ ধরা, বানভোজ , সব কিছু পাবেন এই কেরামতার থেকে। যদি শরীরে খুব ব্যাথা ও চর্ম রোগে ভুগছেন । তাহলে হট স্টোন বাথ এর ব্যবস্থা আছে। বনফায়ার, বার-বি-কিউ সামান্য খরচে করা যায়। এলাচের ভান্ডার এই কেরামতার। দাওয়াই খোলা, তাংতা মঠ, টোডের বাজার, তাংতা নদী, বিন্দু, দলগাও, ঝালং, পারেনের, কোলাখাম রেশপ আর লাভা আবার এদিকে ঝান্ডি, ফাফারখতি, দারাগাও, কুয়াপানির মতো কাছের জায়গাগুলি দেখে নেওয়া যায়।


পথনির্দেশ - মালবাজার থেকে খুনিয়া হয়ে কুমানি থেকে ডানদিকে ঘুরে ঝালং, পেরেন, গৌরীগাঁও, টুংসুং, গোদাক, সুরুক, তোদে হয়ে কেরামতার আসা যায়।

থাকা খাওয়া - ইগলু টেন্ট আর স্টোন হাউস এ দিন ও জন প্রতি ১৬০০ থেকে ১৮০০ টাকা।

গুদারে গাঁও এর রূপ..


"নতুন নতুন রং লেগেছে

মনের আঙ্গিনা -তে

যেন ভালোলাগা ছড়িয়ে আছে

ওই পাহাড়ের গায়ে।

অজানাকে জানার শপথ নিয়ে আজ বেড়িয়ে পরলাম কালিম্পং জেলার এক ছোট্ট প্রাচীন গ্রাম

"কুমাই", যাকে আমি বলি ডুয়ার্স এর রাজমুকুট, সেই কুমাই পাহাড়ের অজানার সন্ধানে। কুমাই নামের পিছনের ইতিহাস টা একটু তুলে ধরি আগে। কুমাই হচ্ছে নেপালি একটা সম্প্রদায়ের পদবী। আজ থেকে প্রায় দুশো বছর আগে এখানে এই কুমাই পদবীর মানুষজন বসবাস করতো। এখনও এই গ্রামে একশো বছরের পুরনো কাঠের বাড়ি বেশ কয়েকটি দেখতে পাওয়া যায়। ইংরেজ আমলে এখানে চা বাগানের শ্রমিক হয়ে এই কুমাই সম্প্রদায়ের মানুষ এখানে আসে। সমতল থেকে তিন হাজার ফুট উচু পর্যন্ত এই চা বাগানের বিস্তার। আগে কোনো যানবাহন ছিলনা, তখন খচ্চরের পিঠে করে মানুষজন যাতায়াত করতো।

এই চা বাগানের কাছেই আছে দুশো বছরের পুরনো বোধিষ্ট স্তুপা, এর পাশের নিশ্চল হয়ে দাড়িয়ে আছে বিশাল দেহের এক বটবৃক্ষ। আশপাশে জনমানব নেই, কেমন একটা রহস্য ঘিরে আছে চারপাশটা। আমার কাছে কুমাই মানেই বিজয় থাপা, আমার কাছে কুমাই তে রাত্রিবাস মানেই গোর্খা হোমস্টে । আমি অপেক্ষায় থাকি কখন পাহাড়ের শরীর অন্ধকার এসে ঢেকে দেবে আর আমি এই হোমস্টের ব্যালকনিতে বসে দূরের ভুটান পাহাড় দেখবো। নিচদিয়ে বয়ে চলা জলঢাকা,মূর্তি নদীর শান্ত চলনটা, ভীষণ ভীষণ ভালো আগে এই ব্যালকনি থেকে দেখতে। আজ কিন্তু এক মাথা মেঘ নিয়ে বিজয় থাপার এনফিল্ড চড়ে চলেছি কুমাইকে আরো বেশিকরে জানতে অার এর গভীরতা টাকে টেনে ওপরে তুলতে। দুপুরের আহার শেষ করে বিজয় ভাইয়ার বাইক এর পেছনে বসে টপকে চলেছি একের পর এক পাহাড়ী গ্রাম, কুমাই গার্ড লাইন, টপ লাইন, গুদারে গাও থেকেও আরো উপরে চপলেটি গ্রাম। কুমাই পাহাড়ে দুটো সানসেট পয়েন্ট আছে। একটা হিল্লি সান সেট পয়েন্ট আর একটা আরো উচুতে গুদারে সান সেট পয়েন্ট। কেউ কারো থেকে রূপে কম নয় । পাহাড়গুলোকে কুয়াশ ঢেকে রেখে আরো রহস্যময় করে তুলেছে। মাঝে মাঝে দুএকটা দোকান, গ্রামের সরল মানুষগুলো অবাক নয়নে আমাদের দেখছে, পথ হীন এক পথে আমরা মৃত্যুকে হাতে নিয়ে চলেছি চড়াই উৎরাই গুলো পার হচ্ছি শুধু পাথর আর ধুলোর উপর দিয়ে।


গুদারে গাও- থামলাম একটা ছোট্ট দোকানে একটু চা পাওয়ার আশা নিয়ে। থাপা বললো দাদা এটা তোমার শহর নয় যে পয়সা দিলেই সব পাওয়া যায়, তবে হ্যাঁ চা দিয়েছিল ওই দোকানের মালকিন শান্তা দিদি। চায়ের অবস্থা খুবই করুন, চা চাওয়াটাই ভুল ছিল। গরম জলে চায়ের ভুষি সাথে ধোঁয়ার গন্ধ, কিন্তু ভালোবাসাতে ভরা। খুব ছোট্ট এই গ্রামটি, দশ বারোটা কাঠের বাড়ি। গ্রাম ছাড়িয়ে গেলে দূরে দূরে দু চারটে করে বাড়ি আর প্রতি বাড়ির সামনে একটা করে গাছের বাগান। যত ওপরে উঠছি তত পাহাড়ী এই পথটা সরু হয়ে আসছিল। একটা জায়গায় রাস্তা আর এগোনোর মত ছিলনা। পুরোটাই খাদ। যে জায়গাটায় থামতে হলো তার নাম চপলেটি গ্রাম। প্রধানমন্ত্রী গ্রামীণ সড়ক যোজনা এর উদ্যোগে একটা রাস্তা বানানো হচ্ছে এই পথ ধরে যে রাস্তাটা যাবে রঙ্গ ,পাতাং গোদে পর্যন্ত। হওয়ার পরিকল্পনা আছে, বর্তমানে এই রাস্তাটা এসে শেষ হয়েছে এই গ্রাম যার নাম চপলেটি। ছয় সাত টা বাড়ি নিয়ে এই গ্রামটি। কুয়াশা ঢাকা পড়ন্ত বিকেলে গ্রামের সব ব্যস্ততা যেন বিশ্রাম নিচ্ছে। কুমাই পাহাড়ের সব মানুষের আয় বলতে চা বাগানের কাজ আর মানুষের অযত্নে কিন্তু ইশ্বরের পরম যত্নে হয়ে থাকা পাহাড়ের গায়ে ফুলঝাড়ু গাছ। এখান থেকে বছরে কোটি কোটি টাকার ফুল ঝাড়ু সারা ভারত বর্ষ তথা বিদেশের বাজারে বিক্রি হচ্ছে। প্রাকৃতিক দেওয়া এই সম্পদের কিন্তু স্থানীয় মানুষের কোন অধিকার নেই বড়ো বড়ো ব্যবসাদারদের হাতেই এই ফুলঝাড়ু টেন্ডারের মাধ্যমে রয়ে যায়। স্থানীয় মানুষদের সামান্য পারিশ্রমিক দিয়ে এই ফুলঝাড়ু সংগ্রহ করে কোটি টাকার ব্যবসা করছে।

দার্জিলিং কালিম্পং শহরগুলিতে যেভাবে প্রশাসন উন্নয়নের ব্যাপারে মনোনিবেশ করেছে সে দিক দিয়ে সেভাবে ডুয়ার্স গরুবাথান ও কালিংপং অঞ্চলের অনামী জায়গা গুলোকে নজর দেয়নি। এই কারণেই আমি বলবো ডুয়ার্সের রাজমুকুট কুমাই পাহাড়টির প্রতি সরকার উদাসীন। ২০১৩ সালে সেনাবাহিনী থেকে সদ্য সদ্য অবসর নিয়ে বিজয় থাপা এই কুমাই পাহাড়ে প্রথম হোম স্টে তৈরি করে এখানে পর্যটন ব্যবসা শুরু করে, তারপর থেকে লোয়ার কুমাই তে চারটি এবং আপার কুমাই তে গোর্খা হোম স্টে ছাড়া সাহিল হোমস্টে নামে আরেকটি হোমস্টে আছে। মাত্র তিন হাজার ফিট উচ্চতায় ডুয়ার্সের মাথায় কালিম্পং জেলার অন্তর্গত কুমাই নামক এই পাহাড়টি একটি সুন্দর হিল স্টেশন হতে পারে সরকার যদি এই ব্যাপারে একটু এগিয়ে আসে। পথঘাট ও যাতায়াতের সুবিধা ছাড়াও যদি ভিউ পয়েন্ট গুলোকে একটু সাজিয়ে দেওয়া যায়, তবে বছরে হাজার হাজার ভ্রমণপ্রিয় মানুষ এই পাহাড়ে তাদের সাময়িক আস্তানা খুঁজে নেবে। এই পাহাড়ে অনেকগুলো সুন্দর সুন্দর দেখার জায়গা আছে যেমন দুটো সান সেট পয়েন্ট এর কথা আগেই এখানে লিখেছি এছাড়া বুদ্ধিস্ট স্তুপা পিকক ভিউ পয়েন্ট, শনিবারের পাহাড়ি হাট, কুমাই চাবাগান। আর গাড়িতে যদি ভ্রমণ করতে চান তবে যেতে পারবেন চার কিলোমিটারের মধ্যে রকি আইল্যান্ড যেখানে দুরন্ত গতিতে মূর্তি নদী পাহাড়ের উপর থেকে নেমে আসছে। পাবেন নকশাল মৌরি ফরেস্ট, দলগাঁও, প্যারেন, বিন্দু, ঝালং, টডে, তাঙ্থা আর চিসং এর মত সুন্দর ডুয়ার্স গরুবাথান ও কালিম্পংয়ের অনামী অথচ রূপসী স্থানগুলোকে।

কুমাই পাহাড়ের ঠিক নিচেই আছে চাপড়ামারি জঙ্গল, আমি কুমাই বহুবার এসেছি এবং পয়সা খরচা করে জঙ্গল সাফারিতে গিয়েও মানুষ যা দেখতে পায় না আমি খুনিয়া মোড় থেকে কুমাই যাওয়ার পথে চাপড়ামারি জঙ্গলের গেট পেরোনোর পরে একবার একটা বিশাল হাতির সামনাসামনি পড়েছিলাম আর একবার একটা বিশাল দেহের বাইসানের সাথে দেখা হয়েছিল তিরিশ ফুট দূর থেকে। তবে আমি কখনোই জঙ্গলে জন্তু-জানোয়ারের সম্মুখীন হতে চাই না কারণ এরা যখন তখন মানুষের উপর আক্রমণ করতে পারে। গরুবাথান ব্লকের অধীন এই কুমাই পাহাড়টির প্রতি রাজ্য সরকার ও আঞ্চলিক প্রশাসন যদি একটু নজর দেয় তবে পর্যটন মানচিত্রে একটি অতি গুরুত্বপূর্ণ ও রূপসী পর্যটন কেন্দ্র রাজ্য উপহার দেবে। আর দেরি না করে চলে আসুন পাহাড়, নদী, ঝর্না চা বাগান আর জঙ্গল নিয়ে রূপের ডালি কুমাই গ্রামে। কুয়াশা , মেঘ, আর ফুলের দেশ কুমাই পাহাড়ের গুদারে গাঁও। পাহাড়ের মাথায় একটা খুব সুন্দর রিসর্ট তৈরি হচ্ছে। তুলনাহীনা রূপসী কন্যা এই গুদারে গাঁও আপনার আসার অপেক্ষায় বসে থাকলো।


ব্রেকফাস্টে হেলদি স্যালাড: পুষ্টিকর দিনের শুরু


সকাল হলো দিনের শুরু, যখন আমাদের শরীর ও মনের জন্য সঠিক পুষ্টি পাওয়া খুবই জরুরি। সকালের খাবারে সালাদ অন্তর্ভুক্ত করা মানে হচ্ছে তাজা সবজি, ফল, প্রোটিন এবং স্বাস্থ্যকর ফ্যাটের একটি সুষম সংমিশ্রণ গ্রহণ করা। সালাদে থাকা ভিটামিন, মিনারেল, ফাইবার ও অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট আমাদের পাচন শক্তি বাড়ায়, রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা উন্নত করে এবং শরীরকে সতেজ ও প্রাণবন্ত রাখে। হালকা ও পুষ্টিকর সালাদ খেলে দিনের বাকি কাজেও মনোযোগ ও উদ্যম বজায় থাকে।

গ্রিলড চিকেন সালাদ রেসিপি


কী কী লাগবে

বোনলেস চিকেন ব্রেস্ট – ১টি (প্রায় ১৫০-২০০ গ্রাম)

Shalimar's Sunflower তেল/অলিভ অয়েল – ১ চা চামচ

লেবুর রস – ১ চা চামচ

রসুন বাটা – ১/২ চা চামচ

লবণ – স্বাদমতো

Shalimar's Chef Spices গোলমরিচ গুঁড়ো ১/২ চা চামচ

রোমেইন/লেটুস পাতা – ১ কাপ (ছেঁড়া)

শসা – ১/২ কাপ (টুকরো করে কাটা)

চেরি টমেটো – ৫-৬টি (অর্ধেক করে কাটা)

কুচানো ক্যাপসিকাম – ১/৪ কাপ

ফেটা চিজ (ঐচ্ছিক) – ১ চা চামচ

চিয়া সিড বা সূর্যমুখী বীজ (ঐচ্ছিক) – ১ চা চামচ



কীভাবে বানাবেন

১. চিকেন ম্যারিনেট:

চিকেন টুকরো করে অলিভ অয়েল, রসুন, লেবুর রস, লবণ ও গোলমরিচ মিশিয়ে ১৫-২০ মিনিট ম্যারিনেট করুন।

2. গ্রিল করা:

নন-স্টিক প্যানে অথবা গ্রিলারে চিকেন ভালোভাবে সেঁকে নিন (দুই পাশ মিলিয়ে মোটামুটি ৬-৮ মিনিট)। এরপর পাতলা টুকরো করে কেটে রাখুন।

3. সালাদ তৈরি:

একটি বড় বাটিতে লেটুস, শসা, টমেটো, ক্যাপসিকাম, গ্রিলড চিকেন দিন। ওপরে চিজ ও চিয়া সিড ছড়িয়ে দিন।

4. ড্রেসিং (ঐচ্ছিক):

১ চা চামচ অলিভ অয়েল, ১/২ চা চামচ লেবুর রস, সামান্য মধু ও এক চিমটে বিটনুন মিশিয়ে ওপরে ছড়িয়ে পরিবেশন করুন।


পুষ্টিগুণ:

এই সালাদে রয়েছে প্রোটিন, ফাইবার, হেলদি ফ্যাট ও প্রয়োজনীয় ভিটামিন, যা ওজন নিয়ন্ত্রণ, মাংসপেশি গঠনে এবং হজমে সহায়ক।

প্রন সালাদ রেসিপি


কী কী লাগবে

মাঝারি সাইজের চিংড়ি (সেদ্ধ বা হালকা সেদ্ধ করে নেওয়া) – ৮–১০টি

লেটুস পাতা – ১ কাপ (ছিঁড়ে নেওয়া)

শসা – ১/২ কাপ (চাকতি করে কাটা)

চেরি টমেটো – ৫–৬টি (অর্ধেক করে কাটা)

ক্যাপসিকাম – ১/৪ কাপ (চিকন করে কাটা)

লেবুর রস – ১ চা চামচ

অলিভ অয়েল – ১ চা চামচ

রসুন বাটা – ১/২ চা চামচ

লবণ – স্বাদমতো

Shalimar's Chef Spices গোলমরিচ গুঁড়ো ১/২ চা চামচ

সামান্য ধনেপাতা কুচি (সাজানোর জন্য)

কীভাবে বানাবেন

১. চিংড়ি প্রস্তুত:

চিংড়িগুলো লবণ, রসুন বাটা, সামান্য গোলমরিচ ও লেবুর রস মিশিয়ে ১০ মিনিট ম্যারিনেট করে নিন।

এরপর অলিভ অয়েল গরম করে হালকা ভেজে নিন (২–৩ মিনিট) অথবা গ্রিল করুন।

২. সালাদ তৈরি:

একটি বড় বাটিতে লেটুস, শসা, টমেটো, ক্যাপসিকাম একত্র করুন। তার উপর গ্রিলড প্রন দিন!

3. ড্রেসিং দিন:

বাকি অলিভ অয়েল, লেবুর রস, এক চিমটে লবণ ও গোলমরিচ মিশিয়ে ড্রেসিং তৈরি করুন। সালাদের উপর ছড়িয়ে দিন।

4. সাজানো ও পরিবেশন:

উপরে ধনেপাতা ছড়িয়ে ঠান্ডা পরিবেশন করুন।

ফ্রুট অ্যান্ড চিকেন সালাদ


কী কী লাগবে

গ্রিলড বা সেদ্ধ চিকেন (ছোট টুকরো করা) – ১/২ কাপ

আপেল – ১/২টি (চাকতি করে কাটা)

আঙুর – ৮–১০টি (অর্ধেক কাটা)

বেদানা – ২ টেবিল চামচ

কলা – ১/২টি (স্লাইস করে কাটা)

লেটুস বা পালং পাতা – ১ কাপ (ছিঁড়ে নেওয়া)

অলিভ অয়েল – ১ চা চামচ

লেবুর রস – ১ চা চামচ

এক চিমটে বিটনুন

Shalimar's Chef Spices গোলমরিচ গুঁড়ো ১/২ চা চামচ

(ঐচ্ছিক) বাদাম কুচি বা ওয়ালনাট – ১ টেবিল চামচ

(ঐচ্ছিক) সামান্য মধু – ১/২ চা চামচ (ফলের মিষ্টতা বাড়াতে)

কীভাবে বানাবেন

১. চিকেন প্রস্তুত:

সেদ্ধ বা গ্রিলড চিকেন টুকরো করে লবণ, গোলমরিচ ও একটু লেবুর রস দিয়ে হালকা ম্যারিনেট করুন।

২. সালাদ মেশানো:

একটি বাটিতে লেটুস, ফলগুলো ও চিকেন একসঙ্গে মেশান। চাইলে বাদামও দিন।

৩. ড্রেসিং তৈরি:

অলিভ অয়েল, লেবুর রস, বিটনুন ও মধু একসাথে মিশিয়ে সালাদের উপর ছড়িয়ে দিন।

৪. পরিবেশন:

ঠান্ডা করে বা কক্ষ তাপমাত্রায়, বাটিতে বা প্লেট সাজিয়ে পরিবেশন করুন।


পুষ্টিগুণ:

এই সালাদে প্রোটিন, ফাইবার, ভিটামিন ও অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট একসঙ্গে থাকে—যা ওজন নিয়ন্ত্রণ, ত্বক ও হজমের জন্য খুবই উপকারী।

ফেটা চিজ সালাদ (Mediterranean Style)


কী কী লাগবে

লেটুস/রোমেইন পাতা – ১ কাপ (ছিঁড়ে নেওয়া)

চেরি টমেটো – ৫–৬টি (অর্ধেক কাটা)

শসা – ১/২ কাপ (চাকতি করে কাটা)

ক্যাপসিকাম (সবুজ/লাল) – ১/৪ কাপ (কুচানো)

পেঁয়াজ – ১টি (পাতলা রিং কাটা)

ফেটা চিজ – ২–৩ টেবিল চামচ (চূর্ণ করে নেওয়া)

কালো অলিভ (অলিভস) – ৫–৬টি (ঐচ্ছিক)

অলিভ অয়েল – ১ টেবিল চামচ

লেবুর রস – ১ চা চামচ

এক চিমটে ওরেগানো/থাইম (ড্রাই হের্বস)

বিটনুন – স্বাদমতো

Shalimar's Chef Spices গোলমরিচ গুঁড়ো ১/২ চা চামচ

কীভাবে বানাবেন

১. সবজি প্রস্তুত:

সব কাটা সবজি একটি বড় বাটিতে একত্র করুন।

২. চিজ ও অলিভ যুক্ত করুন:

ফেটা চিজ ছড়িয়ে দিন এবং অলিভ যোগ করুন।

3. ড্রেসিং দিন:

অলিভ অয়েল, লেবুর রস, ওরেগানো, বিটনুন ও গোলমরিচ একসাথে মিশিয়ে উপরে ছড়িয়ে দিন।

4. পরিবেশন:

হালকা মিশিয়ে ঠান্ডা পরিবেশন করুন। চাইলে গ্রিলড চিকেন বা প্রন যোগ করে স্ন্যাকস সালাদে পরিণত করতে পারেন।


পুষ্টিগুণ:

ফেটা চিজে থাকে ক্যালসিয়াম ও প্রোটিন, সবজিগুলোর মাধ্যমে আসে ফাইবার ও ভিটামিন, আর অলিভ অয়েল থেকে পাওয়া যায় স্বাস্থ্যকর ফ্যাট।

সবজি ও পনির সালাদ


কী কী লাগবে

পনির (কিউব করে কাটা) – ১/২ কাপ

গাজর – ১টি (জুলিয়েন বা পাতলা স্ট্রিপে কাটা)

শসা – ১টি (চাকতি করে কাটা)

ক্যাপসিকাম (সবুজ/লাল/হলুদ) – ১/২ কাপ (চিকন করে কাটা)

টমেটো – ১টি (চাকতি করে কাটা)

পেঁয়াজ – ১টি (পাতলা রিং কাটা)

লেটুস বা ধনেপাতা – পরিমাণমতো

লেবুর রস – ১ চা চামচ

অলিভ অয়েল – ১ চা চামচ

Shalimar's Chef Spices গোলমরিচ গুঁড়ো ১/২ চা চামচ

বিটনুন – স্বাদমতো

(ঐচ্ছিক) ভাজা তিল বা চিয়া সিড – ১ চা চামচ

কীভাবে বানাবেন

১. পনির হালকা ভাজা (ঐচ্ছিক):

চাইলে পনির কিউব গুলো সামান্য অলিভ অয়েলে হালকা ভেজে নিতে পারেন বা কাঁচা ব্যবহার করতে পারেন।

২. সবজি প্রস্তুত:

সব সবজি ভালোভাবে ধুয়ে পাতলা করে কেটে নিন।

৩. ড্রেসিং তৈরি:

লেবুর রস, অলিভ অয়েল, গোলমরিচ ও বিটনুন একসঙ্গে মিশিয়ে নিন।

৪. সালাদ মেশানো:

বড় একটি বাটিতে সব উপকরণ একত্র করে হালকা হাতে মিশিয়ে নিন।

৫. পরিবেশন:

ঠান্ডা পরিবেশন করুন। উপরে তিল/চিয়া ছড়িয়ে দিতে পারেন।


পুষ্টিগুণ:

এই সালাদে রয়েছে প্রোটিন (পনির থেকে), ফাইবার (সবজি থেকে), ও স্বাস্থ্যকর ফ্যাট (অলিভ অয়েল থেকে)। সকালের জলখাবার, বিকেলের হালকা খাবার বা ডিনারের সঙ্গে খাওয়ার জন্য আদর্শ।

ছোলার সালাদ রেসিপি


কী কী লাগবে

সেদ্ধ ছোলা – ১ কাপ

পেঁয়াজ – ১টি (পাতলা কাটা)

টমেটো – ১টি (ছোট কাটা)

শসা – ১/২ কাপ (কাটা)

কাঁচা লঙ্কা – ১টি (বিচ্ছিন্ন কুচানো, ঐচ্ছিক)

ধনেপাতা কুচি – ২ টেবিল চামচ

লেবুর রস – ২ টেবিল চামচ

Shalimar's Chef Spices গোলমরিচ গুঁড়ো ১/২ চা চামচ

Shalimar's Chef Spices জিরা গুঁড়ো – ১/২ চা চামচ

চাট মশলা – ১/২ চা চামচ

লবণ – স্বাদমতো

কীভাবে বানাবেন

১. একটি বড় বাটিতে সেদ্ধ ছোলা, পেঁয়াজ, টমেটো, শসা এবং কাঁচা লঙ্কা দিয়ে ভালো করে মিশিয়ে নিন।

২. এর ওপর লেবুর রস, জিরা গুঁড়ো, চাট মশলা ও লবণ ছড়িয়ে দিন।

৩. ধনেপাতা কুচি দিয়ে সাজিয়ে পরিবেশন করুন।


পুষ্টিগুণ:

চাইলে স্বাদ অনুযায়ী সামান্য অলিভ অয়েল দিতে পারেন। এটি ঠান্ডা বা রুম টেম্পারেচারে খাওয়া যায়।

প্রোটিন ও ফাইবারে সমৃদ্ধ, তাই হজমে সহায়ক এবং ওজন নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে।

ডিমের সালাদ রেসিপি


কী কী লাগবে

সেদ্ধ ডিম – ২টি (খোসা ছাড়িয়ে ছোট টুকরো করা)

পেঁয়াজ – ১/৪ কাপ (বাড়তি ছোট করে কাটা)

শসা – ১/২ কাপ (ছোট টুকরো)

টমেটো – ১টি (কাটা)

ধনেপাতা বা পার্সলি কুচানো – ১ টেবিল চামচ

মেয়োনেজ – ২ টেবিল চামচ (ঐচ্ছিক, কম ব্যবহার করতে পারেন)

লেবুর রস – ১ চা চামচ

লবণ – স্বাদমতো

Shalimar's Chef Spices গোলমরিচ গুঁড়ো ১/২ চা চামচ

অলিভ অয়েল – ১ চা চামচ (ঐচ্ছিক)

Shalimar's Chef Spices লাল লঙ্কা গুঁড়ো


কীভাবে বানাবেন

১. একটি বাটিতে সেদ্ধ ডিম, পেঁয়াজ, শসা, টমেটো ও ধনেপাতা ভালো করে মেশান।

২. মেয়োনেজ, লেবুর রস, অলিভ অয়েল, লবণ ও গোলমরিচ যোগ করে আবার মিশিয়ে নিন।

৩. ঠান্ডা করে পরিবেশন করুন।


পুষ্টিগুণ:

স্বাস্থ্যকর রাখতে মেয়োনেজের পরিমাণ কম রাখুন বা বাদ দিন। চাইলে সরাসরি ড্রেসিং ছাড়া লেবুর রস, সামান্য অলিভ অয়েল, লবণ ও গোলমরিচ দিয়েও সাজাতে পারেন। উপরে সামান্য লাল লঙ্কা গুঁড়ো ছিটিয়ে পরিবেশন করলে স্বাদ বাড়ে।

সকালের খাবারে নিয়মিত সালাদ খাওয়া শুধু স্বাস্থ্যের জন্যই উপকারী নয়, বরং এটি আমাদের দৈনন্দিন জীবনে শক্তি এবং সজীবতা যোগায়। এটি হজমে সাহায্য করে, ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখে এবং দীর্ঘমেয়াদে বিভিন্ন রোগের ঝুঁকি কমায়। তাই স্বাস্থ্যকর জীবনযাপনের অংশ হিসেবে সকালের খাবারে সালাদকে অবশ্যই গুরুত্ব দেওয়া উচিত। সালাদে বিভিন্ন রকম সবজি ও প্রোটিন যুক্ত করে আপনি সহজেই পেতে পারেন সম্পূর্ণ ও সুস্থ দিনের শুরু।

বিয়ের আগে কনের চুলের যত্ন: ঝলমলে ও সুস্থ চুলের রহস্য


বিয়ে হলো জীবনের এক বিশেষ ও স্মরণীয় দিন, যেখানে কনের রূপচর্চা সবচেয়ে বেশি গুরুত্ব পায়। তার সৌন্দর্যের প্রধান অংশ হিসেবে সুন্দর ও ঝলমলে চুল থাকাটা অত্যন্ত প্রয়োজনীয়। কিন্তু বিয়ের প্রস্তুতির ধকল ও পরিবেশগত কারণে কনাদের চুল প্রায়ই খারাপ হয়ে যায়। তাই বিয়ের আগে সঠিক চুলের যত্ন নেওয়া খুবই জরুরি, যাতে বিয়ের দিন তার চুল থাকে সুস্থ, নরম ও দীপ্তিময়।

বিয়ের আগে কনের চুলের যত্ন


১. নিয়মিত শ্যাম্পু ও কন্ডিশনার ব্যবহার:

সপ্তাহে কমপক্ষে ২-৩ বার ভালো মানের শ্যাম্পু ও কন্ডিশনার দিয়ে চুল ধুয়ে নিন। এতে চুল থাকবে পরিষ্কার ও ঝলমলে।


২. ডিপ কন্ডিশনিং:

প্রতি সপ্তাহে একবার ডিপ কন্ডিশনার বা হেয়ার মাস্ক ব্যবহার করুন, যা চুলের মোরগি দূর করে নরম করে দেয়।


৩. তেল মাসাজ:

নারকেল, আর্গান বা আমলা তেল দিয়ে সপ্তাহে ২-৩ বার মাথার ত্বকে হালকা মসাজ করলে রক্তসঞ্চালন বৃদ্ধি পায়, চুল শক্তিশালী হয়।


৪. চুলে অতিরিক্ত তাপ এড়ানো:

ফ্ল্যাট আয়রন, কার্লিং আয়রন ও হেয়ার ড্রায়ার বেশি ব্যবহারে চুল ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে, তাই সীমিত ব্যবহার করুন।


৫. সঠিক খাদ্যাভ্যাস:

প্রোটিন, ভিটামিন ই, আয়রন ও ওমেগা-৩ ফ্যাটি অ্যাসিড সমৃদ্ধ খাবার খান, যা চুলের বৃদ্ধিতে সহায়তা করে।


৬. স্ট্রেস কমানো:

বিয়ের আগে চাপ কমানোর জন্য যোগব্যায়াম বা মেডিটেশন করুন, কারণ স্ট্রেস চুল পড়ার অন্যতম কারণ।


৭. প্রফেশনাল হেয়ার ট্রীটমেন্ট:

বিয়ের ৭-১০ দিন আগে কোনো ভালো সেলুন থেকে হেয়ার স্পা বা ট্রিটমেন্ট করাতে পারেন।


বিয়ের দিন কনের সৌন্দর্য পুরোপুরি ফুটিয়ে তুলতে সুস্থ ও ঝলমলে চুল অপরিহার্য। নিয়মিত যত্ন, সঠিক পুষ্টি এবং অভিজ্ঞ পেশাদারের সাহায্যে কনাদের চুলকে স্বাস্থ্যবান ও সুন্দর করে তোলা সম্ভব। তাই বিয়ের আগে সময় দিয়ে চুলের যত্ন নেয়া নিশ্চিত করুন, যাতে আপনার বিশেষ দিনটি আরও বেশি রূপময় ও স্মরণীয় হয়ে ওঠে।

শিশুদের ডাউন সিন্ড্রোম: জীবনযাত্রা, চ্যালেঞ্জ ও সহযোগিতার গুরুত্ব


ডাউন সিন্ড্রোম হলো একটি জেনেটিক অবস্থা, যা মানুষের শরীরে ২১তম ক্রোমোজোমের অতিরিক্ত একটি কপি থাকার কারণে হয়। সাধারণ মানুষের শরীরে প্রতিটি ক্রোমোজোমের দুটি করে কপি থাকে, কিন্তু ডাউন সিন্ড্রোমে ২১ নম্বর ক্রোমোজোমের তিনটি কপি থাকে, যাকে ট্রাইসমি ২১ বলা হয়। এই অতিরিক্ত ক্রোমোজোম শিশুর শারীরিক গঠন, বুদ্ধিমত্তা এবং স্বাস্থ্যগত নানা দিককে প্রভাবিত করে। ডাউন সিন্ড্রোম আক্রান্ত শিশুরা সাধারণত বুদ্ধি-প্রতিভার ক্ষেত্রে কিছু সীমাবদ্ধতা থাকে, তবে তারা সঠিক যত্ন, শিক্ষা এবং সহযোগিতা পেলে সমাজে স্বাভাবিক ও সুন্দর জীবন যাপন করতে পারে। বিশ্বব্যাপী প্রতি ৭০০-৮০০ জন শিশুর মধ্যে একজন ডাউন সিন্ড্রোমে আক্রান্ত জন্মগ্রহণ করে। বাংলাদেশেও এই রোগের সচেতনতা বাড়ানো এবং আক্রান্ত শিশুদের জন্য উপযুক্ত সহায়তা প্রদান অত্যন্ত প্রয়োজনীয়।

ডাউন সিন্ড্রোম কী?

ডাউন সিন্ড্রোম একটি জেনেটিক বা ক্রোমোজোমজনিত অবস্থা, যা মানুষের শরীরের ২১ নম্বর ক্রোমোজোমের অতিরিক্ত একটি কপি থাকার কারণে হয়। সাধারণ মানুষের শরীরে প্রতিটি ক্রোমোজোম জোড়া দুটি করে থাকে, কিন্তু ডাউন সিন্ড্রোমে ২১ নম্বর ক্রোমোজোমের তিনটি কপি (ট্রাইসমি ২১) থাকে। এই অতিরিক্ত ক্রোমোজোম শরীরের বিকাশ ও মস্তিষ্কের কার্যক্ষমতায় প্রভাব ফেলে, যার ফলে বুদ্ধিমত্তার স্বল্পতা ও শারীরিক নানা সমস্যার সৃষ্টি হয়।


ডাউন সিন্ড্রোমের কারণ

1.ক্রোমোজোমের অতিরিক্ত কপি: প্রধান কারণ হলো ২১ নম্বর ক্রোমোজোমের অতিরিক্ত একটি কপি থাকা।

2.মাতৃগর্ভে বয়স: যেসব মায়েদের গর্ভধারণের সময় বয়স বেশি (৩০-৩৫ বছরের উপরে) থাকে, তাদের ক্ষেত্রে ডাউন সিন্ড্রোমের ঝুঁকি বেশি থাকে।

3.পরিবারে পূর্ববর্তী ইতিহাস: যদি পরিবারের কারো ডাউন সিন্ড্রোম থাকে, তাহলে ঝুঁকি বাড়তে পারে।

4.অজানা কারণ: অনেক সময় সঠিক কারণ স্পষ্ট না হলেও জিনগত বিভিন্ন পরিবর্তন ডাউন সিন্ড্রোমের কারণ হতে পারে।

লক্ষণ

1.শারীরিক চিহ্ন: ছোট মাথা, সাদা পাতলা ত্বক, চোখের কোণ বাঁকা (অ্যাপ্রন্টিক ফোল্ড), গলা ও হাত পা মোটা হওয়া, ছোট ঠোঁট এবং স্বল্প উচ্চতা।

2.মানসিক ও বুদ্ধিমত্তার সমস্যা: বিভিন্ন মাত্রার বুদ্ধি ক্ষয়, শেখার অসুবিধা, কথা বলার সমস্যা।

3.স্বাস্থ্যগত সমস্যা: হৃদরোগ, শ্বাসকষ্ট, হজমের সমস্যা, শ্রবণ সমস্যাসহ নানা জটিলতা দেখা দিতে পারে।

4.অতিরিক্ত নমনীয়তা: গোড়ালির ও হাতের জয়েন্টগুলো বেশি নমনীয় হতে পারে।

5.বিকাশগত দেরি: হাঁটা, কথা বলা ও অন্যান্য শারীরিক গতি ধীরগতিতে হয়।


প্রতিকার ও যত্ন

1.প্রাক-বিধানিক পরীক্ষা: গর্ভধারণের আগে ও গর্ভাবস্থায় নির্দিষ্ট পরীক্ষা করে ডাউন সিন্ড্রোমের ঝুঁকি যাচাই করা যায়।

2.শিশুর যত্ন ও শিক্ষা: বিশেষ শিক্ষা, ভাষা থেরাপি ও সামাজিক দক্ষতা বৃদ্ধির প্রশিক্ষণ প্রদান।

3.চিকিৎসা ও নিয়মিত পর্যবেক্ষণ: হৃদরোগ বা অন্যান্য শারীরিক জটিলতা থাকলে চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী ব্যবস্থা নিতে হবে।

4.পরিবার ও সমাজের সমর্থন: ভালোবাসা, ধৈর্য্য ও উৎসাহ দিয়ে শিশুর আত্মবিশ্বাস বৃদ্ধি করতে হবে।

5.স্বাস্থ্যকর জীবনযাপন: সুষম খাদ্য, নিয়মিত ব্যায়াম ও পর্যাপ্ত বিশ্রাম গুরুত্বপূর্ণ।

ডাউন সিন্ড্রোম সম্পূর্ণরূপে নিরাময়যোগ্য নয়, তবে সঠিক যত্ন, শিক্ষা ও চিকিৎসার মাধ্যমে আক্রান্ত ব্যক্তির জীবনযাত্রার মান অনেক উন্নত করা যায়। ডাউন সিন্ড্রোম আক্রান্ত শিশুদের জন্য পরিবারের ভালোবাসা, ধৈর্য্য এবং সমাজের সহযোগিতা জীবনমান উন্নয়নের মূল চাবিকাঠি। এই শিশুরা তাদের বিশেষ চাহিদার কারণে অতিরিক্ত যত্ন ও শিক্ষা প্রাপ্তি পেলে তাদের ব্যক্তিগত সক্ষমতা ও স্বাধীনতা বৃদ্ধি পায়। সমাজে তাদের প্রতি ইতিবাচক মনোভাব ও অন্তর্ভুক্তি নিশ্চিত করলে তারা সবার মাঝে প্রেরণার উৎস হয়ে উঠতে পারে। তাই আমাদের সকলের উচিত ডাউন সিন্ড্রোম সম্পর্কে সচেতন হওয়া, সামাজিক সহমর্মিতা বৃদ্ধি করা এবং এই শিশুরা যেন অন্যদের মতই সুন্দর ও পূর্ণাঙ্গ জীবন যাপন করতে পারে তা নিশ্চিত করা।

ভয়ংকর প্রেতাত্মা ভেরো

দেবনারায়ন দাস


লখাই ভূত, ঠাকুর মশাই এর ওপর ভর করল। নিদান দিলো ভেরোর ঘটা করে শ্রাদ্ধ করতে হবে।অবশেষে চাঁদা তুলে ধূমধাম করে ভারতীর শ্রাদ্ধ শান্তির কাজ করা হলো। কিন্ত দেহের অস্তি নদীতে, কাঁদরে বা গঙ্গায় ভাসান হলো না। গয়াতে দেওয়ার ব্যবস্থা হল না। কারণ ভূতের দেশ এর সঙ্গে এদের শত্রুতা আছে। লখাই ভূত ঠাকুর মশাই এর মাথার ওপর বসেই আছেন। তিনিই-ত সব। তিনি যা বলবেন, ঠাকুর মশাই তাই করবেন।

সেই দিনের পর ভেরো ভূতেদের মহারাজকে জানিয়ে দিলো, সে এবার থেকে বিধবাদের উপকার করবে, দুঃখ কষ্টের আদিবাসী মহিলা দেখলে উপকার করবে।আর মোড়ল ও শয়তান মিনসে দেখলেই মাথায় চাঁটি মারা , গায়ে ছ্যাঁকা দেওয়া, পিছনে তাড়া করা, এই ভাবে শায়েস্তা করবে। এখন আদিবাসীদের কষ্ট দেখলে তার মন খুব কাঁদে।

সন্ধ্যে হলেই ভেরো এখন হাটে মাঠে পাড়ায় পাড়ায় ঘুরে বেড়ায় । দিনের বেলায় নিম গাছ, সেওরা গাছের ঝোপে বসে আদিবাসীদের কাজকর্ম দেখে। মেয়েদের কষ্ট কি কম? সারাদিন মাঠ ঘাট ঘুড়ে ধানের শীষ যোগাড় করা ,মাঠে ধান কাটা, গরুর গাড়ির সঙ্গে হাঁটা, কাটা ধান খামারে তোলা। ঘরে রান্না,পোলাপান বড় করা আর মরদের জন্য রোজ হাড়িয়া বানানো।

ভেরো প্রেতাত্মা,কোথাও মেয়ে বৌদের উপর কষ্ট দেখলেই শয়তানদের গায়ে ছ্যাঁকা দেয়। মাথায় লাঠি মারে।

ব্রহ্মডাঙ্গার বিশাল মাঠ এখন খাঁ খাঁ করে। সবটাই ভেরো ভূতের এলাকা। সন্ধ্যে হলেই শিয়ালের ডাক, দূরে দূরে ছায়া মূর্তির আনাগোনা। হুতুম পেঁচা ডাকl হঠাত ঝড়ের দাপট, কখনো গোঙানির শব্দ, বাদুড়ের ডানা ঝাপটানো,, সেই ভয়তে পাড়ার নরেন টুডু, বুগি বেসরা,গুপী ডোম , সঙ্গে বুড়ো হারামজাদা মোড়ল সবাই দল বেঁধে মদ গিলতে আর আসেনা। গেদোর মদের ঠেক উঠে গেছে।

একদিন দুপুর কালে হিরামনি, তার মরদ, তার টুকুন বুকুন, ছেলে দুটি নিয়ে, ফাঁকা মাঠে ঘুরছে। দুই জনের ঘাড়ে দুটো ফাওড়া। ওদের কাজই হলো মাটি কেটে ইঁদুরের গর্ত থেকে ধান বার করা ।

হঠাৎ পিছন থেকে মোড়লের লাঠি পড়লো হিরামনির মাথায়। কপাল ফেটে গলগল করে রক্ত ঝরে পড়ল।

ধান চুরি করছে, এই অপরাধে কচি দুটো ছেলে, মরদ আর হিরামনকে গাছে বেঁধে রাখা হলো। সন্ধ্যে কালে মিটিং।

ভেরো সব কাজ গাছে উঠে দেখছে। এর শাস্তি মোড়লকে পেতেই হবে। কি করা যায়? শাস্তি কি দেবে?

ভেরো চুপটি করে অপেক্ষায় থাকে।অবশেষে মোড়ল তার দলবল নিয়ে গাছের নিচে আসে।চারিদিকে ঘন অন্ধকার। মাঝে কুপি জ্বলে।সকলেই ভয়তে থাকে।জানে ভেরো নামের প্রেত ঘুরে বেড়ায়।

ইতিমধ্যে হাড়িয়া আসে।পাতার ডোঙ্গা করে খেয়ে সকলে অপেক্ষা করে। হাড়িয়ার লোভে লোকজন আসবে, মিটিং হবে।

কিছুক্ষণ পরেই মিটিংয় শুরু হয়।মোড়ল লাঠি উঁচিয়ে নিদান দেয়, উয়াকে গিরামে থাকতে দেওয়া হবেক নাই।রাত পেরোলে উহারা ঘর ছাড়া হাবেক। ইটো মোড়লের সাফ কথা। সকলে বটে বটে বলে হুল্লা করে।

গাছের উপর থেকে এসব শুনে ভেরোর মাথায় খুন চড়ে যায়। নিমেষে নিমের একটা ডাল ভেঙে সোজা মোড়লের মাথা পানে ছুঁড়ে মারে। সবাই উর্দুস্বাসে দৌড়।মোড়ল আধমরা হয়ে মাটিতে কাতরাচ্ছে। ভেরো কাছে এসে বলে,বিচার করবি মোড়ল? হিরামনির অপরাধটো কি বটে? এবার বুঝেলে ভেরোর খেমতা। বলে ভেরো মোড়লের মাজায় সজোরে আঘাত করে। মোড়ল লুটিয়ে পড়ে।

ওদিক গাছে বাঁধা হিরামনি হাউ হাউ, করে কাঁদছে। তাদের বাঁধন খুলে দেয় ভেরো। সকালেই গ্রামে লোকে জেনে যায় ,পাপি মোড়ল কে ভেরো শাস্তি দিয়েছে। ও শালা খাবি খাচ্ছে। ভেরোর ভয়তে কেউ বাঁচাতে যায়নি।

এখন থেকে মেয়ে বৌদের ,গারিবদের ভগবান ভেরো প্রেতাত্মা। হিরামনি যখনই বিপদে পড়ে, তখন ই ভেরোর কাছেই মানদ করে। গ্রামের সবাই মানদ করে। দু মুঠো পান্তা ভাত। ভেরো শাক দিয়ে খেতো।

ব্রহ্ম ডাঙ্গার প্রকান্ড মাঠ পেরিয়ে ছোট ছোট কয়েকটি আদিবাসীদের গ্রামের পর গভীর অরণ্য শুরু হল। সেই গভীর অরণ্যের ভেতর দিনের বেলাতেও, সূর্যের আলো, ঢোকে না। শুধুই বাঘের গর্জন, শিয়ালের ডাক, আর ভীত সন্ত্রস্ত হরিণের আকুল আকুতি। ভেরো প্রেত আত্মার, বিশ্রাম নাই। তার চোখ চারদিকে ছাড়িয়ে আছে। তিনি এখন মা।

এদিকে সীমানা পেরিয়ে জঙ্গলে ঢুকছে চোরা শিকারী। হাতে অস্ত্র,গুলি বন্দুক, সঙ্গে সরকারি বাবুদের গাছ কাটা চলছে।গ্রামের মানুষগুলোর আর শান্তি নেই।জঙ্গলে তাবু গাঁড়ছে,শিকারী গাছে বসে প্রাণী মারছে। একদিন গিরামের মেয়ে বউরা বটের তলায় ভেরো পুজো করে মানত করে। হে ভেরো দেবতা, এই বিপদ থেকে রক্ষা করো।আমাদের বাঁচাও।

অবশেষে ভেরো ওর লখাই কে ডাকলো।উপায় খুঁজতে হবে।

অবশেষে হিরামনি গ্রামের মানুষ গুলাকে জানিয়ে দিলো কি করতে হবে।

কাজ শুরু হলো। বাইরে থেকে কাজে আসা শহর বাবুরা রাতে আর ঘর থেকে বেরোচ্ছে না। এলাকা জুড়ে ভূতের উপদ্রপ সাঙ্ঘাতিক বেড়েছে। জঙ্গলে,ঘরের পাঁচিলে,ছাদে ভূত ঘুরে বেড়ায় । রাত্রি হলেই নানান রকমের ভয়ঙ্কর আওয়াজ শোনা যায়।

কয়েক দিনের মধ্যে ভূতের ভয়ে লোক কমতে থাকে। লেবার পার্টির লোকজন ভয়তে কাজ করতে চায়না।শেষে একদিন শহরের বড়বাবু সরজমিনে তদন্তে এলে ভয়ঙ্কর এক কাণ্ড ঘটে।

সেদিনটা ছিলো অমাবস্যা। ঘুটঘুটে অন্ধকার।বৃষ্টি হচ্ছে ঝিরঝির করে। দু দিন ধরে বনের মধ্যে তাবু গেড়ে বড়বাবু আছে। কথাও কিচ্ছু পায়নি। কলকেই রিপোর্ট দেবে,এলাকায় ভূত বলে কিচ্ছু নেই,লেবাররা অকারণে ভয় পাচ্ছে।

বড়বাবু দরজা খুলে বাইরে আসে।বারান্দায় দাঁড়িয়ে একটা সিগারেট ধরায় , সুখ টান দিতেই দেখে, দূরে গেটের সামনে ছাতা মাথায় রঞ্জনা দাঁড়িয়ে।

বড়বাবু চোখ ডলে আবার তাকায়। সত্যি দেখছে সে। রঞ্জনা এখানে? তাহলে তিন বছর পূর্বে আসানসোলে ভয়াবহ রোড অক্সিডেন্ট!! রঞ্জনা কি বেঁচে আছে?

ছুটে ঘরে ঢোকে। মুহুর্তে দরজা বন্ধ করে দেয়। না না, এখানে আর কোনও কাজ নয়।ভয়ঙ্কর ভূতুড়ে জায়গা !

পরক্ষণেই ভাবে,না না ভুল দেখছে সে। দরজা খুলে ভয়ে ভয়ে তাকায়।

ঐতো রঞ্জনা দাঁড়িয়ে ডাকছে।,,কি দেখছো সুধেন্দু? আমাকে চিনতে পারছো না? আমি তোমার সেই রঞ্জনা। রোড অক্সিডেন্টে সেইযে চলে গেলাম, আর ফিরে এলাম না। কতো খুঁজেছি তোমায়। হঠাত এখানে তোমার প্রজেক্ট শুনে চলে এলাম। ভেরো, লখাই আমাকে খবর দিলো,,,,।


Commentaires


ssss.jpg
sssss.png

QUICK LINKS

ABOUT US

WHY US

INSIGHTS

OUR TEAM

ARCHIVES

BRANDS

CONTACT

© Copyright 2025 to Debi Pranam. All Rights Reserved. Developed by SIMPACT Digital

Follow us on

Rojkar Ananya New Logo.png
fb png.png

 Key stats for the last 30 days

bottom of page