উর্বরতার প্রতীকি অনুষ্ঠান অম্বুবাচী। সূর্য যেদিন মিথুন রাশিতে প্রবেশ করে, বাংলা মতে তার পরের দিন থেকে শুরু হয় আষাঢ় মাস। এর ঠিক এক সপ্তাহ পর থেকে শুরু হয় অম্বুবাচী। হিন্দুদের কাছে অম্বুবাচী একটি বিশেষ আচার বা ব্রত। এই তিন দিন দেবী ঋতুমতী হন বলে শাস্ত্র অনুসারে মনে করা হয়।
কথায় আছে, 'কিসের বার, কিসের তিথি, আষাঢ়ের সাত অম্বুবাচী।'
অম্বুবাচী কি?
অম্ব শব্দের অর্থ জল এবং বাচি শব্দের অর্থ বৃদ্ধি। পুরো কথাটির অর্থ গ্রীষ্মের প্রখর তাপপ্রবাহের পর বর্ষার আগমনে সারা ধরিত্রী সিক্ত হয়। ফের প্রজননের যোগ্য ওঠার সময়কালকেই বলা হয় অম্বুবাচী। এই সময়কালে পৃথিবী ঋতুমতী হয় বলে মনে করা হয়।
এইসময় কী করা শুভ?
১.দেবীর মুর্তি লাল কাপড় দিয়ে ঢেকে রাখতে হয়।
২.অম্বুবাচীর মধ্যে আম, দুধ বেশি করে খাওয়া ভালো। প্রচলিত বিশ্বাস অনুসারে এতে সাপের ভয় দূর হয়।
৩.এই সময় ইষ্ট মন্ত্র জপ করলে ভালো ফল পাওয়া যায়।
৪.সন্ন্যাসী এবং বিধবা মহিলারা এই তিন দিন বিশেষ ভাবে পালন করে থাকেন।
কী করবেন না?
১.এই সময় কৃষিকাজ বন্ধ রাখা হয়। জমিতে লাঙ্গল চালানো, জমি খোঁড়া এই সময় করা উচিত নয়।
২.অম্বুবাচীতে বৃক্ষরোপণ করতে নেই।
৩.অম্বুবাচীর তিন দিন কোনও মাঙ্গলিক কাজ করতে নিষেধ করা হয়। এই বিয়ে, পুজো, গৃহপ্রবেশ বন্ধ থাকে।
৪.এই সময়ে মন্ত্র পড়ে পুজোপাঠ করবেন না। কেবল ধূপ-দীপ দেখিয়ে ঠাকুর প্রণাম করে নিন।
৫.বিশেষ প্রয়োজন ছাড়া অম্বুবাচীর মধ্যে কোথাও যেতে বারণ করা হয়।
৬.অম্বুবাচীর তিন দিন বাড়ি বা জমি কেনা বেচা করতে নেই।
৭.এই সময় ভুলেও কোনও সাপকে আঘাত করবেন না।
গুয়াহাটির কামাখ্যা শক্তিপীঠ এর ইতিহাস:
আসামের রাজধানী দিসপুর থেকে সাত কিলোমিটার দূরে কামাখ্যা দেবীর শক্তিপীঠ। আসামের গুয়াহাটির নীলাঞ্চল পাহাড়ে অবস্থিত কামাখ্যা শক্তিপীঠ মন্দিরের উৎপত্তির ইতিহাসও অনন্য। পুরাণ অনুসারে, দেবী সতীর দেহের অঙ্গ, যে যে স্থানে পড়েছিল, তাদের বলা হয় শক্তিপীঠ। ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় রাজ্য আসাম শুধুমাত্র কামাখ্যা শক্তিপীঠের জন্য সারা বিশ্বে বিখ্যাত, দেবীর ৫১ টি শক্তিপীঠের মধ্যে একটি। নীলাচল পাহাড়ে অবস্থিত এই মন্দিরে কোনও দেবী মূর্তি নেই।
পৌরাণিক কাহিনী:
সতীর পিতা প্রজাপতি দক্ষ অনিচ্ছায় তাঁর কন্যাকে ভগবান শিবের সঙ্গে বিয়ে দিয়েছিলেন। প্রজাপতি দক্ষ কখনও ভগবান শিবকে অপমান করার কোনও সুযোগ হাতছাড়া করেননি। একবার তিনি একটি যজ্ঞের আয়োজন করেছিলেন এবং ইচ্ছাকৃতভাবে শিবকে তাতে আমন্ত্রণ জানাননি। ভগবান শিবের মানা সত্ত্বেও, মা সতী তার পিতা দক্ষর যজ্ঞে বিনা আমন্ত্রণে যান। সেখানে তার স্বামী শিবের অপমান দেখে তিনি ক্রুদ্ধ হন এবং যজ্ঞের আগুনে আত্মাহুতি দেন।
এতে ভগবান শিব আহত ও ক্রদ্ধ হন এবং বীরভদ্রকে যজ্ঞ ধ্বংস করতে পাঠান। শোকে পাগল ভগবান শিব মা সতীর মৃতদেহ কোলে নিয়ে তাণ্ডব করতে শুরু করেন। এতে চিন্তিত হয়ে সকল দেবতা ভগবান বিষ্ণুর কাছে আশ্রয়ের জন্য যান। ভগবান বিষ্ণু শিবকে ঠাণ্ডা করতে ও পৃথিবীকে ধ্বংসের হাত থেকে বাঁচাতে তাঁর সুদর্শন চক্র দিয়ে সতী মার মৃতদেহকে টুকরো টুকরো করেন। যেখানেই সতী মার শরীরের অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ পড়েছিল, সেখানেই শক্তিপীঠ গড়ে উঠেছে। কামাখ্যা শক্তিপীঠে মায়ের যোনি পড়েছিল।
অম্বুবাচী মেলা:
এইবছর অম্বুবাচী মেলা শুরু হবে ২২ জুন ২০২৪ থেকে। এই তিথি বুধবার, ২৬ জুন, ২০২৪ এ শেষ হবে। এই সময়ে, মন্দিরে কোনও পুরুষের প্রবেশ নিষেধ। তিন দিন পর যখন মন্দিরের দরজা খোলা হয়, তখন দেবীর চারপাশের কাপড় লাল রঙে ভিজে যায়। প্রতি বছর লক্ষাধিক ভক্ত এই মেলায় আসেন মায়ের দর্শন পেতে। মেলা শেষে ভক্তদের প্রসাদ হিসেবে দেওয়া হয় ভেজা কাপড়। এটি মায়ের ঋতুস্রাবের বস্ত্র।
উহু আহা হায়রে... গরম আর সয় না রে! পিচগলা রোদ্দুরে, ঘরের কোণটাতে, বাচ্চাপার্টির সঙ্গতে- জমিয়ে ফেলুন। জমজমাট আইসক্রিমের নানারকম। থাকল ক'টা ইজি রেসিপি...
মিল্ক চকলেট আইসক্রিম
কী কী লাগবে
দুধ: দেড় কাপ, হেভি ক্রিম: দেড় কাপ, কোকো পাউডার: ১ টেবিল চামচ, চিনি: ১/৩ কাপ, মিল্ক চকলেট (কুচানো); ২০০ গ্রাম, ডিমের কুসুম: ৮ টি।
কীভাবে বানাবেন
একটি হেভি বেস সসপ্যানে দুধ, ক্রিম, অর্ধেক চিনি ও কোকো পাউডার মিশিয়ে কম আঁচে বসিয়ে রাখুন। ডিমের কুসুম ও বাকি চিনি একসঙ্গে ফেটিয়ে নিন। অআঁচ বন্ধ করে ডিমের মিশ্রণটি দুধের মধ্যে দিয়ে ঘন না হওয়া পর্যন্ত অপেক্ষা করুন। এই সময় ক্রমাগত নাড়তে থাকবেন। মিশ্রণ ঘন হলে নামিয়ে চকলেট কুচির উপর ঢেলে দিন। এবার এটিও নাড়তে থাকুন। চকলেট গলে গেলে ঠাপ্ত করে ফ্রিজে কয়েক ঘন্টা রাখার পর সার্ভ করুন।
ঠাণ্ডাই আইস ক্রিম
কী কী লাগবে
দুধ: ২৫০ মিলি, ক্রিম: ৫০০ মিলি, ক্যাস্টর সুগার: ৭৫ গ্রাম, ডিমের কুসুম: ৪ টি, ছোট এলাচ: ১ চা চামচ, গোলমরিচ: ১ চা চামচ, গোটা ধনে: ১ চা চামচ, আমন্ড (হালকা ভাজা): ৫০ গ্রাম, গোলাপের পাপড়ি: ৫ টেবিল চামচ, গোলাপ জল: ১ টেবিল চামচ, মিল্ক মশালা পাউডার: ১ চা চামচ।
কীভাবে বানাবেন
দুধ আর ক্রিম মিশিয়ে ফুটিয়ে নিন। সবরকম মশলা ও বাদাম একসঙ্গে ফেটিয়ে রাখুন। এবার দুধে এই পেস্ট ও গোলাপের পাপড়ি দিয়ে কিছুক্ষণ ঢেকে ঠাণ্ডা হতে দিন। ডিমের কুসুম আর চিনি একসঙ্গে ফেটিয়ে দুধের সঙ্গে ভালো করে মিশিয়ে নিন। কম আঁচে এই মিশ্রণটি বসিয়ে নাড়তে থাকুন। দুধ ঘন হলে নামিয়ে ঠাণ্ডা করে গোলাপ জল ও আরও কিছুটা ক্রিম মিশিয়ে ফ্রিজে রাখুন। জমে গেলে গোলাপের পাপড়ি দিয়ে সাজিয়ে পরিবেশন করুন।
চুসকি (কালা খাট্টা)
কী কী লাগবে
আইস কিউব: ১২ টি, কালা খাট্টা সিরাপ:
১/২ কাপ, পাতি লেবুর রস: ১ টেবিল চামচ, বীটনুন: স্বাদ অনুযায়ী, চাট মশলা: স্বাদ অনুযায়ী, আইস ক্রিম স্টিক ও কাপ: ২-৩ টি।
কীভাবে বানাবেন
আইস কিউব মিক্সিতে গুঁড়িয়ে নিন। এবার এই গুঁড়ো বরফ একটি কাপে ঢেলে একটি স্টিক লাগিয়ে চেপে চেপে সেট করে নিন যাতে বরফ একে অপরের সঙ্গে ভালোভাবে জুড়ে যায়। এতে লেবুর রস, কালা খাট্টা সিরাপ, চাট মশলা ও বীট নুন ছড়িয়ে সার্ভ করুন।
দোমালা নারকেলের কুলফি
কী কী লাগবে
কোকোনাট ক্রিম: ১ চা চামচ, দুধ: দেড় লিটার, গুঁড়ো দুধ: ১ কাপ, কোকোনাট পাউডার: ১ কাপ, চিনি: ১/২ কাপ, ডাবের শাঁস: ১ টি।
কীভাবে বানাবেন
এক কাপ দুধে গুঁড়ো দুধ ও কোকোনাট মিল্ক পাউডার গুলে রাখুন। বাকি দুধ ভালো করে ফোটাতে থাকুন। দুধ কমে ঘন হলে তাতে ওই গুলে রাখা মিশ্রণ আর চিনি দিয়ে আঁচ কমিয়ে দিন। অল্প আঁচে ফুটে দুধ খুব ঘন হলে নামিয়ে ঠাণ্ডা করুন। কুলফি মোল্ডে আগে নারকেল শাঁস দিয়ে দুধের মিশ্রণ ঢেলে ঢাকনা বন্ধ করে ফ্রিজে রাখুন। সেট হলে মোল্ড থেকে বের করে পরিবেশন করুন।
ম্যাঙ্গো আইস ক্রিম
কী কী লাগবে
দুধ: ৪ কাপ, কাস্টার্ড পাউডার: ১ টেবিল চামচ, চিনি: ১ কাপ, ভ্যানিলা এসেন্স: ১ টেবিল চামচ, ক্রিম: ৩ কাপ, ক্যাস্টর সুগার: ১/২ কাপ, পাকা আমের পিউরি: ১ কাপ, পাকা আম কুচি: ১ কাপ।
কীভাবে বানাবেন
এক কাপ দুধের সঙ্গে কাস্টার্ড পাউডার মিশিয়ে রাখুন। ক্রিমের সঙ্গে ক্যাস্টর সুগার মিশিয়ে ফেটিয়ে নিন। বাকি দুধ মাঝারি আঁচে বসিয়ে চিনি মেশান। আঁচ কমিয়ে এতে দুধ-কাস্টার্ডের মিশ্রণ মেশান। কিছুক্ষণ নেড়েচেড়ে নামিয়ে ঠাণ্ডা করুন। এতে আনিলা এসেন্স, ক্রিম, মাঙ্গো পিউরি ও পাকা আমের টুকরো দিয়ে স্টিলের পাত্রে ঢেলে ঢাকা দিয়ে সারা রাত ফ্রিজে রাখুন। আমের টুকরো দিয়ে সাজিয়ে সার্ভ করুন।
Comments