top of page
Search

মেঘের দেশ রামধুরা...ওপার বাংলার রান্না...

Updated: Jun 30

কালিম্পং থেকে ১২ কিমি দূরে রামধুরা জনপদকে কেন্দ্র করে গল্পটি লেখা। নিউ জলপাইগুড়ি স্টেশন থেকে কালিম্পং আসুন, ওখান থেকে গাড়ি ভাড়া করে চলে আসুন রামধুরা। দুদিন হিমালয়ের সঙ্গে একাত্ম হয়ে সময়ে কাটিয়ে যান।

একটি কাল্পনিক কাহিনি

সুমিতা দাস

কলকাতাতে তখনও লক ডাউন শব্দটার সঙ্গে পরিচিত নই সবাই, এই সময় হঠাৎ রঞ্জনা ফোন করে বলল, 'চলো না সুমিতাদি, আমি ও সুস্মিতা কালিম্পঙের কাছে একটা অপরিচিত জায়গাতে যাচ্ছি। রেখারও যাওয়ার কথা ছিল। কিন্তু হঠাৎ করে ওর শরীর খারপ হতে ও বাতিল করল।' কী করি ওদের থেকে অনেকটাই বড়, মন থেকে বড্ড ভালোবাসি। অগত্যা চললাম দেখাশোনাও হবে ওদের, কিছু টাকা, কার্ড ও পোশাক নিয়ে চললাম, ট্রেনে চেপে পৌঁছলাম নিউ জলপাইগুড়ি, ওখান থেকে শেয়ার গাড়িতে কালিম্পং পৌঁছলাম। ওখান থেকে গাড়ি বুক করে গন্তব্যস্থলে পৌঁছলাম। বিশেষ কোনও টুরিস্ট না আসায় খুব নির্জন। কিন্তু থাকার জায়গা অতি মনোরম।

সুস্মিতা তো জোরে জোরে শুরু করল, "এই আকাশে আমার মুক্তি আলো এ আলো"। আমরাও গলা মেলালাম। এবারের টুরে অন্য প্ল্যান। নিজেরা রাঁধব, সবকাজ নিজেরাই করব। শুরু হল, আমি বললাম, 'তোরা জোগাড় দে আমি রান্না করি।' ওরা মেনে নিল। ওরা বাজারহাট করে আনল, কিইবা পাওয়া যায় এই নির্জন গ্রামে! যাইহোক দিয়ে কাজ চালালাম। আমরা খেয়ে তৃপ্ত হলাম। এবার একটু ঠান্ডা লাগছে। গরম জামা পরে বাইরে এসে দেখি, দিগন্তজোড়া বরফশৃঙ্গ, সোনা-আলোয় আলোকিত, আমরা তিনজনে হতবাক হয়ে বসে থাকলাম! আমরা কে, কেউ বেশি দিনের চেনা নই তবু কেন এত টান!

রাত ক্রমশ বাড়ছে। আকাশ উজ্জ্বল নক্ষত্রে ভরা। আমরা ঘরে ফিরে এলাম। বেশ কিছুদিন এইভাবে কাটল, এইভাবে সব পরিচিত হল মানুষজন, তাদের দুঃখ-কষ্ট, কীভাবে জীবনের সঙ্গে যুদ্ধ করে ওরা বেঁচে আছে, আমরাও তিনজন একে অপরের পরিপূরক হয়ে উঠলাম। রঞ্জনা পায়ের জন্য নীচ থেকে জল আনতে যেতে পারত না। সুস্মিতা বলল, 'তাতে কী, আমি আনছি।' আমি বললাম, 'চল, আমিও যাই।' কিন্তু ও কিছুতেই রাজি হত না। আমাকে দুজনে চুপটি করে বসিয়ে দিত। এত ভালোবাসা রাখব কোথায়! ফিরে আসার আগের দিন শোনা গেল, সারা পৃথিবী জুড়ে এক মারণ রোগ ছড়িয়ে পড়েছে। তাই স্তব্ধ করে দেওয়া হয়েছে জনজীবন। যে যেখানে আছে ওইখানে থাকতে হবে! ওরা দুজনেই তো ভয়ে কাঁদতে লাগল, কি করি এখন? বুকে জড়িয়ে ধরে চুমু খেয়ে বললাম, 'চিন্তা কি রে আমি তো আছি, তোদের কিছু হবে না। এখন মন শান্ত করে বোস। আমরা কি করব ভাবতে হবে।' তিনজনে ঠিক করলাম আগে খাবারের রসদ জোগাড় করতে হবে। তিনজনে সব টাকা একত্র করলাম। ওরা দুজন বাজারে গেল। চাল ডাল তেল নুন সবকিছু একমাসের জন্য নিয়ে এল।

রাত্রে বসেছিলাম হঠাৎ সুস্মিতা বলে উঠল, 'এভাবে চললে পাগল হয়ে যাব। কিছু একটা করতে হবে।' রঞ্জু বলে উঠল, 'এই তুই তো শিক্ষক, চল না আমরা কাল থেকে বস্তির বাচ্চাগুলো কে পড়াই? কেমন হবে সুমিতাদি?'

অসাধারণ আইডিয়া। ঠিক হল সুস্মিতা পড়াবে বাংলা, রঞ্জু ইংরেজি, আর আমি ভূগোল। নতুন দিশার আলোতে সকলের মুখ উজ্জ্বল হয়ে উঠল। আগামী কালের অপেক্ষায় রইলাম হাতে হাত ধরে সারারাত।

এক নতুন সূর্যোদয়, আমাদের তিনজনের জীবনে। আজ যেন মনে হল, কাঞ্চনজঙ্ঘার উপর কেউ সোনা ঢেলে দিয়েছে,। যথারীতি সুস্মিতা শুরু করল, 'আমাদের যাত্রা হল শুরু, এখন ওগো কর্ণধার...।" আমরা তৈরি হতেই বেরিয়ে পড়লাম, চা বাগানের কুলী লাইনের বস্তিতে। অনেক বুঝিয়ে ছাত্র পেলাম ছ'জন। ওদের মায়েদেরও বাসায় ডেকে সব বুঝিয়ে বলতে রাজি হল। এই দুর্দিনে বাবা-মা সব ঘরে বসে। দিন দিন বেড়েই চলছে অভাব। আগে তো রঞ্জু ওদের সাফসুতরো করে। আদরমাখা মুখগুলো দেখতে থাকল। আজ আমরা ওদের পড়াব না।

সবার নাম জানা হল, পরিচয় হল। সুস্মিতা ওদের ছড়ার গান শোনাতে লাগল। আমি দুটো মেয়ের কাণ্ডকারখানা দেখতে থাকলাম। কিছু বই জোগাড় হল। কাল থেকে শুরু হবে। ওরাও খুব খুশি হল। আমরা মানুষ গড়ার খেলায় মেতে উঠলাম। এইভাবে দিন এগিয়ে চলল। বেশিরভাগ বাচ্চা এসে বলত, 'কিছু খাইনি।' রঞ্জু বলল, 'সুমিতাদি যদি ওদের একটু করে খাবার দেওয়া হয়, তাহলে আমাদের কি কম পড়বে?' আমি বললাম, 'না না, দরকার হলে আমরা একবেলা খাব। চিন্তা করিস না।' শুরু হল আর এক যজ্ঞ। শিশুদের মনে খুশির ঝলক উপচে পড়ল। তারপর দিন দেখি আরও চারজন নতুন অতিথি হাজির। খাওয়া হয়নি শুনে, বড্ড কষ্ট হচ্ছিল। এদিকে ওরাও আমাদের চোখ দিয়ে ভারতবর্ষকে চিনতে শিখল। প্রায় একমাস হতে চলল, ওরা অনেক দূর এগিয়ে গেছে সবদিকে। ওদের কয়েকজন মা ও আমাদের কাছে হস্তাক্ষর শিখল।

অক্ষরজ্ঞান অর্জন করল। আমরাও ভুলতে বসলাম কলকাতাতে আমাদের সংসার পড়ে আছে। সেদিন হঠাৎ দুর থেকে গাড়ির শব্দ শুনতে পেলাম। তিনজন একে ওপরের দিকে তাকিয়ে রইলাম। বাইরে এসে শুনলাম, গতকাল রাত্রে প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, বিপদ অনেক কেটে গেছে, আমরা স্বাভাবিক ছন্দে ফিরতে পারি।। শুনে প্রথম দিন যেমন ভয় পেয়েছিলাম, আজও আমরা অজানা আশঙ্কায় কেঁপে উঠলাম। ফেরার ঘণ্টা বাজতে শুরু করল সেই রাত্রের মতো। আজও কেউ ঘুমোতে পারলাম না। কেউ কারওর দিকে তাকাতে পর্যন্ত পারলাম না।

বাচ্চারা কলকল করতে করতে এসে গেল, গোপাল, রবি, পবন, রেখা রেশমি, বিলু সাদিক, শবনম ফারিয়া ও বাকিরা। ওরা জেনে গেছে রবীন্দ্রনাথকে, বিবেকানন্দকে দেশ কি, মানচিত্রও কি, ইংরেজি ভাষায় অ্যালফাবেট কি। অনেককিছু গাইতে শিখেছে জাতীয় সংগীত, রাষ্ট্র সংগীত। ওদের স্বাস্থ্য সচেতনতার প্রয়োজন, এই অল্প সময়ে অনেকবেশি শিখে ফেলেছে। কিন্তু আজ যখন শুনল আমাদের যাওয়ার সময় এসে গেছে, ওরা কেউ বিশ্বাস করল না। রঞ্জনার কাছে গিয়ে জানতে চাইল, সুস্মিতা ওদের কাছে গিয়ে আদর করে বোঝালো, কিছুটা বুঝল আবার বুঝল নাও। যারা একটু বড় তারা কাঁদতে লাগল, "ম্যাডামজি, হামলোগ কো ছোড়কর মত যাইয়ে।" ওদের মায়েদের ডেকে বোঝানো হল, ওদের যেন কোনও সরকারি স্কুলে ভর্তি করে দিতে। আগামী কাল আমাদের নিতে গাড়ি আসবে সকাল ন'টায়। রাত্রে গুছিয়ে নিয়ে চুপ করে বসে থাকলাম। কেউ খেলো না। মাঝরাত্রে দেখি রঞ্জু-সুস্মিতা বারান্দায় আকুল হয়ে কাঁদছে। আবার আমি বুকে জড়িয়ে ধরলাম, কিন্তু আমারও যে ভাষা নেই!

সকাল হতে দেখি সব বাচ্চারা হাতে ফুল নিয়ে কেউ জংলি ফল নিয়ে হাজির। মায়েরাও সঙ্গে এসেছে। গাড়ি এসে গেছে। দুচোখে জল নিয়ে ওদের মাথায় আশীর্বাদ করে বললাম, 'ওরে তোরা চিন্তা করিস না, আমাদের আসতেই হবে ফিরে, মানুষ করার খেলায় যে মেতে উঠেছি।' অবোধ শিশুরা কাঁদতে লাগল আর বলতে লাগল, 'হমলোগোকো পিছে ছড় কর মত যাও, আগে মত যাও!' কিন্তু আমাদের আগের বন্ধন? কি করে ছাড়ব? গাড়ি গড়াতে লাগল। ওরাও পিছনে ছুটে আসতে লাগল। তিনজনে হাউ হাউ করে কাঁদতে লাগলাম।

কালিম্পং পৌঁছলাম ওখানে চা পান করে আবার চলতে শুরু করলাম, সুস্মিতা বলল, 'আচ্ছা সুমিতাদি কোনটা আগে কোনটা পিছে? এই মুহূর্তে?' কোনও জবাব নেই আমার কাছে। শিলিগুড়িতে নামার আগে তিনজনে একটা প্রতিজ্ঞা করলাম, আমরা অনেক বেঁচেছি নিজের মতো করে। এবার কিছু করার সময় এসেছে। সংসার সামলে আমরা এখানে একটা স্কুল করবই করব। যে যখন সময় পাব এসে দেখাশোনা করব। আর স্কুলের নাম দেব, 'ত্রয়ী' কেমন হবে নামটা? বুকটা অনেক হালকা হল সিদ্ধান্তে এসে, আমাদের এই স্বপ্ন সফল করব। হঠাৎ ঘোষণা হল চার নম্বর প্লাটফর্মে গাড়ি আসছে দার্জিলিং মেল।

ওপার বাংলার ভাষা হোক বা রান্না, এপারে তার কদরই আলাদা। ওপার বাংলার আমিষ হোক বা নিরামিষ, বেশিরভাগ রান্নাই এককথায় অনবদ্য। ওপার বাংলার ৫ জন রন্ধন বিশেষজ্ঞা তাদের ১০ টি সিক্রেট রেসিপি দিলেন রবিবারের অনন্যার জন্য।

ফারজানা বাতেন হাসি


খাসির রোস্ট

কী কী লাগবে

খাসির পেছনের রান আস্ত ১ টা, আদা বাটা ১ চা চামচ,

জিরা বাটা ১ চা চামচ, রসুন বাটা ১ চা চামচ, ধনে বাটা ১ চা চামচ, টক দই পৌনে ১ কাপ, লবন পরিমান মতো,

পোস্ত বাটা ১ টেবিল চামচ, কাঁচালঙ্কা বাটা ১ টেবিল চামচ, পেঁয়াজ কুচি ২ কাপ, তেল ১/২ কাপ, ঘি ১/২ কাপ, কাঁচা পেপে বাটা ২ টেবিল চামচ (খোসা সহ), গরম মশলা ২ চা চামচ, তেজপাতা ৪-৫ টি, ছোট আস্ত পেঁয়াজ ৯-১০ টা

কীভাবে বানাবেন

রান ভালভাবে ধুয়ে ঘি, তেল ও পেঁয়াজ বাদে সব মশলা দিয়ে মেখে ৩-৪ ঘণ্টা ফ্রিজে রেখে দিতে হবে। পরে ৪-৫ কাপ জল দিয়ে মাঝারি আচে ১ ঘণ্টা সিদ্ধ করতে হবে আস্ত পেঁয়াজ সহ। কড়াইতে তেল আর ঘি দিয়ে বেরেস্তা করে তুলে বাকী মসলা দিয়ে কষিয়ে রান এপিঠ ওপিঠ করে ভেজে তুলতে হবে। পরে বেরেস্তা দিয়ে আরো একটু কষিয়ে রান আর জল দিয়ে নেড়ে ২০-২৫ মিনিট দমে রাখতে হবে। হয়ে এলে নামিয়ে উপরে বেরেস্তা দিয়ে সাজিয়ে, পোলাও এর সাথে পরিবেশন করুন মজাদার খাসির রোস্ট।

রুই কচুর কোরমা


কী কী লাগবে

রুই মাছ ৪-৫ টুকরো, কচু ১৫ টুকরো, সয়াবিন তেল আধ কাপ, রসুন বাটা আধ চা-চামচ, পেঁয়াজ বাটা ৪ টেবিল-চামচ, পেঁয়াজ বেরেস্তা ৪ টেবিল-চামচ, লবণ পরিমাণমতো, আদা বাটা ১ চা-চামচ, শুকনো লঙ্কা গুঁড়ো আধ চা-চামচ, পোস্ত বাটা ১ চা-চামচ, নারকেল দুধ ২ কাপ, চিনি সামান্য, কাঁচালঙ্কা, ধনেপাতা পরিমান মতো, কমলালেবুর রস ১ চা চামচ


কীভাবে বানাবেন

প্রথমে রুই মাছ সামান্য লবন দিয়ে হালকা ভেজে নিতে হবে। কচু আধা ইঞ্চি পুরু করে গোল টুকরো করতে হবে। এবার অল্প লবণ মাখিয়ে ফ্রাইপ্যানে হালকা বাদামি করে ভেজে নিতে হবে। অন্য পাত্রে তেল দিয়ে পেঁয়াজ বেরেস্তা করে তুলে রাখতে হবে। এবার ওই তেলে বাটা ও গুঁড়ো মশলা আধ কাপ জল দিয়ে কষতে হবে। ভালোভাবে কষানো হলে নারকেল দুধ দিয়ে ফুটে উঠলে ভাজা রুই মাছ ও কচুর টুকরোগুলো দিয়ে মাঝারি আঁচে রাখতে হবে। কচু সেদ্ধ হলে কাঁচালঙ্কা ও চিনি দিতে হবে। দমে বসাতে হবে। ঝোল মাখা মাখা হলে কমলালেবুর রস দিয়ে নেড়ে ঢেকে দিতে হবে। তারপর হয়ে এলে নামিয়ে উপরে কমলালেবু, ধনেপাতা দিয়ে সাজিয়ে ভাত অথবা পোলাওয়ের সঙ্গে পরিবেশন করুন দারুন স্বাদের এই রুই কচুর কোরমা।

ফাতেমা সাবিরুন নাহার


চিংড়ি লতির রসুন ভুনা


কী কী লাগবে

১ কেজি মোটা কচুর লতি, ১২ পিস বড় রসুনের কোয়া, ১ কাপ ছোট চিংড়ি মাছ, ১ টা বড় লেবুর রস, দেড় কাপ সাদা তেল, ২ কাপ পেঁয়াজ কুচি, আদা বাটা ১ টেবিল চামচ, রসুন বাটা ১ টেবিল চামচ, তেজ পাতা ২ টো, লঙ্কা গুঁড়ো দেড় চা চামচ, হলুদ গুঁড়ো ২ চা চামচ, ধনে গুঁড়ো ২ চা চামচ, জিরে গুঁড়ো ২ টেবিল চামচ, টমেটো ২৫০ গ্রাম (টুকরো করা), গোটা কাঁচালঙ্কা ১০-১২ টি, ধনে পাতা কুচি ২ কাপ, পরিমাণ মত লবণ ও জল


কীভাবে বানাবেন

কচুর লতি দেড় ইঞ্চি লম্বা করে কেটে নিয়ে ভালো করে খোসা ছাড়িয়ে একটি পাত্রে রাখতে হবে। চিংড়ি মাছ কেটে ভালো করে ধুয়ে পরিস্কার করে অন্য একটি পাত্রে রাখতে হবে। এরপর কড়াই বসিয়ে মাঝারি আঁচে তেল গরম করতে হবে। গরম তেলে পেঁয়াজ কুচি বাদামী করে ভেজে নিতে হবে। এবার বেটে রাখা আদা ও রসুন দিয়ে কষে চিংড়ি দিতে হবে। কিছুক্ষন পর একে একে কাঁচালঙ্কা, গুঁড়ো লঙ্কা, হলুদ, ধনে গুঁড়ো আর অল্প জল দিয়ে কষিয়ে নিন। এরপর কেটে রাখা কচুর লতি গুলো দিয়ে ঢেকে ৫-৬ মিনিট রাখতে হবে। ঢাকনা খুলে রসূনের কোয়া, পরিমাণ মত লবণ ও লেবুর রস দিয়ে ঢেকে ৩-৪ মিনিট মাঝারী আঁচে রাখতে হবে। ধনেপাতা কুচি ও জিরে গুঁড়ো ছড়িয়ে ২-৩ মিনিট নেড়েচেড়ে নামিয়ে পরিবেশন করুন খিচুড়ি অথবা ভাতের সঙ্গে।

খাসির কলিজা ভুনা


কী কী লাগবে

২ কেজি খাসির কলিজা, ৪ কাপ কুচোনো পেঁয়াজ, ৪ টেবিল চামচ আদা বাটা, ৪ টেবিল চামচ রসুন বাটা, লাল লঙ্কা গুঁড়ো ৩ টেবিল চামচ, হলুদ গুঁড়ো ৩ টেবিল চামচ, ধনে গুঁড়ো ৩ টেবিল চামচ, জিরে গুঁড়ো ২ টেবিল চামচ, এলাচ ৮-৯ টি, দারচিনি ৮-৯ টুকরো, লবঙ্গ ৭-৮ টি, তেজ পাতা ৩-৪ টি, টমেটো ২৫০ গ্রাম টুকরো করা, কাঁচালঙ্কা ৭-৮ টি, পরিমাণমত লবণ, ১ কাপ কুচোনো ধনেপাতা


কীভাবে বানাবেন

খাসির কলিজা (লিভার) গুলো ছোট ছোট টুকরো করে কেটে নিন। কড়াইতে তেল গরম হলে পেঁয়াজ কুচি দিয়ে ভাজুন। পেঁয়াজের রং বাদামী হলে টমেটো, এলাচ, দারচিনি, লবঙ্গ, তেজপাতা, আদা বাটা, রসুন বাটা, লবন, লঙ্কা গুঁড়ো, হলুদ গুঁড়ো, ধনে গুঁড়ো দিয়ে অল্প আঁচে কষিয়ে নিতে হবে। মশলা ভালো করে কষানো হলে খাসির কলিজা গুলো দিয়ে ভালো করে নেড়েচেড়ে ঢেকে রান্না করতে হবে মাঝারি আঁচে। হয়ে গেলে কাঁচালঙ্কা, জিরা গুঁড়ো ও ধনে পাতা কুচি দিয়ে নেড়ে অল্প জল দিয়ে ঢেকে আবার ও কিছু সময় রান্না করে নামিয়ে নিন। পোলাও, পরোটা অথবা ভাতের সঙ্গে পরিবেশন করুন।

কাশিফা ইসলাম হৃদি


ফ্রায়েড চিকেন বান


কী কী লাগবে

ব্রেড ডো’র জন্য:

ময়দা ১ কাপ, ইস্ট ১ চা চামচ, চিনি ১ চা চামচ, লবন ১/২ চা চামচ, দুধ ১ কাপ, বাটার ৪ টেবিল চামচ, ডিম ১ টি

কিমার জন্য:

মুরগির কিমা ১ কাপ, পেঁয়াজ কুচি ১ কাপ, টমেটো সস ১ টেবিল চামচ, কাঁচালঙ্কা কুচি ১ টেবিল চামচ, গোলমরিচ গুঁড়ো ১/২ চা চামচ, ঘি/মাখন ৩ টেবিল চামচ, দুধ ১/২ কাপ, ময়দা ১ চা চামচ, আদা রসুন বাটা ১ চা চামচ


কীভাবে বানাবেন

পুর তৈরির জন্য মুরগির কিমা উপরের সব উপকরণ দিয়ে কষিয়ে নিন। কিমা ভাজা ভাজা হয়ে গেলে এর মধ্যে ১ চা চামচ ময়দা দিয়ে ভালো করে সব নেড়ে মিশিয়ে নিন। ১/২ কাপ দুধ দিয়ে কিমা কিছুক্ষণ ঢেকে রাখুন। শুকিয়ে এলে নামিয়ে নিন।

বালুশাহী


কী কী লাগবে

১ কাপ ময়দা, ১/৪ কাপ টক দই, ৪ চা চামচ সাদা তেল, ১ চিমটি নুন, ১/৪ চা চামচ বেকিং সোডা, ১/২ চা চামচ বেকিং পাউডার

সিরার জন্য: ১ কাপ চিনি, ২ টো এলাচ




কীভাবে বানাবেন

ময়দা, নুন, সোডা, বেকিং পাউডার, তেল আর টকদই মিশিয়ে একটা ডো বানিয়ে নিতে হবে। এবার গোল গোল লেচি কেটে চ্যাপ্টা করে মাঝে একটু গর্ত করে দিতে হবে। ১ কাপ চিনি, ১ কাপ জল আর এলাচ দিয়ে সিরা বানিয়ে নিতে হবে। কড়াইতে তেল গরম করে লেচি গুলো মাঝারি আঁচে ভেজে রসে ভিজিয়ে ৩০ মিনিট রেখে, বাদাম কুচি ছড়িয়ে পরিবেশন করুন।

রত্না রহমান

হাতে মাখা ইলিশ


কী কী লাগবে

ইলিশ মাছ ৪ টুকরো, পেঁয়াজ কুচি ১/২ কাপ, লঙ্কা গুঁড়ো ১ চা চামচ, হলুদ গুঁড়ো ১ চা চামচ, কাঁচালঙ্কা ৪-৫ টা, সরষের তেল ৩ টেবিল চামচ, নুন ১/২ টেবিল চামচ, জল পরিমাণমতো


কীভাবে বানাবেন

কড়াইতে পেঁয়াজ কুচি, লঙ্কা গুঁড়ো, হলুদ গুঁড়ো, কাঁচালঙ্কা, সরষের তেল, নুন একসাথে চটকে কিছুক্ষন রাখুন। মজে নরম হলে ওর মধ্যে মাছ আর সামান্য জল মাখিয়ে ২০মিনিট রাখুন। কড়াই সহ আঁচে বসিয়ে ঢেকে রান্না করুন ১০ মিনিট। গরম ভাতের সঙ্গে খুব ভালো লাগে।

নারকেলি লতা


কী কী লাগবে

কচুর লতি ১ কাপ, নারকেল কোরা ২ টেবিল চামচ, হলুদ গুঁড়ো ১ চা চামচ, লঙ্কা গুঁড়ো ১ চা চামচ, পেঁয়াজ কুচি ২ টেবিল চামচ, রসুন কুচি ১ টেবিল চামচ, কাঁচালঙ্কা ৪-৫ টা, নুন স্বাদমতো, তেল ২ টেবিল চামচ, জল পরিমাণমতো, চিংড়ি মাছ ১/২ কাপ


কীভাবে বানাবেন

কচুর লতি জলে ভাপিয়ে ভালো করে জল ঝরিয়ে নিন। তেল গরম করে একে একে সব মশলা অল্প জল দিয়ে কষুন। এবার নারকেল কোরা দিয়ে অল্প আঁচে কষুন। কষানো হলে চিংড়ি মাছ গুলো দিয়ে ভালো করে কষে কচুর লতি দিয়ে নেড়েচেড়ে কাঁচালঙ্কা দিয়ে ১০ মিনিট দমে রেখে পরিবেশন করুন।

সারমিন সেলিম তুলি

ফ্রুট কাস্টার্ড


কী কী লাগবে

দুধ ১ লিটার, ডিমের কুসুম ২ টো, কাস্টার্ড পাউডার পরিমাণমতো, কিশমিশ ২ টেবিল চামচ, ফল (কলা, ডালিম, স্ট্রবেরী, আম আপেল, আঙ্গুর, চেরি) কিউব করে কাটা ২ কাপ


কীভাবে বানাবেন

ডিমের কুসুম গুলো ভালো করে ফেটিয়ে নিন। ওর মধ্যে কাস্টার্ড পাউডার মিশিয়ে রাখুন। দুধ জ্বাল দিয়ে ঘন করে ওর মধ্যে এই মিশ্রন ঢেলে অনবরত নাড়তে থাকুন। ফুটে উঠলে নামিয়ে ফ্রিজে রাখুন। পরিবেশনের সময় পছন্দমতো ফল মিশিয়ে ঠান্ডা ঠান্ডা পরিবেশন করুন।

ইলিশ মাছের কোরমা


কী কী লাগবে

ইলিশ মাছ ৪ টুকরো, ঘি ১ টেবিল চামচ, তেল ১/৪ কাপ, পেঁয়াজ কুচি ১/২ কাপ, নুন স্বাদ মতো, পেঁয়াজ বাটা ১/৪ কাপ, কাজুবাদাম বাটা দেড় টেবিল চামচ, লঙ্কা গুঁড়ো ১/২ চা চামচ, জিরা গুঁড়ো ১/২ চা চামচ, টকদই ১/৪ কাপ, কাঁচালঙ্কা ৪-৫ টা, দুধ ১/২ কাপ, চিনি ১ চা চামচ, বেরেস্তা ১/৪ কাপ


কীভাবে বানাবেন

প্যানে তেল ও ঘি একসাথে গরম করে পেঁয়াজ কুচি দিয়ে নাড়ুন। নরম হলে পেঁয়াজ বাটা দিয়ে কিছুক্ষণ নেড়ে বাদাম বাটা, জিরে গুঁড়ো, লঙ্কা গুঁড়ো, নুন ও সামান্য জল দিয়ে কষুন। তেল ভাসলে জল ঝরানো টকদই দিয়ে কষুন। এবার চেরা কাঁচালঙ্কা আর জল দিয়ে ফুটে উঠলে মাছগুলো দিয়ে ঢেকে ৪-৫ মিনিট রান্না করুন। উল্টে দিয়ে আরো ৪-৫ মিনিট রান্না করুন। দুধ আর চিনি মিশিয়ে ফুটতে দিন। বেশ গা মাখা হয়ে তেল ভেসে উঠলে বেরেস্তা ছড়িয়ে পরিবেশন করুন।

শিউলি খান

খাসির রেজালা


কী কী লাগবে

খাসির মাংস ১ কেজি, পেঁয়াজ কুচি আধ কাপ, ঘি ২ টেবিল চামচ, তেল ৩ টেবিল চামচ, দারচিনি ২-৩ টি, এলাচ ৪-৫ টি, তেজপাতা ২ টি, রসুন বাটা ১ চা চামচ, হলুদ গুঁড়ো ১ টেবিল চামচ, লঙ্কা গুঁড়ো ১ টেবিল চামচ, জিরা গুঁড়ো ১ চা চামচ,‌ ধনে গুঁড়ো ১ চা চামচ, টকদই ১/৪ কাপ, মিষ্টি দই ১/৪ কাপ, নুন পরিমাণমতো, আলুবোখারা ৪-৫ টি, বেরেস্তা আধ কাপ, কেওরা জল আধ চা চামচ, কাঁচালঙ্কা ৮-১০ টি, মালাই ২ টেবিল চামচ, কিশমিশ ১ চা চামচ, জয়ত্রী জায়ফল বাটা আধ চা চামচের কম


কীভাবে বানাবেন

কড়াইতে তেল গরম করে তাতে তেজপাতা, এলাচ্ দারচিনি ফোড়ন দিয়ে মাংস দিয়ে নাড়ুন। একে একে হলুদ গুঁড়ো, লঙ্কা গুঁড়ো, জিরে গুঁড়ো, ধনে গুঁড়ো, নুন, আদা রসুন বাটা, জয়ত্রি জায়ফল বাটা দিয়ে একঘন্টা ঢেকে অল্প আঁচে রান্না করুন। বেরেস্তা, কাঁচালঙ্কা, টকদই, মিষ্টি দই দিয়ে ঢেকে আরো আধঘন্টা রান্না করুন। সেদ্ধ হয়ে গেলে আলুবোখারা, কেওরা জল, মালাই, কিশমিশ ও ঘি দিয়ে আরো পাঁচ মিনিট ঢেকে রান্না করুন। তেল উপরে উঠে এলে গরম গরম পরিবেশন করুন।

আস্ত মুরগির দম


কী কী লাগবে

মুরগী ১ কেজি ওজনের একটি, পেঁয়াজ কুচি ২ টেবিল চামচ, পেঁয়াজ বাটা ২ টেবিল চামচ, আদা বাটা ১ টেবিল চামচ, রসুন বাটা ১ চা চামচ, জিরা বাটা ১/২ চা চামচ, ধনে বাটা ১/২ চা চামচ, গরমমশলা বাটা ১ চা চামচ, পোস্ত বাটা ১ চা চামচ, কাঠবাদাম বাটা ২ চা চামচ, শুকনো লঙ্কা গুঁড়ো ১ টেবিল চামচ, টকদই আধ কাপ, দুধের সর আধ কাপ, ঘি ১ টেবিল চামচ, নুন স্বাদ মতো, তেল ১ টেবিল চামচ


কীভাবে বানাবেন

কড়াইতে তেল গরম করে পেঁয়াজ লাল করে ভেজে নিন। সব মশলা দিয়ে মুরগী ম্যারিনেড করে ১ ঘন্টা ঢেকে রেখে কড়াইতে দিয়ে আধঘন্টা অল্প আঁচে ঢেকে রান্না করুন। সুন্দর সেদ্ধ হয়ে তেল উপরে উঠে এলে গরম গরম পরিবেশন করুন।

Comments


bottom of page