ধন শব্দের অর্থ 'সম্পদ', তেরাস শব্দের অর্থ 'ত্রয়োদশী'। কার্তিক মাসে কৃষ্ণপক্ষের ত্রয়োদশীতেই বাড়ির মঙ্গল কামনা, অর্থ চিন্তা দূর করতে ঘরে ঘরে ধনতেরাস পালন করা হয়। অনেকের মতে, ধনতেরাসে সোনা কিনলে সম্পদের দেবীকে লক্ষ্মী প্রসন্ন হন এবং মনে করা হয় এতে গৃহস্থের শ্রীবৃদ্ধি হয়।


পুরাণ মতে, সমুদ্রের ক্ষীরসাগর থেকে উঠে এসেছিলেন মহালক্ষ্মী। অমাবস্যার অন্ধকার থাকায় লক্ষ্মীকে বরণ করে স্বর্গে ফিরিয়ে নেওয়ার অনুষ্ঠানে আলোকমালায় সজ্জিত করা হয় স্বর্গকে। কালী অশুভ শক্তির বিনাশ ঘটান আর লক্ষ্মী ঘটান শ্রীবৃদ্ধি। ধনতেরসের পুজোর জন্য সূর্যাস্তের পর প্রদোষ কাল সবচেয়ে শুভ মুহূর্ত ধরা হয়।
পূজা বিধি:
ধনতেরাস পুজোয় সন্ধ্যায় উত্তর দিকে কুবের ও ধন্বন্তরীকে প্রতিষ্ঠা করুন। উভয়ের সামনে একমুখী ঘিয়ের প্রদীপ জ্বালান। কুবেরকে সাদা মিষ্টি এবং ধন্বন্তরীকে হলুদ মিষ্টি নিবেদন করুন। প্রথমে ওম হ্রীম কুবেরায় নমঃ জপ করুন। এরপর ধন্বন্তরী স্তোত্র পাঠ করুন এবং প্রসাদ খান। সুফল পেতে, দীপাবলির দিন কুবেরকে সম্পদের স্থানে রাখুন। পুজোর স্থানে ধন্বন্তরী প্রতিষ্ঠা করুন।

ধনতেরাস ২০২৪ কবে?
এবছর ধনতেরাস পড়েছে ২৯ অক্টোবর, মঙ্গলবার।
ত্রয়োদশী তিথি:
২৯ অক্টোবর সকাল ১০/৫৬/৭ মিনিট থেকে ৩০ অক্টোবর বেলা ১২/৫৯/৪২ মিনিট অবধি থাকে ত্রয়োদশী তিথি।
ধনতেরাসে পুজোর শুভ মুহুর্ত:
২৯ অক্টোবর সন্ধ্যা ০৬:৩১ থেকে রাত ০৮:১৩ পর্যন্ত, মোট ১ ঘণ্টা ৪১ মিনিট থাকবে ধনতেরাসে পুজো শুভ মুহুর্ত।
ধনতেরাসে কেনাকাটার শুভ মুহুর্ত:
ধনতেরাসে কেনাকাটার শুভ সময় সন্ধ্যা ০৫:৫৭ থেকে ০৭:৩৩ মিনিট অবধি।

ধনতেরাস এ পুজোর শুরু হলো কীভাবে?
রাজা হিমের ষোল বছর বয়সী পুত্রের জীবনে একটি অভিশাপ ছিল। বিয়ের চার দিনের মাথায় সাপের কামড়ে তাঁর অকালমৃত্যু হবে। তাই বিয়ের পরে ওই চতুর্থ রাতে নববধূ স্বামীকে ঘুমোতে দেননি। নানা রকম কৌশলে তাঁকে জাগিয়ে রাখেন। শোওয়ার ঘরের বাইরে প্রচুর ধন সম্পদ, সোনা-রুপোর গয়না, বাসন সাজিয়ে রাখেন তিনি। ঘরেও সব জায়াগায় প্রদীপ জ্বালিয়ে দেন। যাতে সাপ কোনও ভাবেই তাঁদের ঘরে ঢুকতে না পারে। স্বামীকে জাগিয়ে রাখতে সারারাত গল্প আর গানও শোনান তিনি। মৃত্যুর দেবতা যম তাঁর স্বামীকে নিয়ে যেতে আসেন, ঘরের দরজায় অত গয়নার জৌলুস এবং প্রদীপের আলোয় তাঁর চোখ ধাঁধিয়ে যায়। রাজপুত্রের শোওয়ার ঘর পর্যন্ত না গিয়ে ওই গয়নার উপর শুয়ে রানির গান আর গল্প শুনতে শুনতে বিভোর হয়ে পড়েন যম। পরে দিকভ্রান্ত হয়ে নিজের আস্তানায় ফিরে যান যমদেব। রক্ষা পান রাজকুমার। এই ঘটনার পরের দিন সেই আনন্দে সোনা-রুপো এবং আরও বিভিন্ন ধাতু কিনে উৎসব পালন করা শুরু হয় রাজপরিবারে। সেই থেকেই শুরু ধনতেরাস উৎসবের।

আলোর উৎসব দীপাবলি..
দীপাবলির অর্থ, দীপের সারি। অন্ধকারের ওপর আলোর বিজয়। মন্দের ওপর ভালোর এবং অজ্ঞতার ওপর জ্ঞানের জয়। ধনতেরস থেকে শুরু করে ভ্রাতৃদ্বিতীয়া পর্যন্ত চলে এই উত্সব। আলোর উত্সব দীপাবলি হিন্দু সম্প্রদায় ছাড়াও শিখ ও জৈন ধর্মাবলম্বীরাও পালন করে থাকেন।

দীপাবলির রাতে কেন জ্বালা হয় প্রদীপ?
অমাবস্যার রাতে চারদিকে নিকষ কালো অন্ধকার থাকে, আর এই অন্ধকার থেকে মুক্তি পেতে সনাতন ধর্মাবলম্বীরা ঘরবাড়ির সর্বত্র প্রদীপ জ্বালিয়ে আলোকিত করে রাখে। বিশ্বাস করা হয়, নিকষ অন্ধকারেই অশুভ আত্মা ও অশুভ শক্তি সক্রিয় হয়ে ওঠে। তাই এই অশুভ শক্তিকে দুর্বল করতে ঘরের প্রতিটি কোনায় বাতি বা প্রদীপ জ্বালানো হয়ে থাকে।
ভিন্নমতে, মহালয়া অর্থাৎ পিতৃপক্ষের অবসান এবং মাতৃপক্ষের শুভারম্ভ। এই সময় বিদেহী আত্মারা জল গ্রহণের জন্য মর্ত্যে আসেন। প্রচলিত বিশ্বাস অনুযায়ী, তাঁরা দীপাবলি পর্যন্ত মর্ত্যেই থাকেন। দীপাবলির অমাবস্যা তিথিতে ফের আত্মারা ফিরে যান স্বর্গলোকে। অন্ধকারে যাতে পিতৃপুরুষদের ফিরে যেতে কোনও অসুবিধা না হয়, তাই তাঁদের পথ আলোকিত করে রাখতেই ঘরে ঘরে জ্বালানো হয় প্রদীপ।

দীপাবলির রাতে কালীপুজো কেন হয়?
এই তিথির নাম তাই দীপান্বিতা অমাবস্যা। এই দিন মা কালীর আরাধনার পেছনে রয়েছে এক কাহিনী।
জানা যায়, ষোড়শ শতাব্দীতে নবদ্বীপের পণ্ডিত ও নব্যস্মৃতির স্রষ্টা রঘুনন্দন দীপান্বিতা অমাবস্যায় লক্ষ্মীপুজো করার নির্দেশ দেন। এর পরে ১৮ শতকে প্রকাশিত কালী সপর্যাসে প্রথম বার এই তিথিতে কালীপুজোর উল্লেখ পাওয়া যায়। অনেকের মতে, নবদ্বীপের প্রসিদ্ধ তান্ত্রিক কৃষ্ণানন্দ আগমবাগীশই বাংলায় কালীমূর্তি ও কালীপূজার প্রবর্তন করেন।
দীপাবলির ইতিহাসের সঙ্গে পুরাণের যে সব গল্প জড়িত,তার মধ্যে সবচেয়ে প্রচলিত রাম, সীতা ও লক্ষ্মণের অযোধ্যায় ফেরার কাহিনি। তবে এছাড়াও আরও অনেকগুলি গল্প জড়িত রয়েছে দীপাবলির সঙ্গে।

রামায়ণ এর কাহিনী অনুযায়ী:
দশেরায় রাবণ বধ করে দীপাবলিতেই অযোধ্যায় ফেরেন রাম, সীতা ও লক্ষ্মণ। তাঁদের স্বাগত জানাতেই প্রদীপ জ্বালিয়ে সাজানো হয় গোটা অযোধ্যা নগরী। ১৪ বছরের বনবাস কাটিয়ে, রাবণ বধ করে রামের ঘরে ফেরায় আলোর উত্সবে মেতে উঠেছিলেন অযোধ্যাবাসী। ত্রেতা যুগে আশ্বিন মাসের শুক্লপক্ষের দশমী তিথিতে রাবণকে হত্যা করেছিলেন রামচন্দ্র। এইদিনে বাঙালিরা বিজয়া দশমী পালন করেন। দেশের অনেক জায়গায় দশেরায় রাবণ বধ অনুষ্ঠিত হয়। এর পর অযোধ্যায় ফিরতে প্রায় ২০ দিন লাগে রাম, লক্ষণ ও সীতার। তাঁদের স্বাগত জানাতে আলোয় সাজানো হয় গোটা অযোধ্যা নগরী।
মহাভারতের কাহিনী অনুযায়ী:
ভূদেবী ও বরাহর পুত্র নরকাসুর খুব শক্তিশালী স্বর্গ ও মর্ত্য দখল করে প্রবল অত্যাচার শুরু করেন। শ্রীকৃষ্ণ নরকাসুরকে বধ করে তাঁর প্রাসাদে বন্দিনী ১৬,০০০ নারীকে উদ্ধার করেন। এদের সবাইকেই বিয়ে করে নেন কৃষ্ণ। কিন্তু মৃত্যুর আগে নরকাসুর কৃষ্ণের কাছ থেকে বর চেয়ে নেন যে তাঁর মৃত্যুর দিনটি যেন ধূমধাম করে পালিত হয়। এই দীপাবলিতেই নাকি নরকাসুরকে বধ করেছিলেন কৃষ্ণ।
জৈনধর্মে দীপাবলি:
জৈনধর্ম অনুযায়ী, দীপাবলিতেই নির্বাণ লাভ করেছিলেন মহাবীর। এছাড়াও মহাভারতে পাওয়া যায় যে বারো বছর বনবাস ও এক বছর অজ্ঞাতবাসের পর দীপাবলিতেই হস্তিনাপুরে ফিরে এসেছিলেন পাণ্ডবরা। সেই জন্য আলোর মালায় সাজানো হয়েছিল গোটা হস্তিনাপুরকে।
এবছর দীপাবলি কবে?
এই বছর দু-দিন ধরে পালিত হবে দীপাবলি। ৩১ অক্টোবর ও ১ নভেম্বর - এই দুদিন দীপ উত্সব চলবে। কালীপুজো পালিত হবে ৩১ অক্টোবর ২০২৪, বৃহস্পতিবার। কার্তিক অমাবস্যা তিথি শুরু হবে ৩১ অক্টোবর বেলা ৩টে ৫৫ মিনিটে। সেদিন রাতেই হবে মা কালীর আরাধনা। পরের দিন ১ নভেম্বর ২০২৪ শুক্রবার সকাল ৬টা ১৫ মিনিট পর্যন্ত চলবে অমাবস্যা। সেই দিনটিও পালিত হবে দীপাবলি হিসেবে। ভাইফোঁটা বা ভ্রাতৃ দ্বিতীয়ার শুভ অনুষ্ঠান উদযাপিত হবে ৩ নভেম্বর ২০২৪ রবিবারে।

ভাইয়ের জন্য জমিয়ে মাটন..
(ভাইফোঁটা স্পেশ্যাল ১০টি মাটনের রেসিপি)
কাশ্মীরি মাটন ইয়াখনি
কী কী লাগবেঃ
৫০০ গ্রাম মটন (হাড় সহ), ২ চামচ নিউট্রালাইট স্প্রেড, ৪টি ছোট এলাচ, ২ ইঞ্চি দারচিনি, ২টি তেজপাতা, ২টি শুকনো লাল লঙ্কা, ৩টি লবঙ্গ, ২ চামচ মৌরি, নুন স্বাদ মতো, ১-১/২ কাপ টক দই, ২ চামচ Shalimar's লাল লঙ্কা পাউডার, ১ চামচ Shalimar's হলুদ পাউডার, ১ চামচ আদা পাউডার, সামান্য জাফরান স্ট্যান্ড, ২ চামচ দুধ।

কীভাবে বানাবেনঃ
রান্না শুরু করার প্রথমেই মটন পিসগুলি ভালো করে ধুয়ে নিন। তারপর অন্তত ১০ মিনিট উষ্ণ নুন গরম জলে মটনগুলি ভিজিয়ে রাখুন। এদিকে একটি সস-প্যানে দুধ ভালো করে ফুটিয়ে নিন কয়েক মিনিট, তারপর তাতে জাফরান স্ল্যান্ড মিশিয়ে রেখে দিয়ে কিছুক্ষণ পর দেখবেন একটি সুন্দর রঙে পরিণত হয়েছে। দুধ সরিয়ে রাখুন, তারপর মাঝারি আঁচে প্রেসার কুকার বসিয়ে তাতে নিউট্রালাইট স্প্রেড গরম হতে দিন এবং তাতে এলাচ দানা, দারচিনি, তেজ পাতা, শুকনো লাল লঙ্কা এবং লবঙ্গ দিয়ে দিন। মশলাগুলি ফুটতে শুরু করলেই জলে ভিজিয়ে রাখা মাটনগুলি ভালো করে জল ছেঁকে প্রেসার কুকারে ঢেলে দিন। তারপর কয়েক মিনিট রান্না হতে দিন। এরপর, কয়েক মিনিট মটন রান্না হওয়ার পর ১/৩ কাপ জয় দই মিশিয়ে ঢেলে ভালো করে নাড়তে থাকুন যাতে মটনগুলিতে ভালো করে দই মিশে যায়। এরপর, লাল লঙ্কা পাউডার, হলুদ পাউডার, আদ্য পাউডার এবং জাফরান স্ট্র্যান্ড দেওয়া দুধ, রান্না করা মটনে ঢেলে দিয়ে প্রেসার কুকার বন্ধ করে ৩-৪টি সিটি পড়া পর্যন্ত অপেক্ষা করবেন। আঁচ বন্ধ করে কিছুক্ষণ রেখে কুকার খুলে নুন দেখে নেবেন, প্রয়োজনে নুন দিতে পারেন। সব ঠিক থাকলে নামিয়ে গরম ভাতের সঙ্গে পরিবেশন করে ফেলুন কাশ্মীরি মটন ইয়াখনি।

রেলওয়ে মটনকারি
কী কী লাগবেঃ
৫০০ গ্রাম মটন, ১ চামচ ধনে গুঁড়ো, ১ চামচ জিরা গুঁড়ো, ১ চামচ আদা বাটা, ২ চামচ রসুন বাটা, নুন স্বাদ মতো, ১ চামচ Shalimar's গরম মশলা গুঁড়ো, চিনি স্বাদ মতো, ১ চামচ Shalimar's কাশ্মীরি লাল লঙ্কা গুঁড়ো, ৩টি বড় পেঁয়াজ কুচানো, স্বাদ মতো কাঁচালঙ্কা কুচি, ধনে পাতা কুচি, ছোট এক বাটি নারকেল দুধ, ২ চামচ সরষে বাটা, ১ চামচ তেঁতুলের রস, Shalimar's সরষের তেল।

কীভাবে বানাবেনঃ
প্রথমে মটন প্রেসার কুকারে সেদ্ধ করে নিতে হবে। স্টক সমেত মটনগুলি আলাদা ভাবে রাখতে হবে। এবার কড়াইয়ে সরষের তেল দিয়ে রসুন কুচি দিয়ে অ্যারোমা বেরোলে একটু লাল ভাজা আসলে পেঁয়াজ কুচি দিয়ে হালকা ভাজতে হবে। এবার পেঁয়াজ ভাজা ভাজা হলে তাতে আদা বাটা দিয়ে নাড়াচাড়া করে সেদ্ধ করা মটন তুলে কড়াইতে দিয়ে দিন এবং মটন ফ্রাই হতে দিন, আর তাতে চিনি দিন যাতে ক্যারামালাইসড হয়ে একটি সুন্দর রঙ আসে রান্নায়। এরপর, একে একে মশলাগুলি দিতে থাকুন- জিরা গুঁড়ো, ধনে গুঁড়ো, কাশ্মীরি লাল লঙ্কা গুঁড়ো, গরম মশলা গুঁড়ো এবং নুন স্বাদ মতো। এবার ভালো করে মশলা সমেত মটন কষান। যখন দেখবেন তেল ছাড়ছে, অল্প অল্প করে মটন স্টক মেশান, আঁচ কমিয়ে মটন রান্না হতে দিন। মটন মাখা মাখা হয়ে এলে এতে নারকেল দুধ, তেঁতুলের রস, কাঁচালঙ্কা কুচি, সরষে বাটা দিয়ে ভালো করে নাড়াচাড়া করে ওপরে ধনে পাতা কুচি ছড়িয়ে কিছুক্ষণ ঢাকা দিয়ে গরম গরম পরিবেশন করুন "রেলওয়ে মটনকারি"।

মাটন বাংলা
কী কী লাগবেঃ
৪০০ গ্রাম মটন, ২টি পেঁয়াজ, ৫০ গ্রাম ফেটানো দই, ৩ চামচ টমেটো পিউরি, ১ চামচ আদা-রসুন বাটা, ২টি ছোট এলাচ, ৪টি লবঙ্গ, ১ ইঞ্চি দারচিনি, ১/২ চামচ Shalimar's হলুদ পাউডার, ১ চামচ Shalimar's ধনে পাউডার, ১ চামচ Shalimar's জিরা পাউডার, ১/২ চামচ গোলমরিচ পাউডার, ১ চামচ Shalimar's লাল লঙ্কা গুড়ো, ১ চামচ চারমগজ বাটা, চিনি স্বাদ মতো, ১/২ চামচ জায়ফল গুঁড়ো, ১/২ কাপ Shalimar's সরষের তেল, ২ চামচ ঘি, নুন স্বাদ মতো, ২টি ডিম (সেদ্ধ করে ভাজা), ৬-৮টি স্বাদ অনুযায়ী কাঁচা লঙ্কা।
কীভাবে বানাবেনঃ
মটনে অল্প ফেটানো দই ও লাল লঙ্কা গুঁড়ো ভালো করে মাখিয়ে কমপক্ষে আড়াই ঘন্টা ম্যারিনেট করে রাখুন। কড়াইতে সরষে তেল দিয়ে সেদ্ধ ডিম দুটি ছুরি দিয়ে আঁচড় কেটে লালচে করে ভেজে নিন। এবার ওই তেলে চিনি দিন যাতে রঙ ভালো হয়, চিনি ক্যারামালাইসড হলে গোটা গরম মশলা ফোড়ন দিন। এবার পেঁয়াজ বাটা দিয়ে সমানে নাড়াচাড়া করুন। পেঁয়াজ একটু ভাজা ভাজ্য হলে এতে আদা-রসুন-চারমগজ বাটা, চেরা কাঁচা লঙ্কা, ঘি, টমেটো পিউরি দিয়ে ভালো করে কষান। এবার মটনে বাকি ফেটানো দইটি দিয়ে দিন। নাড়াচাড়া করে স্বাদ মতো নুন দিন এবং একটু ঘি ছড়ান। অল্প আঁচে ঢাকা দিয়ে রাখুন। কষা হয়ে এলে পরিমাণ মতো উষ্ণ গরম জল ঢালুন। ঢাকা দিয়ে মটন সেদ্ধ হতে দিন। মটন পুরোপুরি সেদ্ধ হয়ে গেলে দুধে গুলে জাফরান ডিম চেরা কাঁচালঙ্কা দিয়ে গার্নিশিং করুন। সবশেষে, ওপরে ঘি ছড়ান। গরম ভাতের সঙ্গে পরিবেশন করুন "মাটন বাংলা"।

মাটন ডাকবাংলো
কী কী লাগবেঃ
১ কেজি মটন, Shalimar's সর্ষের তেল, ৩টি তেজ পাতা, ২টি দারচিনি, ৬টি ছোট এলাচ দানা, পাঁচফোড়ন আন্দাজ মতো, ৩০০ গ্রাম কুচানো পেঁয়াজ, ২৫ গ্রাম রসুন কিমা, ৫০ গ্রাম আদা বাটা, ২ চামচ Shalimar's হলুদ পাউডার, ২ চামচ Shalimar's লাল লঙ্কা গুঁড়ো, ১০০ গ্রাম ফেটানো দই, ২টি টমেটো কাটা, ২৫ গ্রাম ঘি, ১০ গ্রাম Shalimar's গরম মশলা পাউডার, ১/২ চামচ চিনি, নুন স্বাদ মতো, ২ পিস সেদ্ধ ডিম।
কীভাবে বানাবেনঃ
প্রথমে কড়াইতে তেল দিন। গরম হলে তেজপাতা, দারচিনি, এলাচ দানা, পাঁচফোড়ন দিন। সুগন্ধ বেরোলে এবং লালচে হলেই পেঁয়াজ কুচি দিন। পেঁয়াজ কুচি সোনালি হলেই রসুন কিমা দিয়ে ২মিনিট কষান। এরপর, আদা বাটা, টমেটো কুচি দিন। হালকা জলের ছিটা দিন। কিছুক্ষণ পর হলুদ, লাল লঙ্কা গুঁড়ো, দিয়ে ফেটানো দই দিন। মাংস দিয়ে নাড়াচাড়া করে, স্বাদ মতো নুন দিয়ে কষান। কষানো হয়ে এলে পরিমাণ মতো উষ্ণ গরম জল দিন। মাংস সেদ্ধ হলে জল টেনে মাখোমাখো হবে, এরপর চিনি দিন। কিছুক্ষণ নাড়াচাড়া করে ঘি ও গরম মশলা দিয়ে নামান। এবার সেদ্ধ ডিম দুটি হালকা করে ভেজে নিন। সার্ভ করার সময় ভাজা ডিম সেদ্ধ এবং পেঁয়াজের রিং দিয়ে গার্নিশ করে পরিবেশন করুন।

নারকেল মাটন
কী কী লাগবেঃ
৪০০ গ্রাম মটন (পিস করা), ১টি বড় পেঁয়াজ কুচানো, ১ চামচ আদা-রসুন বাটা, ১ কাপ টমেটো কুচানো, ৮টি লবঙ্গ, ৬টি গোটা গোলমরিচ, ১ ইঞ্চি দারচিনি, ১ চামচ মৌরি, ২টি বড় এলাচ দানা, ২টি তেজ পাতা, ৬টি কাঁচালঙ্কা কুচানো, ১ চামচ Shalimar's লাল লঙ্কা পাউডার, ১ চামচ Shalimar's হলুদ পাউডার, ১ কাপ কারি পাতা কুচি, ৩ চামচ অলিভ অয়েল, জল প্রয়োজন মতো, ২ চামচ দই, নুন স্বাদ মতো।
নারকেল পেস্ট বানাতেঃ
১ কাপ নারকেল কোড়া, ১/২ ইঞ্চি আদা, ৪ কোয়া রসুন, জল পরিমাণ মতো।
কীভাবে বানাবেনঃ
রান্নার আগে থেকেই মটন পিসগুলি ভালো করে ধুয়ে রাখতে হবে। এদিকে, নারকেল পেস্টটি বানিয়ে আলাদা বাটিতে রেখে দেবেন। এরপর, মটন পিসগুলি আদা-রসুন বাটা, - লাল লঙ্কা পাউডার, হলুদ পাউডার, দই, নুন, অল্প তেল দিয়ে ভালো করে ম্যারিনেট করে রেখে দিতে হবে অন্তত ১ ঘন্টা। এরপর, প্যানে তেল গরম করতে দিন। মাঝারি আঁচে লবঙ্গ, গোটা গোলমরিচ, দারচিনি, মৌরি, তেজ পাতা ও এলাচ দানা সব একসঙ্গে = ফ্রাই করে নিন। গোটা মশলাগুলি ফুটতে শুরু করলে তাতে পেঁয়াজ ও টমেটো কুচানো ঢেলে দিয়ে সাঁতলাতে থাকুন সুগন্ধ না বের হওয়া অবধি। এরপর, আদা-রসুন বাটা ঢেলে সেটিও সাঁতলাতে থাকুন কাঁচা গন্ধ না যাওয়া অবধি। কয়েক মিনিট সাঁতলানোর পর লাল লঙ্কা পাউডার, হলুদ পাউডার ও নুন মিশিয়ে ফের নাড়তে থাকুন। এই মিশ্রনে সামান্য জল যোগ করে তাতে ম্যারিনেট করা মটন পিসগুলি ঢেলে দিয়ে মাঝারি আঁচে সেদ্ধ হতে দিন। সেদ্ধ হওয়ার মাঝেই নারকেল পেস্টটি মিশিয়ে দিয়ে ভালো করে নেড়ে আরও ৫-১০ মিনিট রান্না হতে দিন। সেদ্ধ যেমন হবে, সেই মতো জল প্রয়োজনে মিশিয়ে রান্না হতে দেবেন প্যান ঢেকে। সবশেষে, মটন সেদ্ধ হয়ে গেলে আঁচ থেকে নামিয়ে পরিবেশন করে ফেলুন।

মাটন গলৌটি কাবাব
কী কী লাগবেঃ
৫০০ গ্রাম মটন (কিমা করা), ৩ চামচ পেঁপে পেস্ট, ২ চামচ Shalimar's জিরা পাউডার, ১ চামচ Shalimar's ধনে পাউডার, ১ চামচ Shalimar's গরম মশলা পাউডার, ১টি পেঁয়াজ কুচানো, ২ চামচ প্রতি আদা-রসুন বাটা, ১/৪ চামচ গোলমরিচ পাউডার, ২ চামচ বেসন, ১ - কাপ পুদিনা পাতা কুচি, ১ চামচ লেবু রস, ১ চামচ ঘি, নুন স্বাদ মতো, Shalimar's সর্ষের তেল।
কীভাবে বানাবেনঃ
- রান্নার আগেই মটন কিমাগুলি ভালো করে ধুয়ে জল ঝরতে দিতে হবে। জল ঝরে গেলে একটি বড় বাটিতে কিমা, লেবু রস, পেঁপে পেস্ট, ঘি ও নুন ভালো করে মেখে অন্তত ১০-১৫ মিনিট সরিয়ে রাখতে হবে। এদিকে, মিক্সার গ্রাইন্ডারে আদা-রসুন পেস্ট, বেসন, পুদিনা পাতা কুচি, জিরা পাউডার, ধনে পাউডার, গরম মশলা পাউডার ও গোলমরিচ পাউডার ও প্রয়োজনে জল যোগ করে সব একসঙ্গে নিয়ে একটি মিশ্রণ বানিয়ে নিতে হবে। এবারে ফের ১৫ মিনিট পর ম্যারিনেড করে রাখা কিমা ও মশলার মিশ্রণটি আরেকবার মিক্সার গ্রাইন্ডারে দিয়ে ভালো করে মসৃণ পেস্ট বানিয়ে নিতে হবে, যেটি কিনা অন্তত ৬-৮ ঘন্টা রেফ্রিজারেট করতে হবে যাতে মশলাগুলি ভালো করে কিমাগুলিতে শুষে নেয়। ৬-৮ ঘন্টা পর এই মিশ্রণটি বের করে একে একে হাতের তালুতে অল্প করে নিয়ে চ্যাপ্টা কাবাব বানিয়ে নিতে হবে। কাবাব বানানো হয়ে গেলে প্লেটে সাজিয়ে রাখুন, যাতে গায়ে গায়ে না লেগে যায়। প্যানে তেল গরম করতে বসান। ডিপ ফ্রাইয়ের জন্য তেল গরম হতে থাকলেই একেক করে কাবাবগুলি তেলে ছেড়ে দিন। প্রতি দিক অন্তত ১০মিনিট করে ফ্রাই করতে হবে। এভাবেই, সব কাবাব ফ্রাই হয়ে গেলে গরম গরম প্লেটে সাজিয়ে পেঁয়াজ রিং ও ধনে পাতা কুচি ছড়িয়ে পরিবেশন করুন সুস্বাদু মটন গলৌটি কাবাব।

মাটন রেজালা
কী কী লাগবেঃ
৫০০ গ্রাম মটন (পিস করা), ১ কাপ দই, ১/৪ কাপ পেঁয়াজ বাটা, ১ চামচ আদা বাটা, ১ চামচ রসুন বাটা, ১ চামচ নুন, ৩টি তেজ পাতা, ৪টি শুকনো লাল লঙ্কা, ৪টি গোটা গোলমরিচ, ১ ইঞ্চি দারচিনি, ৪টি লবঙ্গ, ৪টি ছোট এলাচ দানা, ১ চামচ ঘি।
কারি বানাতে যা লাগবেঃ
২ চামচ পেঁয়াজ বাটা, ২ চামচ পোস্ত (৪ চামচ জলে ভেজানো), ২ চামচ কাজু বাদাম বাটা, ১ চামচ তরমুজ বীজ বাটা, ১ চামচ জয়িত্রী, ১ চামচ চিনি, নুন স্বাদ মতো, ৪ চামচ ঘি।
কীভাবে বানাবেনঃ
রান্না শুরুর আগেই মটন পিসগুলি ভালো করে ধুয়ে রেখে দিন। তারপর একটি বড় বাটিতে মটন পিসগুলির সঙ্গে দই, পেঁয়াজ বাটা, আদা-রসুন বাটা ও নুন ভালো করে মেখে ম্যারিনেড করতে রেখে দিন ফ্রিজে অন্তত ১-২ ঘন্টা। এদিকে, প্রেসার কুকার আঁচে বসিয়ে তাতে ঘি গরম করতে দিন। ঘি গরম হলেই তাতে তেজ পাতা, শুকনো লাল লঙ্কা, গোটা গোলমরিচ, দারচিনি, লবঙ্গ, এলাচ দানা দিয়ে সাঁতলাতে থাকুন এবং দেখবেন হালকা ফুটতে থাকবে। তখনই, ম্যারিনেট করা মটন পিসগুলি কুকারে ঢেলে ৩-৪মিনিট নেড়ে হালকা ভাজা ভাজা করে নিন। এবারে, ১ কাপ জল ঢেলে নাড়তে থাকুন, এবং কুকারের ঢাকনা বন্ধ করে ৪-৫টি সিটি পড়া পর্যন্ত অপেক্ষা করুন, এতেই মটন হাফ সেদ্ধ হয়ে যাবে। হয়ে গেলে আঁচ বন্ধ করে দিন। এদিকে, ভেজানো পোস্তর একটি পেস্ট বানিয়ে নিতে হবে। তারপর একটি প্যানে বাকি ঘি গরম করতে দিয়ে তাতে পেঁয়াজ বাটা, পোস্ত পেস্ট, কাজু বাদাম বাটা, তরমুজ দানা বাটা সব ঢেলে অন্তত ২-৩ মিনিট সাঁতলাতে হবে। এরপর পুরো সাঁতলানো মশলাটি কুকারে ঢেলে নুন ও চিনি স্বাদ মতো মিশিয়ে ফের নেড়ে কয়েক মিনিট রান্না হতে দিন। কয়েক মিনিট পর আঁচ বন্ধ করে মটন রেজালা নামিয়ে পরিবেশন করে ফেলুন।

সাউথ ইন্ডিয়ান মাটন কারি
কী কী লাগবেঃ
১/২ কেজি মটন (পিস করা), ২টি পেঁয়াজ কাটা, Shalimar's সরষের তেল, ২ চামচ কারি পাতা।
পেস্ট বানাতে যা লাগবেঃ
৩ চামচ নারকেল কোড়া, ৪টি টমেটো কাটা, ১/২ কাপ ধনেপাতা কুচি, ৩টি কাঁচালঙ্কা, ৩টি শুকনো লাল লঙ্কা, ১ ইঞ্চি আদা, ৮ কোয়া রসুন, ২ চামচ পোস্ত, ১ চামচ ভাজা ছোলার ডাল, ১ চামচ সম্বার পাউডার, নুন স্বাদ মতো।

কীভাবে বানাবেনঃ
রান্নার প্রথমেই মটন পিসগুলি ভালো করে ধুয়ে রেখে দিতে হবে। একটি মিক্সার গ্রাইন্ডারে সব পেস্টের মশলাগুলি- নারকেল কোড়া, টমেটো, ধনে পাতা কুচি, কাঁচা লঙ্কা, শুকনো লঙ্কা, আদা, রসুন, ভাজা ছোলার ডাল, নুন ও সম্বার পাউডার আর সামান্য একটু জল নিয়ে ভালো করে একটি মসৃণ পেস্ট বানিয়ে নিতে হবে। - এরপর প্রেসার কুকার আঁচে বসিয়ে তাতে তেল গরম করতে দিন। তেল গরম হলেই তাতে কারি পাতাগুলি দিয়ে সাঁতলাতে থাকুন, দেখবেন ফাটতে শুরু করবে। তখনই, কাটা পেঁয়াজগুলি ঢেলে দিয়ে ফের সাঁতলাতে - থাকবেন যতক্ষণ না পেঁয়াজগুলি হালকা ব্রাউন হচ্ছে। পেঁয়াজগুলি ব্রাউন হতে থাকলে তাতে মশলার পেস্টটি ঢেলে দিন। মশলা পেস্টটি সাঁতলাতে থাকার সঙ্গে সঙ্গে দেখবেন তেল ছাড়তে শুরু করেছে, তখনই মটন পিসগুলি ঢেলে দিন। এরপর, ১-২ কাপ জল ঢেলে দিয়ে প্রেসার কুকার বন্ধ করে রান্না হতে দিন। ৪-৫টি সিটি পড়া পর্যন্ত রান্না হবে, তারপর আঁচ বন্ধ করে কিছুক্ষণ রেখে দিন। সবশেষে, সাউথ ইন্ডিয়ান মটনকারি গরম ভাতের সঙ্গে পরিবেশন করে ফেলুন।

মাটন রোগানজোশ
কী কী লাগবেঃ
৫০০ গ্রাম মটন (হাড় সহ পিস করা), ১ কাপ দই, নুন স্বাদ মতো, Shalimar's সরষের তেল।
গোটা মশলার উপাদানঃ
২টি বড় এলাচ দানা, ৪টি ছোট এলাচ দানা, ৪টি লবঙ্গ, ১ ইঞ্চি দারচিনি, ১টি তেজ পাতা, ১/২ চামচ গোলমরিচ পাউডার, ১ চামচ মৌরি পাউডার, ১/২ চামচ হিং, ২ চামচ Shalimar's কাশ্মীরি লাল লঙ্কা পাউডার।

ম্যারিনেড করতে যা লাগবেঃ
১ চামচ মৌরি, ১/৪ চামচ দারচিনি পাউডার, ১ চামচ Shalimar's কাশ্মীরি লাল লঙ্কা পাউডার, ১/২ চামচ গোলমরিচ পাউডার, ১/২ চামচ এলাচ পাউডার।
কীভাবে বানাবেনঃ
রান্না শুরুর আগেই মটন পিসগুলি ভালো করে ধুয়ে জল ঝরিয়ে রেখে দিন। এদিকে, ম্যারিনেট করার মশলাগুলি দিয়ে মটনগুলি ভালো করে ম্যারিনেট করে ফ্রিজে অন্তত ২ ঘন্টা রেখে দিতে হবে। এরপর, প্যানে তেল গরম করতে দিন। তেল গরম হলেই তাতে তেজপাতা ও গোটা মশলাগুলি দিয়ে সাঁতলাতে থাকুন। মশলাগুলি হালকা ফ্রাই হলেই ম্যারিনেট করা মটন ঢেলে দিয়ে ভালো করে নাড়তে থাকুন এবং হালকা ফ্রাই করবেন। এরপর, হিং মিশিয়ে ও ১ কাপ জল যোগ করে ভালো করে কষিয়ে প্যানের ঢাকনা দিয়ে রান্না হতে দিন যাতে মটনগুলি সেদ্ধ হয়। পাশে, একটি বাটিতে দই, লাল লঙ্কা পাউডার ও মৌরি পাউডার একসঙ্গে নিয়ে ভালো করে ফেটাতে থাকুন। এরপর, প্যানের ঢাকনা খুলে দই ফেটানো ঢেলে দিন ও স্বাদ মতো নুন মিশিয়ে ফের রান্না হতে দিন। সেদ্ধ হওয়া পর্যন্ত রান্না হতে দিন। সবশেষে, আঁচ বন্ধ করে ওপরে ধনে পাতা কুচি ছড়িয়ে নামিয়ে পরিবেশন করে ফেলুন।

মাটন ঘি রোস্ট
কী কী লাগবেঃ
৫০০ গ্রাম মটন (ধুয়ে পরিষ্কার করা), ১ চামচ তেঁতুল পেস্ট, ২ চামচ ঘি, কারি পাতা, ২ চামচ গুড়, নুন, স্বাদ মতো।
ম্যারিনেট করতে যা যা লাগবেঃ
১/২ কাপ দই, ১/২ চামচ Shalimar's হলুদ পাউডার, ১ চামচ লেবু রস, নুন স্বাদ মতো।
ঘি রোস্ট মশলা করতে যা যা লাগবেঃ
৬টি শুকনো লাল লঙ্কা, ২টি লবঙ্গ, ১ চামচ গোটা গোলমরিচ, ১ চামচ মেথি দানা, ২ চামচ ধনে, ১ চামচ জিরা, ৬
রসুন।

কীভাবে বানাবেনঃ
রান্না শুরুর প্রথমেই মটনগুলি ম্যারিনেট করে রেখে দিতে হবে। একটি বড় পাত্রে মটনগুলির সঙ্গে দই, হলুদ, নুন ও লেবু রস ভালো করে মাখিয়ে ৩০ মিনিট রেখে দিন। এরপর, ঘি রোস্ট মশলা বানাতে একটি প্যান মাঝারি আঁচে বসিয়ে তাতে শুকনো লাল লঙ্কা, গোটা গোলমরিচ, মেথি দানা, জিরা, এবং ধনে দানা দিয়ে অন্তত ৪-৬মিনিট সাঁতলাতে থাকুন যতক্ষণ একটি ভাজা সুগন্ধি না হয়। এবার আঁচ বন্ধ করে মশলাগুলি ঠাণ্ডা হতে দিন। এবার মিক্সার গ্রাইন্ডারে ভাজা মশলাগুলির সঙ্গে রসুন কোয়াগুলি, এবং তেঁতুল পেস্ট ও অল্প জল নিয়ে একটি মিশ্রন বানিয়ে একটি বাটিতে তুলে রাখুন। এরপর মটন ঘি রোস্ট বানাতে প্রেসার কুকারে ১/৪কাপ জল দিয়ে তাতে ম্যারিনেট করা মটনগুলি ঢেলে দিয়ে ৩-৪টি সিটি দিয়ে নামিয়ে রাখবেন। কিছু সময় পর মটনগুলি কুকার থেকে বের করে পাত্রে ঢেলে রাখুন। এবার, একটি কড়াই মাঝারি আঁচে বসিয়ে তাতে ঘি গরম করতে দিন। ঘি গরম হলেই তাতে কারি পাতাগুলি দিয়ে সাঁতলাতে থাকুন। কারি পাতাগুলি ফুটতে শুরু করলেই তাতে ঘি রোস্ট মশলা পেস্ট ঢেলে ৪-৬মিনিট সাঁতলাতে থাকুন মাঝারি আঁচে। সাঁতলানোর সময় যখন দেখবেন ওপরে ঘি ভেসে উঠছে তখনই সেদ্ধ করা মটনগুলি ঢেলে দিন এবং সঙ্গে সেদ্ধ মটনের ১/৪ কাপ স্টক মিশিয়ে দেবেন। এভাবে রান্না হতে দিতে হবে মটন ঘি রোস্ট যতক্ষণ না একটি গ্রেভি ডিশে পরিণত হয়। এরপর, রান্না হতে থাকা মটন ঘি রোস্টে ১ চামচ গুড় ও নুন স্বাদ মতো মিশিয়ে আরও ১০-১৫ মিনিট রান্না হতে দিন। ১৫ মিনিট পর আঁচ বন্ধ করে মটন ঘি রোস্ট নামিয়ে টেবিলে পরিবেশন করুন।
বাংলায় সতীপিঠ

পুরাণ অনুযায়ী, দেবী সতীর দেহত্যাগে পাগল হয়ে তাঁর দেহ কাঁধে নিয়ে মহাদেব তাণ্ডব শুরু করেছিলেন। সেই তাণ্ডবে জগৎ সংসার ধ্বংস হতে বসেছিল। উপয়ান্তর না দেখে ভগবান বিষ্ণু তাঁর সুদর্শন চক্র দিয়ে দেবীর দেহের ৫১টি খণ্ড করেন। সেই খণ্ডগুলি যেখান যেখানে পড়েছে সেগুলিই সতীপীঠ হিসেবে চিহ্নিত। এর মধ্যে পশ্চিমবঙ্গে রয়েছে মোট ১৩টি সতীপীঠ।
অট্টহাস: সতীর ওষ্ঠ পড়ায় এই জায়গার নাম অট্টহাস। লাভপুরের দক্ষিণদিহি গ্রামে অবস্থিত। শক্তিধামে দেবীর দুর্গরা নাম ফুল্লরা। মহাদেব এখানে বিশ্বেশর।
বক্রেশ্বর: দেবীর ভ্রুযুগলের মাঝের অংশ পতিত হয় এখানে। দুবরাজপুর স্টেশন থেকে ১১ কিমি দূরে অবস্থিত। শক্তিধামে দেবীর দুর্গার নাম মহিষমর্দিনী। মহাদেব এখানে বক্রনাথ।
কঙ্কালীতলা: বোলপুর স্টেশন থেকে ১০ কিমি উত্তর-পূর্বে কোপাই নদীর তীরে অবস্থিত কঙ্কালীতলা। বিশ্বাস অনুসারে, সতীর কঙ্কাল পড়েছে এখানে। দেবীর নাম এখানে দেবগর্ভা ও ভৈরব রুরু নামে প্রসিদ্ধ।
নন্দীপুর: সাঁইথিয়া স্টেশন থেকে ১.৫ কিমি দূরে এক বটবৃক্ষের তলে প্রচীরঘেরা জায়গা। এখানে পড়েছিল সতীর কণ্ঠহার। দেবীর নাম নন্দিনী। আর ভৈরবের নাম নন্দিকেশ্বর।
নলহাটি: নলহাটি স্টেশন থেকে ২ কিমি পশ্চিমে একটি টিলার ধারে অবস্থিত এই মন্দির। সতীর নলা পড়েছিল এখানে। শক্তিধামে দেবীর দুর্গরা নাম কালিকা দেবী। মহাদেব এখানে যোগেশ।
বহুলা: কাটোয়া থেকে ৮ কিমি দূরে কেতুগ্রামে অজয় নদীর ধারে অবস্থিত বহুলা। সতীর বামবাহু পড়ে এখানে। দেবীর নাম বহুলা। ভৈরবের নাম ভীরুক।

উজানী: গুসকরা স্টেশন থেকে ১৬কিমি দূরে উজানী বা কোগ্রাম। সতীর ডান কনুই পড়ে এখানে। দেবীর নাম মঙ্গল চণ্ডিকা আর ভৈরবের নাম কপিলাম্বর।
যুগাদ্যা: এটি অবস্থিত ক্ষীরগ্রামে। সতীর দক্ষিণ পাদাঙ্গুষ্ঠ পড়েছিল এখানে। দেবীর নাম যুগাদ্যা আর আর ভগবান শিব এখানে ক্ষীরখন্ডক।
ত্রিস্রোতা: জলপাইগুড়ির কাছে তিস্তা নদীর তীরে, বোদা অঞ্চলে শালবাড়ি গ্রামে। সতীর বামপদ পড়ে এখানে। দেবীর রাম ভ্রামরী, ভৈরবের নাম অম্বর।
কালিঘাট: শহর কলকাতার সবচেয়ে জনপ্রিয় মন্দির এটি। সতীপীঠ হিসেবেও খুব জনপ্রিয়। প্রচলিত বিশ্বাস, এখানে ছিটকে পড়েছিল সতীর ডান পায়ের পাতা। শিব এখানে নকুলিশ বা নকুলেশ্বর। দেবীর নাম কালিকা।

কিরীটকোণা: লালবাগ কোর্ট রোড স্টেশন থেকে ৩ কিমি দূরে অবস্থিত। সতীর কিরীট পড়ে এখানে। দেবীর নাম বিমলা। আর ভৈরবের নাম সংবর্ত।
বিভাস: তমলুকে অবস্থিত এই মন্দির। দেবীর নাম ভীমরূপা। আর মহাদেব শিবের নাম সর্বানন্দ।
রত্নাবলী: রত্নাকর নদীর ধারে খানাকুল কৃষ্ণনগরে অবস্থিত এই সতীপীঠ। সতীর দক্ষিণ স্কন্ধ পড়ে এখানে। দেবীর নাম কুমারী আর ভৈরবের নাম শিব।
দীপান্বিতা অমাবস্যায় দক্ষিণাকালীকা পূজিতা হন মহালক্ষ্মী রূপে..

দীপান্বিতা অমাবস্যায় সমস্ত শক্তিপীঠে আদ্যাশক্তির আরাধনা হলেও কালীঘাট মন্দির এক্ষেত্রে ব্যতিক্রম। ওইদিন সন্ধ্যায় গর্ভগৃহে বিরাজমান দক্ষিণাকালী সেদিন মহালক্ষী রূপে পূজিতা হন। আধুনিক কালীঘাট মন্দির তৈরি করেন সাবর্ণ রায়চৌধুরীর পরিবার। পরবর্তীকালে তাঁদের জ্ঞাতি গঙ্গাপ্রসাদ চক্রবর্তীকে মন্দির পরিচালনার দায়িত্ব দেন। এই গঙ্গাপ্রসাদ ছিলেন পরম বৈষ্ণব। মনে করা হয় গঙ্গাপ্রসাদের আমল থেকেই কালীপুজোর রাতে মহালক্ষ্মী বা ধনলক্ষ্মীর পুজো প্রচলিত হয়েছে।

কালীঘাট মন্দিরে প্রতিদিনই দুপুরে দেবীকে নিবেদন করা হয় অন্নভোগ। প্রতিদিনের মতোই এদিনও সকালে ফল, নৈবেদ্য নিবেদন করা হয়। দুপুরে মায়ের ভোগে থাকে শুক্তো, পাঁচ রকম ভাজা, সাদা ভাত, মাছের কালিয়া, পাঁঠার মাংস, পোলাও এবং পায়েস। এইদিন মন্দিরের সব সেবাইতের বাড়ি থেকে মায়ের জন্য বিশেষ ভোগ আসে। লক্ষ্মীপুজোর পর ফের দেওয়া হয় একপ্রস্ত ভোগ। কালীঘাটে নিত্য ছাগ বলি হয়। সেই মাংসই রান্না করে নিবেদন করা হয় মা কালীকে। তবে মা লক্ষ্মীকে যে ভোগ নিবেদন করা হয়, তাতে বলির মাংস থাকে না। সন্ধে নামতেই মন্দিরের চারদিকে সাত পাক ঘোরার পরে খড়ের পুতুলে আগুন ধরিয়ে দূর করা হয় অলক্ষ্মীকে। তারপর শুরু হয় মহালক্ষ্মীর পুজো। প্রথমে খই, নাড়ু, মুড়কি, মিষ্টি, ফল, লুচি, তরকারি দেওয়া হয় সন্ধ্যাবেলায় পুজোর সময়। পুজো শেষ হয়ে গেলে রাতে আরও একবার ভোগ নিবেদন করা হয়। তাতে থাকে খিচুড়ি, পোলাও, মাছ এবং পরমান্ন।

Comments