চটজলদি লাঞ্চ.. প্রেমে প্রথম ঝগড়া, সম্পর্কের টেস্ট নাকি ব্রেক? রান্নাঘরের উপকরণে ফেসপ্যাক.. স্ট্রেস কমানোর ১০টি টিপস.. রক্তের দোষ (দ্বিতীয় পর্ব)
- রোজকার অনন্যা
- Jul 3
- 18 min read
Updated: Jul 6
চটজলদি লাঞ্চ..
গরমে ঘেমে নেয়ে একসা হয়ে পঞ্চপদে থালা সাজানোর দিন আর নেই। কর্মরতা মহিলাদের জন্য নিজের কাজ সামলে গুছিয়ে রান্না বান্না যথেষ্ট'ই জটিল ব্যাপার। অথচ পেটে গামছা বেঁধে চললে তো আর দিন কাটবে না! ভালো লাগুক ছাই না লাগুক, রাঁধতে বাড়তে, খেতে খাওয়াতে, সব'ই করতে হবে। এসব ফালতু অজুহাত জিভ মানবে কেন?

এমন যদি হয়, একটিই এমন পদ রাঁধলেন যা খেয়ে পেট আর মন দুই খুশি হয়ে গেল আর আপনার সময় ও বাঁচলো! এইরকম কিছু খুব সাধারণ কিন্তু অসাধারণ স্বাদের জিভে জল আনা রেসিপি নিয়ে আমাদের এবারের সংকলন। রাঁধলেন দুজন অনন্যা, যারা সমান দক্ষতায় সামলান কর্মক্ষেত্রের পাশাপাশি নিজেদের হেঁশেল ও।
সংকলনে সুস্মিতা মিত্র
দেয়াসিনি রায়

ছাঁকা মসলায় ঝিঙে, পটল আর বড়ির ঝোল
কী কী লাগবে
ডালের বড়ি, কালোজিরা, কাঁচালঙ্কা, Shalimar's সরষের তেল, পটল, ঝিঙ্গা, সরষে, পোস্ত, দুধ, নুন, চিনি

কীভাবে বানাবেন
তেল গরম করে বড়ি ভেজে তুলে রাখবেন। সেই তেলেই কালোজিরা, কাঁচালঙ্কা ফোড়ন দিয়ে দেবেন আগে পটল তারপর ঝিঙ্গা। মিনিট কয়েক সাঁতলে নিয়ে দেবেন পরিমান মতো নুন আর গরম জল। এইবার একটা মসলা বানাবেন। এক বড়ো চামচ করে সরিষা ও পোস্ত, হাফ চামচের একটু কম কালোজিরা, এক কোয়া রসুন আর কয়েকটা কাঁচালঙ্কা মিহি করে বেটে নেবেন। এইবার এই মসলা একটা পাতলা কাপড়ে তলায় একটি পাত্র বসিয়ে ছেঁকে নেবেন। ঝোল যখন ফুটবে, এই ছাঁকা মসলা দিয়ে দেবেন। দেবেন আর ও কয়েকটা কাঁচালঙ্কা, হাফ কাপ দুধ, ও ভাজা বড়িগুলি। গ্যাসের ফ্লেম লো করে আর ও কিছুক্ষন হতে দেবেন। বড়ি ও সবজি গলে গেলে গ্যাস অফ করে ঢাকা দিয়ে রাখবেন। চিনি স্বাদ মতো।

দই আর কাজুবাটায় মাছ
কী কী লাগবে
কাতলা মাছ, তেজপাতা, Shalimar's Chef Spices গরম মশলা, Shalimar's Chef Spices জিরা, পেঁয়াজ, আদা, রসুন, কাঁচালঙ্কা, ক্যাপসিকাম, টকদই, কাজুবাদাম বাটা, ঘি

কীভাবে বানাবেন
মাছ নুন দিয়ে মেখে ভেজে তুলে নিন। হাল্কা ভাজা, কড়া নয়। ওই তেলেই তেজপাতা, থেঁতো করা গরম মশলা, সাদা জিরা ফোড়ন দিয়ে একে একে দিন পেঁয়াজ, আদা, রসুন, কাঁচালঙ্কা ও এক টুকরো ক্যাপসিকাম সব মিহি করে বাটা। মসলা দিয়ে তেল ভাসলে ফেটানো টকদই আর ঠিক এক চামচ কাজু বাটা। মসলা কষে এলে দিন গরম জল। ঝোল ফুটবলে ভাজা মাছ, গোটা কাঁচালঙ্কা। সবশেষে একটু শাহী গরম মশলা বাটা আর ঘি। ব্যাস রেডি। হাতায় করে দু একটা সিদ্ধ হওয়া কাঁচালঙ্কা ডলে দিন। বড় স্বাদ হয় এতে। নুন, চিনি প্রয়োজনমতো। পেঁয়াজের পরিমান এই রান্নায় বেশি হলে স্বাদ ভালো হয়।

মাছের ডিমের বড়ার টক
কী কী লাগবে
রুই মাছের ডিম, আম কুচি, বেসন, গোটা পাঁচফোড়ন, Shalimar's Chef Spices হলুদ গুঁড়ো, চিনি, নুন, Shalimar's সর্ষের তেল, সাদা ও কালো সর্ষে, কাঁচা লঙ্কা, খাবার সোডা

কীভাবে বানাবেন
মাছের ডিমে হলুদ, নুন, খাবার সোডা, বেসন দিয়ে মেখে রেখে দেবেন। তেল গরম হলে বড়া গুলো ভেজে তুলে নিন। পাঁচফোড়ন দিয়ে কাঁচা আম, নুন, হলুদ দিয়ে কষুন। সরষে বাটা জলে গুলে ছেঁকে নিয়ে কড়াইয়ে ঢেলে দিন। চিনি আর ভাজা মাছের ডিমের বড়া দিয়ে ফুটতে দিন। শেষে কাঁচা সরষের তেল ছড়িয়ে নামিয়ে নিন।

আলু, পনির আর ফুলকপির রসা
কী কী লাগবে
আলু, ফুলকপি, পনির, Shalimar's সাদা তেল, ঘি, জিরা, তেজপাতা, জয়িত্রী, গোটা গরম মশলা, গোবিন্দ ভোগ চাল, আদা বাটা, জিরা বাটা, Shalimar's Chef Spices কাশ্মীরি লঙ্কা গুঁড়ো, টমেটো বাটা, কাঁচালঙ্কা বাটা, কাজু কিসমিস বাটা, এলাচ বাটা, নুন, চিনি

কীভাবে বানাবেন
সাদা তেল গরম করে আগে ফুলকপি, আলু, আর পনির ভেজে তুলে নিন। তারপর বাকি তেলে এক চামচ ঘি মিশিয়ে ফোড়নে দিন দুটো তেজপাতা, গোটা জিরা, থেঁতো করা গরম মশলা, একটা ছোট জয়ত্রীর টুকরো, একটা শুকনোলঙ্কা আর সামান্য গোবিন্দভোগ চাল। তারপর দিতে হবে জিরা, আদা, টমেটো, কাঁচালঙ্কা বাটা, হলুদ গুঁড়ো আর কাশ্মীরি লঙ্কার গুঁড়ো। মসলা কিছুক্ষন কষিয়ে দিন কাজু-কিসমিস বাটা। এই সময় একটু খেয়াল রাখতে হবে। গ্যাসের ফ্লেম লো করে মসলা তেল ছাড়া অবদ্ধি নাড়তে হবে। তেল ভেসে উঠলে, ভাজা আলু আর ফুলকপি দিয়ে ভালো করে মিশিয়ে নিন। তারপর দিতে হবে পর্যাপ্ত গরম জল। আলু, ফুলকপি খানিক সেদ্ধ হয়ে এলে ভাজা পনির গুলো দিন। সবশেষে ঘি আর এলাচ বাটা দিয়ে নামিয়ে নিন। লবন আর চিনি প্রয়োজনমতো।

রবিবারের মাংস
কী কী লাগবে
মুরগীর মাংস, টকদই, পেঁপে, আলু, আদা বাটা, রসুন বাটা, Shalimar's Chef Spices কাশ্মিরী লঙ্কা গুঁড়ো, Shalimar's Chef Spices হলুদ গুঁড়ো, Shalimar's সরষের তেল, তেজপাতা, ছোট এলাচ, লবঙ্গ, দারচিনি, পেঁয়াজ কুচি, টমেটো কুচি, নুন, চেরা কাঁচা লঙ্কা
কীভাবে বানাবেন
মাংসে টকদই, আদা রসুন বাটা, কাশ্মিরী লঙ্কা গুঁড়ো, হলুদ গুঁড়ো মেখে রাখুন একঘন্টা। তেল গরম করে তেজপাতা, গোটা গরমমশলা ফোড়ন দিয়ে তাতে পেঁয়াজ কুচি, টমেটো কুচি, নুন, হলুদ গুঁড়ো দিয়ে মজতে দিন। মেখে রাখা মাংস দিয়ে কষুন। তেল ছাড়লে আগে থেকে ভেজে রাখা পেঁপে আর আলু দিয়ে আঁচ কমিয়ে ঢেকে রান্না করুন ১০ মিনিট। গরম জল, চেরা কাঁচা লঙ্কা, নুন, চিনি দিয়ে ঢেকে রান্না করুন। অন্য প্যানে ঘি গরম করে শুকনো লঙ্কা আর থেঁতো করা গরমমশলা নেড়ে মাংসে ঢেলে স্ট্যান্ডিং টাইমে রাখুন ১০ মিনিট। ভাত অথবা রুটির সঙ্গে পরিবেশন করুন।

কাতলা মাছ ভাতে
কী কী লাগবে
কাতলা মাছের বড় টুকরো, সর্ষে বাটা (সাদা-কালো মেশানো), আদা বাটা, টকদই, কাঁচালঙ্কা, নারকেল কোরা, কিশমিশ বাটা, Shalimar's Chef Spices হলুদ গুঁড়ো, Shalimar's সর্ষের তেল, নুন চিনি, মেথি

কীভাবে বানাবেন
প্রথমে মাছগুলো হালকা ভেজে তুলে রাখতে হবে। ভাজাটা ঐচ্ছিক। না ভাজলে, মাছ ১০ মিনিট, নুন, লেবুর রস দিয়ে মেখে রাখতে হবে। একটা আলাদা পাত্রে তেল গরম করে মেথি ফোড়ন দিয়ে, মেথি তুলে ফেলতে হবে। এবার মাছে সব মশলা (সর্ষে-আদা-নারকেল-কাঁচালঙ্কা, কিশমিশ বাটা, টকদই, নুন, চিনি) মেখে নিন। একটা টিফিন বক্সে কলাপাতা দিয়ে মাছের মিশ্রন ঢেলে ওপর দিয়ে মেথি ফোড়ন এর তেল ছড়িয়ে সাথে আরও কিছুটা কাঁচা তেল ও ৩-৪ টি চেরা কাঁচালঙ্কা দিতে হবে। সদ্য ফ্যান গালা গরম ভাত হাড়ি থেকে অর্ধেক ঢেলে তারমধ্যে টিফিন বক্স পুরে বাকি ভাত চাপা দিয়ে ঢেকে রেখে দিতে হবে ঘন্টা খানেক। ভাতের ভাঁপে রান্নাটা হবে। এছাড়াও কড়াইতে জল দিয়ে টিফিন বক্স বসিয়েও রান্নাটা করতে পারেন।

তনুজা আচার্য্য
হাঁসের ডিমের তেল ঝাল
কী কী লাগবে
হাঁসের ডিম, পেঁয়াজ, আদা বাটা, রসুন বাটা, টোম্যাটো, শুকনো লঙ্কা, কাঁচা লঙ্কা, Shalimar's Chef Spices কাশ্মীরি লঙ্কা গুঁড়ো, Shalimar's Chef Spices ধনে গুঁড়ো, Shalimar's Chef Spices হলুদ, Shalimar's Chef Spices জিরে গুঁড়ো, Shalimar's Chef Spices গরম মশলা গুঁড়ো, Shalimar's তেল, নুন, চিনি, টোম্যাটো সস, Shalimar's Chef Spices গোলমরিচ গুঁড়ো

কীভাবে বানাবেন
প্রথমে কড়াইতে তেল গরম করে শুকনো লঙ্কা ফোড়ন দিয়ে পেঁয়াজ কুচি দিয়ে ভাজুন। পেঁয়াজের গায়ে লাল রং ধরতে শুরু করলে প্রথমে সামান্য চিনি, পরে আদা বাটা ও রসুন বাটা দিন। এর পর একে একে হলুদ গুঁড়ো, কাশ্মীরি লঙ্কা গুঁড়ো, ধনে গুঁড়ো, জিরে গুঁড়ো আর চেরা কাঁচা লঙ্কা দিন। অন্য একটি পাত্রে জল গরম করুন। সেই ফুটন্ত জলে টোম্যাটো ভিজিয়ে রাখুন মিনিট পাঁচেক। এ বার টোম্যাটো জল থেকে তুলে খোসা ছাড়িয়ে নিন। খোসা ছাড়ানো টোম্যাটো এক বার মিক্সিতে বেটে নিন ভাল করে। এবার কড়াইয়ের গ্রেভিতে টোম্যাটো পিউরি দিন। টোম্যাটো সস দিয়ে এক কাপ জল দিন। মশলা কষতে থাকুন। গ্রেভি ফুটে তেল ছেড়ে এলে ডিমগুলো একে একে ফাটিয়ে আলতো করে ওই ফুটন্ত গ্রেভিতে দিয়ে দিন। উপর থেকে সামান্য নুন ও গোলমরিচ গুঁড়ো ছড়িয়ে দিন প্রত্যেকটি ডিমের উপরে। এ বার কড়াই চাপা দিয়ে রাখুন মিনিট পাঁচেক। তার পর ঢাকা খুলে সামান্য গরমমশলা গুঁড়ো ছড়িয়ে নামিয়ে নিন পোচের ঝাল।

সবজি দিয়ে মাছের ঝোল
কী কী লাগবে
রুই মাছ, পছন্দ মতো সবজি (আলু, ফুলকপি, গাজর, বিনস, সীম, টমেটো), নুন, Shalimar's Chef Spices হলুদ গুঁড়ো, জিরে বাটা, লঙ্কা বাটা, Shalimar's সরষের তেল, কালোজিরে, চেরা কাঁচালঙ্কা, ধনেপাতা কুচি

কীভাবে বানাবেন
মাছের টুকরো গুলো নুন হলুদ মেখে কিছুসময় রেখে হালকা ভেজে তুলে নিন।
ঐ তেলে কালোজিরে আর চেরা কাঁচালংকা ফোড়ন দিয়ে একে একে টুকরো করা আলু, ফুলকপি, নুন, হলুদ গুড়ো, জিরে বাটা, লংকা বাটা,টমেটো কুচি দিয়ে অল্প আঁচে কষুন। মশলা তেল ছাড়লে জল দিয়ে ফুটতে দিন। ভাজা মাছ দিয়ে আরো কিছু সময় রান্না করে ধনেপাতা কুচি মিশিয়ে নামিয়ে নিন। গরমভাতে গন্ধরাজ লেবু দিয়ে মেখে খান।

আলু আর সয়া চাঙ্ক কারি
কী কী লাগবে
সেদ্ধ সয়াবিন, ছোট ছোট টুকরো করে কাটা আলু, ফোড়নের এর জন্য শুকনো লঙ্কা, তেজপাতা, গোটা জিরে, আদাবাটা, টমেটো বাটা, Shalimar's Chef Spices লঙ্কা গুঁড়ো, Shalimar's Chef Spices হলুদ গুঁড়ো, Shalimar's Chef Spices জিরে গুঁড়ো, নুন, মিষ্টি স্বাদ মত, Shalimar's সরষের তেল, ধনেপাতা কুচি।
কীভাবে বানাবেন
ফ্রাইং প্যানে সরষের তেল গরম করে টুকরো টুকরো করে কাটা আলু ভাল করে ভেজে নিয়ে তুলে রাখতে হবে। ফ্রাইং প্যান এ একটু তেল দিয়ে ফোড়ন হিসাবে তেজপাতা, শুকনো লঙ্কা, গোটা জিরে দিতে হবে। আদাবাটা, টমেটো বাটা দিয়ে ভালো করে কষাতে হবে। কষানো হয়ে গেলে সমস্ত গুঁড়ো মশলাগুলো ভালো করে দিয়ে দিতে হবে। নুন, চিনি স্বাদমতো দিতে হবে। ভেজে রাখা আলুর টুকরো এবং সেদ্ধ করা সয়াবিন দিয়ে ভালো করে কষাতে হবে। সামান্য উষ্ণ জলদি খানিকক্ষণ ঢাকা দিয়ে দিতে হবে। ঢাকা খুলে উপর থেকে ধনেপাতা কুচি দিয়ে গরম গরম পরিবেশন করুন।

হাঁসের ডিমের ডালনা
কী কী লাগবে
হাঁসের ডিম, আলু, পেঁয়াজ কুচি, রসুন বাটা, আদা বাটা, টকদই, নুন, হলুদ গুঁড়ো, লঙ্কা গুঁড়ো, জিরে গুঁড়ো, সরষের তেল, গরমমশলা বাটা, ঘি, সাদা জিরা, গোটা গরম মশলা, তেজপাতা, শুকনো লঙ্কা
কীভাবে বানাবেন
ডিম আর আলু নুন হলুদ গুঁড়ো মেখে ভেজে তুলে নিন। তেজপাতা, শুকনো লঙ্কা, জিরা আর গোটা গরম মশলা ফোড়ন দিয়ে পেঁয়াজ কুচি ভাজুন। আদা বাটা, রসুন বাটা, টকদই, নুন, হলুদ গুঁড়ো, লঙ্কা গুঁড়ো, জিরে গুঁড়ো অল্প জল দিয়ে কষুন। পরিমাণ মতো জল, ডিম আর আলু দিয়ে ফুটতে দিন। বেশ ঘন হলে ঘি গরম মশলা গুঁড়ো মিশিয়ে নামিয়ে নিন।

তেল কই
কী কী লাগবে
কই মাছ ৫ টি, আদা বাটা ১ টেবিল চামচ, ১ টা মাঝারি মাপের টমেটো কুচোনো, জিরে বাটা ১ টেবিল চামচ, কালোজিরে ১ চা চামচ,
হলুদ গুঁড়ো ১ চা চামচ, লঙ্কা গুঁড়ো ১ চা চামচ, সরষের তেল ১ কাপ, নুন চিনি স্বাদ মত, ধনেপাতা কুচি, চিরে রাখা কাঁচালঙ্কা ৪ টি
কীভাবে বানাবেন
মাছে নুন হলুদ সরষের তেল মেখে রাখুন। কড়াইতে তেল গরম করে তাতে মাছগুলো হালকা ভেজে তুলে নিন। আরো একটু তেল দিয়ে কালো জিরে, কাঁচা লঙ্কা ফোঁড়ন দিয়ে এর মধ্যে একে একে আদা বাটা, টমেটো কুচি, জিরে বাটা, হলুদ গুঁড়ো, লঙ্কা গুঁড়ো দিয়ে ভালো করে কষাতে হবে। কষানো হয়ে গেলে ভেজে রাখা মাছ, নুন মিষ্টি আর গরম জল দিয়ে ঢেকে রান্না করুন। ঢাকা খুলে ওপরে ধনেপাতা কুচি, চিরে রাখা কাঁচালঙ্কা ছড়িয়ে গরম গরম পরিবেশন করুন তেল কই।

গন্ধরাজ ভাঁপা রুই
কী কী লাগবে
রুই মাছ, গন্ধরাজ লেবুর রস, গন্ধরাজ লেবু পাতা, গন্ধরাজ লেবুর জেস্ট, নুন, গোলমরিচ গুঁড়ো, কাঁচালঙ্কা বাটা, চিনি, টকদই, সর্ষের তেল
কীভাবে বানাবেন
মাছের গায়ে নুন, লেবুর রস আর গোলমরিচ গুঁড়ো মাখিয়ে রাখুন। অন্য একটি পাত্রে টকদই ফেটিয়ে নিন। ওর মধ্যে নুন, চিনি, সর্ষের তেল, গন্ধরাজ লেবুর জেস্ট, গোলমরিচ গুঁড়ো, কাঁচালঙ্কা বাটা মিশিয়ে মাছ গুলো মাখিয়ে নিন। স্টিলের টিফিন বক্সে পুরে ওপরে লেবুর স্লাইস, লেবুপাতা আর সরষের তেল ছড়িয়ে ভাপিয়ে নিলেই তৈরী।
প্রেমে প্রথম ঝগড়া, সম্পর্কের টেস্ট নাকি ব্রেক?
প্রেম মানেই কি শুধু হাসি, আড্ডা আর একরাশ ভালোবাসা? উত্তরটা যদি ‘হ্যাঁ’ বলি, তাহলে সেটি সম্পূর্ণ সত্য নয়। প্রেমে যেমন আনন্দ আছে, তেমনি আছে রাগ, অভিমান, কখনো সন্দেহ, আর সবশেষে ঝগড়া। প্রেমের প্রথম ঝগড়া অনেকের কাছে সম্পর্ক ভাঙনের প্রথম সিগন্যাল হলেও, মনোবিদরা বলছেন এই প্রথম ঝগড়া আসলে সম্পর্কের সবচেয়ে বড় পরীক্ষা। এই পরীক্ষায় যদি দুজন ভালোভাবে পাশ করে যেতে পারে, তাহলে সেই সম্পর্ক হয় আরও গভীর, আরও দৃঢ়।

প্রথম প্রথম প্রেমে পড়লে দুজনই একে অপরের সবকিছুতেই সুন্দর খুঁজে পায়। একে অপরের খারাপ দিকগুলো তখন চোখে পড়ে না বা পড়লেও মেনে নেওয়া সহজ হয়। কিন্তু কিছুদিন যেতে না যেতেই ব্যক্তিত্বের পার্থক্য, ইগো, ছোটখাটো ভুল বোঝাবুঝি থেকে তৈরি হয় প্রথম ঝগড়া।
কিছু সাধারণ কারণ:
বারবার ফোন না ধরা বা মেসেজের রিপ্লাই না দেওয়া
অন্য বন্ধুদের সঙ্গে বেশি সময় কাটানো
ছোট বিষয় নিয়ে ভুল বোঝাবুঝি
অতিরিক্ত কেয়ার করা বা সন্দেহ করা
এই কারণগুলো ছোট হলেও প্রথম প্রেমের কাছে এগুলোই হয় মহা বড় সমস্যা।

প্রথম ঝগড়া মানেই কি সম্পর্ক শেষ?
একদম নয়! সম্পর্ক শেষ হবে কিনা, তা নির্ভর করে ঝগড়া মিটিয়ে নেওয়ার পদ্ধতির ওপর। ঝগড়া করতে গিয়ে যদি কেউ কারো মন ভেঙে দেয়, অসম্মান করে, তখন সম্পর্ক ভাঙার সম্ভাবনা বাড়ে। আর যদি দুজন মিলে ঠাণ্ডা মাথায় সমস্যার সমাধান খুঁজে নেয়, তাহলে সম্পর্কের বন্ধন আরও মজবুত হয়।
একটি সুন্দর কথাই আছে, “প্রেমে ঝগড়া না হলে প্রেমটা ঠিক পূর্ণ হয় না!”
কীভাবে সামলাবেন?
ঠাণ্ডা মাথায় কথা বলুন: রাগের মাথায় কোনো কথাই না বলা ভালো। ঝগড়ার পর কিছুক্ষণ একা থাকুন, তারপর শান্ত হয়ে কথা বলুন।
ভুল স্বীকার করুন: যদি আপনার ভুল হয়, দেরি না করে সরি বলুন। সরি বলার জন্য অহংকার রাখবেন না।
অন্যকে বোঝার চেষ্টা করুন: আপনার সঙ্গীর কথাও মন দিয়ে শুনুন। কী কারণে সে রেগেছে বা অভিমান করেছে, বুঝে নেওয়ার চেষ্টা করুন।
পুরনো কথায় না যান: অনেকেই ঝগড়ার সময় পুরনো দুঃখের কথা টেনে আনে। এটা একেবারেই করবেন না।
মারধর বা গালাগালি নয়: রাগ যতই হোক, শারীরিক বা মানসিক আঘাত কখনোই না।

প্রথম ঝগড়া থেকে সবার আগে শেখা উচিত একে অপরকে বোঝা, গ্রহণ করা আর ক্ষমা করতে শেখা। এই প্রথম ঝগড়াই শেখায়, কীভাবে সমস্যার সমাধান করতে হয়, কীভাবে সম্পর্ককে টিকিয়ে রাখতে হয়। অনেক সম্পর্ক প্রথম ঝগড়ার পরই ভেঙে যায়, আবার অনেকে প্রথম ঝগড়ার পর আরও কাছাকাছি চলে আসে। আসলে সম্পর্কের শক্তি বোঝা যায় এমন টেস্টেই।
সম্পর্ক টিকিয়ে রাখার জন্য কিছু স্পেশাল টিপস:
✔️ প্রতিদিন অন্তত ১০ মিনিট খোলামেলা কথা বলুন।
✔️ একে অপরের কাজের প্রশংসা করুন।
✔️ ছোটখাটো সারপ্রাইজ দিন একটা মেসেজ, ছোট চকলেট, অথবা ছোট চিঠি।
✔️ সোশ্যাল মিডিয়াতে কম আর রিয়েল লাইফে বেশি কানেক্টেড থাকুন।
✔️ ভুল বোঝাবুঝি হলে তৃতীয় কাউকে না জানিয়ে নিজেরা মিটিয়ে ফেলুন।

প্রেমের পথ কাঁটায় ভরা, তবে সেই কাঁটাগুলো যত্ন করে সরিয়ে ফেলতে পারলে তবেই ফুল ফোটে। তাই প্রেমে প্রথম ঝগড়া হলে ভয় পাবেন না, বরং একে অপরের হাত শক্ত করে ধরে রাখুন। ভুল-ভ্রান্তি দূর করুন, দুষ্টুমি করুন, আবার নতুন করে প্রেমে পড়ুন। কারণ প্রেম মানেই তো একসাথে সব কিছু ভাগ করে নেওয়া সুখও, দুঃখও!
১০ মিনিটে হ্যান্ডমেড ফেসপ্যাক রান্নাঘরের উপকরণে!
যতই দামী কসমেটিক্স আসুক, ত্বকের যত্নের জন্য রান্নাঘরের জিনিসই এখনও অনেকের ভরসা। কারণ এগুলো প্রাকৃতিক, রাসায়নিকমুক্ত আর একদম হাতের কাছে। অফিস, বাড়ির কাজ, দূষণ আর গরমে ত্বক যখন ক্লান্ত তখন ঘরের অল্প কিছু উপকরণেই ত্বক আবার প্রাণ ফিরে পেতে পারে। আজ রইল এমন ৫টি সহজ হ্যান্ডমেড ফেসপ্যাক যা মাত্র ১০ মিনিটেই বানিয়ে নিতে পারবেন!

১. মধু-দই ফেসপ্যাক: ত্বক হাইড্রেট করতে
যা লাগবে:
১ চামচ টক দই
১ চামচ বিশুদ্ধ মধু
কীভাবে ব্যবহার করবেন:দই আর মধু ভালোভাবে মিশিয়ে মুখে ও গলায় লাগান। ১০-১৫ মিনিট রেখে হালকা কুসুম গরম জলে ধুয়ে ফেলুন। এটি ত্বককে ময়শ্চারাইজড আর কোমল রাখে।

২. কলা-দুধ ফেসপ্যাক: শুষ্ক ত্বকের জন্য
যা লাগবে:
অর্ধেক পাকা কলা
২ চামচ দুধ
কীভাবে ব্যবহার করবেন:কলা ভালোভাবে চটকে দুধ মিশিয়ে মুখে লাগান। শুকিয়ে গেলে ঠান্ডা জল দিয়ে ধুয়ে ফেলুন। শুষ্ক ত্বকের জন্য এটি দারুণ প্রাকৃতিক ফেসপ্যাক।
৩. বেসন-হলুদ ফেসপ্যাক: উজ্জ্বল ত্বকের জন্য
যা লাগবে:
২ চামচ বেসন
১ চিমটি হলুদ
সামান্য কাঁচা দুধ বা গোলাপ জল
কীভাবে ব্যবহার করবেন:সব উপকরণ মিশিয়ে পেস্ট বানান। মুখে লাগিয়ে হালকা ম্যাসাজ করুন, শুকালে ঠান্ডা জল দিয়ে ধুয়ে ফেলুন। এটি ত্বকের কালচে ভাব দূর করতে সাহায্য করে।
৪. লেবু-চিনি স্ক্রাব ফেসপ্যাক: মৃত কোষ দূর করতে
যা লাগবে:
১ চামচ লেবুর রস
১ চামচ চিনি
কীভাবে ব্যবহার করবেন:মিশিয়ে হালকা হাতে মুখে স্ক্রাব করুন ২-৩ মিনিট। তারপর ঠান্ডা জল দিয়ে মুখ ধুয়ে ফেলুন। এটি ত্বকের ডেড সেল দূর করে গ্লো দেয়।

৫. টমেটো-দই ফেসপ্যাক: সানট্যান দূর করতে
যা লাগবে:
১ চামচ টমেটোর রস
১ চামচ টক দই
কীভাবে ব্যবহার করবেন: টমেটোর রস আর দই মিশিয়ে মুখে লাগান। ১৫ মিনিট পর ধুয়ে ফেলুন। এটি রোদে পোড়া দাগ হালকা করতে দারুণ কাজ করে।
ব্যবহারের আগে যেটুকু মনে রাখবেন:
✔️ মুখে ফেসপ্যাক লাগানোর আগে মুখ পরিষ্কার করে নিন।
✔️ প্রথমবার ব্যবহার করার আগে হাতে প্যাচ টেস্ট করুন।
✔️ খুব সেনসিটিভ ত্বক হলে ডার্মাটোলজিস্টের পরামর্শ নিন।
✔️ ফেসপ্যাক লাগিয়ে চোখ আর ঠোঁটের অংশ এড়িয়ে চলুন।
✔️ ফ্রেশ ফেসপ্যাক তৈরি করে সঙ্গে সঙ্গে ব্যবহার করুন, পরে রেখে না দিন।
সুন্দর ত্বক পাওয়ার জন্য বড়ো ব্র্যান্ডের প্রোডাক্টই সব নয় দরকার সঠিক উপকরণ আর নিয়মিত যত্ন। সময় কম থাকলেও রান্নাঘরের অল্প কিছু জিনিসেই ত্বককে দিতে পারেন নতুন উজ্জ্বলতা আর প্রাণ। তাই আর দেরি নয় আজই ট্রাই করুন আপনার পছন্দের ফেসপ্যাক আর থাকুন তাজা, ফ্রেশ আর ন্যাচারালি গ্লোয়িং!

স্ট্রেস কমানোর ১০টি সহজ টিপস..
(ব্যস্ত দিনেও মনের শান্তির জন্য দরকার এই কৌশলগুলো)

১. দিনের একটা ছোট্ট সময় শুধু নিজের জন্য রাখুন। ফোন, টিভি, কথা সব বন্ধ করে চোখ বন্ধ করুন। নিঃশ্বাস নিন, ছাড়ুন। দেখবেন মন অনেক হালকা লাগছে।
২. দিনে অন্তত এক ঘণ্টা ফোন, ল্যাপটপ থেকে দূরে থাকুন। সোশ্যাল মিডিয়ার অতিরিক্ত স্ক্রলিং স্ট্রেস বাড়ায় তাই একটু বিরতি দিন।
৩. ৫ মিনিট ধরে ধীরে ধীরে শ্বাস নিন এবং ছাড়ুন। এটা সোজা মনে হলেও, স্ট্রেস কমাতে অসাধারণ কাজ করে।
৪. হালকা ব্যায়াম বা গান চালিয়ে একটু নাচ শরীরে এন্ডরফিন হরমোন তৈরি হয় যা মুড ভালো করে। প্রতিদিন অন্তত ২০ মিনিট হাঁটার অভ্যাস করুন।

৫. মিউজিক থেরাপি এখন বৈজ্ঞানিকভাবে প্রমাণিত উপায় স্ট্রেস কমানোর। হালকা, শান্তিপূর্ণ মিউজিক প্লে করে চোখ বন্ধ করুন মুড অনেক ভালো হবে।
৬. পছন্দের বই পড়ুন, রান্না করুন, পেইন্ট করুন, গাছের যত্ন নিন যেটা করলে আপনার মন ভালো লাগে, সেটাই করুন।
৭ .নেগেটিভ চিন্তা এলেই নিজেকে বলুন “এই মুহূর্তটা কেটে যাবে।” পরিস্থিতিকে অন্য দিক থেকে দেখার চেষ্টা করুন।
৮. অপর্যাপ্ত ঘুম মানেই স্ট্রেস বাড়ানো। প্রতিদিন ৭-৮ ঘণ্টা ভালো ঘুম হলে মন শান্ত থাকে, মেজাজ ভালো থাকে।

৯. মনের কথা খুলে বললে চাপ অনেকটাই কমে যায়। মনের ভেতরের কথাগুলো বিশ্বাসযোগ্য কাউকে বলুন দেখবেন আপনি হালকা অনুভব করছেন।
১০. সব কিছুতে হ্যাঁ বললে চাপ বাড়ে। নিজের সীমা বোঝা আর “না” বলা এটা নিজেকে ভালো রাখার অন্যতম উপায়।
মাঝে মাঝে লিখে ফেলুন আপনার অনুভূতি (জার্নালিং)
চিনি ও ক্যাফেইন একটু কম খেতে চেষ্টা করুন
Meditation বা Guided Relaxation ভিডিও দেখতে পারেন ইউটিউবে
স্ট্রেস থাকবে এটিই স্বাভাবিক। কিন্তু সেটাকে কীভাবে সামলানো যায়, সেটাই আসল আর্ট। নিজের প্রতি সদয় হোন, সময় দিন, ভুল করলেও ক্ষমা করে দিন। জীবনটা অনেক সুন্দর শুধু একটু থেমে, একটু নিঃশ্বাস নিয়ে তা উপভোগ করুন।

ডায়রির কথা শুনে রূপসার ভেতরেও একটা উত্তেজনা হয়েছিল। মিলির ভেতরে অনেক চাপা দুঃখ আছে তা সে বুঝতে পারছিল। হয়তো সেও কেয়াকে ভীষণ ভালবাসত। সমাজের চাপে প্রকাশ করতে পারেনি। তার মৃত্যু হয়তো তাকে সত্যিই কষ্ট দিয়েছিল কিন্তু প্রকাশ করার অনুমতিটুকু পায়নি। বাড়িতে এসে রূপসার মনে হল একটু এদের ফেসবুকের প্রোফাইল চেক করলে কেমন হয়। মিলি শানুরটাই পেল। মিউচুয়াল ফ্রেন্ড হিসেবে ঋতেশ স্যরকেও খুঁজে পেয়ে গেল। কৌতূহল একটু ছিলই মানুষটা সম্বন্ধে। প্রোফাইল খুলে দেখল এখন সে বিবাহিত। বেশ স্টাইলিশ এক যুবতীর সঙ্গে সমুদ্রসৈকতে বেশ রোম্যান্টিক মুডে কিছু নয়নাভিরাম ছবি। মানে সেরকম ছবি যাতে ফেসবুক পাবলিক লাইক কমেন্টে ভরিয়ে দেয়। চাকরি জায়গা দেখল সরকারি চাকরি। রাজত্ব রাজকন্যা পেয়ে গিয়ে বোধহয় মিলিকে ছেড়ে দিয়েছে। মিলির বাবার অর্থনৈতিক অবস্থা যে ভাল নয় তা শানুকে পড়াতে এসেই নিশ্চয়ই বুঝেছিল। আরও ঋতেশের প্রোফাইলটা ঘাঁটতে শুরু করল এই আশায় যদি কোনও মিউচুয়াল ফ্রেন্ড বা রূপসার

অবিশ্বাস্যভাবে একটা কমেন্টের লাইকে তার ক্লায়েন্ট রুপালিকে দেখতে পেল।
কিন্তু তাকে দিয়ে রূপসার কাজ হবে না। আরও একটু ধরে ধরে দেখার পর তার বোনের এক বন্ধুকে মনে হল সে শনাক্ত করতে পারল। ঋদ্ধিমা।
আপাতত তার কাজ তাহলে তিনটে। এক, বোনকে ফোন করে ঋদ্ধিমার সঙ্গে যোগাযোগ করা। দুই, ডায়রি সংগ্রহ যেটা সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ এবং তিন,
শানুর সঙ্গে কথা বলা। চার, বেশকিছু প্রশ্ন মনে জেগেছে সেগুলো অশেষ মহন্ত ওরফে মলয়কে জিজ্ঞেস করা।
প্রথম কাজটা সারতে রূপসা তার বোন রুক্মিণীকে ফোন করল। রুক্মিণী কথা দিল সে খোঁজখবর নিয়ে জানাবে নিশ্চিত। শানুকে একটা মেসেজ করে রাখল যে তার অবসর সময়ে যেন রূপসাকে একবার ফোন করে নেয়। শানু বেশ অ্যাক্টিভ দেখা গেল। শানু সঙ্গেসঙ্গে জবাব দিল। বিকেল চারটের পর সে ফাঁকা। ভেবেচিন্তে রূপসা পরদিন সন্ধে ছ'টা নাগাদ ওই ক্যাফেতেই সাক্ষাৎ করবে বলে জানাল। আর মিলিকেও জানিয়ে দিল আগের দিনের মতো ওই সময়ে সে ক্যাফেতে তার জন্য অপেক্ষা করবে।
(8)

মিলি ডায়রিটা নিয়ে আসবে বলে একটা হালকা উত্তেজনা অনুভব করছিল রূপসা। আজ সেইজন্যে মলয়ের কাছে যাওয়াটাও স্থগিত রেখেছে। আর একটা প্রশ্ন তাকে কেবল ভাবাচ্ছে যে কেয়ার গয়নাগুলো গেল কোথায়? খুনি আর চোর কি আলাদা ব্যক্তি? এই দুটোর কি কোনও যোগসূত্র আছে? এই চিন্তার মাঝেই ক্যাফের মেয়েটা অর্ডার নিতে এল। সে এক প্লেট ফিশ ফিঙ্গার আর দুটো কফি নিয়ে এল। একটু বাদেই দরজা ঠেলে ঢুকল মিলি। এসেই ধপাস করে তার সামনের কুশন দেওয়া
বোতল বের করে ঢকঢক করে জল খেল। ওকে দেখেই মনে হচ্ছে যে বেশ উত্তেজনায় রয়েছে। সঙ্গে ভয়।
আপনাকে ডায়রিটা দিয়ে দিলে আমি নিশ্চিন্ত। আমার দায় শেষ।
কেন কিছু হয়েছিল নাকি।
আমি তো থাম্মার ঘরটায় শুই। কাকাই কাকিমার ঘর তালা দেওয়াই থাকে। গতকাল ওই ঘর তোলপাড় করে কেউ যেন কি খুঁজেছিল।
মোড়াটায় বসল আর নিজের ব্যাগ থেকে
এই ডায়রি হতে পারে কি?
জানি না।
তুমি কি আগেই এটা সরিয়ে রেখেছিলে?
হ্যাঁ, ওই মর্মান্তিক ঘটনার
পরই আমি গাম্মার আলমারির গুপ্ত লকারে লুকিয়ে রাখি। এই ডায়রির কথা আমি আর কাকিমা ছাড়া কেউ জানত না।

তোমার কাকাও না?
না।
তুমি নিশ্চিত?
হান্ড্রেড পারসেন্ট।
দেখি বার করো দেখি ডায়রিটা।
আর চারটে সাধারণ দিনলিপি
লেখার ডায়রির মতোই এটা কিন্তু কেবল দু'এক জায়গায় ছন্দের আড়ালে আসল কথাগুলো বলা।
তুমি তার মানে পড়েছ?
ধীরে ধীরে মাথা নাড়ল মিলি।
মুখে-চোখে বিষণ্ণতার রেশ। রূপসার কেমন মায়া পড়ে গেল মেয়েটার প্রতি।
নাও। ফিশ ফিঙ্গার খাও। আর এক প্লেট অর্ডার দিই দাঁড়াও।
না না, এতেই হয়ে যাবে।
আপনি বরং ফোন করে আমাকে জানাবেন আপনি কি কি উদ্ধার করতে পারলেন।

এ তো সময় লাগবে পড়তে। তবে ডায়রিটা আশা করি কাজে লাগবে। অনেক তথ্য জানা যাবে।
হয়েছে?
আপনার সঙ্গে শানুর কথা
না, আজ বিকেলে দেখা হবে।
এতক্ষণ তাহলে কি করবেন?
এই ডায়রিটা পড়ব।

সেটাই ভাল হবে। আমি মলাট দিয়ে এনেছি যাতে আপনি পড়লেও কেউ বুঝতে না পারে আপনি ডায়রি পড়ছেন।
এটা তুমি খুব বুদ্ধিমতীর কাজ করেছ।
-আজ তাহলে আমি আসি। আপনি দেরি না-করে পড়তে শুরু করুন।
বেশ। প্রয়োজন হলে তোমাকে ফোন করব আবার কিন্তু।
অবশ্যই। অবশ্যই।
মিলি বিদায় নিল। তার চলার পথের দিকে তাকিয়ে রূপসার মনে হল মিলির মনটা বেশ খারাপ।
কফিতে চুমুক দিয়ে ডায়রিটা নিয়ে সে পড়তে শুরু করল। ডায়রির নাম লেখার জায়গা যেখানে থাকে সেখানে গোটা গোটা অক্ষরে কেয়া দে লেখা আছে। যে-বছর উনি প্রয়াত হয়েছেন এটা সেই বছরের ডায়রি। প্রথমদিকে সাধারণ জীবনযাপনের ছবি। শাশুড়িমায়ের বিবিধ নিয়মকানুনের বেড়াজালে বেশ নাজেহালসে নিয়ে একআধটা দিনের লেখা নজরে পড়ল। মলয়ের প্রতি যে তার সহমর্মিতা ছিল তা কিছু জায়গায় লেখা দেখে ভালই বোঝা যাচ্ছে একটা অপরাধবোধ কাজ করত। মলয়কে বঞ্চিত করা হচ্ছে।
মিলি সমন্ধে খুববেশি লেখা পাওয়া যাচ্ছিল। না।
আচমকা এক জায়গায় দেখতে পেল লেখা রয়েছে,
- মিলি কী ঋতেশকে সত্যিই ভালবাসে? মিলির কোনও বায়নাই তো আমি অপূর্ণ রাখিনি। এ বিষয়ে আমি মলয়ের কাছে কৃতজ্ঞ। খালি কানে ঘুরত, তাই একজোড়া সোনার দুল গড়িয়ে দিয়েছিলাম। ওকে নিয়ে গিয়ে পছন্দ করে ডিজাইন দিয়ে
বানিয়েছিলাম। মলয়কে বলাতে ও বলেছিল-
দেবে তো আমার ভাইজিকেই তাতে অসুবিধে কোথায়। মনটা মলয়ের সত্যি বড়। কাটা ছেলে নিজের চোখের সামনে এমনটা সহ্য করত? এক এক সময় খারাপ লাগে কিছু দিতে পারলাম না মলয়কে। কিন্তু ওই ঋতেশ কি কিছু দিতে পারবে মিলিকে? ওকে কি বড়দা বউদি ইচ্ছে করে রেখেছে শানুকে পড়ানোর জন্য যাতে মিলির দৃষ্টি ঘুরে যায়। মনের মতের পরিবর্তন ঘটে। আমার থেকে দূরে সরিয়ে নিয়ে যাওয়ার প্রচেষ্টা। কানাঘুষো
আবার শুনছিলাম মিলিকে বাইরে পড়তে পাঠানো হবে। সে তো ভাল কথা কিন্তু কোনও ছেলের সঙ্গে ওকে জোর করে গুঁজে দিলে তারও হাল মলয়ের মতো হবে।
সবকিছু থেকেও নেই। মিলির জীবনে এরকম কিছু হোক আমি সত্যিই চাই না। তাছাড়া মিলিরও আমার ওপর যথেষ্ট টান আছে। কিন্তু বুঝবেটা কে? এই সমাজ তো মানতে। রাজিই নয়। মিলি হয়তো পুরুষ-নারী উভয়কেই পছন্দ করে এমনটাও হতে পারে। কিন্তু মিলি আমার জীবন থেকে দূরে সরে যাবে ভাবলেই বুকের ভিতরটা কেঁপে ওঠে যো"

তার পরে বেশ কিছুদিন সাধারণ দিনলিপির বর্ণনা। তারপর কিছু কথা বেশ গুরুত্বপূর্ণ বলেই মনে হল রূপসার।
"সেদিন হালকা করে ওকে জিজ্ঞেস করেছিলাম ঋতেশের কথা। প্রশ্নটা এড়িয়ে গেলেও ওর গালের লালিমা আমি লক্ষ করেছি। ও কি তবে সত্যিই ঋতেশের প্রেমে পড়েছে? কিন্তু ছেলেটাকে আমার একদম পছন্দ হয় না। কিছু একটা গণ্ডগোল আছে বলে আমার মনে হয়। কিন্তু প্রমাণ ছাড়া মিলিকে বোঝানো যাবে না। আজ সকালে যেটা দেখলাম সেটা দেখে আমার মনের ভেতর একটা অন্যরকম চিন্তা উঁকি দিল। এটা কোনও ষড়যন্ত্র নয় তো। মিলির বয়সটা কম। এই বয়সে নানা প্রলোভনে ভোলানো সহজ। আশা-আকাঙ্ক্ষা থাকে তুঙ্গে। চাহিদা আর দেখনদারির দুনিয়াতে এই বয়সে তাদের মনে হয় আমরাই বা কি দোষ করেছি। আমরাই বা বঞ্চিত হব কেন? সেই সুযোগে যতেশ কেন জানি না মনে হচ্ছে ব্যবহার করছে মিলিকে? মিলিকে বললে ভাবছে আমার বুঝি হিংসে হচ্ছে। আজকাল ঋতেশের সঙ্গে বেশ ভালই মজেছে। তাতে আমার যে একদম হিংসে হচ্ছে না এমনটা নয়। সেটা আমিও টের পাচ্ছি। ওদের হাসিঠাট্টার আওয়াজ এলেই বুকের ভেতরটা তোলপাড় হয়ে যাচ্ছে। দিদিভাইকে সেদিন বললাম,
মাস্টারমশাই কি শানুর জন্য রেখেছ নাকি মেয়েকে সঙ্গ দেওয়ার জন্য? দিদিভাই এমন ব্যাঁকা একটা হাসি হাসল যে বুঝতেই পারলাম প্রচ্ছন্ন প্রশ্রয় আছে। এত মাথা গরম
হয়ে গেল যে কি বলব। ঘরে এসে চারিপাশে সব জিনিস ছুড়ে ফেলে দিলাম। সারা দুনিয়ার ওপর রাগ হচ্ছিল। তখনই যেন মাথার জেদ চেপে গেল যে আমি মিলিকে কিছুতেই ছাড়ব
না। ওকে একা বাইরে যেতে দেব না। কাউকে কিছু বুঝতে দিলে হবে না। আমিও বেরিয়ে গিয়ে বেনারসে থাকব।
এতটা পড়ে রূপসা একটু থমকেই গেল। তাহলে এরকম কিছুও রূপসার মাথায়।

খেলছিল। সত্যি। মানুষের মন বড় বিচিত্র। কোন কানাগলিতে গিয়ে কখন যে সে কি ভাবে কেউ জানে না। তবে একটা ব্যাপারে নিশ্চিত হওয়া গেল যে কেয়া মিলিকে সত্যিই ভালবাসত। মিলির তেমন ম্যাচুরিটি সেইসময় ছিল না। হয়তো ও সেসময় দোটানায় পড়ে গেছিল। বাড়ির চাপেই হয়তো ঋতেশের দিকে ঝুঁকেছিল। বাড়ির লোকেরাই তাকে প্রভাবিত করেছিল যাতে কেয়ার কবল থেকে সে বেরিয়ে আসতে পারে। সেক্ষেত্রে তার বাবা-মাকে হয়তো খুব একটা দোষও দেয়া যায় না। যে-কোনও বাবা, মা'ই চাইবে নিজের সন্তানের ভবিষ্যৎ সুনিশ্চিত করতে। আরও কিছু পাতায় চোখ বোলাল। সেগুলো পড়ে বোঝাই যাচ্ছিল কেয়া দেবীর মানসিক দ্বন্দ্ব তখন তুঙ্গে।
প্রায় শেষের দিকে ডায়রির চলে এসেছে তখন রূপসা। তখনই চার লাইন কবিতা মতো একটা চোখে পড়ল। এটার কথাই বুঝি বলছিল মিলি। তাহলে এই পাতাটা ভীষণ মনোযোগ সহকারে পড়া উচিত। একদম প্রথম লাইন থেকে সেদিনের ডায়রির পাতাটা পড়তে শুরু করল রূপসা। তবে একটা ব্যাপার খেয়াল করল, ডায়রির পাতাটা অন্য দিনের মতো পুরোটা লেখা নেই। সেদিন অন্য যে সব নিত্যনৈমিত্তিক ঘটনাগুলো ঘটেছিল সেগুলোর আর গুরুত্ব ছিল না। আমি যা দেখলাম তা ঠিক দেখলাম তো! আমার মনের ভ্রম নয় তো। কিন্তু মিলিকে বললে সে কক্ষনও বিশ্বাস করবে না। ভাববে বুঝি আমা নতুন কোনও ফিকির খুঁজছি ওর সঙ্গে ঋতেশের সম্পর্কে চিড় ধরানোর জন্য। কিন্তু মিলির কোনও ক্ষতি না হয়ে যায়। আমার প্রতি আক্রোশও তো কম নয়। কোথাও একটা ভয় ঘাপটি মেরে ছিল তা যেন নখ দাঁত বার করে বেরিয়ে এল। আমার ঘর ইন্দ্রিয় বলছে কোনও একটা ষড়যন্ত্র রচিতহচ্ছে। সেটা আমার বিরুদ্ধে নাকি মিলির বিরুদ্ধে নাকি মলয়ের?
নয়
বক্র নয় কিন্তু সোজাও
বন্ধু কিন্তু মিত্র নয়
ফাঁদ পাতে
পরোপকারী সেজে
প্রাণ জুড়োয় যদি ধরা পড়ে হাতেনাতে। বেশ কয়েকবার পড়ল কবিতাটা রূপসা। ইতিমধ্যে কাচের দরজা ঠেলে একটি অল্প বয়সি ছেলে ঢুকল। রূপসা ডায়রিটা তৎক্ষণাৎ ঢুকিয়ে দিল। মিলির সঙ্গে মুখের ওপরের দিক মানে কপাল আর নাকের বেশ সাদৃশ্য আছে বলে মনে হল। একমাথা কোঁচকানো চুল। লম্বা ছিপছিপে চেহারা। একটা কালো টি শার্ট পরে। তাতে লেখা আমার আমি ভীষণ দামি। ফেডেড জিনসের সঙ্গে একেবারে কেতাদুরস্ত এখনকার উঠতি যুবক যেমন হয়। তার দিকে এগিয়ে আসতেই রূপসা উঠে হেসে জিজ্ঞেস
করল,
শানু?
সে মাথা নেড়ে প্রতিউত্তরে একগাল হাসল।
বোসো। বলে রূপসা নিজের পাশের সুদৃশ্য বসার স্থানের দিকে ইঙ্গিত করল। অনেকক্ষণ খেয়েছে তাই এবার রূপসারও খিদে পেয়ে গেছিল। তাই সে দুটো করে চিকেন বারগার আর চকোলেট মুস অর্ডার করল। মিলির মতো শানু কিন্তু না না বলেনি। তার খিদে পেয়েছে বলাই বাহুল্য। বাইরে থেকে সবে বাতানুকূল স্থানে এসে পৌঁছেছে শানু, তাই একটু দম নিয়ে নিচ্ছিল। রূপসাও তাঁকে একটু সময় দিল জিরিয়ে নেওয়ার।
তোমাকে না-জিজ্ঞেস করেই অর্ডার দিয়ে ফেললাম। তুমি খাও তো?
- দুটোই আমার খুব ফেভারিট। বিশেষ করে চকোলেট মুস। না-খেলে আগেই বলে দিতাম। কথাটা বলেই সে হাসল। হাসলে তার গজদাঁত বেরিয়ে পড়ে তার কাকার মতো।
তুমি কোন স্ট্রিমে আছ শানু? অটোমোবাইল ইঞ্জিনিয়ারিং। এই
ফার্স্ট সেম সবে শেষ হল।
-আমি তোমাকে বেশ কিছু বছর পেছিয়ে নিয়ে যেতে চাইছি শানু। শানু নীরবে মাথা নাড়ল। বোঝা গেল সে মানসিকভাবে প্রস্তুত।
সেই দিনটা যেদিন তোমাদের কাকিমা খুন হন, সেটা তো খুব সাধারণ দিন ছিল না। তাই আশা করছি স্মৃতি হাতড়ে তুমি নিশ্চয়ই আমাদের সেদিনের কথা কিছু বলতে পারবে।
আপনি কি জানতে চাইছেন বলুন। আমার জানা থাকলে বা মনে থাকলে নিশ্চয়ই বলব।
চোখ বন্ধ করে ভাবো সেদিনের কথা আর যা যা মনে পড়ছে সেটাই আগে বলো। তারপর না হয় আমি তোমায় প্রশ্ন করছি।
-সেদিন সকালে আর পাঁচটা দিনের মতো উঠে পড়তে গেছিলাম। সেদিন কিছু একটা ছুটির দিন ছিল। কি ছুটির দিন সেটা সঠিক এখন মনে পড়ছে না। কারণ, আমি যখন পড়তে যাচ্ছিলাম তখন ঋতেশদার ফোন এসেছিল ল্যান্ডলাইনে। মা ধরে ফোনটা আমায় দিল,
কি রে আজ ছুটি তো!
হ্যাঁ। যা বলার তাড়াতাড়ি বলো। আমাকে পড়তে যেতে হবে।
কোথায় পড়তে যাবি?
কদমতলায়। ইংরেজি পড়া
আছে।
ক'টায় ছাড়ে তোকে?
-দশটা নাগাদ।
হচ্ছিল?
- দিদি পরদিন বেনারস চলে যাবে তাই কিছু কেনাকাটা করতে গেছিল।
বাবা-মা চলে গেলে তুমি কি
করলে?
মা খেতে দিয়ে গেছিল, খেলাম। তারপর চানটা সেরে নিলাম। তখন এসেছে। ঋতেশদার গলা শুনতে বুঝতে পারলাম যে ঋতেশদা চলে
পাচ্ছিলাম।
দাঁড়াও, দাঁড়াও, তখন তো
তোমার দিদি ছিল না ঘরে। তাহলে কার সঙ্গে কথা বলার আওয়াজ পাচ্ছিলে?
- তা মনে নেই। ঋতেশদাকে তো। সবাই চিনত। ঠাকুমার সঙ্গেও হতে।
পারে।

তোমাদের বাথরুমটা কোথায়?
আমাদের ঘরের লাগোয়া যেটা
সেটা রাত্রিরে ব্যবহার করা হত। আর দিনের বেলায় কারখানার পাশে একটা বড় বাথরুম ছিল। সেটাতেই চান করত সকলে।
চোখ বন্ধ করে রূপসা একটু ব্যাপারটা ভাবার চেষ্টা করল। মুখটা কি সামান্য উদ্ভাসিত হল। একটা লিংক বোধহয় সে খুঁজে পাচ্ছে।
তারপর শানু? নাও তোমার
চকোলেট মুস এসে গেছে।
হ্যাঁ, নিচ্ছি। আপনিও নিন।
অবশ্যই, বলে হাসল রূপসা। তারপর তুমি স্নান সেরে নিজের পড়ার ঘরে এলে।
হ্যাঁ, ঋতেশদা কিছু কাজ দিয়ে গেছিল যেগুলো করা হয়নি, সেগুলো করলাম।
তাহলে আমি এগারোটায় আসছি তোকে অঙ্ক করাতে।
কেন কাল আসবে না?
না, একটা কাজে বাইরে যেতে হবে। আজকে একটু বেশিক্ষণ তোকে পড়িয়ে দেব।
ঠিক আছে। এই বলে আমি বেরিয়ে যাই। সেদিন ইংরেজির স্যর একটু আগেই ছেড়ে দিয়েছিলেন। আমি সাড়ে ন'টায় বাড়ি চলে এসেছিলাম। মা-বাবা তখন বেরোবার জন্য রেডি হচ্ছে।
কোথায় যাওয়ার জন্য রেডি
ঋতেশদা সেই এগারোটাতেই এল?

হ্যাঁ।
এতক্ষণ কোথায় ছিল?
তা বলতে পারব না।
তোমাদের পাশে মৈত্র বাড়িতে
কি থাকতে পারে?
হ্যাঁ, পারে। আবার আমাদের কারখানায় গিয়ে লেবারদের সঙ্গেও অনেক গল্প করত। ঘুরে ঘুরে দেখত। আচ্ছা।
(পরের পর্বে)
Comments