বুকে ব্যথা মানেই হার্ট অ্যাটাক নয়! গলস্টোন'ও হতে পারে কারণ।
- রোজকার অনন্যা
- Jun 15
- 2 min read
বুকে ব্যথা মানেই যে তা হার্ট অ্যাটাক বা হৃদ্রোগজনিত সমস্যা, এমন নয়। অনেক সময় এই ব্যথার পেছনে লুকিয়ে থাকতে পারে পিত্তথলির পাথর (গলস্টোন), গ্যাস্ট্রিকের সমস্যা কিংবা এসিড রিফ্লাক্স। ভুল রোগ নির্ধারণ কখনও বিপজ্জনক হতে পারে, আবার অপ্রয়োজনীয় আতঙ্কও সৃষ্টি করে। তাই সচেতনতা এবং উপযুক্ত চিকিৎসা পরামর্শ নেওয়া জরুরি।

বুকের ব্যথার সম্ভাব্য কারণসমূহ:
১. হৃদ্রোগজনিত কারণ (Cardiac Origin):
হার্ট অ্যাটাক বা এনজাইনা পেক্টোরিস হলে সাধারণত মাঝের দিকে বা বাম দিকে চাপ ধরা ব্যথা হয়, যা কাঁধ, বাহু, চোয়াল বা পিঠে ছড়াতে পারে। সঙ্গে থাকতে পারে ঘাম, বমি বমি ভাব, শ্বাসকষ্ট।
২. গলস্টোন (Gallstones):
পিত্তথলিতে পাথর জমে গেলে তা লিভার ও পাচনতন্ত্রে চাপ সৃষ্টি করতে পারে। এতে বুকের ডান পাশে বা মাঝামাঝি জায়গায় একটানা চাপ বা ব্যথা অনুভূত হয়, যা অনেক সময় হার্টের ব্যথার সঙ্গে মিল খায়। গলস্টোনের কারণে ব্যথা খাওয়ার কিছুক্ষণ পর শুরু হতে পারে এবং দীর্ঘস্থায়ী হয়।
৩. গ্যাস্ট্রিক ও অ্যাসিড রিফ্লাক্স (GERD):
অতিরিক্ত ঝাল, তেল-ঝাল খাবার, অনিয়মিত খাওয়া ও স্ট্রেসের কারণে গ্যাস্ট্রিকের সমস্যা দেখা দিতে পারে। এতে বুক জ্বালা, পেট ফেঁপে থাকা, ঢেকুর ওঠা, এই উপসর্গ দেখা যায়। অনেক সময় বুকের মাঝখানে ব্যথা অনুভূত হয়, যা হৃৎপিণ্ডের ব্যথার মতো মনে হতে পারে।
গলস্টোনের বড় কারণ হলো উচ্চ কোলেস্টেরলযুক্ত খাবার ও অতিরিক্ত ওজন। তাই খাদ্য তালিকায় পরিবর্তন আনলে গলস্টোনের ঝুঁকি অনেকটাই কমানো যায়।
খাবারে কী রাখবেন?
উচ্চ ফাইবারযুক্ত শাকসবজি (পালং, লাউ, পেঁপে)
ফলমূল (আপেল, নাশপাতি, আমলকি)
ওটস, লালচাল
পর্যাপ্ত জল (দিনে অন্তত ২.৫–৩ লিটার)

কী কী এড়িয়ে চলবেন?
অতিরিক্ত তেল, চর্বি ও ভাজাভুজি
প্রসেসড ফুড ও ফাস্ট ফুড
খুব বেশি ঝাল বা মসলা
অতিরিক্ত চিনি ও রিফাইন্ড খাবার
চিকিৎসকের কাছে কখন যাবেন?
যদি ব্যথা তীব্র হয় এবং পিঠ বা বাহুতে ছড়ায়।
ঘাম, শ্বাসকষ্ট বা বমি বমি ভাব থাকে।
ব্যথা দীর্ঘস্থায়ী হয় বা নিয়মিত ফিরে আসে।
খাওয়ার পর ব্যথা বাড়ে এবং ওষুধেও আরাম হয় না।
বুকের ব্যথা একটি গুরুতর উপসর্গ হলেও তা সবসময় হার্ট অ্যাটাক বোঝায় না। গলস্টোন, গ্যাস্ট্রিক, বা অ্যাসিড রিফ্লাক্সও এই ব্যথার পেছনে থাকতে পারে। তবে এই ব্যথার প্রকৃতি, সময়কাল, এবং সংশ্লিষ্ট উপসর্গ বিচার করে একজন বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া উচিত। পাশাপাশি সচেতন খাদ্যাভ্যাস ও জীবনযাপন বুকের ব্যথার অনেক কারণ প্রতিরোধে সহায়ক হতে পারে।
Comments